মধু রসিকের পরিণতি!

তৌহিদুল ইসলাম ৮ ডিসেম্বর ২০১৯, রবিবার, ১২:০৭:৩৪পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৩৬ মন্তব্য

প্রথমেই একটি গল্প বলি শুনুন-

একবার মধু খাবে বলে একজন মধুরসিক মৌমাচির চাক খুঁজে বেরাতে লাগলো। অনেক খুঁজে খুঁজে একে ওকে জিজ্ঞেস করে অবশেষে সে একটি মধুর চাক খুঁজে পেলো। কিন্তু এই গাছ যার বাগানের তার অনুমতি ছাড়াতো মধু খাওয়া যাবেনা। তাহলে উপায়?

ভাগ্যক্রমে মালিক লোকটি সদয়বান হওয়ায় মধু রসিকের কথা শুনে মায়া হলো এবং তাকে অনুমতি দিলো। আশেপাশের মানুষদেরকেও আদেশ দিলেন মধু খেতে লোকটিকে সাহায্য করার জন্য। মধুর চাকটি গাছের অনেক উপরে থাকায় অনেকেই তাকে সাহায্যে এগিয়ে এলো। একজন নিজের বাড়ি থেকে একমাত্র মইটি এনে তাকে গাছে উঠতে সাহায্যও করলো।

মৌমাছিগুলি মানুষ দেখে অভ্যস্ত, কারন এর আগেও অনেকবারই তাদের মধু অন্যেরা নিয়ে গিয়েছে। তারপরেও মধু আহরণ করার সময় সেই মৌমাছিগুলি কিছুটা বিরক্ত হয়ে তাকে কামড়ানোর চেষ্টা করলে তখনও কিছু মানুষ আগুন জ্বালিয়ে ধোঁয়া উড়িয়েও কামড় থেকে বাঁচাতে লোকটিকে সাহায্য করলো। অবশেষে প্রাণ ভরে মধু খেলো সেই মধুরসিক লোকটি।

গাছ থেকে নেমে এসে তার মধু খাবার তৃষ্ণা আরও বেড়ে গেলো। এবারে সে চললো পাশের গ্রামে মধু খেতে। সেখানে মধুর চাক পেলোও সে। কিন্তু সমস্যা একটাই, মধু নেয়ার জন্য গাছে ওঠার মই তাদের নেই। তাই মধুর চাক যার গাছের সেই মালিক একটি শর্ত জুড়ে দিলো। শর্তটি হচ্ছে- প্রথমবার যার গাছের মধু খেয়েছে সে, তাদের উপরে ওঠার মইটি তাঁকে নিয়ে আসতে হবে।

মধু রসিক লোকটি পুনরায় আগের গ্রামে ফিরে এলো গাছের উপরে ওঠার জন্য তাদের সেই মইটি চাইতে। কিন্তু এই গ্রামের লোকদের কাছে গাছে ওঠার একটাই মই। তা কি করে দেবে তারা? তাহলে নিজেরাই যে আর গাছে উঠতে পারবেনা! তারা সাফ না করে দিলো। তাকে বললো সে যতখুশি এখান থেকেই মধু নিতে পারে কিন্তু মই নিতে পারবেনা।

বিফল মনোরথে ফিরে আসার সময় অতি লোভে মধুরসিকের মনে ইবলিশ ভর করলো। রাতের আঁধারে সে মইটি চুরি করে নিয়ে এলো অন্য গ্রামের গাছে উঠে মধু খাবে বলে। গাছে উঠে মধু খাবার সময় অনেক মৌমাছি তাকে কামড় দিল।

এই গাঁয়ের কেউ কখনোই মইয়ের অভাবে এর আগে মধুর চাকে উঠতে পারেনি। তাই এসব মৌমাছিদের মানুষ সম্পর্কে পূর্ব কোন পরিচিতি না থাকায় তারা লোকটিকে অপরিচিত হামলাকারী হিসেবেই ধরে নিয়ে নিজেদের বাঁচানোর তাগিদে মধু রসিককে আক্রমন করে বসলো।

অগত্যা মধু পিয়াসু লোকটি ব্যাথার চোটে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে অকালেই প্রাণ হারালো।

মোর‍্যাল অফ দ্যা স্টোরি- অতি লোভে তাঁতি নষ্ট। অন্যের গাছের বাতাবিলেবুর চেয়ে নিজের গাছের কাঁচা পেঁপেই ভালো।

বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে তেজপাতা।

এতবার করে বলা সত্বেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সোনেলার সদস্যগন অনেকেই সোনেলা গ্রুপের নীতিমালা না মেনেই গ্রুপে এমন কিছু পোষ্ট দিচ্ছেন যা আমাদের নীতিবিরুদ্ধ। আপনাদের সেসকল পোষ্ট ইচ্ছে না থাকা সত্বেও আমাদের রিমুভ করে দিতে হয়, হচ্ছে।

আবার অনেককেই দেখা যাচ্ছে একই লেখা বিভিন্ন গ্রুপে এবং অন্য ব্লগে পোষ্ট দেবার পরে তা আবার সোনেলায়ও পোষ্ট করছেন। যেহেতু লেখাটি অন্য সাইটে আগে পোষ্ট দিচ্ছেন তাই আমাদের অর্থাৎ সোনেলা ব্লগ সাইটের সিকিউরিটি সফটওয়্যারটি আপনার লেখাটিকে স্পার্ম বা অনৈতিক পোষ্ট হিসেবে গন্য করছে। যার ফলে আপনার লেখাগুলি আমরা রিমুভ করে দিতে বাধ্য হচ্ছি।

যারা এমন করছেন তারা সতর্ক হয়ে যান। সব জায়গায় মধু চাখা অভ্যেস ভালোনা। একজন ব্লগার হিসেবে আপনি যেকোনখানেই লিখতে পারেন তবে মনে রাখবেন সোনেলার সব লেখকের কাছ থেকেই আমরাই প্রথম লেখাটি চাই এবং আপনাদের মৌলিক লেখাই আশা করি সবসময়। আমাদের ভালোবাসার বিনিময়ে এতটুকু চাওয়া অন্যায় নয় কিন্তু! আর যদি তা না হয় তাহলে ব্লগিং সাইট সম্পর্কে কিছুটা পড়াশুনা আপনাকে অবশ্যই করতে হবে।

সোনেলার মই বেয়ে উপরে উঠে সোনেলাকেই ভুলে গেলেন? যারা এমন করছেন তারা কি বিবেকহীন, মনুষ্যত্বহীন, বোধহীন নন? বুকে হাত রেখে বলুন- সোনেলায় কেউ আপনাদের ক্ষতি চেয়েছে? সোনেলাকে দমাতে না পেরে কিছু মানুষ আপনাদেরকে তাদের ঢাল বানাচ্ছে তা বুঝতে কি অনেক জ্ঞান থাকতে হয়? এতটুকু বোধশক্তি আপনাদের নেই?

আবার কথায় ফিরে আসি- সোনেলা ব্লগের নীতিমালা এবং আমাদের ফেসবুক গ্রুপের নীতিমালা ভালো করে পড়ে নিন। নীচে আলাদা আলাদাভাবে লিংক দিয়ে দিলাম।

সোনেলা ব্লগের নীতিমালা-

সোনেলার ফেসবুক গ্রুপের নীতিমালা-

দুটো নীতিমালাই মোটামুটি একই তবুও আশাকরি কষ্টকরে সবাই আরেকবার পড়বেন।

এই লেখা পোষ্ট দেবার পরে নিজেকে একজন বদরাগী, খারুছ এডমিন বলে মনে হচ্ছে। আপনাদের এত আদর, আপ্যায়ন, স্নেহ করি। আর তার প্রতিদানে আমাদের পিঠেই নিজের অজান্তে ছুঁড়ি মেরে রক্তাক্ত করতে আপনাদের কি এতটুকুও হাত কাঁপছেনা? রাগ কমাতে চলুন আমাকে সঙ্গ দিন। আমার সাথে কঙ্কাল ড্যান্স দেখুন-

যে জন প্রেমের ভাব জানেনা
তার সাথে নাই লেনা দেনা..
আসল সোনা ছাড়িয়া যে নেয় নকল সোনা,
সে জন সোনা চেনে না....

https://youtu.be/6RRtrn1rZco

কি দারুণ না ভিডিওটি?

পাথরে পাথর সাজিয়ে যে শক্ত ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি আমরা, সোনেলার সেই শক্ত ভিত নড়ানো অসম্ভব একটি কাজ। সবার বোধদয় হোক এটাই কাম্য। ভালো থাকবেন সবাই। শুভ ব্লগিং।

সোনেলায় জয় হোক।

0 Shares

৩৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ