"আলিফের কুনোব্যাঙ দেখা"
ছোটবেলা থেকেই খুব রাগি, জেদি ছিলাম অল্প কষ্টে অভিমান হলেই কান্না করে সারা বাসা বাসায় তুলতাম।
তা চলছো কয়েকঘন্টা
তবে একটু বেশি আদর ভালোবাসা পেলে সব রাগ পানিতে পরিণত হতো।
আমার রাগ,জেদ কমানোর জন্য আব্বু,আম্মু,দাদুমনি বিভিন্ন প্লান করতেন সব সময় যে তা কাজে লাগতো তা না।
তবে কিছু ক্ষেত্রে ওনারা সফল হতেন..
কুনোব্যাঙ জন্মের পর কখনো দেখি নাই, তবে আমি রাগলে দাদুমনি বলতেন রাজকন্যা কেঁদো না বেশি রাগ, জেদ করলে কুনোব্যাঙ এসে নিয়ে যাবে।
আমি তখন খুব ছোট বয়স ৩-৫ হবে। কুনোব্যাঙের কথা শোনলেই আমার ভয় হতো জড়োসড়ো হয়ে দাদুমনির আঁচলে লুকাতাম।
সুযোগটা ভালোই কাজে লাগাতেন তাঁরা,আমি ভাবতাম না জানি কত বড় দৈত্যদানব এই কুনোব্যাঙ আমাকে কোলে করে নিয়ে যাবে।
আমি কান্না না থামালে ধরে আঁচাড় দিবে এই ভয়ে চুপ থাকতাম।
তবে মনের গহীনে এই কুনোব্যাঙ দেখার একটা ইচ্ছা ছিলো, আল্লাহ্ হয়ত তাঁর বাদ্ধা কোন আশা অপূর্ন রাখেন না। গ্রামে
ছোটচাচ্চুর শ্বশুরবাড়ীতে বেড়াতে গেলাম, হঠাৎ বড় আপ্পি রান্না ঘর থেকে চিৎকার করে উঠল ওরে বাবা ব্যাঙ। পাশের রুম থেকে ব্যাঙ শুনে আমি হাসলাম বড় আপ্পি দুই বাচ্চার মা আর ব্যাঙ দেখে ভয় পাচ্ছো 😂। আপ্পি রাগি গলায় বললো এটা ব্যাঙ না কুনোব্যাঙ এবার আমায় ধরে কে চেঁচিয়ে সারা বাড়ি মাথায় তুলে নিলাম।
আব্বু,আম্মু বাঁচাও কুনোব্যাঙ আমাকে তুলে নিয়ে যাবে, তারপর সোফায় মাথায় বসে ভয়ে কান্না শুরু করলাম কেউ আমার কান্না থামাতে পারছিলো।
বড় আপ্পি আব্বুকে ফোন দিলে, আব্বু অনেক কষ্টে আমাকে শান্ত করলেন।
বললেন রাজকন্যা কুনোব্যাঙ কোন দৈত্যদানব না এটা এক জাতের "ব্যাঙ" এরা বেশি ভাগ সময় মাটির বা ঘরের কোণে বসবাস করে। তুমি বড় আপ্পির সাথে যাও দেখে এসো।
আমি আব্বু বিশ্বাস করি তাই পাশের রুমে কুনোব্যাঙ দেখলে গেলাম।
ওরে বাবা আমি কুনোব্যাঙ দেখে তো অবাক 😱😱
এ আমাকে কি কোলে তুলে নিবে???
সুযোগ পেলে এ তো আমার কোলে চড়ে বসবে 😂
আর কুনোব্যাঙ আমাকে আঁচাড় দিবে কি করে???
আমি তো ওরে ধরে একটা আঁচাড় দিলে মরেই যাবে।
আমি এসব বলে হাসলে শুরু করলাম, পাশে থাকা সবার হাসি যেন আর থামছিলো না 😂😂😂
২০ বছর পর কুনোব্যাঙ দেখলাম কিন্তু দাদুমনিকে বলতে পারি নাই কারন আমার দাদুমনি গত ৮ বছর আগে মারা গিয়েছেন 😭
স্মৃতি আমার কুনোব্যাঙ দেখার আনন্দ দিয়েছে অন্যদিকে দাদুমনির স্মৃতি মনে করিয়ে মন খারাপ করে দিয়েছে।
আলিফ।
ছবি ক্রেডিটঃ- আলিফ নিজে তবে খুব ভয়ে তুলছি ।
৩৫টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ স্মৃতিময় কথা অনেক ভাল লাগল কবি নার্গিস আপু
অনেক শুভেচ্ছা রইল——————
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ দাদা।
ছোটবেলা ভয় পাওয়া দৈত্যদাবন বড়বেলায় দেখলাম।
সত্যি খুব স্মৃতিমধুর একটা গল্প লেখতেও অনেক ভালো লাগছে।
ভালো থাকবেন দাদা।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
কোনোব্যাঙ নিয়ে শৈশব স্মৃতি রোমন্থন বেশ ভালই লেগেছে। ভালো থাকবেন । শুভ কামনা ।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় ভাইজান।
শৈশবে শুধু না আজকের পর কুনোব্যাঙ দেখলেও হয়ত ভয় পাব।
সবাই উৎসাহ্ দিচ্ছিল তাই ভয়টা দূর হয়ে গেল, তবে কুনোব্যাঙ দেখতে বেশ সুন্দর দেখার পর মনে হলো একে ভয় পাবার কিছু নেই।
ভালো থাকবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
ছোটো আলিফ একসময় ঠিকই সাহসী হয়ে গেলো, শুধু তার দাদীকে জানাতে পারলো না। তবে দাদী নিশ্চয় দেখেছেন ওপাড় থেকে। আপনার দাদীর আত্মার জন্যে দোয়া করি। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন। আমীন।
ছবিটি সুন্দর তুলেছেন।
শুভ কামনা 🌹🌹
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ আপু।
সুন্দর মতামতে অনুপ্রাণিত হলাম, ছোটবেলা কুনোব্যাঙ দেখলে খুব ভয় পেতাম। এখন দেখার পর ভয়টা একটু কমেছে, দাদুমনি নেই এটা কষ্ট লাগে ওনি জানতে পারতে পারেন নাই।
দোয়া করি আল্লাহ্ তাকে জান্নাতবাসী করুন।
ভালো থাকবেন আপু।
প্রদীপ চক্রবর্তী
স্মৃতিকাতর লেখনী।
আপনার দাদীর আত্মার শান্তিকামনা করি।
ভালো লাগলো।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ছোট ভাইয়া।
দাদুমনি নেই এটা খুব কষ্ট দেয়, ছোটবেলায় থাকে হারিয়েছি এখন বেঁচে থাকলে হয়ত আরো অনেককিছু শিখতে পারতাম।
দোয়া করবেন।
ভালো থাকবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব মজার ছিল কিন্তু দাদীর মৃত্যুর কথা বলে মনটা খারাপ করে দিলেন।তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। শুভ কামনা রইলো
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ দিদি ভাই।
কুনোব্যাঙটা দেখার পর দাদুমনিকে খুব বেশি মিস করছি, ওনি দেখতে পারলের না আলিফ কুনোব্যাঙ ভয় পায় না।
স্মৃতি হয়ত এভাবেই হাসায়,কাঁদায় তবুও দোয়া করি দাদুমনি ভালো থাকেন ওপাড়ে।
ভালো থাকবেন দিদি ভাই।
ফয়জুল মহী
যথার্থ নিখুঁত প্রকাশ।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া।
কুনোব্যাঙটা দেখার পড়ে লিখতে খুব ইচ্ছে হলো, তাই লিখলাম।
তবে দাদুমনির জন্য মনটা খারাপ হয়ে গেল,ওপাড়ে ভালো থাকুক এই দোয়াই করি।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
ছাইরাছ হেলাল
এমন বেজায় সাহসী হতে হতে এক কুড়ি বসন্ত কেটে গেল !
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছোটবেলা কুনোব্যাঙ ভয় পেতাম, তারপর বড় হবার সাথে সাথে সব ভুলে গেলাম তবে ব্যাঙের প্রতি একটু ভয় সব সময় ছিলো।
হুম কুড়ি বছর পর গ্রামে সেই কুনোব্যাঙ এর দেখা পেলাম।
সেটাই আমার কাছে অনেক বড় খুশির বিষয়।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
সুপায়ন বড়ুয়া
স্মৃতিকাতর লেখনী।
আপনার দাদীর আত্মার সদগতি
কামনা করি। ভালো লাগলো।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় দাদা।
প্রথমে একটা আক্ষেপ প্রকাশ করে নেই, দাদা অনেক দিন ধরে আপনি আমার উপন্যাস “আমি তোমার জন্য এসেছি” পর্ব পড়ে মতামত দেন না।
গুনীজনদের মতামত না পেলে লেখার উৎসাহ্ পাই না, হয়ত ব্যাস্ত ফ্রি হয়ে অবশ্যই পড়বেন দাদা।
কুনোব্যাঙটা দেখার অনুভূতিটা দারুন ছিলো দাদা, দাদুমনির জন্য দোয়া করবেন।
দোয়া করি দাদা ভাই,
ভালো থাকুন সব সময়।
তৌহিদ
আপনিতো বেজায় সাহসী! আমি কিন্তু ব্যাঙ ফ্যাঙ সাপ বিচ্ছু এসব ভয়ই পাই।
ভালো থাকুন আপু।
ফিচার ছবি একবার আপ্লোড করলে সেটা মিডিয়া ফাইলে থেকেই যায়। আপনি ছবিটি তিনবার আপ্লোড করেছেন দেখলাম। একবার করলেই হয় কিন্তু!
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ব্যাঙ আমিও ভয় পাই, এই প্রথম সাহসী হলাম।
ছবির বিষয়টা জানতাম না, ওকে এবার থেকে খেয়াল রাখবো।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা, মজা পেলাম খুব। কুনো ব্যাঙ এর জারিজুরি শেষ হয়ে গেলো। এরপর সবাই আপনাকে ভয় দেখাতো কি বলে?
ভয়ে ভয়ে ছবি তুলেছেন, এর অর্থ আপনার ভিতরে মনে হয় ভয়টা এখনো আছে।
দাদীকে আল্লাহ বেহশত নসীব করুক।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইজান।
হুম এখনো ভয়টা আছে, তবে সবার উৎসাহ্ পেয়ে ছবিটা তুলতে পারলাম।
আপনার জন্যও দোয়া রইল, ভালো থাকবেন।
আরজু মুক্তা
ব্যাঙ ভাজি করে খাইলাম আর আপনি ভয় পান
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ আপু।
কুনোব্যাঙের প্রতি ভয়টা ছোটবেলা থেকেই ছিলো কারন আমার চিন্তায় কুনোব্যাঙ মানে দৈত্যদানব।
দেখার পর ভয় কিছুটা কমেছে.
দারুন ব্যাপার তো আপনিও ব্যাঙ ভাজি খেয়েছেন! আমাদের কিছু আত্মীয় যারা দেশের বাইরে থাকে ওনাদের কাছে গল্প শুনেছি।
ওনারা খেয়েছেন খেতে নাকি খুব টেস্ট্রি!
ভালো থাকবেন আপু।
ইঞ্জা
হাসতে হাসতে আমি লুটোপুটি খাচ্ছি, কুনো ব্যাঙের ভয়, ওলে বাবালে, আবার নিজের বাহাদুরিও ফলাচ্ছেন নিজে ছবি তুলেছেন বলে। 🤪😆🤣
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইজান।
আপনার মন্তব্য পড়ে মুগ্ধ হলাম, আমার কান্ড দেখে রিতিমতো সবাই খুব হাসাহাসি করছে..!
কুনোব্যাঙের প্রতি ভয়টা এখনো পুরোপুরি কমে নাই তবে কিছুটা সাহসী হয়েছি।
ভালো থাকবেন ভাইজান।
শুভ কামনা রইল সব সময়ের জন্য।
ইঞ্জা
আপনি হলেন আমাদের বাহাদুর আপু, সাহস সঞ্চয় করে রাখান। 😆
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইজান।
আপনার মন্তব্য পড়ে মুগ্ধ হলাম, আমার কান্ড দেখে রিতিমতো সবাই খুব হাসাহাসি করছে..!
কুনোব্যাঙের প্রতি ভয়টা এখনো পুরোপুরি কমে নাই তবে কিছুটা সাহসী হয়েছি।
ভালো থাকবেন ভাইজান।
শুভ কামনা রইল সব সময়ের জন্য।
এস.জেড বাবু
উঠানে সন্ধ্যেবেলায় শ হিসেবে আসে- পোকামাকড় খায়। কখনও পায়ের নিচে চাপা পড়ে গ্যা গ্যে শব্দও করে।
সাহসী মনের পরিচয় পাইলাম।
আরও দুর্দান্ত সাহসের জন্য দোয়া, একদিন হাতমোজা পড়ে ব্যাঙ হাতে সেলফি দেয়ার মতো সাহস কামনা করছি।
দোয়া
দোয়া
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছোটবেলা ব্যাঙ দেখেছি তবে কুনোব্যাঙ দেখা হয়নি, তবে কুনোব্যাঙের প্রতি বেশ ভয় ছিলো।
জীবনে প্রথম কুনোব্যাঙ দেখা ও শৈশবের স্মৃতির অনেক ঘটনা মনে পড়ে গেল।
সব মিলিয়ে দারুন ছিলো দিনটা, আপনি কুনোব্যাঙের সাথে পরিচিত বুঝতে পারলাম।
হাতে ধরার শাহসটা এখনো হয়নি, ভবিষ্যৎ হলে অবশ্যই সেল্ফি দিব ☺
ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইল।
এস.জেড বাবু
ছবির অপেক্ষায় রইলাম কিন্তু
নিতাই বাবু
সত্যি হাসিই পাচ্ছে। আসলে মনে হয় বাস্তব কাণ্ড! এমন হতেও পারে। তো আপনার কুনোব্যাঙের গল্পটা কিন্তু বেশ হয়েছে। শুভকামনা থাকলো।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় দাদা।
গল্পটা বাস্তব আমার জীবনে কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা।
কুনোব্যাঙ জীবনে প্রথম দেখলাম তার অনুভূতি, ভয়, আনন্দ সবটা গল্পে লিখলাম।
ভালো থাকবেন দাদা।
পার্থ সারথি পোদ্দার
এই সুন্দর স্মৃতিচারন শৈশবের সবিস্তর স্মৃতি উসকে দিচ্ছে আমাকেও।খুব ভালো লাগল,আপু।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ দাদা।
কুনোব্যাঙ এর প্রতি একটা ভয় ছিলো, দেখার পর সেটা আর নেই।
কুনোব্যাঙ দেখে তো আমি ভিষন খুশি, ভয়,আনন্দ সবটা ছিলো তবু ভালো লাগা কাজ করেছে।
ভালো থাকবেন দাদা।
হালিম নজরুল
ছোটবেলায় ছিপের মাথায় মাছি বেঁধে দিয়ে ব্যাঙের সামনে দিয়ে ধরার চেষ্টা করতাম। আজ সেই স্মৃতি মনে পড়ে গেল।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমি ব্যাঙ দেখেই ভয় পাই, আর আপনি ছোটবেলা ব্যাঙ ধরতেন। ব্যাপক সাহসিকতার কাজ, আমি তো এখনো ভয় পাই, আপনার স্মৃতি পড়ে ভালো লাগছে।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।