মায়ের দেয়া রক্ষা কবচ।

সুপায়ন বড়ুয়া ২০ এপ্রিল ২০২০, সোমবার, ০১:৪২:১৪অপরাহ্ন অণুগল্প ২৭ মন্তব্য

স্বপ্নের তীর্থ ভূমি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম প্রথম সুযোগে। মা একমাত্র মেয়ে ভীতু প্রকৃতির আমাকে অভয় দিয়ে বলেছিল মনে সাহস রাখবি। ভয় পেলে হেরে যাবি। এই রক্ষাকবচ তোকে রক্ষা করবে।

ক্লাস শেষে টি এস এসি তে আড্ডা দেয়া একটা রুটিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেদিন কাজিন এসেই বলে কেটে পর।রুপ পাল্টানো ছাত্র অধিকার পরিষদ কর্মী যেটা বলে সেটাই ঘটে। শুনার পর থেকে আমার স্নায়ুচাপ গেল বেড়ে।

যেই বলা সেই কাজ উত্তরা গামী ২ তলা শাটল বাসে চড়ে বসলাম বই পত্র নিয়ে সামনে পরীক্ষা নিকট আত্নীয়ের বাসায় যাব শ্যাওরা। পথ যেন হয় না শেষ। ধুলায় ধুসর ঢাকা উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। রাজপথের বুক ছিড়ে বিশাল বিশাল যন্ত্র অবিরাম লোহা লক্ষর দিয়ে মেট্রো রেল বানাচ্ছে। ভাবতেই অবাক লাগছে ঢাকা শহরটা এখন ও কিভাবে সচল আছে। আবার আনন্দে বুক ভরে যায় যখন ভাবি ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করবে ঢাকার এপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে মাত্র ২০ মিনিটে। ভাবতে ভাবতে ৪৫ মিনিট চলে গেল বিজয় সরণী আসতে গাড়ী আর চলেই না। দুতলা বাসে সুবিধা ২ তলায় বসলেই সব দেখা যায়। বাংলাদেশে কত সুন্দর সুন্দর কত মডেলের গাড়ী যে আছে। সব গাড়ীগুলোই যেতে হয় এক সিগনাল পাড় হতেই ২০ মিনিটলেগে যায়।

মহাখালী ফ্লাইওভারে উঠেই দেখি সামনে শুধু গাড়ী আর গাড়ী চলে শম্ভুক গতিতে। ভাবলাম ইথরো আর জে এফ কে এয়ারপোর্টে পড়ে বিমান জট আমাদের এখানে রাস্তায় পড়ে গাড়ী জট। এ সমস্যার সমাধান কিভাবে মিলবে তা শুধু খোদাই জানে।ভাবতেই ভাবতেই চোখে চলে আসলো ঘুম।

স্বপ্নের ঘোরেই চেচামেছি মামা মামা করেই ডাকে বাস কন্ডাক্টার। চোখ খুলে দেখি মামা চোখে পানি দেন শ্যাওড়া আসছে। রাস্তা অন্ধকার পাড় করে দিই। ধন্যবাদ দিয়েই নেমে গেলাম। গাঢ় অন্ধকারে ভীতু আমি শিহরিয়ে উঠলাম। “আল্লাহ,আল্লাহ” করেওভার ব্রীজ পার হওয়ার সময় মনে হচ্ছে কেউ যেন অনুসরণ করছে। ভয়ে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে , পা আর চলে না।শ্বাস কষ্টের রোগী দম বন্ধ হয়ে আসছে।

মাকে শরণ করলাম মা বলতেন, “বিপদে ভয় পেতে নেই ভয় পেলে হেরে যাবি ।“ মার রক্ষা কবচ দিয়ে মক্তবে যেভাবে রক্ষা পেলাম সেভাবে রক্ষা কবচ টা হাতে নিতেই আমার ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলছে জানোয়ার

পিছন ফিরে তাকাতেই পোকলা দাতে বিশ্রী এক হাসি। মাথায় গেল রক্ত চড়ে। কষে দিলাম এক ঘা নাকে মুখে মাথা ঘুড়ে পড়েগেল ফুটপাতে। বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার দিতেই লোকজন ছুটে এসে গণপিটুনি শুরু হল। আমি ও মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম যখন জ্ঞান ফিরে তখন হাসপাতালের বেডে। সবাই ফুল আর মাক্রোফোন নিয়ে হাজির।

খবরের কাগজের শিরোনাম ( অবন্তীর সাহসিকতায় হিরোঞ্চি হিরো কুপোকাত )। আমি মনে মনে বললাম মা, তোমার রক্ষা কবচ আমাকে দ্বিতীয় বারের মতো রক্ষা করলো।

(গল্পের চরিত্র গুলো কাল্পনিক )

(ছবি নেট থেকে)

0 Shares

২৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ