কেমন জানি থমকে যাচ্ছে সময় ইদানিং। হোচট খাচ্ছে বার বার, বা বলা চলে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। আসলে সময় আমাকে কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছে নাকি আমি সময়কে নিয়ে যাচ্ছি এ এক বিশাল ধাধা আমার কাছে।
রিমি রুম্মান যেদিন লিখলেন, যে পথে গিয়েছি সে পথে ফেরা হবেনা আর। সেদিন থেকেই ভাবছি কথাটা নিয়ে। সহজ ভাবনায় আমরা বলতেই পারি, ঢাকা থেকে একটি গাড়িতে বরিশাল যাবো, আবার ঐ পথ ধরেই একই গাড়িতে বরিশাল থেকে ঢাকা ফিরব, যেভাবে গিয়েছি সেভাবেই ফিরব। আসলেই কি তাই? প্রতি মুহুর্ত যে পিছনে ফেলে এসেছি, সে মুহুর্তগুলো কি সাথে নিয়ে আসতে পারি আমরা? কত মানুষ দেখেছি যাবার সময়, ফিরে আসার সময় তার কতজনকে দেখি আমরা? পদ্মা নদীর যে জল জোয়ার বা ভাটির সময়ে প্রবাহিত ছিল, সে জল কি ছিল ফেরার সময়? যেভাবে যাই সেভাবে ফেরা হয়না কখনোই।
ইদানিং মৃত্যু চিন্তা এসে মনের দরজায় খট খট করে। কত কত ইচ্ছে অপুর্নই রয়ে গেলো। জীবনের ভুল ভ্রান্তি গুলো সুধরে পুনরায় জীবন শুদ্ধ ভাবে আরম্ভ করার আর সময় নেই। স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও কত বছরই বা বেঁচে থাকব আর?
একটি মানুষের জীবন কত সংক্ষিপ্ত! মানুষের জীবন ১৫০-২০০ বছরের হলে ক্ষতি কি ছিলো? হুমায়ুন আহমদের একটি লেখায় পড়েছিলাম যে কাছিমের গড় আয়ু ১৯০ বছর। এত বছর একটি কাছিমকে বাঁচিয়ে রেখে জগতের কি এমন লাভ হলো? মানুষ জীব জগতের শ্রেষ্ঠ জীব। কোথায় শ্রেষ্ঠ হলো মানুষ? একটা কাছিমও তো মানুষের চেয়ে বেশী বছর বেঁচে থাকে, বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে তাহলে কে শ্রেষ্ঠ? মানুষ না কাছিম?
শ্রেষ্ঠত্বের ভাবনায় সামান্য পিপড়াও তো মানুষের চেয়ে বেশি বুদ্ধি রাখে। ঝড় বন্যা জলোস্বাছ এর পুর্বে খুদ্র পিপড়াও বুঝতে পারে বিপদ আসছে। বিপদের সম্ভাবনায় এরা দলবেধে সারিবদ্ধ ভাবে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে চলে। আর মানুষ মরে জলে ভাসে জলোস্বাছে। একটি ক্ষুদ্র পিপড়াও তো এ বিষয়ে মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
ভাল থাকুক আমাদের সময়, ভাল থাকুক আমাদের সোনেলা পরিবার।
১৯টি মন্তব্য
পথহারা পাখি
মৃত্যু নিয়ে বেশি ভাবা ঠিক না। বরং সারাক্ষন সৃষ্টিকর্তা কে স্মরণ করে মন ভালো রেখে মানুষের উপকারে নিজেকে ব্যস্ত রেখে জীবন চালিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত, যাতে পরকালের সকল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিটা ভালো হয়। -{@
জিসান শা ইকরাম
বিসিএস এর প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাই আমাকেও পরীক্ষার প্রস্তুতির কথা বললেন নাকি? 🙂
একমত আপনার সাথে, মানুষের উপকারে নিজকে বিলিয়ে দেয়া উচিৎ।
শুভ কামনা।
মায়াবতী
স্যারের কি মন খারাপ? ছোট্ট একটু সময় আমাদের কে দেয়া হয়েছে কিন্ত এই টুকুর মাঝে হাজারো চাওয়া পাওয়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা আছে আমাদের চারপাশ! এই তো জীবন। আশরাফুল মাখলাকুত হয়েও আমাদের কত শত অপুর্ণতা! আহা…..
আচ্ছা, কিছু কিছু পুর্ণতা ও আছে এই জীবনের! আছে তো…. চলুন না আমরা সেই পুর্ণতা গুলোকে ছড়িয়ে দিয়ে যাই সোনেলার আঙিনায়…..
জিসান শা ইকরাম
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এই তো জীবন, বেঁচে থেকে সব সুন্দরকে নিজের মাঝে ধারন করা।
শুভ কামনা।
রিতু জাহান
না, পোষ্ট পড়তে আমার মোটেও ভালো লাগে নি। আমি আসলে এমন সব পোস্ট পড়তে চাই না। মৃত্যু কি? মৃত্যু কেনো? কেনো সৃষ্টিকর্তার এই নিয়ম। কেনো ঘূর্নায়মান এই পৃথিবী। তবে কেনো মন দিয়েছে? কেনো দিয়েছে প্রিয়জন হারানোর চরমতম কষ্ট?
কেনো তিনি খেলছেন? কেনইবা এতো এতো স্বপ্ন?
সৃষ্টির এ কঠিন খেলাটাকে স্পস্ট দেখতে চাইনা প্রিয় বড় ভাইএর ভাবনায়।
জিসান শা ইকরাম
এত কেনোর উত্তর জানা নেই আসলে,
মন দু একসময় অনেক কিছু ভাবায়, যা ভাবায় কিছু সময়ের জন্য, তাই প্রকাশ করেছি।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
এই ধরিত্রীতে জন্মেছি যখন তখন মৃত্যু তো একদিন হবেই যা চিরন্তন সত্য, তাহলে একে নিয়ে কেন এতো ভাবনা, বরঞ্চ কোন কাজ বা স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে তা কিভাবে শেষ করা যায় তা নিয়ে ভাবা উচিত এবং সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত।
ভাইজান মনটাই খারাপ করে দিলেন। 🙁
জিসান শা ইকরাম
মন খারাপ করে দেয়ার জন্য স্যরি ভাইজান।
” মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই “
ইঞ্জা
🙁
মাহমুদ আল মেহেদী
ভাবনাগুলো জীবনের একটি বিস্মিত মূহুর্তে । একটি বিস্ময়কর জীবনবোধ ! ধরাতল থেকে আকাশের তলা পর্যন্ত ধ্বনিত হচ্ছে একটি আকুল প্রশ্ন ? আমি কে ? সত্যিই কখনো কখনো হঠাৎ নিজেকে নিজের কাছে সম্পূর্ন অপরিচিত মনে হয় । এই যে লোকের কাছে আমি একটি নামে পরিচিত, এই যে সামাজিক সম্পর্ক অচার-ব্যাবহার
এই যে আমার ব্যাক্তিকে কেন্দ্র করে কত আশা আকাঙ্ক্ষায় ভরা সব মিলিয়ে যায় মৃত্যু চিন্তায়।
ভাই পিঁপড়ার বুঝতে পারাটাতো মানুষেরই আবিস্কৃত ।
জিসান শা ইকরাম
এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মানুষের আবিস্কার হলেও মানুষ তো পারলো না পিঁপিড়ার মত বুঝতে,
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
স্রষ্টা যা করেন পরীক্ষিত।যদি মানুষকে দুইশ তিনশ বছর আয়ু দিতো তবে পৃথবীর অবস্থা কি হত।গড় আয়ু ষাটেই কোথাও কোথাও পৃথিবী ভরপুর।মৃত্যু ভাবনা মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলে।আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করে শুভ কামনা রইল। -{@
জিসান শা ইকরাম
ভাল বলেছেন মনির ভাই।
আপনার জন্যও শুভ কামনা -{@
ছাইরাছ হেলাল
মৃত্যুই জীবনের একমাত্র অমোঘ সত্য,
এর মুখোমুখি হতে হবে নির্ভীক-নিঃশঙ্ক চিত্তে।
রিমি রুম্মান
আমার মাঝে মাঝেই মনে হয়, কত কী করার বাকি ছিল, কত কী দেখার বাকি রয়ে গেলো! কে কখন চলে যাবো তাঁর তো কোন সিরিয়াল নেই !
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা তোমার এ পোষ্ট আমার ভাল লাগেনি একটুকুও। তাই আর কিছু বললাম না।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমারতো মনে হয় মানুষই একমাত্র প্রানী যে হাজার বছর আয়ু পেলেও মৃত্যুর কথা ভাববে।কারন বেঁচে থাকার লাভ-ক্ষতি মানুষরাই ভালো জানে।মন খারাপ করা লেখাতে মন্তব্য করতে ইচ্ছা করেনা।মন খারাপ করা লেখা গুলো সংক্রামক ব্যাধির মতো,,,ছড়িয়ে যায়।
🙁
নাসির সারওয়ার
জন্মের দায়ভার শোধ মরনে। এটাই নিয়ম। তাই উপভোগই হোক লক্ষ, যতটুকু সম্ভব। হে হে হে।।
রেজওয়ান
মন খারাপ করে দিলেন তো ভাইজান😭মৃত্যু চিন্তাও শুরু হচ্ছে😒