মাহবুবুল আলম।।
আমাদের দেশে মানুষ বাড়ার সাথে সাথে লেখকের সংখ্যাও বাড়ছে। সবচেয়ে বাড়ছে কবির সংখ্যা। মহিলা কবির সংখ্যাও বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। এটা একটা সুখবর। এরই মধ্যে অনেকেই তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন। এমন অনেকের সাথে প্রতিদিনেই দেখা হয়ে যাচ্ছে; (আসলে দেখা হয়ে যাচ্ছে বলাটা বোধ হয় ঠিক নয়) তাদের সাথে কোন না কোন অনলাইন পত্রিকা নয়তো কোনো সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযোগ ঘটে যাচ্ছে। আর ফেইসবুকের কল্যাণেতো এখন অনেকেই সাহিত্যের পাতা খোলছেন, সেখানে দেখা মিলছে অনেকের। এটা একটা ভাল উদ্যোগ। এজন্য ফেইসবুককে ধন্যবাদ।
তবে ওইসব পেইজের সব লেখা ই যে মানোর্ত্তীর্ণ তা কিন্তু নয়, তবু লেখা হচ্ছে ও যথারীতি প্রকাশও হচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চার্যের বিষয় যেটি সেটি হলো কোনো মহিলা কবির কবিতা দেখলেই ভাল-মন্দ বা মান যাচাই না করে কমেন্টস ও লাইকের জন্য যেন লাইন পড়ে যায়। এতে যিনি লিখছেন তিনি যেমন একাধারে নিজের লেখাকে শাণিত বা শোধরানোর সুযোগ না পেয়ে লিখেই চলেছেন, আর অন্যদল লাইক আর কমেন্টস করে করে একজনের প্রতিভাকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিচ্ছেন তা কিন্তু ঠিক নয়।
আশা করি সবাই কবিতার অন্তর্গত ভাব অনধাবন, বিষয়, নির্মাণশৈলী, বিশ্লেষণ করে জেনে-শুনে বাহ্! অপূর্ব! চমৎকার!! কমেন্টস করলে যিনি লিখছেন তার প্রতিভা বিকাশের সুযোগ যেমন নষ্ট হলোনা তেমনি যিনি কমেন্টস করছে তার সন্মন্ধে অন্যদের বিরূপ ধারনার সৃষ্টি থেকে অন্ততঃ রেহাই পাওয়ার সুযোগ থেকে যায়। তা না হলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, চালনী দিয়ে চেলেও গুটিকয়েক ভাল কবি বেছে বের করা কঠিন হয়ে যাবে।
২০টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার লিখেছেন। বাংলাদেশে কাকের চেয়ে কবির সংখ্যা বেশি।
তবে সত্যিটা হচ্ছে অনেকেই কিন্তু চমৎকার লিখেন।আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যেটুকু বুঝি তাতে আমার মনে হয় অনেক প্রতিভাবান/প্রতিভাবতী লেখক আছেন।
মাহবুবুল আলম
হুমায়ুন আহমেদের “বাংলাদেশে কাকের চেয়ে কবির সংখ্যা বেশি “ এ কথার সাথে আমি একমত নই। আমি বলেছি ফেসবুকে মহিলা কবিদের লেখায় হুমড়ি খেয়ে পড়ার কথা। এভাবে অতি প্রশংসায় কবি নিজকে সংশোধনের সুযোগ পাচ্ছে না। সে মনে করে আমিতো ভালই লিখছি। অথচ চল্লিশ বছর ধরে লেখালেখি করেও মনে হয় যেনো কিছুই হতে পারলাম না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
সুরাইয়া পারভিন
আর আমার কথা বলি
আমার যা মনে আসে লিখি
তেমন কোনো নিয়মনীতি আমার বিশেষ জানা নেই
মাহবুবুল আলম
আসলে যে সত্যিকারের লেখক হতে চায় তাকে নিরন্তর চর্চা অধ্যবশায় ও বেশি বেশি পড়ার মাধ্যমে নিজেকে শাণিত করতে হয়। না পড়ে, চর্চা না করে কবি বা লেখক কিছুই হওয়া যায় না।
রেহানা বীথি
চমৎকার বিষয়বস্তু। লেখায় ঢালাও মন্তব্য না করে যদি আলোচনা করা হয়, তবে ভুল ত্রুটি ধরা পড়ে এবং লেখক তাতে উপকৃত হন। লেখার মানও বাড়ে।
মাহবুবুল আলম
ধন্যবাদ আপনাকে সহমত পোষন করার জন্য। অবিরাম চর্চার মাধ্যমে একজন মানুষ সত্যিকারের কবি বা লেখক হয়ে ওেঠতে পারে। আসলে আমরা কেউই সমালোচনা সহ্য করতে পারি না। শুধুই প্রশংসা চাই!
আরজু মুক্তা
একদম। সমাকোচনা প্রয়োজন। তাতে লেখকেরও ভালো হবে। নিজের ভুল বুঝে এগোতে পারবে।
মাহবুবুল আলম
আসলে আমরা কেউই সমালোচনা সহ্য করতে পারি না। শুধুই প্রশংসা চাই! অন্যের লেখা পড়লে যে নিজের জ্ঞানের পিসর বাড়ে তা আমরা অনেক সময় ভুলে যাই! ধন্যবাদ আপনাকে।
মোঃ মজিবর রহমান
সুন্দর এক৫টি বিশ্লেষন মাহবুব ভা
অশেষ ধন্যবাদ।
মাহবুবুল আলম
মোঃ মজিবর রহমান ভাই আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ!
মাছুম হাবিবী
মনের কথাগুলো তুলে ধরেছেন। কিছু পাবলিক কোনো কিছু না বুুঝেই কমেন্ট করতে লাগে। আর কবিতাটা যদি কোনো নারীর লেখা হয় তবে তো লাইকস কমেন্টের কথাই নেই। আমাদের সকলের উচিৎ ভালো মন্দ বিচার করে প্রকৃত অর্থে সুন্দর লেখাগুলোকে মূল্যায়ন করা!
মাহবুবুল আলম
ধন্যবাদ ভাই! ফেসবুকে ঢুকলে কিবিতায় কবিতায় সয়লাব। কিন্তু এর মধ্যে কয়টি কবিতা হয়েছে তা আমরা না বুঝেই লেখককে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিই। এতে পরোক্ষভাবে সে লেখকটির ক্ষতিই কিন্তু করে যাচ্ছি!
নিতাই বাবু
২০১১ সাল থেকে স্বাদের ফেসবুকে একটি নামে এব একটি প্রোফাইল ছবিতে। এমনকি গুগল প্লাস-সহ কয়েকটি অনলাইন দিনলিপিতেও একটি এবং একরকম প্রোফাইল ছবিতে আমি নিতাই বাবু। আমি ব্যক্তিগতভাবে ছদ্মনাম বিরোধী। এই চোরা নাম কখনোই পছন্দ করি না। এর বিরুদ্ধে অনেক লেখালেখিও করেছি, কাজ হয়নি। মূল কথায় আসি! আমি ফেসবুকে দেখেছি, লাইক/কমেন্টের মধ্যে মেয়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকে। এর কারণ বলতে বলা যায়, আগুনের কাছে মোম সবসময়ই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত। কাজেই বুঝে নেওয়া যায় আমরা পুরুষ। এখানে বিষ্ময়কর কিছুই নেই! আছে শুধু আমাদের দুর্বলতা ও বোকামি। বর্তমানে কিছু অনলাইনবিত্তিক দিনলিপিতেও মানে ব্লগে দেখি মেয়েরা একটা কবিতা লিখে যখন ব্লগে প্রকাশ করে, পোস্টের ফিচার পোস্টে থাকে সুন্দর মায়াবী চেহারার এক মেয়ের ছবি। সেই প্রকাশিত পোস্ট যখন ফেসবুকে শেয়ার হয়, তখন ও-ই কবি মেয়েটা ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা পাগল ছেলে বন্ধুরা হুতাশ হয়ে তাঁর শেয়ার করা লিংক অনুসরণ করতে থাকে, লাইক/কমেন্টেও হায় হুতাশ করতে থাকে। অথচ কেউ একবারও ভেবে দেখে না এই ছবির সাথে পোস্ট করা কবিতার সাথে সম্পর্ক কী? এবং কেনই বা কবি মেয়েটি তাঁর লেখা কবিতার সাথে একটি সুন্দর মায়াবী চেহারার মেয়ের ছবি প্রকাশ করেছে। আসলে আমাদের এটা ভাবার সময়ও নেই। মেয়ে মানুষের ছবি দেখেছি তো পাগল হয়ে গেছি। এ-আর-কি।
আশা করি বুঝে নিবেন। ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে। তবে আমি বর্তমানে ফেসবুকে নেই। কিছুদিন আগেই ডি-অ্যাকটিভেট করে রেখেছি। শুধু এরকম কিছুর কারণে। ব্লগেও ঠিক এমনই দেখতে পাচ্ছি। হয়তো ব্লগ থেকেও বিদায় নিতে পারি। ভালো লাগে না এসব!
নিতাই বাবু
আর হ্যাঁ, বর্তমানে এই সোনেলা ব্লগেও যাঁদের পোস্টে দেখি কবিতা বা গল্পে মেয়েদের ছবি আপলোড করেছে, আমি বান্দা সেই পোস্টে মন্তব্য করি না। আর করবও না।
মাহবুবুল আলম
ভাই আপনার দীর্ঘ মন্তব্যটি পড়ে বেশ ভাল লাগলো। চল্লিশ বছর ধরে লেখালেখি করেও মনে হয় যেনো কিছুই হতে পারলাম না। কিন্ত ফেসবুকে অকবিতায় আঁতেল পাঠকদের প্রশংসার ফুলঝুড়ি দেখে নিজকে কেমন বোকা বোকা মনে হয়।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
কেউ কেউ লেখার মানের চেয়ে অতিরিক্ত প্রশংসা করে বসেন। এটা লেখকের জন্য অবশ্যই ক্ষতির কারণ। সঠিক সমালোচনা করা উচিত। আপনার বিশ্লেষণ ভালো লেগেছে।
মাহবুবুল আলম
ঠিক বলেছেন। এতে কবির তো ক্ষতি করছেনই, সাথে সাথে কবিতাসাহিত্যেরও বারটা বাজিয়ে দিচ্ছন! ধন্যবাদ আপনাকে।
এস.জেড বাবু
লিখলেই সবাই কবি/ সাহিত্যিক হয়না।
তবে লিখতে লিখতেই কবি সাহিত্যিক হয়।
লিখতে হলে পড়তে হবে, গঠনমূলক আলোচনা, কারো ভালোলাগা/ মন্দলাগা মানতে হবে মানিয়ে নিতে হবে।
প্রসিদ্ধ ব্লগগুলিতে সে সুযোগ থাকে।
ফেইসবুক টাইপের কমেন্ট, মেয়ের ছবি দেখলেই লিখা না পড়ে সহমত, হাই, হ্যালো বা ডজন ডজন ষ্টিকার কমেন্ট নিতান্তই বিরক্তিকর।
অনেক নতুন ভালো লিখক ও আছেন, আসছেন এবং আসবেন ও ।
নিজের কথা বলতে গেলে, ছেলেবেলায় অবসরে তিন গোয়েন্দা আর মাসুদরানা পড়ার ইচ্ছেটা বড় হয়ে সামান্য বদলে কাব্য সাহিত্য আর ছোটগল্পের দিকে বদলেছে। তখনও শখের বশে দুই চার লাইন লিখতাম, এখনো লিখি।
শুভেচ্ছা রইলো ভাইজান
মনির হোসেন মমি
চমৎকার উপস্থাপনা।আসলে কবিতা বিষয়টা একটু জটিলই বটে কারন এখানে কবি তার কল্পনা শক্তিকে শব্দে বেশী প্রয়োগ করেন যা একজন সাধারন পাঠকের কবিতার মুল বিষয়টি বুঝতে খুব কষ্ট হয় আবার অনেক সময় কঠিন শব্দের কারনে বুঝেও না কিন্তু পাঠকের পড়তে বেশ লাগে, তাইতো খুব সুন্দর, খুব ভাল লাগল, মুগ্ধ কিছু একটা বলতে হয় । তবে যারা কবিতাটী বুঝতে পারেন তারা যদি মন্তব্যটিতে বুঝিয়ে দেন কবিতার মুল বিষয়টি তখন হয়তো আমার মতন সাধারন পাঠকের বড় আকারে মন্তব্য করতে খুব সুবিদে হয়।
সাখিয়ারা আক্তার তন্নী
হুম,
অনেক ভালো বলেছেন।
ধন্যবাদ
তবে আমার মনে হয় লিখুক,একটা সময় হয়তো তার থেকেই কালজয়ী লেখার সৃষ্টি হবে।
আর যা কিছু অযোগ্য তা এমনিতেই কালের জোয়ারে হারিয়ে যাবে।
কারন সময়,প্রকৃতি নিয়ম অনুযায়ী দূর্বলদের বিলুপ্ত করে দেয়।