আমি আবার সেই ছোট্ট বেলায় ফিরে যেতে চাই।
সেই ছোট্ট বেলায়;
ছোট বেলায় বাবা যখন কাঁধে জাল নিয়ে মাছ ধরতে যেতেন তুলশী গঙ্গা নদীতে,
আমি তখন খোলই হাতে ঘাসফড়িং এর মতো- লাফিয়ে লাফিয়ে ছুটতাম বাবার পিছে পিছে।
যেতে যেতে ঘাসের ডগায় একটা লাল ফড়িং দেখলেই বাবার পিছু ছেড়ে দলছুট হয়ে ছুটতাম ফড়িং এর পিছে ।
বাবা আমার পদধ্বনি না শুনতে পেয়ে পিছু ফিরে দেখতেন আমি উল্টো পথে,
চিৎকার করে বলতেন ওদিকে কোথায় যাও? আসো আসো দেরী হয়ে যাচ্ছে।
আমি তখন ফড়িং ধরতে না পাওয়ার অভিমান ছোট বুকে পুষে মন খারাপ করে আবার যেতাম বাবার পিছনে।
বাবা যখন জাল ফেলতেন স্রোতস্বিনী নদীর বুকে, আমি তখন বন্ধ চোখে দু'হাত তুলে ডাকতাম বিধাতারে।
মনে মনে বললাম একটা ইয়াবড় মাছ যেনো পড়ে বাবার জালে।
বাবা যখন শূণ্য জাল তুলতেন টেনে,
আমি তখন উদাস মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে অভিযোগ দিতাম ছুঁড়ে।
কি ক্ষতি হতো তোমার যদি একটা বড় মাছ বাবার জালে দিতে?
কয়েক বার জাল ফেলার পরে যখন সত্যি সত্যিই দুটো তিনটে বড় মাছ পড়তো বাবার জালে
আমি তখন চিৎকার করে হাত তালি দিয়ে লাফিয়ে উঠি আনন্দে!
বাবা আমার মতো চিৎকার করে লাফিয়ে না উঠলেও বাবার চোখে ঠিকই দেখতে পেতাম আনন্দের হাসি!
তারপর আবার দু'জনে ফিরতাম বাড়ি।
ফিরতি পথে খোলই টানতে অতোটুকুন আমি'র কষ্ট হবে বলে,
বাবা নিজের কোমরে খোলইটা বেঁধে নিতেন।
তখন আমার ভীষণ রাগ হতো বাবার উপরে, আমাকে কেনো নিতে দিচ্ছেন না সেই ভেবে!
আমি আবার ফিরে যেতে চাই সেই ছোট্ট বেলায়।
বড় বেলার এই যান্ত্রিক জীবনে সেই খুশি আর নেই, নেই সেই আনন্দ।
আমি আবার ফিরে পেতে চাই সেই আনন্দ, সেই খুশি!
আমি আবার বাবার পিছু ছেড়ে নিতে চাই লাল ফড়িং এর পিছু।
আমি আবার ফিরে পেতে চাই ফেলে আসা ছোট্ট বেলা
ছবি-নেট

বিঃদ্রঃ লাল ফড়িং এখনো আমার দুর্বলতা।

0 Shares

২৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ