সাধু সাবধান!!

শামীম চৌধুরী ২ জুন ২০২০, মঙ্গলবার, ১০:৪৮:৩০অপরাহ্ন সমসাময়িক ২৪ মন্তব্য
গতকাল থেকে সারাদেশে সীমিত আকারে যাত্রী নিয়ে ৬০% ভাড়া বৃদ্ধিতে গনপরিহন চলাচল করছে। মানুষ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজের তাগিদে অতিরিক্ত ভাড়ায় চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। বাস মালিকদের ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাখ্যাটা যুক্তিগত মনে করে সাধারন জনগন জোরালো বা ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ থেকে বিরত রয়েছে। গত দুইদিন যে পদ্ধতিতে গনপরিবহনের বাস মালিক বা শ্রমিকরা যাত্রীদের আসন বন্দোবস্ত করেছে তাতে সাধারন মানুষের কোন অভিযোগ নেই। সাধারন মানুষ বাধ্য হয়ে দুইজনের ভাড়ার টাকা একজন পরিশোধ করতঃ যাতায়তে স্বস্তি পাছে এবং সঙ্গে সঙ্গে মনকে সন্তনা দিচ্ছে আমার পাশের আসনটির ভাড়াও আমি পরিশোধ করেছি ভেবে।

যদি আগামীতে এই নিয়মের পরিবর্তন হয় তবে অতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধকারীরা কোন ভাবেই মেনে নিবেন না। তাতে গনপরিবহনের ভিততেরই শ্রমিকদের সাথে যাত্রীদের বাক-বিতন্ডা থেকে শুরু করে হাতা-হাতি পর্যন্ত গড়াবে। যাহা উভয় পক্ষের জন্য অমঙ্গল হবে। প্রশ্নবিদ্ধ করবে তাদের Commitment বা প্রতিশ্রুতির জায়গায়। এমনিতেই গনপরিবহন মালিকদের উপর সাধারন যাত্রীদের কোন আস্থা নেই। মূল কারন তারা অতি লোভী প্রকৃতির মানুষ। সাধারন যাত্রীদের পকেটের টাকা হাতিয়ে নেওয়াটা তাদের অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে।‍

বিগত ৬৮ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকট ও খাদ্যাভাবে সবচেয়ে বেশী মুখোমুখি হয়েছে এই ব্যবসায় জড়িত চালক ও শ্রমিকরা। দীর্ঘদিন অভাবে থাকা এই শ্রমিকদের খাদ্য বা আর্থিক সহযোগিতার কোন উদ্দ্যোগ মালিকপক্ষ বা শ্রমিকদের নামে গড়া শ্রমিক ফেডারেশন নেয় নাই। আর শ্রমিকরা বাস স্ট্যান্ডগুলিতে জটলা বেঁধে অপেক্ষা করেছে নেতাদের আগমনের আশায়। অথচ কোন শ্র্রমিক নেতা তাদের সাহায্য করতে আসেনি। শুধু তাই নয় খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি কে বা কারা নেতা, শ্রমিকরাই চেনে না বা জানে না। তবুও তারা শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বা সমিতিতে প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট অংকের চাঁদা দিয়ে গেছে। অথচ তাদের জমা টাকা থেকে বঞ্চিত হয়ে অর্ধাহারে অনাহারে পেটে পাথর বেঁধে পরিবার সন্তানদের নিয়ে শ্রমিকদের দিনগুলি কেটেছে। আমার দেখা একজন শ্রমিক নেতা অভিজাত এলাকায় বিলাস বহুল বাড়িতে ৮০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় কারু-কার্যখচিত আসবাবাপত্র সহ পরিবার নিয়ে বাস করছে। দুই ছেলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। কিন্তু নেতার এক টাকাও আয় নেই। শুধুমাত্র শ্রমিকনেতা সেজে বিলাসবহুল জীবন-যাপন করছে।

আজ খবরে দেখলাম, গণপরিবহন থেকে শ্রমিক সংগঠনের নামে নেতাদের নিয়োজিত পেটুয়া বাহিনীরা প্রতিটি বাস থেকে বিভিন্ন হারে গাবতলী,নবীনগর ও পাটুরিয়া স্পট থেকে চাঁদা তুলছে। বাসের শ্রমিকরাও দাবীকৃত চাঁদার টাকা পরিশোধ করছে।

আমার প্রশ্নঃ
এরা কারা? এরা কোন নেতার লোক? গত দুই মাস কে বা কাহারা এদেরে আর্থিক সাহায্য করেছে?
শ্রমিকদের এখনই সময় এই চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করা। তারা বুঝেছে সম্পূর্ন সংগঠনটি ভুয়া ও ঠকবাজি। শ্রমিকদের উচিত চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে বাস চালানো বন্ধ রাখা। যাতে ভবিষ্যতে এই কালো পথ বন্ধ হয়। আর শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজটি করতে পারলে চিরতরে দেশ থেকে এই খাতে চাঁদাবাজি বন্ধ হবে।

নেতাদের বলছিঃ
দেশে যতজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করেছে তাদের সবাই বিলাস-বহুল জীবন-যাপনকারী এলিট বা অভিজাত ব্যাক্তি। নাম লিখে শেষ করতে পারবো না। অন্তত এলিটদের মৃত্যুর পরিনতি দেখে উচিত হবে আপনাদের সংশোধন হওয়া। নইলে মৃত্যুর পর আপনাদের জানাজা ও দাফনে নিজ সন্তানরাও উপস্থিত থাকবে না।

0 Shares

২৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ