শেষ থেকে শুরু _পর্ব আট

সুরাইয়া পারভীন ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার, ০৮:৩৬:২৯অপরাহ্ন গল্প ২০ মন্তব্য

শেষ থেকে শুরু_সপ্তম পর্ব

সেঁজুতি কোনো দিকে না তাকিয়ে ব্যাগ তুলতে নিচু হয়ে বলতে শুরু করলো…

-অসভ্য অভদ্র উশৃঙ্খল বাঁদর বদমাইশের দল সব। মেয়ে মানুষ দেখলেই যেনো ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরা যে ইউনিভার্সিটিতে কেনো আসে কে জানে? ভদ্রতার ভ টুকুও নেই এদের মধ্যে।

 

শ্রাবণ ব্যাগটা তুলে দিতে যাবে এমন সময় সেঁজুতিকে দেখতে পেয়ে পিছনে সরে গেছে। শ্রাবণ এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছিলো কথা গুলো আর মনে মনে ভাবছে কী মেজাজ রে বাবা! যেনো বিষ ঝাল। সেঁজুতি থেমে গেলে শ্রাবণ বললো…

-তারপর?

সেঁজুতি বসে থেকেই বললো…

-মানে কী?

-মানে বলছিলাম আপনার অভিধানে এই সব শব্দ আর নেই?

-এই দেখুন একে তো ধাক্কা দিয়েছেন। ব্যাগটা তুলে দেবার নাম নেই। একটা স্যরি বলার মতো ভদ্রতাটুকুও নেই আবার বড় বড় কথা বলছেন

 

বলেই সেঁজুতি দাঁড়িয়ে পিছনে ঘুরে শ্রাবণকে দেখে চিৎকার করে উঠল…

-আপনি?

-জ্বী আমি।

-আপনি জানেন আমি আপনাকে কতো খুঁজেছি!

পুরো শহর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পাইনি। 

-তা আপনি আমাকে কেনো খুঁজছেন?

-কেনো খুঁজছি আপনি জানেন না?

-কী করে জানবো? আপনি তো তখন থেকে শুধু বকা ছাড়া আর কিছু বলেননি।

-আচ্ছা স্যরি। আমি ভেবেছিলাম…

-কী ভেবেছিলেন বলুন তো?

-ছাড়ুন না। এবার বলুন আপনি তো সার্ভিস ম্যান তাহলে এখানে এসেছেন কেনো? কোথাও আমাকে ফলো করতে করতে আসেননি তো! কী উদ্দেশ্য আপনার হ্যাঁ?

-ওহ হ্যালো! আমি আপনাকে ফলো করতে করতে আসিনি। এগারোটায় আমার ক্লাস আছে তাই তাড়াহুড়ো করে আসতে গিয়ে ধাক্কা লেগেছে। আর সার্ভিস ম্যান ইউনিভার্সিটিতে আসতে পারবে না এটা কোথায় লেখা আছে?

-সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি। আপনি কোনো সার্ভিস ম্যান ট্যান না। এবার দোয়া করে আপনার আসল পরিচয় টা দিন তো।

-আমি শ্রাবণ আহমেদ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ফাইনাল ইয়ার স্টুডেন্ট।

-বাহ্ বেশ! এবার বলুন কে পার্সেলটা পাঠিয়েছিল আপনার হাত দিয়ে?

-সেটা আপনাকে বলতে যাবো কেনো?

-আরে আজব তো! আচ্ছা বেশ আমাকে না হয় বললেন না। ঠিক আছে চলুন বাসায় মামুনিকে বলবেন।

-একদম না। আমি কিছুতেই বলবো না। না আপনাকে, না আপনার মামুনিকে। শুনেছেন? আর তা ছাড়া আমার এখন ক্লাস আছে। আসছি আমি। ভালো থাকবেন লঙ্কারাণী।

বলেনই শ্রাবণ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেখে সেঁজুতি দৌড়ে গিয়ে ওর পথ আটকালো।

-এই আপনি আমাকে কী বললেন? আমি লঙ্কারাণী?

-জ্বী লঙ্করাণী! একদম ঠিক শুনেছেন। আমি ওটাই বলেছি।

-আপনার সাহস তো মন্দ নয়! 

-জ্বী একদম

-এই দেখুন ভালো হচ্ছে না কিন্তু।

-এবার যেতে হবে লঙ্কারাণী পথ ছাড়ুন

-নাহ্ একদম না। আজ ক্লাস করতে হবে না। সত্যি কথা না বলা পর্যন্ত আপনাকে কোথাও যেতে দেবো না!

-এই শুনুন আমি আপনাকে কিছুই বলবো না।

-প্লীজ বলুন। আমার জানাটা দরকার কে আমার মামুনি কে এতো ভালোবাসে?

-কেনো বলুন তো? আপনার মামুনিকে কে এতো ভালোবাসে সেটা জেনে এখন কী হবে? আপনার মামুনি তো বেশ আছে। স্বামী সন্তান সংসার সব নিয়ে। তাহলে আর নতুন করে জেনে কী হবে কে তাঁকে ভালোবেসে ধুঁকে ধুঁকে মরছে!

 

-এই থামুন তো। তখন থেকে বকবক করে চলেছে। যা জানতে চাইছি সেটাই বলুন না

-বলবো না, কিছুতেই বলবো না আপনার মামুনিকে ভালোবেসে তিলে তিলে নিজেকে শেষ কর দিচ্ছেন আমার মামু। বলবো না কিছুতেই বলবো না। 

-বুঝলাম পার্সেলটা পাঠিয়েছেন আপনার মামু। এবার সবটা খুলে বলুন। আমার জানাটা খুব দরকার...

 

ছবি-গুগল

0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ