ওয়াসার পানি ফুটিয়ে কেন পান করবেন! কারণ ঐ পানিতে ক্ষতিকর জীবাণু থাকে, তাই তা ফুটিয়েই খেতে হয়। ওসব ক্ষতিকর জীবাণু ছাড়াও আরও কিছু রাষায়নিক ক্ষতিকর উপাদান থাকে যা ফুটিয়েও দূর করা যায় না। তারই একটা মৌলের নাম আর্সেনিক, যা কোন ভাবেই পানি থেকে আলাদা করা যায়না।

মোগলরা এক সময় আর্সেনিক বিষকে বেশ ভালো ভাবেই ব্যাবহার করতো। একজনকে ধীরে ধীরে মেরে ফেলার জন্য সবচাইতে ভালো কাজ দিতো এই বিষ, যাতে মৃত্যুর কারণ বের করা সহজ হতো না সেই যুগে। আর সেই বিষ আমরা পানির সাথে পান করছি জেনে এবং না জেনে। আসুন আমরা সবাই একটু সচেতন হয়ে এই বিষকে প্রত্যাহার করি।

আর্সেনিক একটি রাসায়নিক মৌল যা ধাতু এবং অধাতুর মাঝামাঝি একটি পদার্থ। এগুলোকে বলে মেটালয়েড যা একটা শক্তিশালী বিষ, খুব সামান্য পরিমাণেই এটি তীব্র বিষক্রিয়া তৈরি করে। মাত্র ১০০ মিলিগ্রাম আর্সেনিক একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে। ১০০ মিলিগ্রাম কতটুকু? ১ টেবিল চামচের ২০ ভাগের ১ ভাগের ওজন ১০০ মিলিগ্রাম। এর বাসস্থান ভূগর্ভস্থ পানিতে। পানিতে কেমন করে গেলো তা না হয় এড়িয়ে যাই এই মুহূর্তে। পৃথিবীর অনেক দেশের সাথে আমাদের দেশেও এর উপস্থিতি আবিস্কৃত হয়েছে। খোদ আমেরিকাতে এর বেশ প্রকট যা তাদের গবেষকদের মাথা ব্যথারই কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক বড় বড় গবেষক কাজ করে যাচ্ছেন এ থেকে পরিত্রাণের চেষ্টায়। আমেরিকান কয়েকটা ইউনিভারসিটি সহ আমাদের দেশের গবেষকরাও এই কাজে অংশ নিয়ে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন। ২০১০ এ আমাদের একটা গবেষণার ফলাফল সারা পৃথিবীর গবেষকদের টনক নাড়িয়েছিল। আমাদের দেশের সংবাদ সংস্থাও সবার নজরে আনার চেষ্টা করেছিলেন। বিশেষ একটা এলাকাতে ২০ ভাগ মানুষের মৃত্যুর জন্য এই আর্সেনিক দূষণের পানিই দায়ী যা এই গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে।

নীচে প্রথম আলোর একটা লিংকে বিশেষ তথ্য মূলক খবর পাওয়া যাবে।

http://epaper.prothom-alo.com/view/dhaka/2010-08-07/15

অনেক দেশেই এর থেকে প্রতিকারের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেয়ে শুরু করেছে। অত্যন্ত দুঃখের সাথেই বলতে হচ্ছে যে আমাদের সরকার একটা প্রেস নিউজ করার মাঝেই তাদের দায়িত্ব সম্পাদন করেছেন তখন। শুধু তাই ই নয়,তখনকার অনেক কল্যাণ কর্তা সরাসরি আমাদের গবেষণা নিয়েও নেগেটিভ প্রশ্ন তুলছিলেন যা ছিল বেশ দুঃখজনক। The Lancet (ল্যাঞ্চেট) নামের একটা প্রথম সারির স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান ম্যাগাজিন এই ফলাফল প্রকাশ করেছিলো যা গবেষকদের জন্য বেশ সম্মানের ব্যাপার।

নিচের লিঙ্ক থেকে ফলাফলটা পড়ার সুযোগ আছে।

http://www.thelancet.com/journals/lancet/article/PIIS0140-6736%2810%2960481-3/abstract

প্রথমেই আমরা জানার চেষ্টা করি দেশের কোন কোন অঞ্চলের পানিতে এই বিষ আছে। ঢাকা শহর বাসীদের জন্য সুখবর এইজন্য যে এখানখার পানিতে এই বিষটা নাই। বেশ কয়েকটা আমেরিকান ইউনিভারসিটির সাথে ঢাকা ইউনিভার্সিটিও এই জরিপের সাথে জড়িত। নিচের ম্যাপটা প্রাথমিক ধারনা দেবার জন্য দেয়া হলো। লাল রঙের এলাকা গুলো খুঁজে নিন ইন্টারনেটের সাহায্যে। জেনে নিন আপনার ভালো লাগা মানুষরা ওই এলাকাতে থাকেন কিনা। তাদের জন্য আমরা সামান্য হলেও কিছু করতে পারি বলে আমি বিশ্বাস করি।

 

ArseniMapBD (278x300)

ছবি - ১ঃ বাংলাদেশ ম্যাপ (লাল রঙের এলাকা গুলো খুঁজে নিন ইন্টারনেটের সাহায্যে যেখানে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি)

WHO এর মতে ৫% (নীল) পর্যন্ত আর্সেনিক যুক্ত পানি মানুষের শরীরে সহনীয়।

বি এম এ ভবনে  (ঢাকা প্রেস ক্লাবের বিপরীত দিকে) এই দুষিত পানি টেস্ট (Hach Kit, Arsenic Econo-Quick etc.) করার যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়। যা দিয়ে জেনে নিন আপনার প্রিয় জনেরা কি পানি পান করছে। এই সব কিটের দাম আমাদের ক্রয় সীমার মধ্যেই আছে।

আর্সেনিক দূষণের পানি পানের ফলে সম্ভাব্য কী কী হতে পারে বা কেমন করে এদের সনাক্ত করা যায় এবং আমাদের কী করণীয় –

আর্সেনিকোসিস (Arsenicosis) প্রতিফলন মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায় যাকে আমার বলি মেলানোসিস (Melanosis ) এবং কেরাটোসিস (Keratosis)।  এ দুটোকে আরও কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে চিকিৎসা সুবিধার জন্য। আপাতত আমরা এই মুল দুটো লক্ষণগুলো জানার চেষ্টা করি।

১) মেলানোসিস (Melanosis) – সাধারণত হাত, পা, বুক এবং পিঠে সাদা কালো দাগ দেখে এর প্রাথমিক ডায়াগনোসিস করা হয়। ২ নং ছবিটা একজন আরসেনিকসিস এর রুগী।

arsonicosis_Edited

ছবি – ২ (Melanosis)

এই সাদাকালো দাগ ছাড়াও মাঝে আবার কিছু কিছু ক্ষতের আকারও হয় যাকে চর্ম ক্যান্সার বলা হয়। (৩ নং ছবি)।

Ori

ছবি – ৩ (Bowens disease)

৩ নম্বর ছবিটা একটা বিশেষ lens (DermLite) দিয়ে দেখলে ৪ নম্বর ছবির মত দেখা যায়

IMG_0006-(1024x768)-(300x225)_Edited

ছবি – ৪

Clinical diagnosis - Bowens disease

Biopsy indicator - basal cell carcinoma

মুল কথা – স্কিন ক্যান্সার

২ - কেরাটোসিস (Keratosis)– হাতের তালু এবং পায়ের পাতায় গোটা গোটা শক্ত হয়ে যাওয়া। অতিরিক্ত ঘর্ষণে অনেক সময় এই রকম গোটা হতে পারে। তবে তার সংখ্যা অনেক কম।

Palm2_Edited

ছবি - ৫ (Keratosis)

৫ নম্বর ছবির এই গোঁটা গুলোতে অনেক সময় ক্ষত জন্মায় যা ঐ ক্যান্সারকেই মনে করিয়া দেবে।

আমাদের যা করণীয়–

এইসব রুগীদের একজন চর্ম চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিৎ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে ছোট ক্ষতকে ক্রাও (Cryo) করে বেশী ছড়ানো রোধ করা যেতে পারে। তাতে একজন রুগী কিছুটা হলেও ভালো থাকতে পারেন। একজন চর্ম চিকিৎসকই এই রুগীদের ভালো চিকিৎসা দিতে পারেন।

সবচাইতে ভয়ানক বিষয় এই আর্সেনিকের বিষ মানুষের প্রায় সব অরগ্যানেরই ক্ষতি করে যা বেশ কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে। তাই চর্ম চিকিৎসকের পাশাপাশি একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শও আবশ্যক। একজন মানুষের শরীরে  আর্সেনিকের মাত্রা জানার উপায় তার ইউরিন এবং রক্ত কোষ মাপা।  খুবই দুঃখজনক যা আমাদের দেশে কোন  ল্যাবেই এই পরিক্ষাগুলো করার ব্যবস্থা নাই। আমাদের দেশে যারা এই বিষয়ে গবেষণা করেন, তারা পশ্চিমা দেশের সাহায্য নিয়েই করেন।

যাদের শরীরে এই বিষ আছে, এর থেকে তার কোন পরিত্রাণ নাই। তবে ভালো চিকিৎসা পরামর্শ নিয়ে তাদের জীবনকে কিছু হলেও ভালো রাখা যেতে পারে। আমাদের দেশে একটা Clinical Trial (BEST - Bangladesh Vitamin E and Selenium Trial) করা হয়েছে ১০ বছর ধরে যা ২০১৫ তে শেষ হয়েছে। উদ্দেশ্য -  Antioxidant এর মাধ্যমে কিভাবে এই স্কিন ক্যান্সার রোধ করা যায়। আমরা এখন সেই ডাটা নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি ভালো ফল পাওয়া যাবে এবং তা সবাইকে জানানো হবে।

একমাত্র বিশুধ্য পানিই পারে এই বিষ থেকে আমাদের ধুরে রাখতে। আসুন আমরা সবাই বিশুধ্য পানি পান করি এবং সবাইকে উদবুদ্ধ করি।

উল্লেখ

http://epaper.prothom-alo.com/

http://www.grameenveoliawaterltd.com/

http://www.thelancet.com/

0 Shares

৫৩টি মন্তব্য

  • জিসান শা ইকরাম

    পানির অপর নাম জীবন, এটি আমি হারে হারে টের পেয়েছি।
    বিশুদ্ব পানি পান করতেই হবে আমাদের। একগ্লাস অবিশুদ্ব পানি পান করে নিজের জীবন নিয়েই শঙ্কায় পরে গিয়েছিলাম ২০০৯ সালে। শেষ মুহুর্তের লিভার অপারেশন করে জীবন রক্ষা।

    অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি পোষ্ট দিলেন।
    লাল রঙের এলাকা তো বাংলাদেশের অনেক খানি স্থান দখল করে আছে।
    মাত্র ১০০ মিলিগ্রাম আর্সেনিক একজনের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ঠ!

    আর্সেনিক নিয়ে বিস্তারিত লেখার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

    • নাসির সারওয়ার

      বলেন কি! তার মানে আপনার কলিজার জোর কমে যায়নি তো!! ভাই, আবার কোমরে হাত যেনো না যায়।
      আমাদের এই উপমহাদেশে এ আর্সেনিকের বেশ প্রভাব আছে। আমাদের দেশেতো মোটামুটি সব জায়গাতেই জুড়ে আছে এই বিষ। অবাক হবেন যেনে, একজন আরসেনিকোসিস রোগীর সন্তানও অনেক রোগ নিয়ে এই পৃথিবীতে আসে যা আমাদের জন্য শঙ্কার কারণ।
      আপনার ধন্যবাদ আমাকে আরো উৎসাহিত করছে। ভালো থাকুন।।

  • ছাইরাছ হেলাল

    এই নিরব ঘাতক নিয়ে পূর্বে কিছু কথাবার্তা শোনা গেলেও এটি এখন অন্যান্য ডামাডোলে
    ভুলতে বসা একটি মামুলি বিষয়, এক কথায় তামাদিও বলাই চলে।

    এ ভয়ানক প্রাণঘাতি রাসায়নিকটি তিলে তিলে আমাদের মেরে ফেলছে, নিরব ঘাতক হিসাবে। আপনি এই খুবই জরুরী গবেষণা কাজের সাথে আছেন জেনে আমরা আনন্দিত।
    সুপেয় পানি পানের জন্য একান্ত সতর্কবার্তা হিসাবে এ লেখাটি কাজ করবে এমন আশাই করি।
    লক্ষণ ও প্রতিকারের বিষয় স্পষ্ট করে বলে আমাদের আরও সতর্ক করতে সাহায্যই
    করলেন, এমন মূল্যবান বিষয় এখানে এনে সোনেলাকে সত্যিই সমৃদ্ধ করলেন,
    ধন্যবাদ দিচ্ছি।

    • নাসির সারওয়ার

      আমার মনে হয় আমাদের আরও সচেতন হওয়ার প্রয়োজন যেমন আমরা এইডস বা ধূমপান বিষয়ে দেখছি। আর্সেনিক আস্তে আস্তে আমাদের মেরে ফেলছে কিন্তু আমরা কতটুকুই বা তা জানি।
      সোনেলা আমার ঘর বাড়ীর মত। এই তথ্যগুলো এখানে আনা আমার দায় থেকেই এসেছে। আশা করি আমরা সচেতন হবো। ভালোলাগা মানুষদের সুপেয় পানি পান করতে উৎসাহ দেবো। যারা এই রোগে আক্রান্ত, তাদেরকে চিকিৎসা নিতে সাহায্য করবো।
      অনেক শুভেচ্ছা আপনার অনেক মুল্যবান মন্তব্যের জন্য।

  • আবু খায়ের আনিছ

    মাঝের কিছুটা সময় এই আর্সেনিক নিয়ে প্রচার প্রচারণা ছিল কিন্তু এখন আর চোখে পড়ে না। প্রয়োজনীয় পোষ্ট, সবার জানা প্রয়োজন আছে।

  • ব্লগার সজীব

    অনেক কিছু জানলাম পোষ্ট থেকে। অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট, পোষ্ট বোর্ডে পিন দিয়ে আটকিয়ে রাখার জন্য অনুরোধ করছি সোনেলার প্রতি।

  • নীলাঞ্জনা নীলা

    পুরো সিলেট বিভাগ দেখছি আর্সেনিক যুক্ত এলাকা! এখন অনেক বেশী চিন্তা হচ্ছে আমার বাবা-মায়ের জন্য। আর্সেনিক নিয়ে লেখাটা দিয়ে খুব ভালো করেছেন ভাইয়ূ। আরোও ভরসা পাচ্ছি আপনি এটি নিয়ে গবেষণায় আছেন। শুধু জানতাম আর্সেনিকের কারণে লিভার এবং স্কিন ক্যান্সার হয়।

    অনেক কিছু জানলাম। এতোদিন না লিখে পুষিয়ে দিলেন এমন একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ পোষ্ট দিয়ে।

  • ইলিয়াস মাসুদ

    আমি জানি তো,কবি বলুন গবেষক সোনেলায় ঐ এক জনই…….
    সত্যি আজ কাল মানুষ প্রায় ভুলেই বসে আছে এত বড় ঘাতক কে।
    আরো সম​য় নিয়ে লিংকে গিয়ে সব প​ড়বো….

  • গাজী বুরহান

    গ্রামে একটি কথা এখন সবার মুখে যে আর্সেনিক-টার্সেনিক এগুলা কিচ্ছুনা। তাঁদের যুক্তি মাঠির এত গভীরে কিসব আসবেই কি করে। এদের কি করে বুঝাই?

    আর দেখতে পাচ্ছি সিলেট পুরো বিভাগ টাই! OMG

  • শুন্য শুন্যালয়

    লেখা এখনো পড়িনি। পড়ে মন্তব্য দেবো। শুধু বলতে এসেছি, তিন বছরেও একখান লেখা স্টিকি হইলো না। আর আপনি দুই তিনখান লেইখ্যাই? মডুদের সাথে যোগসাজশ তো ভালোই আছে দেখি, আমাদের নামও পারলে একটু সুনজরে রাইখ্যেন ভাইয়ো।

  • শুন্য শুন্যালয়

    বাব্বাহ, এতদিনে না বুঝতে পারলাম কেনু ভাউ লেখা দিতে এত্ত অপারগ। সব কবিতা দেখি ল্যানসেটে জমা করে রেখে আসে!! বুকমার্ক করে রাখছি, এরপর থেকে সব কবিতা পইড়া আসবো।
    বহুবছর আগে বেশ জোরেশোরে টিউবওয়েলে লাল আর সবুজ কালি লাগাবার ব্যবস্থা হয়েছিল, এরপর আবার যা তাই, আমাদের জীবনের মূল্যমান সরকারের কাছে বড়ই তুচ্ছ, কি আর করার। তবুও যাদের কাছে সম্মান পাবার তারা ঠিকই দিয়েছিলেন।
    ৯ বছরে ৪০৭ জনের মৃত্যু, এতো রীতিমত এলার্মিং। দারুন গুরুত্বপূর্ন পোস্ট, কাজে লাগবে আমারো। আর্সেনিক, ফরমালিন–ক্যাম্নে যে বেঁচে আছি আমরা কে জানে!!

    • নাসির সারওয়ার

      কি যে বলেন! ল্যানসেটে লেখা অত যায় না তো শুন্যাপু। ঐ ম্যাগাজিনে লেখাতো বেশ হনু হনু ব্যাপার। তার ছেয়ে ছড়ানো ছিটানো হরেক রকম ম্যাগাজিনের লেখা এই লিংকে পাবেন –

      https://www.researchgate.net/profile/Sarwar_Golam2/publications

      ঢাকার অদূরে একটা আদর্শ উপজেলায় আমরা অনেকগুলো টিউবওয়েল বসিয়েছি (পশ্চিমা সাহায্যে)। পুরানো সব টিউবওয়েলের পানি পরিক্ষা করে লাল সবুজ ট্যাগ লাগিয়েছি। ওখানকার মানুষদের আমরা সজাগ করতে পেড়েছি এবং তারা আর দূষিত পানি পান করছেনা। সরকার একাতো সব করতে পারবেনা। আমাদের সবারই এগিয়ে আসা উচিৎ।
      শুধু সন্মানে হবেনা আপু। যাদের কাজের সুযোগ আছে, তাদের সামনে আসতে হবে। আপনার উৎসাহ আমাকে সাহায্য করছে সামনে এগুতে।
      ভালো থাকুন। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

      • শুন্য শুন্যালয়

        দ্যাটস ট্রু, সরকারের একার পক্ষে সব সম্ভব নয় করা। একসময় আর্সেনিক এড়াতে তারাকল লাগানোর প্রজেক্ট চালু হয়েছিল, সেটার কি অবস্থা এখন? আপনি যেই কল লাগানোর কথা বলছেন, সেগুলোই কি তারাকল? এটি ১০০% আর্সেনিক ফ্রি হলে তো আর্সেনিক এড়ানো খুব কঠিন কাজ নয়, শুধু একটু সজাগ আর সাহায্য দরকার, আফটার অল মানুষের কাছে টাকা কিন্তু এখন কম নেই। সচেতনতাই সবচাইতে বেশি জরুরী।
        এমন দামী আর ভারী ওজনের পোস্ট চাই আরো। -{@

      • শুন্য শুন্যালয়

        বাব্বাহ, 34 publications by you? গরীব মানুষ হিরা না চিনলে যা হয় আর কি, কাঁচ ভেবে ফেলে রাখা। পড়বো সময় পেলেই। থাংকু মেনি মেনি 🙂

      • নাসির সারওয়ার

        না, তারাকলও আর্সেনিক এড়াতে পারেনা। আমরা ডিপ টিউব বসিয়েছি।
        তবে কিছু ফিল্টার আছে যা দিয়ে কিছুটা দূষণ কমানে যায়। তার চেয়ে মানুষেরা পরীক্ষিত টিউব এর পানি পান করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। আমরাই পারি আমাদের দেশের জন্য ভালো কিছু করতে।
        অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। উৎসাহ দেয়া চলতে থাকুক।।

  • অনিকেত নন্দিনী

    বিশুদ্ধ পানির অপরিহার্যতা আগে জানা থাকলেও গতবছর হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। কন্যা বাইরে গিয়ে ফুচকা খেয়ে কঠিন টাইফয়েড বাঁধিয়েছিলো যার ফলশ্রুতিতে মা-মেয়ে গত কোরবানির ঈদ কাটিয়েছি আই সি ইউতে। 🙁
    আর্সেনিক নিয়ে মাঝে কয়েকদিন বেশ হৈহল্লা শুনেছি, আজকাল আর কিছুই শুনিনা। কোন এলাকায় আর্সেনিকের ব্যাপকতা থাকলে সেক্ষেত্রে ওই এলাকার লোকজনের করণীয় কী তা নিয়েও কিছু শুনতে পাইনা।
    নবিশ আজকাল গবেষণা লইয়া এতো ব্যস্ত? তা বেশতো! আমার নবিশ দেশের কল্যাণে বিদেশিগো লগে এত্তো গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করে জানতে পাইরা নিজেরে হনু হনু মনে হইতাছে। (চশমা পিন্দা ইমোর অভাবে ভুগিতেছি ;( )

    • নাসির সারওয়ার

      আমার টিচারের এইবার কোরবানির ঈদ হবে দিগুণ আনন্দের। তার জন্য দরকার হলে অস্ট্রেলিয়া যাবো গরু কিনতে।
      সরকার একা পারবেনাতো। সচেতন নাগরিক হিসাবে আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে। আমার কিছু করার সুযোগ এসেছে, আমি করে যাচ্ছি। আপনার সুযোগ আসলে আপনিও করবেন তা আমি জানি।
      আর হনু হনু মনে কইরা কি অইবো। কত ইচ্ছে হয় আপনাদের মত এত্তু লেখতে। পারলাম কই!! মনে হয় বড় হইলেই পারুম।
      ভালো থাকুন টিচার। আপনাকে যেন আরও সন্মান এনে দেখাতে পারি, দোয়া করবেন।

      • অনিকেত নন্দিনী

        এবারে কোরবানি ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ-চতুর্গুণ হবে ইনশাআল্লাহ। 🙂
        গরু কেনার জন্য আমারেই না হয় বাচ্চাকাচ্চা সমেত অস্ট্রেলিয়া পাঠাইয়া দিতেন! আমরা ইহজীবনে অস্ট্রেলিয়া যাইনাই। 🙁
        গরু কেনার উসিলায় বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে একটু ঘোরাঘুরি করতে পারতাম তো সেই সুযোগখানিও নিয়ে নিলেন? আফসোস! 🙁
        দোয়া থাকবে অবশ্যই, ছিলো এবং আছেও। 🙂
        হনু ভাব লওনের লাইজ্ঞ্যা চকচকা দেইখ্যা মোরে এউজ্ঞা চানগেলাস কিন্ন্যা দিয়েন মনু। -:-

      • নাসির সারওয়ার

        আহারে, আমিও অস্ট্রেলিয়া যাই নাই আমার ইহজীবনে। আপনার লগে একখান চান্স নিমু ভাইবাইতো এমন দোয়া।
        চলেন টিচার, ঐ দেশখান দেইখা আসি। ওইডা নাকি এক্ষান তরতাজা দেশ!!!

  • মিথুন

    আপনাদের গবেষণা বিশ্বের গবেষকদের টনক নড়িয়ে দিয়েছিল, এটাতো আমাদের দেশের জন্য অনেক গর্বের, আর তা কিনা আমাদের দেশেই মূল্যায়ন পায়নি? 🙁 আর্সেনিক নিয়ে বেশ হৈহুল্লোড় হয়েছিল একসময়, এখন্তা শেষ। আমরা মানিয়ে নেয়া জাত। অনেককিছু জানলাম আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে ভাইয়া। ছবি সহকারে বুঝিয়ে দিয়েছেন আপনার অভিজ্ঞতা দিয়ে। পোস্টে অনেকগুলো +++++ …

    • নাসির সারওয়ার

      “আমরা মানিয়ে নেয়া জাত”। বেশ বলেছেনতো!
      আরসেনিক যে ভয়াবহ বিষ, তা মনে হচ্ছে সবার জানা নাই। বা জানার সেই সুযোগ আমাদের নাই। তবে সচেতন হতে হবে যত তাড়াতাড়ি পারা যায়।
      চেষ্টা করেছি সোনেলার পাঠকদের কথা ভেবে। আশা করি আপনার ভালোলাগা মানুষদের আপনি সচেতন করতে সাহায্য করবেন।
      আপনার লেখা দেখিনা অনেক দিন। তা ভালোবাসায় রক্তারক্তি কি আর হচ্ছেনা!!

  • মিষ্টি জিন

    পানিই জিবন পানিই মরন…আর্সেনিক সমনধে বেশ কয়েক বছর আগে বেশ লেখা লেখি হয়েছিল , এর বিষক্রিয়া সমন্ধে তখন কিছুটা জেনেছিলাম আর আজ আপনার মাধ্যমে বিস্তারিত জানলাম
    সরকারের পাশাপাশি এনজিও গুলোর ও উচিত আর্সেনিকের বিষক্রিয়া সমন্ধে গনসচেতনতা মুলক কার্যক্রম গড়ে তোলা।

    • নাসির সারওয়ার

      বেশ কিছু এনজিও এই বিষয়ে কাজ করছে। কিছু কিছু জায়গায় মানুষ আর দূষিত পানি পান করছেনা। তবে জনগণকে সচেতন করতে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।
      একদিন অবশ্যই সবাই আমরা শুধ্য পানি পাবো।
      আপনাকে কি প্রথম দেখলাম সোনেলাতে! ভালো থাকুন, সোনেলাতে থাকুন। নিজে লিখুন এবং অন্যের লেখা পড়ুন। শুভেচ্ছা রইলো।

  • লীলাবতী

    আপনি তো ম্যালা জ্ঞানী লোক। ভাইয়া কি এ বিষয়ে ডক্টরেট নাকি? রিসার্চ এর কাজ করছেন, শুনলেই তো ভয় লাগে। জীবন যাপনের জন্য বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন সবার প্রথমে।

  • অপার্থিব

    মানচিত্র যা দেখলাম তাতে রেড মার্কই তো বেশি হলে মনে হচ্ছে। সাম্প্রতিক কালে আর্সেনিক সম্পর্কিত প্রচার প্রচারণা সম্ভবত কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে। চর্ম রোগকে অবহেলা করার প্রবণতাও আমাদের মধ্যে একটু বেশি কাজ করে। পোস্টটা জন সচেতনতা বাড়াতে সহায়তা করবে নিঃসন্দেহে।

  • মৌনতা রিতু

    পোষ্টটি পড়েছিলাম, কিন্তু মন্তব্য করা হয়নি। এই সম্পর্কে এত জানতাম না। পরে পোষ্টটি পোড়ে আরো জানার ইচ্ছে হল। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের মানুষেরই এই রোগটি হবার সম্ভবনা সব থেকে বেশি। এই সম্পর্কে মানুষ এখন আসলেই সচেতন হয়েছে। এ জন্য কাজ করছে এনজিও গুলো সব থেকে বেশি।
    তবে প্রাকৃতিক একটা দুর্যোগের পরে পুনরায় এইসব নলকূপের পানি পরীক্ষা করা উচিৎ। কিন্তু তা আর হয় না। বাংলাদেশের একেবারে দক্ষিণের মানুষের পানির জন্য নির্ভর করতে হয় বৃষ্টির পানির উপরে। এক বরষার পানি ঐ অঞ্চলের মানুষ সারাবছর সংরক্ষন করে ব্যবহার করে। এই পানিতে প্রচুর পোকা হয়। অথচ সরকার থেকে এর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না। এখানেও কাজ করছে এনজিও গিলো। সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মিদের এসব বিষয়ে কাজ করতে হয়, কিন্তু তারা কখনোই মাঠ পর্যায়ে কাজ করে না। কোনোরকম খাতায় সই করে টাকা নেয়।
    এই পোষ্টটি অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ একটি পোষ্ট। অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ