জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ সরকারের ২০তম বাজেট উত্থাপন হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের এটা প্রথম বাজেট। বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো বাজেটের আকার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের শিরোনাম দিয়েছেন- ‘সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের’।

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব ব্যয়ের পরিমাণ তিন লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় (এডিপি) দুই লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তবে, প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি থাকবে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এই প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।

বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। আর ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হবে। সেই সঙ্গে বৈদেশিক সহায়তা বাবদ ঋণ নেয়া হবে ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা।

এবার বাজেটে ভ্যাট আইন কার্যকর করার বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকবে। আইন কার্যকর করতে ভ্যাটের একটি স্তর ভেঙে ক্রেতার সুবিধার্থে তিন থেকে পাঁচ স্তরের ভ্যাট কাঠামো তৈরি করার কথা উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়া সহজ করতে এনবিআরের জন্য নতুন করে দিকনির্দেশনা থাকবে। আর সঞ্চয়পত্রের সুদহার না কমলেও এ বিষয়ে নতুন কিছু দিকনির্দেশনা থাকবে।

চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) মূল বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় সংশোধিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে আসন্ন বাজেটের আকার চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকারের চেয়ে ৮০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বেশি।

তবে,বিশাল আকারের বাজেট করতে গিয়ে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা ঘাটতি রাখছেন অর্থমন্ত্রী। এই ঘাটতি ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের পাশাপাশি বিদেশি ঋণ ও অনুদান নিয়ে মেটানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

এরই মধ্যে করের আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই ভ্যাট আইন কার্যকর করার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আমদানি পর্যায়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে দেশের সব বন্দরে স্ক্যানার মেশিন বসানোর পরিকল্পনাও রয়েছে বাজেটে। এর ফলে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক আদায় বাড়ার পাশাপাশি আমদানি-রফতানির আড়ালে অর্থপাচার রোধের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। এসব লক্ষ্য সামনে রেখেই নতুন অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরকে তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হচ্ছে।

নতুন অর্থবছরের পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। এর মধ্য থেকে সরকারের আবর্তক ব্যয় ২ কোটি ৭৭ লাখ ৯৩৪ কোটির মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে ৫২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা ও বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ৪ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ ছাড়া সরকারের মূলধন খাতে ৩২ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বাজেটে উন্নয়নখাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। সেখান থেকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাবদ ২ লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল (এনইসি)। এ ছাড়া এডিপি বহির্ভূত বিশেষ প্রকল্প, স্কিম ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতে বাকি অর্থ ব্যয়ের প্রস্তাব করা হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা)কর্মসূচিতে নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা।

বিদেশ থেকে অনুদান না পেলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি দাঁড়াবে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এটি মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ৫ শতাংশ। তবে বিদেশি অনুদান পাওয়া গেলে এই ঘাটতি দাঁড়াবে ১ লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে বিদেশ থেকে ৭৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এই বাজেটে।

এই বাজেটে দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের-

বাজেটে কিছু পণ্যের শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করায় এসব পণ্যের দাম বাড়বে।

দেশীয় শিল্প রক্ষায় যে সকল পণ্যের আমদানি শুল্ক-কর বাড়ানো হয়েছে, সেগুলো হলো— গুঁড়ো দুধ, অপরিশোধিত চিনি, পরিশোধিত চিনি।

প্রাকৃতিক মধুর আমদানি শুল্ক ১০ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

অলিভ ওয়েল আমদানি শুল্ক ১০ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।

ওভেন, বিভিন্ন ধরনের কুকার, কুকিং প্লেট, গ্রিলার, রোস্টারের সম্পূরক শুল্ক ০ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।

স্মার্ট ফোনের শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।

আইসক্রিমের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ।

মোবাইল ফোনে কথা বলায় খরচ বাড়ছে।

সয়াবিন তেল, পাম ওয়েল, সান ফ্লাওয়ার তেল, সরিষার তেলের আমদানি পর্যায়ের ওপর মূসক আরোপ করা হয়েছে।

টিভি ও অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সরবরাহকারী, স্থানীয় পর্যায়ে জ্যোতিষী ও ঘটকালিতে মূসক আরোপ।

প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি তৈজসপত্র আমদানিতে মূসক আরোপ।

যাত্রীবাহী বাস, স্কুল বাস, ট্রাক লরি, থ্রি হুইলার ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সব প্রকার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, রুট পারমিট, ফিটনেস সনদ, মালিকানা সনদ নবায়ন ও গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিশোধিত চার্জের ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ।

চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টারের সম্পূরক শুল্ক বেড়েছে।

আমদানি করা মোটরসাইকেলের দাম বাড়বে।

দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের-

ক্যানসার প্রতিরোধক ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত উপকরণের শুল্ক কমানো হয়েছে।

পাউরুটি, বনরুটি, হাতে তৈরি কেক প্রতি কেজি ১৫০ টাকা পর্যন্ত মূসক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

কৃষি যন্ত্রপাতি পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হারভেস্টর, লোরোটারী টিলার, লিস্ট পাম্পের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করায় এসব পণ্যের দাম কমবে।

বাজেট নিয়ে আমার কিছু কথাঃ

বাজেট একটি দেশের চলমান অর্থনীতির ধারক এবং বাহক। দেশের উন্নয়ন এবং জনগনের জীবন যাপন প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে একটি জনকল্যাণমুখী বাজেটের বিকল্প নেই। বাজেট যে কোন দেশের সামগ্রিক গতিময়তার মানদন্ড নির্ধারণের প্রধান চাবিকাঠি।

বাজেট নিয়ে বড় বড় বক্তৃতা দেবেন দেশ বিদেশের অর্থনীতিবিদগন। পক্ষে বিপক্ষে বলবেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। আমি এসবের কোনওটাই নই। সাধারন মানুষ হিসেবে তাই আমি আমার নিজের ভাবনার কথা বলি-

বিজিএমইএ, বিসিসিআইতো ইতিমধ্যে বলেই দিয়েছে এ বাজেট জনবান্ধব এবং জনকল্যাণমুখী। সত্য মিথ্যে সময়েই বলে দেবে। আর মিথ্যে হলেও আমরা একসময় অভ্যস্ত হয়েই যাই আসলে। আর এ কারনেই কিছু কিছু বিষয়ে আমাদের প্রতিবাদ করার মানসিকতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যার সুযোগ নিচ্ছে বড় বড় হর্তাকর্তারা।

কখনও কি জেনেছেন দেশে এখন মাথাপিছু আয় কত, সেটা ব্যয়ের সাথে সংগতিপূর্ণ কিনা? কিংবা এ বছর মাথাপিছু দেশের ঋনের পরিমাণ কত? যে শিশুটি আজ জন্মগ্রহন করলো বা করবে সে কত টাকা ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্মগ্রহন করলো বা করবে?

আমার এই বক্তব্যের সাথে কিছু মানুষের কথার দ্বিমত হবে। তারা এক কথায় বলবেন- কোনদিন কি মাথাপিছু ঋনের এই টাকা আপনাকে বা আপনার সন্তানকে কিংবা কোন নবজাতককে পরিশোধ করতে হয়েছে? কিংবা ব্যাংক থেকে আপনার কোনো টাকা লোপাট হয়েছে? তাহলে আপনার এত মাথাব্যথা কেন? তাদের বলছি- ভাইরে এই যে বাজেট ঘাটতি এটা কি জন্য জানেন? বোঝেন? এসব বুঝেন আগে তারপর আলোচনায় আসেন। কিভাবে এই ঘাটতি মেটানো হয় জানতে হলে আপনার উপার্জন কোন কোন খাতে বেশী ব্যয় হচ্ছে তা লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন। এর থেকে সহজভাবে বোঝানো আমার পক্ষে আর সম্ভব না।

অথচ শুধুমাত্র মাথাপিছু ঋনের পরিমান বাড়ছিলো বলেই বৃটিশ নাগরিকরা আন্দোলন করে ব্রেক্সিট ইস্যুর শুভ সুচনা করেছিলো। কারন বৃটিশ নাগরিকগন ঠিকই বুঝতে পেরেছিলো মাথাপিছু এ ঋনের টাকা সেই জনগনকেই পরিশোধ করতে হয়, হচ্ছে, হবে। তাদের মাথাপিছু আয় কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের চেয়ে অনেকগুন বেশী। শুধুমাত্র নিজেরা সচেতন বলেই তারা সফল আন্দোলন করতে বাধ্য হয়। যে দেশে সংসদে বাজেট উত্থাপন হলে রাস্তায় তার সমর্থনে মিছিল বের হয় সে দেশে আন্দোলন একদম অকল্পনীয়।

আমাদের দেশের একজন দিনমজুর রাতে বিছানায় শুয়ে চিন্তা করেন, আগামিকাল কাজ না পেলে খাবে কি আর পরিবার চলবে কিভাবে? কৃষকের চিন্তা আসে এবারে শস্যের ন্যায্যমূল্য পাবো তো? এসব বড় বাজেট নিয়ে তাদের মাথাব্যথা খুব একটা হয়না। তারা শুধু বোঝে আজ বাজারে জিনিসের দাম বাড়লো নাকি কমলো? তাহলে বাজেটকে সাধারণ মানুষের বাজেট বলা হয় কেন? এই সাধারণ মানুষ কারা?

আমাদের বাঙালী জাতির চামড়া হচ্ছে গন্ডারের চামড়া। যা সওয়াবেন তাই সইবে। তাই এই বাজেট নিয়ে দু'একদিন চিল্লাফাল্লা হবে, বিদেশি কিছু সংস্থা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরবে বাজেটের নেতিবাচক দিকগুলি। তারপর সবাই সব ভুলে আবার সেই লাউ সেই কদু অবস্থায় গলায় গলায় পিরিত করবে।

প্রতিবছরে এই একটিমাত্র সময়ে এসব সংস্থার দেখা পাওয়া যায়। বাকী সময় এরা ঘুমায়। শুধুমাত্র লক্ষ কোটি টাকার বাজেটের সময়েই এদের গলার আওয়াজ পাবেন। দুই চার পাঁচশ কিংবা হাজার টাকায় দিনানিপাতকারী সাধারন মানুষের দুর্ভোগের কাছে এরা হচ্ছেন আমড়া কাঠের ঢেঁকীর মত।

আমি শুধু বুঝি, যে জিনিস প্রতিদিন আমি ৮০ টাকা দিয়ে কিনতাম এখন সেটা আমাকে ১০০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। তারমানে প্রতিদিন ২০ টাকা করে মাসে ৬০০ টাকা, বছরে ৭২০০ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে আমাকে। এর পরের বছর এই প্রক্রিয়া চলমান থাকলে নিজের কষ্টার্জিত উপার্জন থেকে গচ্ছা যাবে ১৪৪০০ টাকা।

আমি জোড় গলায় বলতে পারি, আমার জন্য এ বাজেট নয়। তাহলে যারা কোটি টাকার গাড়িতে করে যাতায়াত করে রাস্তায় জ্যাম সৃষ্টি করেন; বিজিএমইতে, বিসিসিসিআই এর নরম চেয়ারে বসেন এ বাজেট কি তাদের জন্য? তারা কিন্তু সবাই আবার বড় বড় ব্যবসায়ী। মাসে ৬০০ টাকা গচ্ছা তাদের কাছে ডালভাত।

সহনশীল, জনকল্যাণকর বাজেট সংসদে উপস্থাপিত হওয়ায় স্বাগত মিছিলে সামিল হওয়া একজনকে জিজ্ঞেস করলাম - ভাই দেশের উন্নয়ন কি তা বোঝেন?
তার উত্তর ছিলো- হুর মিয়া! কি কন না কন? এই যে বাজেট ঘোষণার খুশিতে মিছিলে সামিল হইতে পারছি এইটাইতো উন্নয়ন, আপনে কি বেকুব নি?

উন্নয়নের নতুন সংজ্ঞা শিখতে পেরে মনে মনে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি মুচকি হেসে চলে এলাম। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষও এখন উন্নয়ন বোঝে। নিশ্চিত দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

দেশের মানুষ কি জানেন - হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের ফলে শেয়ারবাজার ও ব্যাংকগুলোতে যে লোকসান হয়েছে, আর্থিক ধ্বস নেমেছে তা এই বাজেটের অর্থ থেকেই পরিশোধ করা হয়? কে বা কারা পরিশোধ করবে? আমাদের জনগণকেই তা করতে হবে কিন্তু। কথাটা ভাববেন ভালো করে।

আমি দেশের বিজ্ঞ বাজেট প্রণেতাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী, ব্যবহার্য অত্যাবশ্যকীয় বস্তু সমূহ, মোবাইল কলরেট এবং সব ধরনের ঔষধ অতিরিক্ত মুল্য সংযোজনের তালিকা থেকে বাদ দেয়ার বিনীত দাবী জানাচ্ছি। যাতে ন্যূনতম মৌলিক অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত না হয়।

কৃষি যন্ত্রপাতি, সবধরনের সার, কীটনাশক, বিদ্যুৎ চালিত পানির মোটরে ব্যবহৃত বৈদ্যতিক সরঞ্জাম, বিদ্যুৎ, ডিজেল চালিত পানির পাম্প, ডিজেল এসবের মুল্য না কমালে কৃষক কোনদিনও লাভবান হবেন না। কারন গ্রামে এখনো অনেকেই লাঙল দিয়ে চাষাবাদ করেন। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত চাষাবাদের যন্ত্রের দাম বাড়িয়ে এবং দেশীয় যন্ত্র যেমন পাওয়ার টিলারের দাম কমিয়েও সেসব সাধারণ কৃষক উপকৃত হবেন না নিশ্চিত।

কিন্তু সবচেয়ে ভালোলাগার যে বিষয়টি তা হচ্ছে আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি। এসব বিষয়ে আন্দোলন করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা আমরা মোটেও পছন্দ করিনা। আর তা উচিতও নয়। আমি, আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি- আলোচনার মাধ্যমে সবকিছুর সমাধান করা সম্ভব। এবং এক্ষেত্রে আমরা অনেকাংশেই সফল। কারন আমাদের আছে ভালোবাসা, সহানুভূতি, সহমর্মিতা এবং মানবিক গুন সম্পন্ন একজন যোগ্য প্রধানমন্ত্রী।

সরকার প্রধান এবং তার সহযোগী মন্ত্রীগন অত্যন্ত বিচক্ষণ মানুষ। তারাই বুঝবেন এ বাজেটে কাদের লাভ কাদের ক্ষতি হবে। মাত্র বাজেট পেশ হলো। এখনও সংশোধন, পরিমার্জন সহ অনেক কিছু বাকী আছে। বাজেটের এত বড় ঘাটতি পূরণ করার জন্য তার সু- নির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করি।

তবে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে দেশের জন্য নিজেকে উৎস্বর্গকৃত সকল জীবিত এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদেয় মাসিক মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি। সরকার এই বিষয়ে অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আপনি আমাদের সকল আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। অনুগ্রহ করে সবদিক বিচার বিশ্লেষণ করে একটি জনকল্যাণমুখী বাজেট আমাদের উপহার দিন যাতে জনগন উপকৃত হয়। সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ উপকৃত হলে তাদের সাথে আমরা সকলেই যাতে দেশের উন্নয়নে সামিল হতে পারি সেদিকে সু-দৃষ্টি রাখবেন আশাকরি। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এতটুকুতো আপনার কাছে চাইতেই পারি তাইনা? আমরা সাধারণ মানুষ আপনার মতন মমতাময়ী এবং সুযোগ্য নেতৃত্ব দানে সক্ষম একজন সফল প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত নতুন দিগন্তের পথ চেয়ে বসে থাকি প্রতিনিয়ত ।

(তথ্যসূত্র সমূহ নীল কালিতে হাইলাইটেড)

ছবিঃ যুগান্তর

0 Shares

৩৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ