নালিশ শুনতে শুনতে আমি যেন ডিব্বা হয়ে গেছি আজ। কিসের যে ডিব্বা? সেটাই গুনে বেছে আলাদা করতে পারছি না। ক’মাস হলো কোভিড-১৯ বদ্বিপ খ্যাত বাংলা ভূখন্ডের আকাশে-বাতাসে দোর্দন্ড প্রতাপে চড়ে বেড়াচ্ছে? অনেকেই চট করে কড়ে আঙুলের হিসাবিজ্ঞানের সহজ সমাধান দিয়ে কষে দেবেন দিন-ক্ষন- মাস-তারিখ।
মজার ব্যাপার হলো, লকডাউন ঘোষনার আগ পর্যন্ত কারো হুঁশ ছিলোনা পরিস্থিতী কতটা কার জন্য কেমন হবে? ফেসবুকে ভেসে যাচ্ছে সতর্কতার বানী। একটাই শ্লোগান….ঘরে থাকুন,সাবধানে থাকুন, সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন।
ট্রল হচ্ছে….স্বামী সকল সব বাইরের কাজবাজ বন্ধ করে ঘরে থাকুন। একেকজনার লিষ্টি তৈরী হতেও দেরি হয়না। কেউ কেউ এমনও ট্রল করছেন…… স্বামী’রা বউদের খিটখিটে আচরনে অত্যাচারিত না হন। ওরে ভাই ব্রেদাররা একবার ভেবে দেখার সুযোগ করেছেন কি? লকডাউন মানে লকডাউন! কাজে সাহায্য কারীও লকডাউনে পাঠিয়ে দিয়েছি নিরাপত্তার কথা ভেবেই। সব কাজ নিজেদেরই ভাগাভাগি করে করতে হয়! তারওপর দেখতে না দেখতে শবইবরাত এসে চলে গিয়ে রমজান মাসও হাজির হলো দুম করে।
কি অবস্থা হতে পারে আমাদের মতো ঘরের টিপিক্যাল ঘরোয়া বউদের? দুই চক্ষু কি পকেটে রেখে ভাইসাহেবরা নাকে তেল দিয়ে লকডাউনে শুধু ফাইফরমাস দিয়েই মজা নিতে চাচ্ছেন? প্রচন্ড হাঁফিয়ে ওঠার ফাঁকটুকু পাওয়া এখন সোনার হরিণ। ও সোনার হরিণ তরার জন্য বনে বাঁদাড়ে দৌঁড়বার সময় কই?
নিয়মের চেয়ে দশগুণ কাজ বেড়ে গেছে। কে কতটা আন্দাজ রাখছেন বলুন তো? সাহায্য করার নামে আপনারা আগেও যা করতেন! এখনো তাইই করেন। আমাদের নিজস্ব কাজ তো আমাদেরকেই করতে হচ্ছে নাকি?
সেটুকু যদি হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে একটা দিন বলেন– আজ একটু বিশ্রাম নাও, আজকের তোমার সব কাজ আমি আমরা করে নিচ্ছি”…. তাইলে আর পাইতো কে আমাগোরে😏
টুকটাক লিখালিখি করি বলে, মরছি আরো মরা😥😥 আরে বাবা লেখা কি হাতের মোয়া? কইলেই হইলো, মাথায় গাঁট্টা মারলেই, মাথা ব্যাথায় নয়, ঝরঝর করে লেখা চলে আসবে?
আবার অভিযোগও ছাড়েন না….. ব্লগে কম আসে, সব পোষ্টে মন্তব্য করে না, মুখ চেনা পরিচিত ছাড়া কেউ কারো পোষ্ট টাচ্ করে না। কে চেনে কারে একটু বলবেন? আবার কে চিনি না কারে তাও একটু বলে বোঝান তো আমারে?
এ লেখা পড়ে ভাবছেন খুব রেগে আছি? না– প্লিজ, তা ভাববেন না।
ধরে নিন, ফিরিস্তি দিতেই এ লেখা লিখতে আগ্রহী হলাম। আমরা একটু সহনশীল না হয়ে কি নিভৃতে আরো বেশি অস্থির হয়ে উঠছি না দিনকে দিন? ফেসবুক বলেন আর ব্লগ বলেন, সব জায়গায়ই যদি কমেন্টের জন্য সবাই ধরাধরি করি তাহলে লেখকের মান রইলো কোথায়? তবে কমেন্ট পেলে লেখকের পরবর্তি লেখায় আগ্রহটা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। হান্ড্রেট পার্সেন্ট সত্যি।
বর্তমান অস্থির সময়টাও একেবারে অস্বিকার করবো কিভাবে? রোজা, করোনা, বাড়তি কাজ, ইবাদাত। আমার কথা যদি বলি- তাহলে তা হয়ে যাবে একচেটিয়া।
একবার ভাবুন তো! সারাদিনে ব্লগে বা যত গ্রুপে যুক্ত আছি! সব জায়গায় যদি সমানভাবে সময় দেই, তাহলে কি আপাত দৃষ্টিতে কি বোঝায়? ২৪ ঘন্টার ৪৮ ঘন্টাই সব ফালাইয়া রাইখা মোবাইল, ল্যাপটপ,পিসি লইয়া পইরা থাকা? বায়োনিক ওম্যান হইনাই রে ব্রাদার- সিস্টার!
লিখছেন না কেন?
মন্তব্যে নাই কেন?
ফেসবুকে তো ঠিকই আসেন!
ওমা! লিখছি না বা মন্তব্য করার সময় পাচ্ছিনা বলে ফেসবুকে আসাও আমার গুণাহ্?? এই সময়ে বিনোদনও তো নিতে আসতেই পারি আমার এ্যাকাউন্টে আমি। তার মানে আমি ইচ্ছে করে এড়িয়ে যাচ্ছি আমার দায়িত্ব? পড়ছি, দেখছি, জানছি সমসাময়িক পরিস্থিতী। নিচ্ছি আরেকটু খবরাখবর। যোগাযোগ করছি অনেকের সাথে, শুধুমাত্র যাদের যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জার।
অনেক কিছু বলে ফেললাম বোধহয়।একটু ভাবুন না, আমার কথা! আমাদের কথা! যারা প্রতি ২৪ ঘন্টা অন্তর পোষ্ট দিচ্ছেন… স্বসন্মানে অভিবাদন জানাই। আপনারা সত্যিকারের নিবেদিত প্রাণ এই উঠোনের। পড়ার সুযোগটুকু করে দিচ্ছেন অক্লান্ত পরিশ্রমে। আপনাদের অবদান সত্যি স্মরনযোগ্য।
ইদানীং বরং মনোঃকষ্টে ভুগছি, কতগুলো লেখা বাকি পরে আছে, অথচ বসে সময় দিতে পারছি না, কিভাবে লিখবো? কিভাবে অন্যের লেখা পড়ে, বুঝে মন্তব্য দিবো? চমৎকার লেখা, অসাধারন লেখন শৈলী টাইপ মন্তব্য জীবনেও পারুমনা দিতে। ও জন্যেও পড়ে চলে যাই, মন্তব্য আর দেয়া হয়না। তাই বলে দোষ দেবেন না প্লিজ্😥😥
এমন করে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না অন্তত আমাদের মতো ছোটখাটো লেখকের প্রতি। এই উঠোন আমাদের সকলের অতি ভালবাসার উঠোন। একে অপরের সবাই সবার পরিচিত আমরা। সবাই সবার আত্মজন। এমন কখনোই নয় আমার পোষ্টে মন্তব্য পেলাম না বলে আপনার পোষ্টে মন্তব্য দিচ্ছি না। এমনটা ভাববার কোনো হীনমন্যতা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখি সর্বোত ভাবে। এই প্রার্থনা করি কড়জোড়ে।
সকলে সাবধানে থাকুন।
নিরাপদে থাকুন।
সতর্ক থাকুন।
সকলের মঙ্গল কামনায়।
২৯টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
প্রতিটি বাক্য খুব খুব ভালো লেগেছে। সত্যি আমরাওতো মানুষ , করোনার এই সময়ে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে পার করছি। বাড়ির পুরুষ মানুষ ঘরে থাকলে কাজ দ্বিগুণ বেড়ে যায়- যদি সেই ব্যক্তি শুয়ে , বসে কাটায় আর ফরমায়েশ করে। তারপর আবার স্যোসাল জগতে একটু ঢু না মারলে কেমন জানি মনে হয়। আপু আপনি আপনার মতো চালিয়ে যান এই দুঃসহ সময়ে। সোনেলার সবাই খুব ভালো, আন্তরিক। শুভ কামনা রইলো
বন্যা লিপি
অনেক ধন্যবাদ ছোটদি।
আগের সময় হলে আমি অন্তত নিজের পোষ্টের সব কমেন্টের রিপ্লাই দিতাম, এখন সে সময়টুকুও বাঘে খাইছে।
ভালো থাকবেন দিদি।
সঞ্জয় মালাকার
প্রতিটা শব্দ ভালো লাগলো দিদি,
দিদি করোনার এই সময়ে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে পার করছি,
প্রবাসে চারদেয়ালের দরজা বন্ধ ঘরে।
ঈশ্বর আল্লাহ সহায় হবেন, এই বন্দী দশা থেকে সবাইকে মুক্তি দিবেন।
ভালো থাকবেন দিদি শুভ কামনা রইলো।
বন্যা লিপি
অস্থির সময় কাটাচ্ছি আমরা মানসিক শারিরীক সব ভাবেই। তবু বলবো মানসিক অবস্থা স্থির রেখে ভালো থাকুন দাদা।সুস্থ্য থাকার চেষ্টা করবেন সব ভাবে। নিজে বাঁচলে বাপের নাম।জানেন তো?
সঞ্জয় মালাকার
হু ঠিক বলেছেন দিদি, নিজে বাঁচলে বাপের নাম।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় দিদি, আপনিও ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিরাপদ থাকবে সবসম।
শুভ কামনা 🌹🌹
ফয়জুল মহী
মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। অনেক ভাল লাগলো
বন্যা লিপি
বাহ্, মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ জানবেন।
শামীম চৌধুরী
বন্যা আপু,এমনিতেই আপনি খুব ভাল লেখেন। তারপর এটা একটু বেশী ভাল লাগলো।
বন্যা লিপি
পাখি ভাই, আপনার এই মন্তব্য আমার মেডেল পাবার মতো। ভালো থাকবেন। সাবধানে থাকবেন। শুভেচ্ছা।
শামীম চৌধুরী
আপু মেডেলটা দিবে কে? সেটা জানতে মনচায়।
বন্যা লিপি
আমি তো পেয়ে গেছি অর্থে বোঝালাম ভাই…..আপনার মন্তব্যে
নীরা সাদীয়া
বেশ করে বলে দিলেন মনের কথা। ভালো বলেছেন।
বন্যা লিপি
ভালবাসা জানবেন সাদিয়া। ভালো থাকবেন।
হালিম নজরুল
সুন্দর লিখেছেন আপু।
বন্যা লিপি
কৃতজ্ঞতা জানবেন। ভালো থাকবেন।
প্রদীপ চক্রবর্তী
বরাবরের মতো ভালো লেখনী দিদি,
এ পৃথিবী তাঁর সগর্ভে ফিরে আসুক এ প্রার্থনা করি।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভকামনা দিদি।
বন্যা লিপি
শুভ কামনা। মঙ্গলময় হোক পৃথিবীর আগামী দিন।
সুপায়ন বড়ুয়া
প্রতিটি শব্দ , বাক্য . লাইন পড়ে বুঝলাম
সত্যিতো আপু সব কাজ করে লেখালেখি
কাজ করা বড়ই কষ্টের।
যার যায় সেই জানে।
সহমত। কৃতজ্ঞতা। শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
,আমরা সহনশীল হতে ব্যার্থ হচ্ছি ক্রমাগত।এটাও প্রক্রিয়ায় শামিল দাদা, কৃতজ্ঞতা রইলো, যার যায় সেই বোঝে, আসুন সবাই সবার ব্যাথা বোঝার সহনশীল হই।
আরজু মুক্তা
মনের কথা। অশেষ কৃতজ্ঞতা।
বন্যা লিপি
মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।
ভালো থাকবেন ভাস্তি।
কামাল উদ্দিন
করোনা আমাদের জীবনটাকে কতোটা ভয়াবহ করতে পারে অনুমানের বাইরেই ছিলো, এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
বন্যা লিপি
ভালো থাকবেন সবসময়, নিরাপদে সাবধানে থাকবেন।
কামাল উদ্দিন
চেষ্টা করছি আপু, কিন্তু হতাশা গ্রাস করছে ক্রমান্বয়ে
তৌহিদ
এই যে সদিচ্ছায় আপনার লেখা খুঁজে নিয়ে পড়লাম! যদিও আমাকে ফরমায়েশ খাটতে হয়না! অফুরন্ত সময় আমার!! ☺☺
ভালো থাকুন।
বন্যা লিপি
হাহাহাহা….আপনার ফরমায়েশ খাটতে হয়না….আপনি নিজেই খাটেন জানি আমি।আচার পার্সেল কইরেন😊
ভালো থাকবেন।
তৌহিদ
খাটতে হয়না ঠিকই, তবে তাকে সাহায্য করতে ভালো লাগে আমার।
বন্যা লিপি
আপনার এই ভালোলাগার জায়গাটা যেন আমৃত্যু বজায় থাকে ভাই। দোয়া রইলো।
সৈয়দা শাহনাজ পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদও কৃতজ্ঞতা৷ ব্লগের এ্যাডমিন ও লেখক সাহিত্যেক সদস্য ও পাঠকে। এগিয়ে যাক আগামীর পথে ।