আমি মৃত্যু দেখে হেসেছি, রমনীয় স্মিত হাসি ছিলোনা সেটা–
তারপর থেকেই মৃত্যু শব্দটার সাথে আমার আর কোনো টানাপোড়েন নেই।
বরং জলজ্যান্ত দুঃখ দেখলে ভাবতে থাকি
একটি কবিতা কি মনের শরীরে অঙ্কুরিত হতে চলেছে এখন?
তখনই নিজেকে আমি একজন মানুষ হিসেবে বুঝি
তা নইলে এই যে মনের আসে-পাশে কিছু ভরসা জমিয়ে রাখা আছে
সেখানে কিছুই তো খুঁজে পাওয়া যায়না
যখন এই হাত কারো আঙুলের স্পর্শ খোঁজে,
তখন শূণ্য এই হাত দু’টো আবেগীয় অক্ষর নিয়ে খেলে একা একা–
কি অনায়াসে বদলে যাওয়া মুখেদের মানচিত্র দেখে দেখে
কাউকে আর মানুষই লাগেনা আমার
মনে হয় সব মুখগুলো যেনো একেকটি ভূ-খন্ড;
যে যখন পারবে হানা দেবে, আর,
যুদ্ধে জয়ীদল দখল করে নেবে।
কেউ যখন আমাকে তার নিজের যন্ত্রণার কথা বলে
তখনও আমি হাসি, কারণ আমাকে বোঝার মতো কেউ যে থাকেনা
যে যেভাবে পারে
আমার চরিত্রকে তাদের নিজেদের মনের মতো করে আঁকে
কখনো হয়ে যাই ভন্ড, কখনো প্রতারক,
আবার, কখনোবা মিথ্যুক!
আর কেউ কেউ আমায় খারাপ হিসেবে ভাবতেই পারেনা।
আমি একই মুখ, কতো যে মুখোশ।
বহুকাল আগে একটা ফটোগ্রাফি দেখেছিলাম
চোখ থেকে জল ঝরে পড়ছে, আর মুখটা কাঁদো কাঁদো।
আসলে ওটা কান্না ছিলোনা, ছিলো আনন্দ
তখনই জেনেছি আনন্দও কাঁদে, তবে কান্নার জল হাসতে জানেনা।
তাই আমি অনেক হাসি।
কান্না-যন্ত্রণা, মৃত্যু, আনন্দ কিংবা স্বস্তি
ওসব অনুভূতি আছে কি নেই, নিজের ভেতর খুঁজতে যাইনা–
বরং ভাবতে থাকি,
কিভাবে কিছু অক্ষর যোগ করে শব্দ বানানো খেলায় জিতিয়ে দিতে পারি নিজেকে!
হ্যামিল্টন, কানাডা
১১ অক্টোবর, ২০১৬ ইং।
**এ লেখাটির জন্ম চার্লি চ্যাপলিনের এই একটি উক্তির জন্য — “I have many problems in my life, but my lips don’t know that, they always smile.”**
২৬টি মন্তব্য
প্রলয় সাহা
বাহ্! দারুণ দিভাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ দাদা।
মৌনতা রিতু
কবিতা যখন মনের শরীরে অঙ্কুরিত হতে থাকে, তখন আমার এই মুখশ্রিতে ফুটে নতুন এক প্রেমের আবেশ।
নীলাপু, খুবই সুন্দর হইছে। চার্লি চ্যাপলিনের জীবনি পড়েছি।
সত্যি কি অসাধারন তার জীবন চলা ছিল। ওখানেই আমাদের বাঁচার প্রেরনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
শান্ত-সুন্দরী আমার একটা নাম আছে। বন্ধুরা ডাকতো, আনন্দময়ী কন্যা। সবসময় আমি হাসতে পারি। আজ জানো মামনির উপর অনেক রাগ করেছিলাম সকালে। শরীর ভালো না, অথচ বললেও ডাক্তার দেখায় না। বলো রাগ ওঠেনা? বললাম আমি ফোন রাখছি। সঙ্গে সঙ্গে বলে, “এভাবে রাগ করে রাখিস না। একটু হাসি দিয়ে ফোন রাখ।” হাসি পেয়ে গেলো। হেসে ফেললাম। আমি না বেশীক্ষণ রাগ করে থাকতে পারিনা সবাই জানে। হুম অবশ্য অনেকেই এটা জানেনা। 😀
নাসির সারওয়ার
ইসস, কেনযে হাসতে শিখলাম না!
এই লেখা হবে হাসির পাঠ্য। এইবার আর না শেখার অজুহাত আনা যাবেনা।
েহ হে হে দিয়েই শুরু হোক…..
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়ূ আমি হাসির জন্যে চড়ও খেয়েছিলাম বাপির। তাহলেই বোঝেন কেমন হাসি আমি। 😀
ক্রিস্টাল শামীম
বাহ অনেক সুন্দর ভাবে কঠিন কথাগুলো আপনি কবিতায় লেখতে পারেন। অনেক দিনপর একটা কবিতা ভাললাগলো। (3
নীলাঞ্জনা নীলা
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য দিয়ে আমাকে প্রেরণা দেয়ার জন্য। হাসি সকল নেগেটিভ ভাবনা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
ইঞ্জা
কি বলবো আপু?
আমি মুগ্ধ, আমি বিমোহিত, কাব্যের প্রতিটি পরতে আমি হয়েছি মোহিত। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
হ্যান্ডপাম্প ভাইয়া আমি নিজেই আপনার মন্তব্য পড়ে মুগ্ধ, বিমোহিত, মোহিত এবং আবেগে আপ্লুত হয়েছি। 🙂 -{@
ইঞ্জা
আর কতো ;(
;(
নীলাঞ্জনা নীলা
আহারে হ্যান্ডপাম্প ভাই কাঁদেনা। কাঁদেনা। এতো কাঁদলে আমাদের সোনেলা যে বন্যায় আক্রান্ত হবে। 😀
অপার্থিব
দুর্দান্ত লিখেছেন। হ্যাটস অফ… আসলেই কঠিন কথাগুলো সহজ ভাবে বলেছেন। কিছু মানুষ শত দুঃখের মাঝেও মুখে হাসি ধরে রাখতে পারে, পারে জীবনের প্রতিটা পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকা সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে । কেন যে আমি এমন হতে পারলাম না !!!!
নীলাঞ্জনা নীলা
কে বলেছে আপনি অমন হতে পারেননি। আপনি চেষ্টা করেননি। একসময় স্কুলে আমার কোনো বন্ধু ছিলোনা। কারণ না পারতাম হাসতে, না কাঁদতে। চুপচাপ বসে থাকতাম। আমাকে বদল করেছে আমার বড়ো ভাই আমার প্রিয় দাদা। যে পৃথিবীতে নেই। তবে হাসি ছিলো যা শুধু ছোট ভাই রানার সাথে খেলাতেই হতো। এই দুই ভাই আমার জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। আর অবশ্যই আমারও ইচ্ছে ছিলো। হাসি জীবনের অনেক কঠিনকে সহজ করে দেয় কিন্তু। চেষ্টা করুন, ঠিক পেরে যাবেন। 😀
মিষ্টি জিন
আপু ,কষ্ট লুকিয়ে যে হাসতে জানে সে ই প্রকৃত শক্তিশালী মানুষ।
আমি সারাক্ষন ই হাসি কারনে হাসি ,অকারনেও হাসি।
এবং সবাইকে হাসানোর চেষ্টা করি।
নীলাঞ্জনা নীলা
মিষ্টি আপু আমিও তো! উফ হাসতে হাসতে মুখ ব্যথা হয়ে যায়। তাও হাসি থামিয়ে রাখতে পারিনা। এই যে লিখছি আমার কিন্তু দাঁত কেলানোই আছে। 😀
ছাইরাছ হেলাল
মৃত্যুতে স্বাগতম,
এই মৃত্যু নিয়ে বহু বহু ঝামেলা করেছেন!
যদিও মৃত্যুই শুদ্ধতম সত্য, যার মুখোমুখি হতেই হয়, ইচ্ছে থাকুক বা না থাকুক!
সে ক্যালানো দাঁতেই হোক বা হাসি হাসি হাসি মুখে (ফোকলা দাঁতি হয়েও),
জোর করা হাসিতে ব্যাথা কমে না বরং বাড়ে বহু গুন,
মেঘ কেটে যাবে অচিরেই, হারানো উর্মিঝড় ফিরবে স্বমহিমায়!
নীলাঞ্জনা নীলা
আরে আমি কি মৃত্যু নিয়ে বলেছি?
“মরিতে চাহিনা আমি এ সুন্দর ভূবনে
মানবের তরে আমি বাঁচিবারে চাই।” বুঝেছেন কুবিরাজ ভাই?
জোর করে হাসি তো আনিনা। যদি মন খারাপ হয়, তখনই মজার কথাগুলো ভাবি। তাই মন খারাপের স্থায়িত্ত্ব কয়েক সেকেন্ড।
ঊর্মী হারাবে কেন? ঊর্মী আছে, থাকবেও। ঊর্মী অতিথি পাখী কিংবা সুবিধাবাদী নয়। বুঝছেন গো কুবিরাজ ভাই?
ছাইরাছ হেলাল
পাখির পায়ে শিকল বেঁধে দিন যদি সাহসে কুলোয়।
তবে কিছু সুবিধা তাঁকে দিতেই হবে! যা আপনি দেন!
নীলাঞ্জনা নীলা
খাঁচায় বন্দী পাখী আমি পছন্দ করিনা। আর আমি কি দেই! একটু বুঝিয়ে বলুন তো! ;?
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সুন্দর প্রকাশ!
নীলাঞ্জনা নীলা
রুবা’পু শুধু এটুকু!!!
ভাভু বাইয়া মানে সজীব ভাইয়ার পোষ্ট পড়োনি? 😀
আবু খায়ের আনিছ
আমরা নিজেরা যেমন চাই অপরপ্রান্তের মানুষটাকে তেমনি ভাবে কল্পনা করতে ভালোবাসি। হয়ত ভাবি, আমি তার জন্য যা করছি হয়ত সেও আমার জন্য তাই করছে।
আমরা সব সময় নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকি, তাই নিজের কথাই বলতে ভালোবাসি বেশি, অন্যের কথা শুনার সময় কোথায় আমাদের।
অনেক ভালো লাগল কবিতা, অনেকদিন পর এমন একটা কবিতা পড়লাম যা আমাকে আন্দোলিত করে দিয়ে গেল। প্রিয়তে যুক্ত হবে নিশ্চিত।
নীলাঞ্জনা নীলা
আনিছ ভাইয়া আপনার প্রিয়’র তালিকায় স্থান পেলো লেখাটি, জেনে ভালো লাগলো। আসলে এ লেখাটি একেবারে আমার নিজের জীবন। দুঃখ আমায় ছুঁয়ে গেলেও ধরে রাখতে পারেনা বেশীক্ষণ। এতো হাসতে পারি আমি যে কি বলবো! জোর করে হাসি নয় কিন্তু, হাসি এসেই যায়। মুখ ভার করে জীবনের কোনো সমস্যার সমাধান হয়না। এ কথাটা আমি নিজের জীবনেই দেখেছি। অবাক হয়ে যাই আমার বিপদজ্জনক সকল সমস্যার সমাধান আমি হেসেই করি। 😀
হাসুন এবং সুস্থ থাকুন। কারণ সুস্থতাই স্বস্তি। 🙂
ব্লগার সজীব
নীলাদি, আমি কিন্তু সারাক্ষন হাসি। আপনার কবিতার মাঝে আমি আমাকে দেখতে পাচ্ছি। আমি আমার মৃত্যুর সময়েও এমন কিছু করে যেতে চাই, যাতে মানুষ আমার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে এসে মন ভাল হয়ে যায়। তারা যেন আনন্দিত হয়।
আপনিও আনন্দের সমুদ্র তা কিন্তু আমি বুঝতে পারি 🙂
এমন কবিতার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দিদি -{@
চার্লি চ্যাপলিন আমার হিরো 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাভু বাইয়া আমি কোনো সমস্যা ভাব-গম্ভীর ভাবে সমাধান করতে পারিনা। এমনভাবে নিজেকে রাখি যে এসব সমস্যা কিছুই না। অদ্ভূতভাবে ঈশ্বর যেনো আমার পাশেই থাকেন।
অনেকেই আমাকে ভুল বোঝে আমার এ হাসির জন্য, কিন্তু তাও পারিনা না হেসে। 😀
এতো বেশী নাচতাম একসময়, তাই অফিসে যখন নার্সিং ম্যানেজার জিজ্ঞাসা করে কেমন আছি! আমি বলি খুব ভালো আছি, শুধু এখন দাঁড়িয়ে নাচতে পারিনা। \|/ 😀 :D)