10428578_644900035615078_4959138167536595948_nযদি আপনি দেখেন বর্তমানে কোন মামলায় খুনি,ধর্ষক হিসেবে প্রমানিত মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত কোন ব্যক্তি বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করে।তাকে কোন সাঁজাই ভোগ করতে হয়নি,জেল থেকে বিনা শর্তে তাঁকে মুক্তি দিয়ে দেয়া হয়েছে,আইন এবং বিচার ব্যবস্থার  উপর আপনার কোন শ্রদ্ধা থাকবে?
ঠিক এমনই করা হয়েছে।অভিযুক্ত বিচারাধীন এগার হাজার যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে দেয়া হয়েছে ১৯৭৫ সনের ৩১ ডিসেম্বর এক সামরিক অধ্যাদেশ বলে। সেই অধ্যাদেশে ৭৫২ জন খুন ধর্ষন অগ্নিসংযোগ লুঠ ইত্যাদি অভিযোগে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসী, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজাপ্রাপ্তকে মুক্তি দেয়ার কথা না থাকলেও, কোন এক অদৃশ্য কারনে মুক্তি দিয়ে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়,এই সব রাজাকার আলবদর আলশামসদের সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা হয় আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করার জন্য। এরাই হয়ে যায় ধর্মের সেবক,মুসলিম নেতা।

আইন এবং বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা আনয়নের জন্য এই সমস্ত সাজাপ্রাপ্ত দন্ডিত ব্যক্তিদের গ্রেফতার পূর্বক রায় বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরী।

১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বর দেশ শত্রু মুক্ত হবার মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায় ঘোষিত হয়।
** প্রথম রায়ঃ রাজাকার চিকন আলীর ফাঁসি।
কুষ্টিয়ার মিরপুর গ্রামের রাজাকার চিকন আলীর বিরুদ্ধে হত্যা,লুঠ,অগ্নি সংযোগ এবং নারীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রমানিত হয়ে ট্রাইব্যুনাল এই রায় প্রদান করেন।
পরবর্তি রায় সমুহঃ
** নেজামে ইসলাম পার্টির কোষাধ্যক্ষ ও ঢাকার অন্যতম ব্যবসায়ী হাজী মোহাম্মদ আকিলকে দোষী সাব্যস্ত করে ট্রাইব্যুনাল তাকে ৬ মাস সশ্রম কারাদন্ড ও চার হাজার টাকা জরিমান করেন।
অভিযোগঃ দখলদার পাক বাহিনীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নভেম্বর মাসে প্রদেশিক পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন।
** পাকিস্থান ডেমক্রেটিক পার্টির ওবায়দুল কবিরের ৬ মাস সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা।
অভিযোগঃ দখলদার পাক বাহিনীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নভেম্বর মাসে প্রদেশিক পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন।
** সাবেক পুর্ব পাকিস্থান প্রদেশিক পরিষদের ডেপুটি স্পীকার ডাকার আসগর হোসেনের দুই বছর সধ্রম কারাদন্ড।
অভিযোগঃ দখলদার পাক বাহিনীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নভেম্বর মাসে প্রদেশিক পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনের জন্য পত্রিকায় বিবৃতি প্রদান।
** বগুরার ধুনট থানার রাজাকার মুখলেসুর রহমান চান্দ মিয়ার মৃত্যুদন্ড,তার দুই বৈমাত্রেয় ভাই মসিউর রহমান,মফিজুর রহমান এর যাবজ্জীবন।
অভিযোগঃ সারে বার বছরের এক কিশোর শফিকুর রহমানের বুকে রাইফেল ঠেকিয়ে হত্যা।
**কুষ্টিয়ার খোকসা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আকিমুদ্দিন এবং তার সহযোগী চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড।
অভিযোগঃ আকিমুদ্দিন কুষ্টিয়া শহর থেকে ৩৮ জন পাকিস্থানী সেনা জানিপুর গ্রামে নিয়ে আসে.১৯৭১ সনের ২৪ মে রাতে পাকিদের সহায়তায় এরা গনহত্যা করে।এব্যতীত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সমস্ত কাজে পাক সেনাদের সহায়তা করে।

11045436_646399078798507_4869002099820796887_n
11081222_646403712131377_4669857852169768843_n
11020481_646399098798505_8382115766312334539_n
10952470_646399192131829_1167367099108493200_n
11076279_646399178798497_3656533860574995639_n

সুত্রঃ মুক্তিযুদ্ধের গবেষক এ এস এম সামছুল আরেফিন এর লিখিত মুক্তিযুদ্ধ’৭১- দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ।

৭২ থেকে ৭৫ দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের নাম ও অপরাধের বিবরন-১

0 Shares

৩৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ