তবুও ভোর ঘুম থেকে জাগে পাখির মিস্টি কলতানে। ঘুমের মধু আমেজ তখনো, আলো আঁধারের সন্ধিক্ষনে অগোছালো বিছানায় দেহ এপাশ ওপাশ। আবার তন্দ্রাচ্ছন্ন ভোর।

* জিসান তোকে কি চা দেবো?
- না আম্মা আমি আসছি খাবার রুমে।


এপথে প্রতিদিন যাই আবার ফিরে আসি। ছোট্ট শান্ত, হালকা বাতাসে অবিরাম ছোট ছোট অনুত্তাল ঢেউ এর স্নিগ্ধ নদীর পার ঘেসে সড়কে। নদীর প্রতি বাঁকে বাঁকে কত রহস্য। বৈঠা চালিয়ে দুজন মাঝির পাশাপাশি বেয়ে চলা নৌকা দেখে ভাবনার রাজ্যে চলে যাই। এক হয়না কখনো দু নৌকা।

* হ্যালো, জিসান ইকরাম স্যার বলছেন?
- জ্বি বলছি।
* স্যার পাঁচ মিনিট সময় দেবেন আমাদের কিছু অফার সম্পর্কে আলাপ করবো।
- কিসের অফার বলুনতো।
* স্যার আমরা অস্ট্রেলিয়া, কানাডায় বিজনেস মাইগ্রেশন নিয়ে......
- বুঝেছি, তবে আমার আগ্রহ নেই মাইগ্রেট হবার, রাখি।


অযত্নে থাকা বাগানের ফুটন্ত ফুলগুলো অভিমান করে আছে। কাছে যেতেই চোখ ছলছল। কতদিন দেখা হয়নি এদের, কথা হয়না বহুদিন। কাছের ভালোবাসারা উপেক্ষিতই হয় বারবার, যেন এটিই নিয়ম। হাতের পরশ, আদুরে ডাক, লাভ ইউ বলায় কিছুটা হাসির ঝিলিক অভিমান ভুলে।

* স্যার আমি হানিফা। কোরাল মাছের কথা কইছিলেন, আজ পাইছি এক্কেরে তাজা নদীর কোরাল, ৬ কেজি সাইজ, বাসায় লইয়া আই?
- আচ্ছা বাসায় দিয়ে আয়, মাছ কুটে সাইজ করে দিস।

পাখিরা মানুষকে বুঝতে পারে খুব। মালয়েশিয়ার বার্ড পার্ক বা অস্ট্রেলিয়ায় দেখেছি, পাখি মানুষের একদম কাছে চলে আসে। হাতে এসে খাবার খায়। অস্ট্রেলিয়ার পাখি জানেই না মানুষ তাদের অনিষ্ট করতে পারে।
ক্লান্ত দুপুরে জানালা লাগোয়া বিছানায় শুয়ে গাছের পাতার মাঝে আকাশ দেখি। অবাক হই এক জোড়া পাখি দেখে। রোজ একই সময়ে এসে ডিশের তারে বসে তাকিয়ে থাকে ক্লান্ত আমার দিকে। কেন আসে বার বার ফিরে ফিরে? খাবার দেইনা, আদর যত্ন করিনা, তারপরেও আসা। তবে কথা বলি এদের সাথে। মাথা উচু করে ড্যাবড্যাব চোখে তাকিয়ে থাকে তখন আমার দিকে। পাখিরা কি সাথি পাল্টায়? কিভাবে বুঝা যাবে তা? পাখিকে পায়েল পরিয়ে দিলে কেমন হয়? জোড়া পাখি জোড়া পায়েল।

* স্যার মটর নস্ট হইছে, কাজ বন্ধ। কি করমু?
- যা ইচ্ছে হয় কর, ভাল্লাগেনা কিছু।

0 Shares

৪৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ