1

দেখছেননি, বুদ্ধা সামনে প্রতিদিন এমন সব খাদ্য দ্রব্য দিয়ে তাঁকে খুশি রাখা হয়!?  আমাদের দেশে পূজা অর্চনায় মিষ্টি, ফলমুল ইত্যাদি দেয়া হয় দেবতাদের মূর্তির সামনে। মূর্তি ঘরে ধুপ জ্বালানো হয়, এটি হিন্দু রীতি। মুসলিমরা মাজারে আগরবাতি, মোমবাতি জ্বালিয়ে থাকে। এবার ভিয়েতনামে দেখলাম বুদ্ধার মূর্তির সামনে প্রতিদিন এসব খাবার দেয়া হয়, বিশাল বিশাল আগরবাতি জ্বালানো হয়। খাবারের মধ্যে জাম্বুরা, আনারস, আম, লিচু, কাঁঠাল, কলা, কোকো কোলা, চা সবই আছে। প্রায় সমস্ত হোটেল, দোকান এবং বাড়ির সামনের রুমে এমন সুদৃশ্য একটি পূজো ঘর বানিয়ে তাতে হ্যাপি বুদ্ধাকে স্থাপন করে অত্যন্ত শ্রদ্ধা সহকারে পূজা দেয়া হয়।

হ্যাপি বুদ্ধা কেমন আবার? এমন তো শুনিনি কখনো? অতএব খোঁজ দা সার্চ মুভির নায়কের ভাব নিয়ে ঘুরতে থাকি এখান থেকে সেখানে। আমাদের কথা শুনে এমন এক মুখের ভাব করে শ্রোতারা যে আমরা যেন আদিম মানুষ, আদিম ভাষায় কথা বলছি।
দুই দিনের খোঁজা খুঁজির ব্যার্থতার পরে ব্লগীয় কৌশল নিলাম 🙂 এন্টিক জাতীয় দোকানের সন্ধান শুরু করলাম। অবশেষে তা পেলাম। ক্রেতার বেশে এন্টিক দেখতে ঢুকে গেলাম দোকানে। সারি সারি বুদ্ধার মূর্তি। হাত ব্যাগ, মানি ব্যাগ, টি সার্ট এবং মেয়েদের ওড়না পর্যন্ত আছে। বন্ধু তার মেয়ের জন্য ওড়না নিল দুটো। এরপর পেটুক বুদ্ধাকে হাতে নিলাম। খাজুরে আলাপ ভালই পারি, ওড়নার দাম দেইনি এখনো। পেটুক হ্যাপি বুদ্ধার কথা ঠিক ঠাক মত না বললে কিনুম না তোর দোকান থেকে কিছু ( মনে মনে এটা ভেবে ) প্রশ্ন করে যাচ্ছি। দোকানিও দুই গাল দুদিকে প্রসারিত করে উত্তর দিয়ে যাচ্ছেন।

একেক দেশে বুদ্ধা ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। ভারত, থাইল্যান্ড, চীন, ভিয়েতনামের বুদ্ধা আলাদা। কোনো কোনো দেশের বুদ্ধার মাথার উপর চুড় আছে, কোনো কোনো দেশের বুদ্ধার মাথার উপর শুধু চুল। ভিয়েতনামের মানুষ বুদ্ধাকে হ্যাপি বুদ্ধ ভাবে। তাই ভিয়েতনামি বুদ্ধার হাসি মাখা মুখ, খাওয়াইতে খাওইয়াতে তার পেট ঝুলে গিয়েছে সামনে।
পেট পুড়ে খেয়ে বুদ্ধার মুখে হাসি আর ধরেনা। ( আমার পেটও কিন্তু এমন অবস্থা ধারণ কর্তাছে, কিন্তু পেটই বুদ্ধার পরিচয় নহে ) 🙂

পেট পুড়ে খেয়ে কত্ত খুশি বুদ্দা :) পেট সামনে ভাসাইয়া কেমন সুখী মুখে হাসি নিয়ে বইস্যা আছে।
পেট পুড়ে খেয়ে কত্ত খুশি বুদ্দা।
পেট সামনে ভাসাইয়া কেমন সুখী মুখে হাসি নিয়ে বইস্যা আছে। হ্যাপি বুদ্ধার পিছনে অন্যান্য দেশের বুদ্দা।    

.........।

কেন তাঁকে এমন খাবার দিয়ে খুশি রাখা হয়? কারণ তিনি খুশি হলে পরিবারে খাবার এবং সম্পদের অভাব হবেনা। বুদ্ধা নিজে পিঠে করে প্রতি পরিবারের জন্য খাদ্য এবং সম্পদ নিয়ে ঘুরতে থাকেন। যে পরিবার তাঁকে শ্রদ্ধা, সন্মান সহযোগে প্রতিষ্ঠিত রাখে তিনি সে পরিবারে হাসি মুখে বসে থাকেন, খাবার এবং সম্পদে পূর্ন করে দেন সেই পরিবারকে। একারনেই তিনি হ্যাপি বুদ্ধা।

আর তাঁকে যদি খুশি রাখা না হয়? শ্রদ্ধা না করা হয়? স্মরণ করা না হয়? তাহলে কি হবে?

আমি তোগো কথা, কান্না শুনুম না, এই কানে হাত দিয়ে কানের ফুটো বন্ধ করলাম। 

6
তোগো কোনো উপদেশ, পথনির্দেশ, পরামর্শ কমু না। এই মুখে হাত দিয়ে স্পিকটিনট করলাম।

7
তোগো দুঃখ কষ্ট, জ্বালা যন্ত্রণা, রোগ শোক কিছুই দেখুমনা। এই হাত দিয়া চোখ বন্ধ করলাম। 

8
শ্রদ্ধা, ভালবাসা, সম্মান, স্মরণ এবং খাবার পেলে............ হাসিতে যে তার মুক্তো ঝরে রে, এমন ভাবে পাবি আমাকে। 

* এই সব আউল ফাউল লেখাকে ভ্রমন কাহিনী বলে নাকি? ধুরো, ল্যাহা পইড়্যা সময় নষ্ট।
* নেইলপালিশ ওয়ালী কে? এই প্রশ্ন করিয়া আমাকে বুদ্ধার মত মুখে হাত দিয়া স্পিকটিনট করিবেন না।
* সকলে সুখী হোক।

0 Shares

২৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ