প্রথম:
ধনাঢ্য প্রতাপশালী ভূস্বামীর অনুপস্থিতিতে বাড়িতে ডাকাতি করতে এসে ডাকাত সর্দার প্রফুল্ল সিং মুল্যবান মালামালের সাথে সুন্দরী গৃহবধূ সরলা রানীকে ও মুখ বেঁধে নিয়ে যায়। জনমানব শূন্য অনেক দূরে এক চরে সরলা কে নিয়ে প্রফুল্ল সিং বসবাস করতে থাকে এবং প্রতিরাতেই সরলার কান্নাকাটি উপেক্ষা করে জোর করে শারীরিক মিলন চালায়। সরলার প্রতি প্রফুল্লের শুধু দেহজ আকর্ষন অত্যন্ত তীব্র। একটি মুহুর্তের জন্য সরলা প্রফুল্ল কে মেনে নিতে পারেনি। সরলা যাতে মেনে নেয় এমন আকাঙ্খা ছিলো প্রফুল্লের। এভাবে কেটে যায় প্রায় ছয় মাস। কিছুদিন পরপর প্রফুল্ল ডাকাতি করতে বের হলে, পাহারা রেখে যায় যাতে সরলা পালিয়ে যেতে না পারে।
সরলার স্বামী সরলা কে ভালো বাসত খুব, সরলা ও তেমনি। ভালোবাসা এলাকায় মান সম্মান ইত্যাদি কারণে সরলা কে খুঁজে বের করে উদ্ধারের যাবতীয় চেষ্টা সে চালাতে থাকে। ছয় মাস পরে সঠিক খবর পায় সে কোথায় আছে সরলা। বজরা নিয়ে লোক লস্কর নিয়ে রওয়ানা দেয় সরলা উদ্ধারে, লড়াই করার পর্যাপ্ত হাতিয়ার এবং লোকবল সহ।
দুপুর বেলা সরলা বসে আছে ডাকাতের ডেরার বাইরে মুখ নদীর দিকে। অনেক দূরে দেখা যাচ্ছে কিছু নৌকার সাড়ি। গভীর মনযোগ দিতেই চিনতে পারে সে তাঁর স্বামীর বজরা। প্রফুল্ল সিং একটা গাছের গুঁড়ির উপর বসে বন্দুকে তেল দিচ্ছিল। দৌড়ে প্রফুল্লের কাছে গেলো সরলা। ' সে আসতেছে আমাকে নিয়ে যেতে, দ্রুত চলেন এখান থেকে। ' প্রফুল্ল দাঁড়িয়ে জড়িয়ে ধরে সরলা কে। তার চোখে আনন্দাশ্রু। কপালে চুমু দিয়ে বলে ' চল বৌ ' ।
২০ জন মাল্লার দ্রুত হাতে বৈঠা মারা ডাকাতির লম্বা নৌকা অনেক দূরে মিলিয়ে গেলো।

সরলার এই আচরন কি অব্যাখ্যাত ?
( এমন একটা উপন্যাস বা গল্প পড়েছিলাম যতটা মনে পরে )

দ্বিতীয়:
রাত্রি আর নির্ঝরের ভালোবাসার সম্পর্ক। দুজনের দিন রাত ভালোবাসার মাঝেই কেটে যায়। সময় এবং সুযোগ হলেই একে অন্যের সাথে যোগাযোগ রাখে। মানসিক দিক দিয়ে একে অন্যের উপর বেশ নির্ভরশীল। দুজনের সাথেই ঘটনাক্রমে পরিচয় হয় আসফাক এর। কিছুটা রাত্রির সাথে আসফাকের কথাবার্তায় কিছুটা অস্বস্তি হতে থাকে নির্ঝরের। হঠাৎ করে  রাত্রিকে ভালোবাসার কথা জানায় আসফাক। হয়ত রাত্রি এমনটা প্রত্যাশা করেনি, অথবা করেছে তা রাত্রিই জানে। নির্ঝর অবশ্য সতর্ক করেছিলো আগেই রাত্রিকে । বিশ্বাস করেনি রাত্রি অথবা বিশ্বাস করতে চায়নি। অবশেষে আসফাক বুঝিয়ে দেয় নির্ঝর আর রাত্রি দুজনকেই।
কিছুটা বিচলিত রাত্রি সিদ্ধান্ত নেয় আসফাকের সাথে আর কোন যোগাযোগ নয়। কথা তো নয়ই কোন ক্রমে। কিছুদিন এমনই ছিলো যোগাযোগ বিহীন। রাত্রি প্রতিদিন ই আশ্বস্ত করে নির্ঝরকে। এর মাঝে রাত্রি আর আসফাকের যোগাযোগ হয়েছে কিনা সে প্রশ্ন আর নির্ঝরের মনে আসেনা, সে লক্ষ্য করে রাত্রি আসফাকের দেয়া  বিভিন্ন গিফট পছন্দ করা শুরু করে।
হঠাৎ করেই আসফাক তার বাগান বাড়িতে রাত্রিকে দাওয়াত দেয়। খুব কাছের বন্ধু ব্যাতিত আসফাক সেখানে কাউকে দাওয়াত দেয় না। রাত্রি জানায় নির্ঝরকে। রাত্রিকে নিষেধ করে নির্ঝর। দুজনের সাথে একই সময়ে আসফাকের পরিচয়। দাওয়াত তো দুজনেরই পাবার কথা।
রাত্রি বাগান বাড়িতে যায় এবং বাগান বাড়ির গাছ পালা, ছোট্ট পুকুর, জানালার পর্দা ও আসবাব পত্রের প্রশংসা করে।

রাত্রির এই আচরন কি অব্যাখ্যাত ?

মানুষের মন কেন এত পরিবর্তনশীল তা মানুষ নিজেই জানেনা। এসব ঘটনার হয়ত ব্যাখ্যা আছে। মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে এসবের ব্যাখ্যা করবে। সরলা একদম শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রফুল্ল কে ঘৃণা করে এসেছে, স্বামীর বজরা দেখা মাত্র সে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। রাত্রি কেন এমন করছে তাও হয়ত সে নিজে জানেনা, অস্থির সময়ে হয়ত সে এমনি করে বেড়াচ্ছে। সরলা বা রাত্রি ভুল করেছে বা সঠিক এই প্রশ্ন এখানে অবান্তর। আসল প্রশ্ন মানব মন। সে আসলে কি চায় ? কেউ কি তা জানি আমরা ?

শুধু নারীর উদাহরন দেয়ায় নারীবাদীরা অসন্তুষ্ট হবেন না।
পরবর্তীতে উদাহরন হিসেবে পুরুষ আসবে।
লেডিস ফাস্ট ।

0 Shares

৪৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ