তোমায় নিয়ে আমার বড্ড একাকীত্বের ঘোর।
কখনো হেমন্তের ব্যস্ত গোধূলিসন্ধ্যার দিগন্তে,
কখনো বা কুসুমিত সৌরভের নিসর্গ উদ্যানে।

অভিসারের শেষে উদিত সূর্যোদয়ের যমুনার গ্রন্থিবন্ধনে তুমি তো ছিলে আমার মর্মের মর্মাস্থল অন্তরজুড়ে
প্রতিটি পদ্যের উচ্চারণে,
তোমার প্রতিমূর্তি আজও ভাসে আমার দুনয়নে।
অভ্রবেদী জুড়ে সারসের কান্না দূর করে,
এসেছিলে তুমি প্রেমিক পাখি ডাহুক রূপে।

ব্যস্ত শহরের কুয়াশা ডাকা ল্যাম্পপোস্টের মিটিমিটি আলোর পথ ধরে আর অনুভবের স্পর্শতায় তোমার হাত ধরে যোজন যোজন বহুপথ হেটেছি বহুদূর দূরান্তে।
তৃণকুসুমে প্রস্ফুটিত কামিনী ফুলের গন্ধের মাতাল হাওয়াতে মেঘেরা বৃদ্ধ হলে তোমার গ্রন্থি আঁচলে রোজ মেখে দিতাম কত ফুলের পাপড়ি।
আমি তোমার জন্য রাত জাগতে বড্ড ভালোবাসি।
ভালোবাসি রাত্রি জেগে তোমার জন্য গল্প,কবিতা লিখতে।
আমি তোমার জন্য কত শ্রাবণের বরিষা উপেক্ষা করেছি,তোমায় স্থলপদ্মে আবাহন করবো বলে।

জানো প্রিয়,
শীত শরীরের গ্রাম্য মৃগ অজিনে তোমার ভালোবাসার ছোঁয়া পেয়েছি প্রতিটি পদ্যের পারিজাতে।
তুমি তো ছিলে আমার স্বপ্নময়ী রাজরাজেশ্বরী।
পৌষালি সন্ধ্যার সুগন্ধিত ছায়াপুঞ্জে
পূর্ণিমার মোহনীয় অনুরাগে প্রেমডুরে বেঁধে রেখেছিলে তুমি আমায় আকাশের তারারাজি আলোর উদ্ভাসে।

আমার শহরে হেমন্ত আসলেও যে আমি আছি আজ অরণ্যের বিষাদী অগ্নিকান্ডের দাবানলে।
যে দাবানলে তুমি বৃষ্টি হবার কথা সেখানে তুমি বিষাদী ভৈরবী।
আমি তো পুড়ে গিয়েছি।
পুড়েছে আমার হৃদয়।
যখন আমি তোমার স্মৃতির স্রোতে ভাসি তখন তোমার অভিমানের মূল্যবৃদ্ধি বেড়ে যায় কয়েকগুণ আভিজাত্যের আভাসে।
দিনশেষে তুমি ফুরিয়ে যাচ্ছ আর আমায় দিয়ে যাচ্ছ যতসব শূন্যতার ঘোর। আর আমায় বিভোর করে তুলেছ পোস্টকার্ডের বেনামি কবিতায়।

ইদানিং
তোমায় খুঁজতে গিয়ে আজকাল তোমার নিস্তব্ধতা আর আভিজাত্যের অভিমান আমায় বড্ড গিলে খাচ্ছে।
তৃষিত অধিবাস জুড়ে তোমার দেওয়া রোজ শূন্যতা ছাড়া আমার আর কিছু পাওয়ার নেই।

তুমি অভিমানী হলে বরং আমি কাঞ্চনজঙ্গা পাদদেশের সুবর্ণ রৌদ্রের পরিযায়ী হবো।

জেনে রেখো প্রিয়
সব ঝিনুকে মুক্তা থাকে না।

আমি না হয় আজও বেঁচে রইলাম তোমার অনুভবের স্পর্শতায়।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ