তার সাথে পরিচয়ের পরে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলাম তার লেখা প্রথম আলোতে প্রথম প্রকাশের পরে।
* দিদি ভাই, একদিন তুমি অনেক বড় লেখক হবে। তুমি নিজে যেমন, তোমার লেখাগুলোও তেমন মায়ায় জড়ানো। অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী ভক্ত পেয়ে হয়ত একদিন আর এই ছোট ব্লগ সোনেলায় আসবেনা। না এলেও কোন দুঃখবোধ থাকবেনা আমার এবং সোনেলার। দূর থেকে দেখবো তারার মত উজ্জ্বল এক রিমি রুম্মানকে। আনন্দ এবং খুশি নিয়ে মনে মনে বলবো, ঐ যে রিমি রুম্মান, যিনি আমাদের একজন ছিলেন, আমাদের মাঝ থেকে ওখানে পৌছে গিয়েছেন।
** দাদা ভাই, আমি যেখানেই পৌঁছাই, আমার সোনেলাকে ভুলবো না, সোনেলা আমার শিকড়, আমাকে আস্থা ফিরিয়ে দিয়েছে যে সোনেলা, বার বার ফিরে আসবো আমার শিকড়ের কাছে।

আমার ম্যাসেজের জবাবটা তিনি এভাবেই দিয়েছিলেন। নিজেকে খুবই অপরাধী মনে হয় আমার তার কাছে। প্রায় তিনবছর চার মাস পূর্বে আমার আগ্রহেই তিনি সোনেলায় রিমি রুম্মান নামে ব্লগ খুলেছিলেন। শিশুর মত উচ্ছলতা প্রকাশ করেছিলেন ব্লগ খুলে এবং প্রথম পোষ্ট দিয়ে। দাদা ভাই প্রফাইলে এই ছবিটা দেই? না এটা না এইটা দেই? যেন আমারই ছোট বোন তার উচ্ছলতা প্রকাশ করছে। এই সময়ে তিনি পোষ্ট দিয়েছেন ১৮৬ টি। তার প্রতিটি লেখা মায়ায় জড়ানো। লেখার মাঝেই রিমি রুম্মানকে খুঁজে পাওয়া যায়। অপরাধী ভাবি নিজকে কারন তাঁকে নিয়ে আজ পর্যন্ত একটি লেখাও লিখতে পারিনি। শততম পোষ্টের শুভেচ্ছা তার পাওনা ছিল, গত ২০১৬ এর বই মেলায় তার প্রথম বই প্রকাশ হয়। অত্যন্ত আনন্দ নিয়ে বইটি সংগ্রহ করি বই মেলায় গিয়ে। একটি পোষ্ট লিখেওছিলাম এ বিষয়ে, কিন্তু পোষ্ট আর দেয়া হয়নি। কোন অনুযোগ, অভিমান, অভিযোগ তার মাঝে দেখিনি আমি এ নিয়ে। কিন্তু আমি নিজেই নিজের কাছে অভিযুক্ত হয়ে আছি। দুঃখিত দিদি ভাই।

ছবি এবং লিংক যুক্ত করতে পারতেন না এক সময়। ছবি বা লিংক দিয়ে বলতেন-
"দাদা ভাই এই ছবিটা আমার পোস্টে দিলে কেমন হয়?"
"দাদা ভাই এই গানের লিংকটা আমার পোষ্টের সাথে দিলে ভাল হয় না?''
এই হচ্ছে মায়াবতীর অনুরোধের নমুনা। কখনোই বলতেন না দাদা ভাই ছবিটা পোস্টে দিয়ে দাও, গানের লিংকটা এই লাইনের পরে দিয়ে দাও। আসলে বলবেই বা কেন? দাদা ভাই তার অনুরোধ পেয়ে কোনো মডুকে অনুরোধ করে ছবি বা লিংক যুক্ত করতে বলবে, এতে দাদা ভাই ছোট হয়ে যাবেনা? 🙂

সোনেলা ব্লগ তৈরীর একটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, লেখকরা এখানে নির্ভার হয়ে লেখুক। তার মাঝে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হোক যে তিনি লিখতে পারেন। আস্থা তৈরী হোক তার মাঝে। রিমি রুম্মান সোনেলার চাওয়াটা পূর্ন করার একটি উদাহরন। নেট জগতে ফেইসবুক আজকাল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন স্থান দখল করে আছে। ফেইসবুকে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। লাইক/ মন্তব্য / পোষ্ট শেয়ার যদি একজন ফেইসবুকারের জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হয়, তবে অবশ্যই তিনি জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তা তাঁকে আরো দায়িত্বশীল করেছে। তার অবস্থানে থাকা একজন ফেইসবুক ব্যবহারকারীর ব্লগকে ভুলে যাওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তিনি শিকড়কে ভুলে যাননি কখনোই।
**********************************************************************************************
16507868_1384916064911772_8177337474257976959_n-640x480
২০১৭ এর চলতি বই মেলায় রিমি রুম্মানের পুবের আকাশে ভোরের অপেক্ষায় বইটি প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৬ এর প্রকাশিত তার প্রথম বইটির সমস্ত কপি বিক্রী হয়ে গিয়েছিল। আশা করবো পুবের আকাশে ভোরের অপেক্ষা বইটিও সমান জনপ্রিয়তা পাবে।
বইটি সম্পর্কে রিমি রুম্মানের নিজের লেখা কপি করে দিচ্ছি,
সুখ-দুঃখ, ভালো-মন্দ মিলিয়েই আমাদের ছোট্ট এই জীবন। অনেক ভালো থাকার সময়েও কখনো একরাশ অন্ধকার নেমে আসে, কখনোবা প্রলয়ঙ্করী ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয় জীবন। হাবুডুবু খাই অথৈ সমুদ্রে। সেইসব ঝড়ও একসময় শান্ত হয়। ডুবতে ডুবতে খড়কুটো ধরে ভেসে উঠি আমরা। ঘন অন্ধকার হাতড়ে হেঁটে যাই আলোর সন্ধানে। নতুন করে বেঁচে উঠবার আকাঙ্ক্ষায় অপেক্ষায় থাকি। পুবের আকাশে ভোরের অপেক্ষায়। এভাবেই জীবন ক্রমশ এগিয়ে যায়। জীবনের এমন উঠা-নামার বাস্তব ঘটনা আর ছোট ছোট ভাবনা নিয়ে "পুবের আকাশে ভোরের অপেক্ষায়" বইটি।

এবারের একুশের গ্রন্থমেলায় ঢাকার "আদিগন্ত প্রকাশন" থেকে প্রকাশিত হয়েছে এটি। গ্রন্থটিতে মোট ৩৬ টি লেখা স্থান পেয়েছে। লেখাগুলো আপনার, আমার, আমাদের সকলের জীবনের গল্প। সংগ্রহে রাখতে কিংবা ছোট, বড় যে কাউকে উপহার দেবার মতো একটি গ্রন্থ "পুবের আকাশে ভোরের অপেক্ষায়"। গ্রন্থটি পাওয়া যাবে "আদিগন্ত প্রকাশন" এ। স্টল নাম্বার ৫৪১ এবং ৫৪২ |

গ্রন্থটিতে উনি যে প্রকাশ্যে সোনেলা ব্লগে প্রথম লেখালেখি শুরু করেন তা বলেছেন।
রিমি রুম্মান একমাত্র সোনেলা ব্লগেই লেখেন। সোনেলার সোনা সে, তার কোথাও আর কোনো ব্লগে শাখা নেই 🙂

0 Shares

৩৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ