স্মৃতির নদী

মুহাম্মদ শামসুল ইকরাম পিরু ১ এপ্রিল ২০২০, বুধবার, ১১:৪০:৫৯অপরাহ্ন গল্প ৪৩ মন্তব্য

আজকাল স্মৃতি গুলো কেমন যেন বাস্তব হয়ে চোখের সামনে দেখে তারা দুজনেই। স্মৃতি এমনই উজ্জ্বল যে এসব রঙ্গিন হয়ে থ্রি ডি মুভির মত চলমান।

অনেক স্মৃতি আছে তাদের একটি নদী কেন্দ্রিক। নদীটার মালিক যেন তারা দুজনে।
একদিন শান্তা বায়না ধরেছিল ' আমাকে একটি নদী দাও। '
এ নদী সে নদী দেখতে দেখতে প্রবাল অন্য একদিন বললো ' চলো আমাদের নদী খুঁজে পেয়েছি, যেখানে দু'কুলে ছায়া দেয়া বৃক্ষের সারি আছে, আছে বহমান নদীর স্রোত। আরো আছে ঢেউ জাগানো হালকা হাওয়া। '
সেদিন থেকে নদীটি ওদের হয়ে গিয়েছে।

প্রতি জোছনা আর অমাবশ্যা তিথিতে নদীটি  পানিতে হত টইটুম্বর। নদী উপচে পরা জলে দুজনে একই সাথে পা ভেজানো । ভিতরে তখন দুজনের একই আবেগের ডানা ঝাপটানোর তীব্র অনুভব।

বসন্তে বৃক্ষরা নতুন পাতায় সজ্জিত হয়। কোকিলের কুহু কুহু ডাক যেন ভিতর নাড়া দিয়ে যেত দু'জনের। ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা ঝিঁঝিঁ ঝিঁঝিঁ ডাক দুজনের আচ্ছন্নতা বোধ । বিকেলে ওদের নদীর কাছে যাওয়া চাইই। বেশ কাছে এসে বসা এক জোড়া দোয়েল ছিল ওদের। মাস যায় বছর যায়, দোয়েল এর উপস্থিতি পাল্টে যায় না। দোয়েল জাতটাই হয়ত তাদের দুজনকে চিনে নিয়েছিল বংশ পরম্পরায়।

দুজনের মিষ্টি ঝগড়া বিবাদও এই নদীর মাধ্যমে মিমাংসা। কত ছোট ছোট বিষয় নিয়ে তাদের ঝগড়া! ' আজ তুমি আমাকে তেমন সময় দাওনি, সময় দিয়েছ মেসেঞ্জারে, তুমি ম্যাসেঞ্জার নিয়েই থেকো, খোদা হাফেজ। ' এসব মান অভিমানের পরেও তারা বিকেলে নদীর কাছে , নদী মাধ্যমে তাদের মান অভিমান ভুলে মিলমিশ ।

নদীর কথা বুঝতে পারত দুজনেই। অস্তমিত সুর্যের স্বর্ণালী আভা  নদীকে সোনালী করে দিত, আর সে আলোতে দুজনেই ভিজত। একান্ত ভালোলাগার মুহূর্তগুলো অতি দ্রুততার সাথে শেষ হয়ে গেলেও, ভালোলাগার আবেগকে সাথে নিয়েই দুজনে বসে/ দাঁড়িয়ে থাকত নদীর তীরে বৃক্ষের মত, বৃক্ষকে সাথী করে।

তাদের দুজনের একটি নদী ছিল
এখনো আছে, থাকবে বহমান
বুকের গহীনে ঢেউ এর শব্দ ছলাৎ ছলাৎ,

0 Shares

৪৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ