সোনেলা ব্লগের নাম চুড়ান্ত হবার পরেই চিন্তা এলো, কার মাধ্যমে এই ব্লগ সাইট তৈরী করাবো? কখনো ভাবিনি যে লেখার জন্য আমরা নিজেরাই একটি ব্লগ বানাবো? একারণেই মাথা আবার চুলকাতে আরম্ভ করি। কি করি কোথায় যাই, কার কাছে পরামর্শ নেই। মাথা চুলকাতে চুলকাতে ছাইরাছ হেলালের মাথার চুল কমে গিয়েছে এমন সম্ভাবনাও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়া উচিৎ হবে না।

হঠাৎ মনে এলো শারমিন সোনালী এর কথা। ও নিজে একটা অফিসে জব করে, গরম চা ডট কম নামে ওর বসের একটা সাইট আছে। জিসানকে ভাইয়া মানে, অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে ও। শারমিন সোনেলাকে আমাদের সোনেলা ব্লগের প্রায় সবাই চিনে ফেলেছেন অনিচ্ছাকৃত ভাবে। মনে আছে নিশ্চয়ই, কিছুদিন আগে সোনেলা ব্লগে ক্লিক করলেই সবাইকে ' রান্নাঘর ' এ নিয়ে যেতো। ঐ রান্নাঘরটা সোনালীর সাইট। তার সাইটের প্রচার সোনেলার কারনে ভালোই হয়েছে 🙂
ওকে আমাদের পরিকল্পনার কথা জানালে ও বললো ওর পরিচিত এক ছোট ভাইর কথা যার নাম মুক্তো। মুক্তো নতুন এসব কাছ আরম্ভ করেছে, খুব আন্তরিক এক ছেলে- এটিও বললো। যেভাবে হোক মুক্তোকে রাজি করাতে বলি ওকে, নতুন হোক সমস্যা নেই। সবাই তো একসময় নতুনই থাকে, আমি নতুনদের নিয়ে কাজ করতে বেশী পছন্দও করি।

মুক্তোর সাথে কথা বলে দেখা করার আয়োজন করি। সম্ভবত ঢাকার মেট্রো শপিং মলে বসে আমরা প্রথম আলোচনা করি। মুক্তোকে দেখে খুবই অবাক হই, এই ছেলে ব্লগ বানাবে! আমার মনের ভাব প্রকাশ না করে কি কি চাই আমাদের সোনেলায় তা বলি। একটি সাইটে ব্লগিং করার সুবাদে জানতাম ব্লগাররা কেমন সাইট পছন্দ করেন। সে আলোকে মুক্তোকে লিস্ট দিয়ে দেই।

এরপর ফেইসবুকে একটি গ্রুপ ( সোনেলার জন্মকালীন চিন্তা ভাবনা এই নামে ) করি, মেম্বার আমি বাদে ছাইরাছ হেলাল আর মুক্তো। আরম্ভ হয় দীর্ঘ সময়ের লেখার পরিশ্রম। প্রথম থেকেই মোবাইল ব্যবহারকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সাইট বানাতে বলি। বিভিন্ন অপশন যুক্ত হতে থাকে। এর অসুবিধা সমূহ বলি, কোনোটা কাজ করে- কোনোটা করেনা। ধীরে ধীরে মুক্তো তৈরী করতে থাকে সোনেলা ব্লগ। মুক্তোর প্রথম দিকের বড় কাজই সোনেলা ব্লগ। খুব বেশী পারিশ্রমিক নেয়নি ও। তবে যা চেয়েছিল তা দিয়েছি। আর কেমন এক মায়ায় জড়িয়ে গেলাম মুক্তোর উপর। ভালো লেগেছিল ওর আন্তরিকতা। আমি যখন কাজ শেষ করার পরে টাকা দেই, ভালোবাসা শ্রদ্ধায় আচ্ছন্ন মুক্তো কিছুটা লজ্জায়ই টাকা হাতে নিয়েছিল মনে মনে হয়েছে আমার। ও কখনো আমাকে ক্লায়েন্ট ভাবেনি। সাইট শেষ করার পরে ডেভলপার সাইট পার্টির কাছে বুঝিয়ে দেয়। বুঝিয়ে দিয়েছিল ও, কিন্তু আমি বুঝে নেইনি ইচ্ছে করে। থাকুক আমার চাবি মুক্তোর কাছে, ছোট ভাইই তো আমার। বড় ভাইর দায়িত্ববোধ থেকে চেষ্টা করি কিছু কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য। সম্ভবত আমার বন্ধু এবং সোনেলার ব্লগার নাসির সারওয়ার দু একটা কাজ দিয়েছিলো মুক্তোকে।

মুক্তো কত ভালো কাজ করেছিলো? এর উত্তর হচ্ছেঃ কিছুদিনের জন্য কানিজ ফাতিমা লিজাকে আমাদের সোনেলার ব্যানার বানানোর দায়িত্ব দেই, এবং আমাকে সাইট কিছুটা বোঝানোর জন্য ডেভলপার বানাই। সোনেলার অভ্যন্তরীণ কাজ দেখে লিজা অবাক হয়েছিল খুব। বিশাল এক সাইটের চেয়েও বেশী কাজ করেছিল মুক্তো। এমন এমন অপশন সাইটে যুক্ত ছিলো যা কখনো লিজা বা ওর সহকর্মীদের মাথায় আসেনি। লিজা নিজেও সাইট বানায় একটা অফিসে জব করার সুবাদে।
মুক্তো হচ্ছে আমাদের নাজমুল আহসান, যাকে মুক্তো নামেই ডাকি আমি।

#সোনেলার_জন্মকালীন_চিন্তাভাবনা- ২


ছবি কৃতজ্ঞতা আমার এক বন্ধু কায়কোবাদ হোসেন, সচিব, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।

0 Shares

৪৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ