সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ -১

কামাল উদ্দিন ১৫ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ০১:৫১:৪৬অপরাহ্ন ভ্রমণ ২৯ মন্তব্য

“সোনাদিয়া” কক্সবাজার জেলার মহেশখালি উপজেলার একটি সুন্দর দ্বীপ। এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৭ বর্গ কিমি.। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিমি উত্তর-পশ্চিমে এবং মহেশখালি দ্বীপের দক্ষিনে সোনাদিয়া দ্বীপটি অবস্থিত। একটি খাল দ্বারা এটি মহেশখালি দ্বীপ থেকে বিছিন্ন হয়েছে। তিন দিকে সমুদ্র সৈকত, সাগর লতায় ঢাকা বালিয়াড়ি, কেয়া- নিশিন্দার ঝোপ, ছোট-বড় খাল বিশিষ্ট প্যারাবন এবং বিচিত্র প্রজাতির জলাচর পাখি দ্বীপটিকে করেছে অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। এটি জীববৈচিত্রের দ্বীপ নামেও পরিচিতি এবং এ দ্বীপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসুদের জন্য অন্যতম পর্যটন স্থান। তবে সরকার ইদানিং সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর সহ বড় বড় প্রকল্পের পরিকল্পনা করছে, যা এখানকার জীব বৈচিত্রের জন্য হুমকী স্বরূপ।

সোনাদিয়া দ্বীপে পর্যটকদের থাকার জন্য কোনো আবাসিক হোটেল নেই। খাওয়ারও তেমন কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় লোকজনকে টাকা দিলে তারা খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। আর সোনাদিয়া দ্বীপে রাত্রি যাপনের ক্ষেত্রেও ভরসা সেই স্থানীয় বাসিন্দারাই। তবে তাবু করেও ওখানে থাকা যায়, সেক্ষেত্রে স্থানীয়দের পাহাড়ার ব্যবস্থাটা অবশ্যই বাঞ্চনীয়।

সোনাদিয়া দ্বীপের মানব বসতির ইতিহাস মাত্র ১০০-১২৫ বছরের। দ্বীপটি ২টি পাড়ায় বিভক্ত। পূর্ব ও পশ্চিম পাড়া। দ্বীপের মোট জনবসতি প্রায় ২০০০ জন। পূর্ব পাড়ায় তুলনামূলকভাবে জনবসতি বেশী। মাছ ধরা এবং মাছ শুকানো, চিংড়ি ও মাছের পোনা আহরন দ্বীপের মানুষের প্রধান পেশা। কিছু মানুষ ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও কাঠের সাধারন নৌকা এবং উহা চালানোর সহকারী হিসাবে কাজ করেও জীবিকা নির্বাহ করে। চারিদিকে নোনা পানি বেষ্টিত হওয়ায় এই দ্বীপে তেমন কোন খাদ্য শষ্য উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। দৈনন্দিন প্রয়োজনাদি জিনিস পত্র সব মহেশখালি থেকে ক্রয় করে আনতে হয়।

এই দ্বীপে ২টি মসজিদ, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি সাইক্লোন সেন্টার, আনুমানিক ১২টি গভীর নলকূপ রয়েছে।


(২) কক্সবাজার কস্তুরী ঘাটে ট্রলারের জন্য আমাদের অপেক্ষা।


(৩) ঘাটে বসে থাকা মাছ ধরার ট্রলারগুলো।


(৪) কস্তুরী ঘাট থেকে সোনাদিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে দিয়াছে আমাদের রিজার্ভ ট্রলার। ভেঙ্গে সোনাদিয়ায় যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে মহেশখালী। মহেশখালী যাওয়ার স্পীডবোট বা ট্রলার এখান থেকে নিয়মিত পাওয়া যায়। মহেশখালী ঘাটে নেমে রিক্সা নিয়ে চলে যাবেন গোরকঘাটা বাজারে, ভাড়া ২০ টাকা। এরপর আপনাকে যেতে হবে ঘটিভাঙ্গায়, মহেশখালীর গোরকঘাটা থেকে ঘটিভাঙার দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। ৩-৪ জন হলে একটা সিএনজি নিয়ে যেতে পারেন ঘটিভাঙ্গা, ভাড়া ১৫০-১৭০ টাকা। সেখান থেকে আবার ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে সোনাদিয়া দ্বীপে যেতে হয়। এখন অবশ্য একটা সেতুও আছে মহেশখালী থেকে সোনাদিয়ায় যাওয়ার জন্য।


(৫) পানিতে অলস বসে আছে একটা গাঙচিল।


(৬) সাগর পাড়ে ট্রলার মেরামত বা তৈরীর কারখানা।


(৭/৮) আমাদের স্মৃতি ধরে রাখার চেষ্টা।


(৯/১০) সাগরে কর্ম ব্যস্ত জেলে নৌকাগুলো।


(১১) মহেশখালীর বাঁকে। দূরে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের এক মাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালিকে।


(১২/১৩) এক সময় সাগরের প্রচন্ড ঢেউয়ের মধ্যে পড়ি আমরা।


(১৪) সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে আমাদের ট্রলার যখন মোচার খোলের মতো দুলছিল তখন আমরা অনেকেই ক্যামেরাকে এভাবে পলিথিনে বন্ধি করেছিলাম । ভয়টা অবশ্য অমূলক ছিল না এই জন্য যে, ভ্রমন বাংলাদেশের ২০০৯ সালের সোনাদিয়া ভ্রমনে ট্রলার ডুবি হয়ে সবার ল্যপটপ, ক্যামেরা এবং মোবাইল ফোন নষ্ট হয়ে গিয়েছিল ।


(১৫) চমৎকার আবহাওয়ায় এক সময় আমরা প্রবেশ করলাম বাকখালি নদীতে।


(১৬) প্যারাবনের উপর দেয়ে দেখা যাচ্ছে বাকখালি নদীর উপরের ব্রীজ, এই ব্রীজ সোনাদিয়া আর মহেশখালির সেতুবন্ধন।


(১৭) এক সময় আমরা নদীর আরো ভেতরে প্রবেশ করলাম।


(১৮) ঐতো দেখা যায় সোনাদিয়া দ্বীপ।


(১৯) আমাদের বড় ট্রলার স্বল্প পানিযুক্ত তীরে ভিরতে পারবে না, তাই ছোট নৌকার ব্যবস্থা.....


(২০) এক সময় আমাদের টিম পা রাখল সোনাদিয়ার মাটিতে।

চলবে...........

0 Shares

২৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ