জীবনের গল্প-৯-এর শেষাংশ:☛ এভাবে চলতে চলতে একসময় নগর খাঁনপুর মহল্লার সমবয়সী বন্ধু-বান্ধব অনেক হয়ে গিয়েছিল। একসময় চানাচুর বিক্রি বাদ দিলাম। নগর খাঁনপুর মহল্লার সমবয়সীদের সাথে রিকশা চালানো শিখলাম। রিকশা চালানো শিখে নারায়ণগঞ্জ শহরে রিকশা চালাতে শুরু করলাম।
সংসারে অভাব দূর করার জন্য প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাতদুপুর পর্যন্ত রিকশা নিয়ে শহরের আনাচে-কানাচে পড়ে থাকতাম। রিকশা চালিয়ে যা পেতাম, মায়ের কাছে এনে দিতাম। মা সংসারে খরচ করতো। তখন হঠাৎ করে এদেশে এক ধরণের নতুন রোগ দেখা দিলো। রোগের নাম 'ঝিনঝিনা' রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে মানুষ হঠাৎ করে কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে পড়ে যেতো। ওই রোগের একমাত্র ঔষধ ছিলো, রুগীর শরীরে পানি ঢালা। তখন আমরা নগর খাঁনপুরেই থাকতাম। সেসময় 'ঝিনঝিনা' রোগের ভয়ে প্রতিদিন ঠিকমতো রিকশা চালানো হতো না। ভয়ে ভয়েই বেশি থাকতাম। মহল্লায় থাকা আরও বন্ধু-বান্ধদের সাথেই সারাদিন ঘুরাফেরা করতাম। মহল্লার কেউ 'ঝিনঝিনা' আক্রান্ত হলে তাঁকে সবাই ধরাধরি করে পুকুরপাড় সিঁড়ি ঘাটলায় বসিয়ে রুগীর শরীরে পানি ঢালতাম। রুগী যতক্ষণ না পর্যন্ত সুস্থ না হতো, ততক্ষণ পর্যন্ত রুগীর গায়ে-মাথায় পানি ঢালতেই থাকতাম। এভাবে আমরা 'ঝিনঝিনা' রুগীকে সুস্থ করে তুলতাম।
আমরা কয়েকজন বন্ধু ছিলাম নগর খাঁনপুর মহল্লার সেচ্ছাসেবী হিসেবে। তখন ওই রোগের ভয়ে মহল্লার হিন্দুরা দলবেঁধে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা হরির নাম সংকীর্তন করতে করতে পুরো মহল্লার আনাচে-কানাচে চক্কর দিতো। মহল্লার ইসলাম ধর্মাবলম্বীরাও সকাল-বিকাল আল্লাহু আল্লাহু জিকির করতে করতে মহল্লার আনাচে-কানাচে ঘুরতো। প্রায় দিনেক ১৫ দিন পর একসময় ওই রোগ আস্তে আস্তে নিস্ক্রিয় হলো। যাঁর যাঁর সাংসারিক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আমিও আবার নিয়মিত প্রতিদিন রিকশা চালাতে শুরু করলাম।
আমি যেই মালিকের রিকশা চালাতাম, উনার নাম ছিলো, লেচু মহাজন। সবাই উনাকে লেচ্চা মহাজন নামেই চিনতো। নতুন রিকশা চালানো শেখা থেকেই আমি লেচ্চা মহাজনের রিকশাই চালাতাম। একসময় আমার সাথের অনেক রিকশাওয়ালারা রিকশা চালানো বাদ দিলেও, আমি আর বাদ দিতে পারছিলাম না, অন্যকোনো ভালো একটা কর্ম না জানার কারণে। তখন সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদ নতুন করে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলো। দেশের চারদিকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। সেনাবাহিনী গাড়ি নিয়ে শহরের রাস্তায় রাস্তায় টহল দিতে শুরু করলো। কারোর মাথায় লম্বা চুল দেখলে চুলের মুঠি ধরে কেচি দিয়ে ধানকাটার মতো কেটে দিতো। মায়ের জাতি নারীদের পেট দেখা গেলে পেটে আলকাতরা লাগিয়ে দিতো।
ওই বিপদে আমি নিজেও একবার পড়েছিলাম। রিকশায় প্যাসেঞ্জার নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ২ নং রেল-গেইট সংলগ্ন ডায়মন্ড সিনেমাহলের সামনে গেলাম। হঠাৎ করে সেনাবাহিনীর আমার রিকশার সামনেই গাড়ি থামালো। তখন আমার মাথার চুল অনেক লম্বা ছিলো। আমাকে দেখামাত্রই দুইজন সেনাবাহিনী আমার চুলের মুঠি ধরে ঘেচাং ঘেচাং করে কেটে দিলো। এমনভাবে ঘেচাং ঘেচাং করলো, তখন মাথা ন্যাড়া করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। সেদিনের রোজগার মাটি দিয়ে গ্যারেজে রিকশা জমা দিয়ে গেলাম সেলুনে। সেলুনের নাপিত আমাকে দেখে হাসতে লাগলো। বললাম, 'ভাই হাসাহাসি বাদ দিয়ে মাথাটা ন্যাড়া করে দিন।' নাপিত আমার মাথা ন্যাড়া করছে, আর বিস্তারিত জানতে চাচ্ছে। বললাম, নাপিতের কাছে বিস্তারিত ঘটনা। মাথা ন্যাড়া করে বাসায় আসলাম। মহল্লার সবাই আমাকে দেখে হাসতে লাগলো। সাথে বন্ধুরা জানতে চাইলো, 'ঘটনা কী?' সব বৃত্তান্ত খুলে বললাম। বাসায় আসার পরও ওই হাসা-হাসির পালায় পড়লাম। বৌদি হাসে, বড়দিদি হাসে। বড় দাদাও হাসতে লাগলো। এরপর আর ভয় করতাম না, নির্ভয়ে বুকেরপাটা টান করে রিকশা নিয়ে শহরে ঘুরতাম। অবশ্য এর কয়েকদিন পর সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল। সেনাবাহিনীর আনা-গোনাও কমে গেলো। যে যাঁর মতো শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করতে লাগলো।
এর কিছুদিন পর হঠাৎ করে ফেনী থেকে আমার অবিবাহিত বড় বোনের বিয়ের সম্বন্ধ আসলো। ছেলে পক্ষের কোনও দাবি-দাওয়া নেই, কোনরকম বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে দিতে পারলেই হলো। ছেলেটা আমার মায়ের গুরুদেবের পরিচিত ছিল বলে আমার মা মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হয়ে গেলো। কিন্তু হিন্দু বিয়ে বলে একটা কথা তো ছিলোই। একেবারে গাছ-পা খালি-পা করে করে তো, বিয়ে দেওয়া যায় না। তাই আমার মা নগর খাঁনপুর মহল্লার হিন্দু মুসলমান সকলের হাতে-পায়ে ধরে মেয়ের বিয়ের জন্য সাহায্য চাইতে শুরু করলো। আমাদের বাড়িওয়ালা আমার বোনের বিয়ের সাহায্যের জন্য আমাদের হয়ে নগর খাঁনপুররের বিশিষ্টজনদের কাছে গেলো এবং বিয়ে যাতে সুন্দরভাবে হয়, সেজন্য তাদের পরামর্শ চাইলো। তখন নগর খাঁনপুর মহল্লায় থাকা বিশিষ্টজনরা সম্মিলিতভাবে গরিবের মেয়ের বিয়ের জন্য সকলকে সাহায্য করার অনুরোধ করে একটা সাদা কাগজে দরখাস্তের মতো লিখে দিলো। সেই কাগজ সাথে নিয়ে আমি আর আমার মা বোনের বিয়ে সম্পন্ন করার জন্য নারায়ণগঞ্জ শহরের অলিগলিতে, মার্কেটে মার্কেটে গিয়ে ধনী-গরিব সকলের কাছে সাহায্য চাইতে লাগলাম। কেউ দিতো, কেউ আবার দিতো না। তবুও দ্বারেদ্বারে যাওয়া বন্ধ করলাম না, যেতেই লাগলাম। সাহায্য উঠাতে লাগলাম।
এভাবে বেশকিছু টাকা সংগ্রহ করলাম। আর নগর খাঁনপুর থেকেও কেউ লেপ, কেউ তোশক, কেউ ঘটি-বাটি, কেউ নগদ টাকা দিয়ে সাহায্য করতে লাগলো। যে যা দিতো সব আমাদের বাড়িওয়ালার স্ত্রীর কাছেই জমা থাকতো। একসময় বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক হলো। বিয়ের ১০/১২ দিন বাকি থাকতে আমি বোনের বিয়ের জন্য সাহায্য উঠাতে চলে গেলাম, নোয়াখালী নিজের গ্রামে। গ্রামে গিয়ে আত্মীয়স্বজনদের কাছে বোনের বিয়ের জন্য সাহায্য চাইলে, গ্রামের সব হিন্দু বাড়ির লোকজন একত্রিত হয়ে কেউ ২০ টাকা, কেউ ২৫ টাকা এমন করে ২০০টাকার মত মিলিয়ে আমার হাতে তুলে দিলো। তারপর গেলাম, আমার মাসিমা'র বাড়িতে। মাসিমা'র বাড়ি ছিলো নোয়াখালী সোনাপুর রেলস্টেশনের পূর্বদিকে রাজুরগা গ্রামে। আমার বোনের বিয়ের কথা শুনে আমার মাসিমা আর মাসতুতো ভাই-বোন মিলে আমাকে ২০০টাকার মতো হাতে দিলো। আমি সেই টাকা নিয়ে তিনদিন পর নারায়ণগঞ্জ ফিরে আসি। তারপর কোনোএক সুন্দর লগ্নে কোনও ঝায়-ঝামেলা ছাড়াই সবার সাহায্য সহযোগিতায় বোনের বিহাহের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়ের পরদিনই জামাইবাবু দিদিকে নিয়ে ফেনী ফুলগাজী নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আমাদের সংসার কিছুটা স্বচ্ছলভাবে চলতে থাকে। বড়দাদা কাজ করতো কিল্লার পুল এলাকায় এক টেক্সটাইল মিলে। আর আমি প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে শুরু করে রাতদুপুর পর্যন্ত রিকশা নিয়েই পড়ে থাকতাম নারায়ণগঞ্জ শহরের পাড়া-মহল্লার আনাচে-কানাচে।
একসময় আমার বড়দাদা কিল্লার পুল সংলগ্ন টেক্সটাইল মিলের কাজ ছেড়ে হাজীগঞ্জ আইইটি স্কুল নামক স্থানে এক নতুন টেক্সটাইল মিলে কাজ নেয়। সেসময় আমি রিকশাই চালাতাম। আমার বড়দাদা আমার পরিশ্রম দেখে আমাকে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বড় দাদার সাথে কাজ শেখার জন্য বললো। কাজ শিখে রিকশা চালানো ছেড়ে দিতে বললো। বড় দাদার কথামতো আমি তা-ই করতে থাকি। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রিকশা চালাতাম, আর দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সেরে বড়দা'র সাথে টেক্সটাইল মিলের তাঁতের কাজ শিখতাম। একসময় তাঁতের কাজ পুরোপুরি শিখেও ফেললাম। তখন রিকশা চালানো ছেড়ে দিয়ে বড়দাদা যেই মিলে কাজ করতো, সেই মিলেই কাজ করতে লাগলাম। আমি তখন ২০ বছরের এক যুবক। হাতে-পেয়েও ছিলাম উঁচা-লম্বা। শরীরের দিক দিয়েও ছিলাম আরও দশজনের চেয়ে স্বাস্থ্যবান এক জবরদস্ত যুবক।
সেসময় বাংলাদেশে নতুন একধরনের পলিয়েস্টার সূতার আগমণ ঘটলো। পলিয়াস্টার সূতার কাপড়ের খুবই চাহিদা ছিলো। রেডিওতে প্রতিদিন পলিয়েস্টার সূতার গুণাগুণ প্রচার করা হতো। সেসময় এই বঙ্গদেশের জেলা-শহরগুলোর আনাচে-কানাচে কচুগাছের মতো টেক্সটাইল মিল গড়ে উঠতে শুরু করলো। কোরিয়া, জাপান থেকেও কাপড় তৈরির অত্যাধুনিক মেশিনপত্র আসতে লাগলো। কাপড়ের কারিকর (তাঁতি)-সহ টেক্সটাইল মিলের বিভিন্ন কাজের লোকের চাহিদা বেড়ে গেলো। ঠিক সে-সময়ই আমি হলাম একজন সুদক্ষ তাঁতি। তাঁতের কাজ যেখান থেকে শেখা, সেখানেই অনেকদিন মনোযোগ সহকারে তাঁতের কাজ করলাম। একসময় আমার আর তাঁতের কাজ ভালো লাগছিল না। কারণ তাঁতের কাজ করতে হয়, দিনে-রাতে। এক সপ্তাহ দিনে, এক সপ্তাহ রাতে। রাতজাগা কাজটা আমার ভালো লাগছিল না। শিখলাম উইভিং ডিপার্টমেন্টের (তাঁত বিভাগ) অন্য এক কাজ। সেই কাজটা শুধু দিনেই করতে হয়। তাই খুব মন দিয়ে ওই কাজটা শিখেছিলাম। কাজটার নাম রেসিং ম্যান। কেউ ড্রয়ার ম্যানও বলে। আবার কেউ বলে, ব-গাঁথা বা বয়া-গাঁথা বা হানা-ব ভরা বা শানা-ব ভরা। কাজটা শিখেছিলাম ঠিক, কিন্তু এই কাজটা কোনও মিলে পার্মানেন্ট করতে পারছিলাম না। ওই কাজ শিখেও কাজ জোগাড় করতে না পেরে বাধ্য হয়ে তাঁতের কাজেই করতে লাগলাম।
একসময় বড়দাদা নগর খাঁনপুর থেকে বাসাও ছড়ে দিলো। নতুন করে বাসা ভাড়া নিলো নারায়ণগঞ্জ গলাচিপা এলাকায় গোয়ালপাড়া। বড়দাদা বাসা ছাড়ার সাথে সাথে নতুন করে ফতুল্লা কাঠের পুল এলাকায় থাকা একটা টেক্সটাইল মিলে কাজ নিয়ে নিলো। আমাকেও সাথে নিলো। ওই মিলে মাত্র ৭টা পাওয়ার লোম (তাঁত) ছিলো। মিলের নাম ছিলো, মিলন টেক্সটাইল মিলস্। মালিকের নাম ছিলো, মিলন সাহেব। মালিকের বাড়ি ছিলো বিক্রমপুর। দোকান-সহ ব্যবসা ছিলো ঢাকা ইসলামপুর। ওই মিলে আমরা দুই ভাই একজোড়া তাঁত পার্মানেন্ট নিয়ে নিলাম। আর বাদবাকি তাঁত আরও কয়েকজন কারিকর (তাঁতি) চালাতো। আমার বড় দাদা করতো দিনে, আমার কপালে পড়লো, সেই রাতেই ডিউটি। তবুও বাধ্য হয়ে করতাম। কিন্তু রাতের কাজ আমার ভালো লাগতো না। তাই শখ করে যেই কাজটা আরও আগে শিখেছিলাম, সেই কাজটা আমাকে দেওয়ার জন্য একদিন মালিক মিলন সাহেবকে বললাম। কিন্তু সেই কাজটা তখন মিল এলাকার আবুল নামের একজন লোকে করতো। সেই লোক আবার আরও দুই-একটা মিলে চুক্তিতে কাজ করতো।
একসময় আমার বড়দাদা ওই আবুল নামের লোকটার সাথে আমার ব্যাপারে আলাপ করলো। তখন ওই লোক নিজের ইচ্ছায় মিলন টেক্সটাইল মিলের ড্রয়ার ম্যানের কাজটা আমাকে বুঝিয়ে দিলো। আমি স্থানীয় একটা ছেলেকে(হেলপার) নিয়ে ওই শখের রেসিং-এর কাজটা করতে থাকি। মিলন টেক্সটাইল মিলে কাজ করতে করতে একসময় নারায়ণগঞ্জ শহরে আনাচে-কানাচে থাকা ছোট-বড় প্রাইভেট টেক্সটাইল মিলে আমার নাম ছড়িয়ে পড়লো। যেখানে যেই মিলেই নতুন পাওয়ার লোম (তাঁত) আসতো আমাকে সেই মিলে কাজ করার জন্য মালিক পক্ষ থেকে অফার দিতো। কিন্তু কোনও মিলে পার্মানেন্ট কাজ বা চাকরি করার কথা দিতাম না। তবে মিলন টেক্সটাইল মিলের কাজের ফাঁকে ফাঁকে হেলপার নিয়ে অন্য মিলে গিয়ে চুক্তিতে কাজ করে দিতাম। তখনকার সময়ে টেক্সটাইল মিলে আমার এই কাজের প্রচুর চাহিদা ছিলো। একটা টেক্সটাইল মিলে মনোমত ১০০জন তাঁতি থাকলেও একজন মনের মতো ড্রয়ার ম্যান থাকতো না। ড্রয়ার ম্যান বা রেসিং ম্যানের কাজটা ছিলো খুবই খেয়ালি ও ধৈর্যশালী কাজ। এই কাজটা করতে হতো নির্ভুলভাবে!
চলবে...
২৫টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
জীবনের নুতন অধ্যায়, কিছুটা সুবাতাসের হাতছানি।
নিতাই বাবু
হ্যাঁ, সত্যিই কষ্টের বাতায়নে মিষ্টি বাতাস, কবি মহারাজ। অভাবটাকে কিছুটা সামলে নিতে পেরেছিলাম।
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় কবি মহারাজ।
সুপায়ন বড়ুয়া
জীবনের গল্পে চুল কাঁটা নিয়ে স্বৈরাচারী ঢং মনে পড়ে গেল।
বোনের বিয়েতে সবার সহযোগীতার কথা সম্প্রীতির কথা মনে পড়ে গেল
শুভ কামনা।
নিতাই বাবু
তাঁদেরই আন্তরিকতা এখনো ভুলিনি দাদা। এখন সময় পেলে নগর খাঁনপুর মহল্লায় গিয়ে সমবয়সীদের সাথে দেখা করি, ভাব বিনিময় করি।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় কবি দাদ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দাদা এখন যুবক হয়েছে, সংসারে কিছুটা স্বচ্ছলতা লেগেছে। ভালো লাগছে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন অহর্নিশি শুভেচ্ছা ও শুভকামনা
নিতাই বাবু
হ্যাঁ দিদি, অনেক কষ্টের পর অভাবটাকে কিছুটা আয়ত্ত্বে আনতে পেরেছিলাম। কয়েকবছর খুব ভালোভাবে চলেছিলাম।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দিদি।
আলমগীর সরকার লিটন
স্মৃতিমাখা তো সুখ দুঃখ বেদনা জরজরিত থাকে নিতাই দা
নিতাই বাবু
অবশ্যই দাদা। আমি সুখদুঃখ নিয়েই লিখতে চাচ্ছি। আশা করি সাথেই থাকবেন। শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় কবি দাদা।
মোঃ মজিবর রহমান
জিবনের ঘাত সহ্য করেই এগিয়ে এসেছেন। এখন চলছে। আমাদের জিবন এভাবেই চলবে ও নিষশেষ হবে।
শ্রষ্টার নিকট প্রার্থপ্না সুস্থ রাখুক।
নিতাই বাবু
হ্যাঁ দাদা। কষ্টকে কষ্ট মনে না করে এপর্যন্ত তো এসেছি। বাকিটা জীবন যেন এভাবেই চলে যায়, সেই কামনা করি।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় মজিবর দাদা।
মোঃ মজিবর রহমান
আপনার প্রতি রইল শুভেচ্ছা দাদা।
ফয়জুল মহী
জীবনও ঠিক একটা বৃক্ষের শুষ্ক মৌসূমে পাতা ঝরে পড়ে আবার বর্ষার পানি ফেলে নতুন পাতা গজায় । আর এটা চলতেই থাকবে তাই জীবন থেমে যায় না ।
নিতাই বাবু
ঠিকই বলেছেন দাদা। জীবন আমার একেবারে থেমে যায়নি। চলছেই। আমিও কষ্টকে নিজের করে নিয়েছি। কষ্ট যেন ঠিক আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মতো।
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদা।
আরজু মুক্তা
চুল যে কাটলো, এটা কতো সালে?
নিতাই বাবু
মনে হয় ১৯৬৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসাইন মাহমুদ এরশাদ যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়, তখন।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দিদি।
নিতাই বাবু
ভুল হয়েছে দিদি, ১৯৬৩ নয়, হবে ১৯৮৩ ইং। বুঝে নিয়ে সুন্দর দৃষ্টিতে নিবেন।
তৌহিদ
কস্টের পরেই সুখ আসে। জীবনে যারা কষ্ট করে তারাই সুখে থাকে যদিও সুখ জিনিষটি আপেক্ষিক। আপনিও ভালো থাকুন দাদা।
নিতাই বাবু
এখনো সুখের নাড়ার পাইনি দাদা। জীবন চলে কষ্টের মাঝেই। তবুও সন্মানে আছি, ভালো আছি। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দাদা।
নিতাই বাবু
তাড়াহুড়োর মাঝে শুধু ভুলই হয়! ‘নাড়ার’ নয় দাদা, হবে “নাগাল”
সাবিনা ইয়াসমিন
কত কিছু জানতে পারলাম! ঝিনঝিনা রোগের কথাও এই প্রথম জানলাম।
ছেলেদের চুল কাটাকাটির ব্যাপারটি মানতে পারলাম কিন্তু মেয়েদের পেটে আলকাতরা দিতো কেন? সেনা শাসিত আঈনে কি এমন নিয়ম ছিলো? আর হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়েতে কোনো দ্বায়-দাবী না থাকার পরেও এত কিছুর যোগাড় করতে হয়? এটাইকি নিয়ম?
আমি হয়তো অনেক প্রশ্ন করে ফেলেছি, কিন্তু আমি আসলে এইসব জিনিস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।
* তখন সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসাইন মাহমুদ এরশাদ নতুন করে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলো**
হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ এর নামের বানান ঠিক করতে হবে দাদা।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
নিতাই বাবু
১। ঝিনঝিনা রোগে একসময় গোটা দেশ কাঁপিয়ে দিয়েছিল। তা অবশ্য অনেকেরই মনে আছে।
২। আলকাতরা লাগানো নিয়ে তখন অনেক সমালোচনাও হয়েছিল। ওটা নিয়েই সমালোচনার কারণে খুব তাড়াতাড়ি ছেলেদের চুল কাটা, আলকাতরার অবসান ঘটে।
৩। হিন্দু বিয়েতে একেবারে খালিখালি বিয়ে তো হবার নিয়মই নেই। যদিও হয়, তা কোর্টম্যারেজ বা কালীবাড়ি গিয়ে মন্দিরের পুরোহিতকে নামমাত্র দক্ষিণা দিয়ে হতে পারে। আর যদি আনুষ্ঠানিকভাবে হয়ে, তাহলে সেই বিয়েতে নানারকম নিয়মনীতি পালন করেই বিয়ের কার্যসম্পাদন সম্পন্ন করতে হয়। তাই অনেককিছুর দরকারও হয়। যেমন- অধিবাস থেকে শুরু করে বিয়ের পর আড়াই (আড়ইউল্লা বা ফিরা উল্টা) দিনের খরচ পর্যন্ত শুধু খরচ আর খরচ!
আর বানান সংশোধন করা হয়েছে।
গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দিদি।
মনির হোসেন মমি
আপনার জীবনীর সাথে দেশের পুরনো ইতিহাসও তুলে ধরেছেন পড়ে খুব ভাল লাগছে।চলুক লেখা। ঝিনঝিন রোগ অনেকে কী এটাকে মিরকি ব্যারাম বলে? এরশাদের দুঃশাসন রীতিমত ভয়ার্ত ছিল।
নিতাই বাবু
হুম! প্রয়াত এরশাদ সাহেবের আমলের কথা মনে আছে তাহলে, দাদা। ঝিনঝিনা রোগের কথা মনে হয় তেমন একটা মনে নেই। সেসময় এই করোনাভাইরাসের মতনই ঝিনঝিনা রোগে বাংলার মানুষকে আক্রমণ করে ফেলেছিল। ওই রোগটি মিরকি বেমারের মত ছিল না, দাদা। ওটি ছিলো, রুগীর সমস্ত শরীর ঝিমঝিম করতে করতে হঠাৎ রুগী জ্ঞানহারা হয়ে পড়তো। সেই রুগীর একমাত্র ঔষধ ছিল পানি। রুগীর গায়ে-মাথায় পানি ঢালতে ঢালতে রুগী সুস্থ হয়ে উঠতো। এব্যাপারে আপনার পরিচিত কারোর কাছে জিজ্ঞেস করলেও পেয়ে যাবেন, ঘটে যাওয়া ঝিনঝিনা রোগের মাহাত্ম্য।
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় মনির দাদা।
মনির হোসেন মমি
যেই সময়ের ইতিহাস বলছেন সে সময়টা আজকের এতো দ্রুত তথ্য আদান প্রদানের সুযোগ ছিলো না তাই হয়তো রোগটির সম্পর্কে ওতটা জানা নেই ।
নিতাই বাবু
হ্যা দাদা, একদম ঠিক বলেছেন। তাই হয়তো অনেকের কাছেই ওই সময়ের ওই ঝিনঝিনা রোগের কথা অজানাই রয়ে গেলো। প্রত্যুত্তরে খুশি হলাম। শুভকামনা থাকলো।