একটি সময়ে প্রিয় ব্লগারদের জন্মদিনের শুভেচ্ছার পোস্ট দেয়াটা একটা নেশার মত ছিল। প্রিয় মানুষটিকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাবোনা তা কী করে হয় ? যাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছি , তাঁরা নিজেদের যোগ্যতায় স্ব স্ব ক্ষেত্রে উজ্জ্বল ছিলেন । তাঁরা নিজেরাই ছিলেন এক একজন জনপ্রিয় মানুষ। অনেক শুভাকাঙ্ক্ষির মাঝে আমিও ছিলাম একজন মাত্র। তাই আমার দেয়া পোস্টে সকল শ্রেণীর শত শত ব্লগার তাঁদেরকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন । আমার দেয়া পোস্ট ছিল শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যম মাত্র।

এরপর একটি সময়ে উপলব্ধি হোল - আসলে অনলাইনে এইসব শুভেচ্ছা গুলো হয়ত মূল্যহীন । যদিও আমি মুল্যবান বা মূল্যহীন বিষয়টি নিয়ে কিছুটা সন্দিহান । তবে মানুষকে শুভেচ্ছা জানাতে অকৃপণ আমি। তাই দু'এক সময় আমাকে যারা শত্রু ভাবেন - তাদেরকেও জন্মদিনে বা যে কোন পালা-পার্বণে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেলি। পরক্ষণে তাঁদের প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে পারি এবং মনে পরে যায় - আরে এই লোকটি তোঁ আমাকে শত্রু ভাবে । এই অন লাইনে এমনও হয়েছে , ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছি আমার মোবাইলে সেইভ করা  সবাইকে , একই মেসেজ । কেউ কেউ ভেবে বসে থাকেন - এই মেসেজটা শুধু তাঁকে প্রদান করেছি । বেশ একটু হাম হাম ভাব নিয়ে , তা দু'একজনকে বলেও বেড়ায় তাঁরা । যাদের কাছে বলে বেড়ায়- তাঁরা হাসেন , কারণ তাঁদের কাছেও ঐ একই শুভেচ্ছা বার্তা , কিন্তু তাঁদের কোন ভাব জাগে না। কিছু পাগল মনে মনে শান্তি সব সময়ই পায় ।

এই শুভেচ্ছা দেয়া এক সময় বন্ধ করে ফেলি। আর কিছুটা প্রতিজ্ঞাও করি '' যদি কোনদিন কোন ব্লগে আর লেখালেখি করি , জন্মদিনের শুভেচ্ছা পোস্ট আর নয় '' ।

আজ সেই প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের দিন ।
একজন মানুষের জন্য এই প্রতিজ্ঞা বজার রাখা অর্থহীন। তিনিও তিন বছর আগে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন -
'' জীবনে আর কোনদিন ব্লগে লিখবো না । '' তিনি তাঁর কথা রাখতে পারেননি । দীর্ঘ তিন বছর পরে প্রতিজ্ঞা ভুলে লিখলেন আবার এই ছোট ব্লগ সোনেলায়। আজ তাঁর জন্মদিন ।

শুভ জন্মদিন বন্দনা কবীর ।  

ব্যাক্তি বন্দনা কবীরকে যারা জানেন , তাঁরা সবাই জানেন যে মানুষ হিসেবে কতটা শ্রদ্ধার পাত্র তিনি। তাঁর পরিচালনায় একটি সাহায্য গ্রুপে আছি আমরা কয়েকজন। নিজে প্রচন্ড অসুস্থ শরীর নিয়ে চোখের অপারেশন করা একজন রোগীর জন্য হাসপাতাল সহ বিভিন্ন স্থানে ছুটোছুটি করেছেন তিনি। যে অসুস্থ অবস্থায় তিনি তাঁর মানবিক দায়িত্ব পালন করেছেন , আমি নিজে তেমন পারতাম না , অন্য কাউকে এমন পারতেও দেখিনি। সফল অপারেশন পরবর্তী রোগীর মুখে হাসি দেখার পরে তিনি ছুটি নেন। এমন উদাহরন আরো দেয়া যায় ।

তিনি ভালো লিখেন , অত্যন্ত স্পষ্টবাদী । মতের অমিল হলে সরাসরি বলে ফেলেন ।
স্বাধীনতার পক্ষের একজন মানুষ । রাজাকারদের ঘৃণা করেন । যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান দ্রুত ।
একজন লেখক হিসেবে তাঁর বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে । তাঁর প্রকাশিত বইঃ
১/ দুপুরের গল্প (উপন্যাস)
২/ ছায়াচ্ছ্বন্ন ( উপন্যাস)
৩/ বারো জীবন (উপন্যাস)
৪/ শুক্লপক্ষ-কৃষ্ণপক্ষ (উপন্যাস)
৫/ দর্পন (গল্প)
৬/ লাল মলাটের ডাইরি (ছোটদের রহস্য উপন্যাস)
৭/ কাপ্তাই এর কাপ্তান । (ছোটদের বড় গল্প)
৮/ রৌদ্র-ছায়ার দিন (উপন্যাস)
৯/ সরল রেখা- বক্র রেখা (উপন্যাস)
১০/ অবহেলার কাব্য (কবিতা)
১১/ ছিন্নপত্রের দীর্ঘশ্বাস (কবিতা)
১২/ কল্পচিত্র ( বড় গল্প)
১৩/ ভয়ংকর সাদা (ছোটদের রহস্য উপন্যাস)
১৪ / রমনীয় কৌতুক (কৌতুক)

এমন একজন লেখককে সোনেলা ব্লগে পেয়ে আমরা গর্বিত ।

আজ এই দিনে তাঁর জন্য উৎসর্গ করা গান    

 

0 Shares

২৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ