চামচিকা মসজিদ

কামাল উদ্দিন ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, রবিবার, ০৮:০৭:০৯অপরাহ্ন ভ্রমণ ১৮ মন্তব্য

নামটা শুনেই যাওয়ার আগ্রহটা বেড়ে গিয়েছিল। আমি ভাবছিলাম ঐ মসজিদে চামচিকাদের ব্যপক আনাগোনা। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই ছিল না। ১৪৫০ থেকে ১৫৬৫ খ্রিস্টাব্দ অবধি গৌড় যখন বাংলার রাজধানী ছিল তখন এই চামচিকা মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। চামচিকা মসজিদের নামকরণের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়না। তবে বর্তমান ভারতে অবস্থিত বড় চামচিকা মসজিদের আদলেই এটি তৈরী। ইট ও পোড়ামাটির কারুকার্য খচিত নকশায় এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর দেয়ালের পরিধি এত মোটা যে চৈত্র মাসের প্রচন্ড গরমে এর ভিতরে শীতল পরিবেশ বিদ্যমান থাকে। এর মূল গম্বুজটি অতি সুন্দর। এই মসজিদের পূর্ব পাশে ৬০ বিঘা আয়তনের খঞ্জন দিঘী বা খনিয়া দিঘী নামে একটি বড় দিঘী রয়েছে যার কারণে অনেকে এটাকে খনিয়াদিঘি মসজিদ বা রাজবিবি মসজিদ নামেও ডাকে। মসজিদটি একটা বিশাল আম বাগানের ভেতরে অবস্থিত। এটাকে গৌড়ের প্রাচীন কৃতিগুলোর অন্যতম বলে মনে করা হয়।

প্রধানত ইটের তৈরি এ মসজিদে রয়েছে ৯ মিটার পার্শ্ববিশিষ্ট একটি বর্গাকৃতির প্রার্থনা কক্ষ এবং পূর্বদিকে ৯ মি. × ৩ মি. মাপের একটি বারান্দা। প্রার্থনা কক্ষের উপরের ছাদটি বিশাল গোলাকার গম্বুজ আকারে নির্মিত। অন্যদিকে বারান্দার উপরে আছে তিনটি ছোট গম্বুজ।


(২) চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ স্থলবন্দরের একটু আগে ডানে ঢুকে গেলে বিশাল এই পুরোনো আম বাগান।


(৩) আম বাগানের ভেতরের দিকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই সামনে পড়বে শতাব্দি প্রাচিন এই চমৎকার মসজিদটি।


(৪) সামনের দিকে তিনটি প্রবেশদ্বার থাকলেও গ্রীল দিয়ে দুটি বন্ধ করে রেখেছে, তাই এটাই মসজিদের একমাত্র প্রবেশ পথ।


(৫) কিবলা দেওয়াল অভ্যন্তরভাগে সম্পূর্ণরূপে গ্রানাইট পাথরের টুকরা দ্বারা আবৃত। এ দেওয়ালে আছে অর্ধবৃত্তাকৃতির কুলুঙ্গিতে তিনটি মিহরাব, পূর্ব দিকের তিনটি খিলানপথের বরাবরে।


(৬) তিনটি মিহরাবের মধ্যে মাঝেরটি পার্শ্বস্থ দুটি মিহরাবের চেয়ে বড় এবং দেওয়ালের উচ্চতার পাশাপাশি বাইরের দিকে আয়তাকারে বেশী।


(৭) মসজিদটায় আলো প্রবেশের পথ অনেক কম থাকায় ভেতরটা তুলনা মূলক ভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে দিনের বেলায়ও।


(৮) প্রধান গম্ভুজের ভেতরের অংশ এমন।


(৯) দুইপাশে জানালার ডিজাইনে পোড়ামাটির কাজ করা, তবে কোন ফাকা নাই।


(১০) প্রধান মেহরাবের পেছনের অংশ এমন।


(১১) মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশের দেওয়াল এমন দেখতে একই রকম, কোন ফাঁকফোকর নাই।


(১২) দক্ষিণ পশ্চিম কোন থেকে তোলা ছবি এটা।


(১৩) মসজিদের পুর্ব পাশে এটাই খঞ্জন দিঘী বা খনিয়া দিঘী।


(১৪) আমের পাতার ফাঁকে একটা ফটিকজল পাখি খাবার খুজে বেড়াচ্ছিল।


(১৫) খনিয়া দিঘীর পাড় দিয়ে মাল বোঝাই একটা গাড়ি যাচ্ছি 😉


(১৬) অদূরেই একটা তালগাছে তালের রস সংগ্রহের জন্য এমনভাবে গাছে কলসি বেধে রেখেছিল।


(১৭) আম বাগান থেকে বের হয়ে বর্ডার এলাকায় একটু ঘুরাঘুরি, ট্রাকগুলো ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে।


(১৮) এটা ভারতের ভেতরের অংশ, ওদের বিএসএফ ও পতাকা দেখা যাচ্ছে।


(১৯) সিমান্ত পিলার ১৮৫তে আমি।


(২০) চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভ্রমণের মাঝপথে এই ভদ্রলোকের কথা আলাদাভাবে না বললেই নয়, তিনি সামহোয়ারইন ব্লগে আমার প্রিয় গল্পকার "আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম ভাই।" উনার আতিথেয়তার কথা মনে হলে আবারও ছুটে যেতে ইচ্ছে করে রাজশাহীতে।

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ