এক.

অবশেষে যা ভাবলাম তাই হলো সত্যি। শ্রমজীবির কাফেলা দলে দলে ঢাকা ফিরছে পায়ে হেঁটে তাদের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তার সন্ধানে। কারণ তারা জানত ৪টা এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে হবে। সরকার ছুটি বাড়ালেও বি জি এম এ নির্দেশনা মানে নি।

স্বাভাবিক ভাবেই নেতৃত্বে থাকা সভাপতির রুবানা হকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। ৮৩ সালে স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হয়ে ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের বিরুদ্ধে গেলেন লাশ লুকানো খেলে। স্বাভাবিক ভাবে তার ভূমিকা নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ হলো ।শ্রমিকদের মানব বোমা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। যা আজ সমগ্র জাতির জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা হচ্ছে।

শ্রমিকরা আবার স্বাভাবিক কারণ বাড়ি যাবে আপন জনের সাথে থাকার জন্য। কারণ তাদের যা আছে সবাই মিলে খাবে। আমরা শহুরে জনগন যেমন বিপদ দেখলে হুমড়ি খেয়ে পড়ি মজুদ করার জন্য আর রোজার ঈদে আগে যাই আর কোরবানি ঈদের পরে যাই আপন জনের সাথে ঈদ করার জন্য। ( অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে )

দুই :

আমরা আজ ঘরে বসে বসে কাউন্ট ডাউন করছি কতজন করোনা রোগী আক্রান্ত হল আর মারা গেল দেখতে দেখতে আতঙ্কিত হচ্ছি কারন ডাক্তাররা চিকিৎসা করতে ভয় পাচ্ছে কারন PPE লাগবে আর দায়িত্ব নিয়ে কেউ কিছু বলতে ও পারছে না WHO প্রদত্ত প্রেসক্রিপশন ছাড়া। সমস্ত পেশাজীবিরা এগিয়ে আসছে ঝুঁকি আছে জানা সত্বেও সমস্ত পেশাজীবিরা তাদের দায়িত্ব জেনে শুনেই আসে। পরিছন্ন কর্মীরা যদি ভয়ে ময়লা কালেকশন না করত তাহলে ঢাকার বাসা বাড়ি গুলো এতদিনে গার্ভেজ স্টেশন হত।

পাশাপাশি ২৫০০ তরুন চিকিৎসক রেজিস্টার করে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মাশরাফির নেতৃত্বে ডাক্তাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দিচ্ছে। আর আজমত গ্রুপের ৫০০ জন শ্রমিক বিনাবেতনে ১ লাখ পিপিই বানাচ্ছে স্বেছায় আমাদের ডাক্তারদের জন্য। যেখানে বাকি ৪০০০ শ্রমিক ছুটিতে।

আসল সমস্যা হল রোগী ব্যবসা। আজ যদি প্রাইভেট হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা উন্মুক্ত থাকত তাহলে লাখ লাখ টাকায় ICU গুলো ভর্তি থাকত আর প্রতিদিন হাজার রোগী মারা যেত।
বিশ্বাস না হলে আসুন পরিসংখ্যান কি বলে।

বাংলাদেশে গড় মৃত্যু হার ৫.৪ প্রতি হাজারে। তাহলে ১৬ কোটি মানুষের দেশে প্রতিদিন মানুষ মরে গড়ে
১৬০০০০ x ৫.৪ /৩৬৫ = ২৩৬৭ জন।

এটা সত্যিই খুবই আশ্চর্যজনক ঘটনা যেন সব অসুখ অদৃশ্য হয়ে গেছে।
না কি করোনা ভাইরাস সব অসুখকে মেরে ফেলেছে?

না প্রশ্নটা হলো স্বাস্থ্যব্যবস্থার বাণিজ্যকরণের।

যেখানে কোনও অসুখই নেই সেখানেও ডাক্তাররা তাকে অসুস্থ বলে দেন। কর্পোরেট হাসপাতালের অবস্থা এই সময় আরও খারাপ। গভীর সংকটে পড়েছে তারা।
মামুলি সর্দিকাশিতেও যারা কয়েক হাজার এমনকি লাখ টাকার বিল বানানো কোনও ব্যাপার ছিলো না।
এখন সেখানে বেশির ভাগ বেড খালি পড়ে আছে।
আমি ডাক্তারদের সেবাকে ছোট করার চেষ্টা করছি না। কারন ডাক্তাররা বলছে আমরা প্রাইভেট হাসরাতালে চাকরী করি বা প্র্যাকটিস করছি। হাসপাতাল বা ক্লিনিক বন্ধ আমাদের উপর নির্ভর করেনা।

কোভিড 19 এ যারা সেবা করছেন তাদের আমি প্রণাম জানাই।

কিন্তু ভয়টা যেন একটু বেশিই দেখানো হয়ে গেছে।
এছাড়া লোকে এখন বাড়ির খাবার খাচ্ছে, হোটেলের খাবার নয়।

সেটার খুব ভালো ফল হচ্ছে।
যদি System নিজের মতো ঠিকঠাক কাজ করে আর লোকে পরিশ্রুত জল ও শুদ্ধ সাদা খাবার খায় তো তাতেই অর্ধেক অসুখ আপনাআপনি সেরে যায়
সুস্থ থাকাটা আমাদের জীবনশৈলীর অন্যতম অঙ্গ যেটা কেবল ডাক্তারের উপর নির্ভর করে না।

মহাত্মা গান্ধী 'হিন্দু স্বরাজ' এ লিখেছিলেন, ডাক্তাররা কখনোই চায়না লোকে সুস্থ থাকুক।
উকিলরা কখনওই চায়না নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি মিটে যাক।

তিন :

সবাই আজ আতঙ্কিত তাই সবাই ভাবছে আমরা চীনের মতো লক ডাউন করছি না কেনো।

আপনারাই বলুন বাংলাদেশে বাস করে কমুনিষ্ট চীনের কথা ভাবা যায় ?সেখানে ধর্ম কর্ম নিষিদ্ধ।
সরকার যা বলবে সেটাই হবে। আর আমাদের ভয়টা আরও বেশী। ১/১১ কুশীলবরা মুখে কলুপ এটেছে।

আর অপ্রিয় হলে ও সত্য হেফাজাতিরা এসেছিল ঢাকায় নামাজ পড়তে। পাকি মানসিকতার নেতৃত্ব উসকানি দিল ব্যাংক পাড়ায় আগুন দিতে। আর বিনারক্তপাতে যখন তাদের তাড়ানো হলে প্রচার হলো হাজার হাজার মুসল্লী হত্যা করে লাশ গুম করা হলো।
এটাই বাংলাদেশের আর এক পিট। এখানে সুযোগ সন্ধানীরা ওৎ পেতে থাকে আর মরিয়া প্রমান করতে হবে করোনা মরন ঘাতি। তার আগে কেউ বিশ্বাস করবে না।

সেদিন এক স্যারের স্টাটাস দেখলাম।

(পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল আর তলদেশে টানেল যদি হয় রাষ্ট্রের উন্নয়ন তবে আসেন আজকে গাউনের পরিবর্তে পদ্মা সেতু গাঁয়ে দেই, টেষ্ট কিট হিসেবে মেট্রোরেল ব্যবহার করি এবং চলেন সবাই মিলে টানেলে গিয়ে শুয়ে থাকি অন্ততঃ গ্লাভস মাস্ক আইসোলেশনের টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
মনে মনে অনেক দূর চলে গিয়েছি
প্যারিস, সিঙ্গাপুর, লসএঞ্জেলস।
সংগৃহীত )

স্যার কি করছেন জিজ্ঞেস করেন চুলকানি আর উসকানি ছাড়া । তিনি পরোক্ষ ভাবে চিকিৎসক দের চিকিৎসা না দেয়ার ইন্দন দিচ্ছে। মনোবল ভেঙে দিচ্ছে।
আমেরিকা যেখানে হিমসিম খায়
তিনি পদ্মাসেতুর হিসাব চায়
উনার জ্বালা করোনা নয় , সেতু আর মেট্রোরেল।
কারন ওখানো কনসালটেনসি ছিল না যেরকম ভিসি বদলাতে আর ক্লাস বন্ধ রাখতে থাকে ছিল।

আজ স্যারের কথায় মনে পড়ে যায় সেই ছেলেবেলার কথা।
ছেলে যায় পুকুরে ডুবে
স্যারেরা মাকে গালি দেয়
ছেলেটা মরার আগে।

পরিশেষে বলি আজ সবাইকে নিয়ে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে পাশাপাশি উসকানিতে ও পা দেয়া যাবে না। করোনার যেহেতু চিকিৎসা নেই তাই নিজের জীবন ও পরিজন নিয়ে করোনা প্রতিরোধ করতে হবে।
বাসায় থাকুন, নিজে বাঁচুন অন্যকে বাঁচতে দিন।
মনোবল হারানো যাবেনা। মনোবল হারালে রোগে শোকে আপনাকে গ্রাস করবে।

সবশেষে চায়নীজ বন্ধুর মতো বলি

১. লবন গরম জলে গারগল করো
২. আদা লেবু গরম জল/রঙ চা পান করো।
৩. বাসায় থাকো নিজে বাঁচো, অন্যকে বাঁচাও

করোনা তোমায় ছোবে না।

ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

0 Shares

৩৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ