প্লেনে বসেই ঊর্মীকে ম্যাসেজ করলাম কিছুক্ষণের মধ্যেই যে উড়তে যাচ্ছি। খুব কান্না পাচ্ছিলো। হ্যামিল্টন আসার পর থেকে ঊর্মীকে রেখে কোথাও যাইনি। অন্যদিকে দেশ। এ যে কি দোটানা জীবন! মনে হচ্ছিলো ঊর্মীটাকেও যদি নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু আমার যে সেই ক্ষমতা নেই! প্লেনটা ছাড়লো, তীর্থ আমার ছেলে হঠাৎ বললো, 'মাম মন খারাপ না খুশী?' বললাম না কিছু শুধু একটু হাসি দিলাম। আস্তে আস্তে প্লেনটা মাটি থেকে উপরে উঠছে। টরেন্টো শহরটা হাতের মুঠোয় চলে এলো। ছেলে টি.ভি দেখছিলো। আমার আবার টি.ভিতে এলার্জি। খুবই কম দেখি। তাই গান ছাড়লাম আর সাথে গল্পের বই নিয়েছিলাম। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের 'চক্র।' বই আর গান আমায় কেমন জানি আচ্ছন্ন করে ফেলে। ঠিক বুঝিনা। এখানে শুক্রবার রাতে পথ দিয়ে হাঁটলে প্রায়ই দেখা যায় নেশা করে এলোমেলোভাবে হেঁটে যাচ্ছে কিছু মানুষ। বই আর গান পেলে আমিও নেশাগ্রস্ত হয়ে যাই। তাইতো বাসে বসে ব্লগের লেখা পড়ি। এই যে কোথায় চলে এলাম কথায় কথায়।

দোঁহা গিয়ে যখন পৌঁছুলাম, নেট পেয়েই জানালাম ঊর্মীকে। ঠিক অমন সময় আমার আরেকটা বন্ধুও ম্যাসেজ করলো। ওর নাম দীপ। ঊর্মী আর দীপ দুজনকেই ছবি দিলাম। দীপ অনেক মজা করতে পারে। অনেক দুষ্টুমী। নেট খুব জ্বালাচ্ছিলো। এতো মন খারাপ লাগছিলো, দীপকে লিখলাম কান্না পাচ্ছে। বললো হাউমাউ করে কাঁদতে। অনেক ক্ষ্যাপায় আমায়। বহুদিন হয়ে গেলো এই পাগলটারও খবর পাইনা। যাক অবশেষে আবার যাত্রা শুরু হলো। আমার ছেলে শেষ যখন দেশে আসে, তারপর ভুলেই গেছে অনেক কিছুই। দোঁহা থেকে প্লেনে ওঠার সময় বেশ কিছু দৃশ্য চোখে পড়লো। তাও ছেলের চোখে। ওখানে ৯৯% যাত্রী বাংলাদেশের। পারলে ধাক্কা-ধাক্কি করে উঠছে প্লেনে। ঠিক যেমন দেশে ট্রেন-বাস ধরার সময় ধাক্কা দিয়ে উঠে যাত্রীরা। ছেলে তো অবাক, বললো "আচ্ছা প্লেন তো ছেড়ে চলে যাবে না। কেন লাইন ধরে যাচ্ছেনা?" কি আর উত্তর দেবো! বললাম এখানেই দাঁড়া সবাই উঠুক তারপর আমরা ভেতরে যাবো।  পাঁচটি বছর পর আবার বাপি-মামনিকে দেখবো। ভুলেই গিয়েছিলাম প্লেন থেকে নেমে এবার ওদের মুখ দেখা হবে না। দু'দিন পর আসবে, কারণ এম্বুলেন্স পাওয়া গেছে দু'দিন পর। নেমেই মাসতুতো বোন জয়ীতাকে ফোন দিলাম। জয়ীতা ঢাকার গ্রীন লাইফ হাসপাতালের ডাক্তার+লেকচারার। বাপিকে ঢাকায় এনে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি করাতে চাই। আমার সময় কম, তাই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের অধীনে নিতে চাই। ফোন দিতেই জয়ী তো চিৎকার "দিদিইইইইইই আগে আমাদের বাসায় এসো।" আমি এখন ঢাকার কিছু চিনিনা। এয়ারপোর্টে নেমে ছোট বোনের হাজবেন্ড অপুকে খুঁজে পাচ্ছিনা। ফোন করে যে বলবো, ফোনও তো নেই। একজন এগিয়ে এসে বললো ওই যারা ট্যাক্সি ঠিক করে দেয়। বললো "আপা, ফোন করবেন?" যাক পেয়ে গেলাম অপুকে। বাসায় যাবার পথে অবাক হয়ে গেলাম এতো পরিষ্কার ঢাকা শহর? আর কিছু কিছু দৃশ্য, পথ-ঘাট একেবারে বিদেশ লাগছিলো। অপু আমায় বোঝে বেশ। বললো, "দিদি আরোও দেখবেন। তবে আজ কিন্তু হরতাল।" অবাক হলাম হরতাল এমন? সবকিছুই চলছে। আমাদের ছাত্রজীবনে হরতাল মানে ভয়ঙ্কর একটা দিন। মানে পথ-ঘাট খালি। আর দেশে যতদিন রইলাম হরতালই ছিলো। এমনকি ঢাকা থেকে বাসে সিলেট গিয়েছি সেদিনও হরতাল। মানুষ জাগছে, ভয় কমছে দেখে ভালো লাগলো।

জয়ীতা এবং আমি গ্রীনলাইফ হাসপাতালে
জয়ীতা এবং আমি গ্রীনলাইফ হাসপাতালে

বাসায় পৌঁছেই ফোন রানাকে। তুই কেন এলি না? বেশ বকাঝকা করলাম। কেমন যে আমার এই ভাইটা রাগ করেনা। বুঝে পাইনা ও কি দিয়ে তৈরী? একটা মানুষের অদ্ভূত ক্ষমতা রাগ ছাড়াই জীবনের সবকিছু সুন্দর করে নিয়ে চলছে। যাক এরপর ফোন দিলাম জয়ীতা আমার মাসতুতো বোনকে। ও ডাক্তার ঢাকার গ্রীন লাইফ হাসপাতাল ও কলেজের লেকচারার। জয়ী বললো, "দিদি আমাদের বাসায় এসো। এখান থেকে যাবো।" আরে ঢাকা শহরের রাস্তাই সব এলোমেলো। এদিকে রিক্সা চলে তো ওদিকে না। রানা এলো, ভাইরে আমায় নিয়ে চল। কতো বছর পর আমার প্রিয়রও প্রিয় রিক্সায় উঠলাম। আহ এতো শান্তি-স্বস্তি। রিক্সা চললো ইন্দিরা রোড থেকে এলিফেন্ট রোডের দিকে। গিয়ে তো জয়ী পারলে আমায় চেপেই মেরে ফেলে। "দিদিইইইইইইইইইইই কত্তোদিন পর! ও দিদি তুমি কি এনেছো আমার জন্যে? দেখো দি'ভাই মাত্র বিয়ে হয়েছে আমার কিন্তু ভালো গিফট চাই। কঞ্জুসামী করোনা।" ওকে তেমন কিছুই দিতে পারিনি। কিন্তু নিজের বেতন থেকে কেনা এটুকুই শুধু বললাম। আমায় বেশ ক্ষ্যাপালো। এরপর ওর বিয়ের গল্প। পাগলী একটা বোন আমার। অনেক ভালো। তারপর জয়ীর মা আমার বাচ্চু আন্টি দুনিয়ার খাবার। ছেলে আমার বলে "এখন কিভাবে খাবো?" এমনই অবস্থা আদরের যে ও খাওয়া দেখে ভয়ই পেলো। আমায় এসে বললো, "মাম এখানে ফাইভ টাইমস খাওয়া কেন? আমি এখানে কিভাবে রাখবো?" পেট ধরে বললো। কারণ জয়ীদের বাসায় আসার আগে মৌ খাইয়ে দিয়েছে। এসে লুচি-সব্জী-মাংস-নুডলস আরোও জানি কি কি! যাক খাওয়া শেষ হতেই সব ঠিক হলো পরের দিন জয়ীর সাথে হাসপাতাল গিয়ে ডাঃ কৈরীর সাথে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখবো। আর বলবো উনাকে যদি পারা যায় এম্বুলেন্স থেকে সরাসরি হাসপাতালে বাপিকে ভর্তি করার কথা। এখন উনি রাজী হলেই হয়। নয়তো বাপিকে বাসায় উঠিয়ে আবার হাসপাতাল সইবে না শরীরে। রানা আমায় হাসপাতালের রাস্তা দেখিয়ে দিলো। বললাম রানারে একা পারবো না। বললো "পারতে হবে। অফিস আছে আমার, পথ শিখে নে।" মনে পড়লো জীবনে একা চলা শিখিয়েছিলো রানা। কি ভয় একা চলার! তারপর বলেছিলো, "তুই না বড়ো হয়েছিস! এখনও মেশো নয়তো কারো না কারুর উপর নির্ভর করিস। ছিঃ লজ্জ্বা করেনা?" ওর সবগুলো কথাই আমার মাথায় ঘুরতো। সেটাও। তারপর থেকেই না সিলেট কিংবা ঢাকা থেকে শমশেরনগর চা' বাগান বাসায় একা আসা শুরু করলাম। ভালো লাগতো। হুম কয়েকদিনের মধ্যেই ঢাকা শহরের সেই নীলা হয়ে গেলাম। কেউ বুঝতেই পারেনি আমি দেশের মুখ দেখলাম পাঁচটি বছর পর! "এই রিক্সা গ্রীনলাইফ যাবেন? শুনেন বারো টাকা পাইবেন।" -------"আফা এইডা কি কন? বিশ টাকার নীচে না।" ঠিক আছে যান। "ও আফা আঠারো টাকায়  যামু।"  শুনেন পনেরো এর এক টাকাও বেশী না।

রানা-আমি-তীর্থ(আমার ছেলে)
রানা-আমি-তীর্থ(আমার ছেলে)

আমাকে দেখেছে পথ।
কিভাবে উত্তাপে মাখামাখি করে গন্তব্যের খোঁজে চোখ এদিক-ওদিক।
গ্রীন রোডের ঔষুধ আর
পরোটা-মাংসের গন্ধ একাকার হয়ে যাওয়া
মুহূর্তগুলোকে জড়িয়ে নিয়ে
ছুটে চলা
প্রচন্ড ভীড়ে---
কেমন করে পরবাসী পেয়ে যায়
এক টুকরো আশ্রয় কড়কড়ে নোটের বিনিময়ে।
প্রতিদিনকার ভাঙ্গা-চোরা রাস্তায়
টুংটাং শব্দে রিক্সায় চড়ে যাওয়া
অচেনাকে চেনার আলোয় নেয়ার কি আকাঙ্খা!
পেয়েছিলো কি এই আমিটা?
এর উত্তর হয়তো অক্ষরের বিনিময়ে
কথায়-লেখায় পেয়ে যাবো কোনো একদিন সন্ধ্যে কিংবা রাতে
অথবা ভোরের ব্যস্ততায়।

ক্রমশ...

হ্যামিল্টন, কানাডা
১৫ আগষ্ট, ২০১৫ ইং।

0 Shares

৩৭টি মন্তব্য

  • সীমান্ত উন্মাদ

    অনেক আবেগী লিখা। তবে সবচেয়ে ভাললেগেছে শেষের কবিতাটা আপু।

    আপনার লিখায় আমি একটা ব্যাপার সব সময় পাই, সেটা হল বাস্তবত একটা ছাপ, যেন দেখতে পাচ্ছি চোখের সামনে।

    শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।

  • ছাইরাছ হেলাল

    আপনার হরিহর আত্মাটিকে দেখতে পেলাম। ঝঁকানো দাঁত সমেত। সফল জুটি।
    এত বছর পড়ে এসেও অসুস্থতা যে ভাবে সামলে নিলেন তা থেকে শিক্ষা নিতেই পারি। লেখার প্রশংসা করা ঠিক না।
    শব্দ অপ্রতুলতায়। আরও ভ্রমনীয়তার জন্য অপেক্ষা করতেই থকব। দীপ কে খুঁজে বের করুণ।
    তীর্থকে অনেক আদর ও উর্মিকে আমাদের শুভেচ্ছা।

    • নীলাঞ্জনা নীলা

      এটাই তো আমার বিশেষত্ত্ব। ঝকঝকে দাঁত। আর সেটা সবসময়।

      কিভাবে জানি সবসময় বাধার সাঁকো পার করে যাই, নিজেও জানিনা। এও জানি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পারবো।

      দীপকে যেদিন খুঁজে পাবো, সেদিন আমার জীবনের সবচেয়ে সেরা একটি দিন হবে। শুধু তাই নয়, সেদিন সবকিছু পাওয়া হয়ে যাবে। তবে হুম জানি পাবোই খুঁজে। ওটা আমার সাথে রাগ-দুষ্টুমী না করে ভালো থাকেনা।

      যাক তীর্থকে আদর দিলাম, ঊর্মীকে শুভেচ্ছা দেয়া হয়নি। আমার ভাই রানাকে যে কিছু দিলেন না! 😮

  • অরণ্য

    “পেয়েছিলো কি এই আমিটা?” এ তো আমার কাছে থান্ডার বোল্ট জিজ্ঞাসা। এ আমার নিজের মত করে পাঠ করে নেয়া বলতে পারেন।
    আপনাকে কেউ আর বলেনা “আপু অপেক্ষায় রইলাম”। 😀
    আপনার ভাইটার কথা দারুন লেগেছে -“পারতে হবে। অফিস আছে আমার, পথ শিখে নে।” (y)

    • নীলাঞ্জনা নীলা

      পাঁচ বছর পর দেশে! অন্যান্য বার যখন গিয়েছি, গিয়েই আহ্লাদী আদর, বাপির বুকে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। বাপি-মামনির জড়িয়ে নেয়া। এবার ছোট বোনের বাসায় ঢুকে ওই দুটো মুখকে দেখিনি।

      হুম রানা অনেক কিছু শিখিয়েছে আমায়। অনেক কিছু। ওর কাছে চেয়ে পাইনি, আজ পর্যন্ত হয়নি এমন। বকলেও রাগ করতো না। কতো অন্যায়ভাবে ওকে অযথাই বকেছি। আজ এই যে একা চলতে পারি, প্রাথমিক অবদান রানার।

      আবার দেশে গেলে অপেক্ষায় থাকবেন, এটুকু সত্যি আনন্দ দিচ্ছে আমায়। 😀 -{@

  • ছাইরাছ হেলাল

    ‘এই আমিটা’
    কী পেয়েছে পা পায়নি
    হিসেব কেউ রাখেনা, রাখবে হয়তো কেউ
    কোন এক রাজ কুমার,দেখা পাইনি যার।
    ভাঙ্গা রাস্তার রিক্সার ঝাঁকুনিতে বা
    নিয়নের হিম আলোয়
    উৎরে আমি যাবোই।

    • নীলাঞ্জনা নীলা

      ও বাব্বাহ আপনার আরেকটি মন্তব্য পেয়ে আমি ধন্য। বড়ো দামী এবং জ্ঞানী কবি আপনি, প্লিজ ভুল করেও ভাববেন না খোঁচা দিয়ে বলছি। এখন ভয় করে কিছু বলতে!

      কবিতাটা লিখলেন ভালো, কিন্তু কেন এখানেই? ইস চুরী করার সুযোগই পাচ্ছিনা। এটা ঠিক না, ওই লেখা থেকে নিয়ে এসে লিখলেন আমাকে তো ঘুষ দেবেন। তাই না?

      তবে সত্যি খুশী হলাম আপনার এই কবিতায়। (y) -{@

  • লীলাবতী

    রিক্সায় দরদাম তো ভালোই পারেন নীলাদি 🙂 ডাঃ জয়ীতার সাথে আপনার ফটো আজই প্রিন্ট করতে হবে।হাসপাতালে গিয়ে এই ফটো দেখিয়ে বলবো,আমি নীলাদির একান্ত আপন লীলা,ফ্রিতে চিকিৎসা দেন 🙂
    হরতাল এর মান এখন আর বজায় রাখতে পারেন,সব কিছুতে ভেজালের মত হরতালেও ভেজাল ঢুকে গিয়েছে।কত সুন্দর উপস্থাপনা!

  • শুন্য শুন্যালয়

    নীলাপু লেখা কি পড়বো, আমিতো তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম। কি মিষ্টি হাসি!! কি নিষ্পাপ মুখশ্রী। ফুলাচ্ছি ভাবলে ভাবতে পারো, প্রেম করতে গেলে একটু আধটু ওসব জানতেই হয়।
    অক্ষরের বিনিময়ে নিজেকে পেয়ে যাওয়া, কবিরা তবে এত কাঁদে কেনোরে আপু?
    পথ শিখে একা একাই কতটা পথ চলে এলে, আর ফিরে যেওনা। ভালো লিখেছ কিনা? উত্তর থাক আজ।

    • নীলাঞ্জনা নীলা

      শুন্য আপু চেহারা দেখে কারুর প্রেমে পড়োনা। মানুষ তার সুন্দর ছবিখানাই দেখায় কিন্তু :p
      আর প্রেমে পড়ে গেলে হাত-পা কনফার্ম ভাঙ্গবে, তখন কোথায় পাবো ফ্রীতে ডাক্তার? ডাক্তারের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার পাওয়া কঠিন।

      তোমার মন্তব্য অনেক আনন্দ দেয় আমায়। \|/ ভালো লাগে। প্রেমে তো পড়ছি আমি-ই। এই বয়সে এসে ওই রোগে পড়লে সুস্থ হৃদয়ের (যারা বেশী হাসে, তাদের হার্ট নাকি ভালো থাকে)তো ১২টা বাজবে ;( ;( কেঁদে কেঁদে। এমনিতেই হার্ট-লিভার-কিডনি-চোখ-ফুসফুস-অগ্ন্যাশয় থেকে হাড়-গোড় সবই ডোনেট করেছি। এই হার্ট আর চোখ(কান্নার জন্য, প্রেমের পরিণতি কান্না। এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা প্রাপ্ত) এরপর যে পাবে, বেচারা-বেচারীর কি হবে বলতে পারো?

      “একা একা পথ চলা
      একা একা কথা বলা
      হাজার মানুষের ভীড়ে মিশে
      ভোরের কোলাহল ঘুমের শেষে
      দু’ চোখ আজও খুঁজে ফেরে
      ফেলে আসা ছেলেবেলা।”——— https://www.youtube.com/watch?v=lnA4_S-g5yk

      ভালো থেকো ভালোবাসায় -{@ (3

      • শুন্য শুন্যালয়

        ও হার্ট কাউকে দিওনাগো নীলাপু, ওতে শুন্য ছাড়া আর কি আছে? 🙂
        প্রেমের আবার বয়স আছে নাকি? গান শোননি, চুল পাকিলে লোকে হয়না বুড়ো আসল প্রেমের বয়স এইতো শুরু। না কাঁদলে প্রেম ফেরত পাবে কি করে?
        চেহারা দেখে প্রেমে পড়া তো একদম ঠিক না, তবে চেহারার উপর মন দেখাচ্ছো কেন? সবাই তোমার প্রেমে পড়লে আমার কি হবে গো? ;(
        কেন যে এ গান শোনালে আজ এই মধ্যবেলা, বড় প্রিয়, খুব প্রিয়, একটু স্পিড ব্রেকারের কাজ করে যেন।
        তুমি যে ভালো মেয়ে তার আরো প্রমান পেলাম, আমিও সব ডোনেট করবো ভেবেছি, তবে এখনো করতে পারিনি।
        একা একার সাথে আজ একা একার এই গানটাও শুনে ফেলো
        https://www.youtube.com/watch?v=StMbmudk6XU

      • নীলাঞ্জনা নীলা

        শুন্য আপু আমি তো তোমার একেকটি মন্তব্য পড়ি আর মনে মনে ডুবছি। এখন ডুবে গেলে ওঠানোর দায়িত্ত্ব তো ডুবুরীর। তুমি সেই ডুবুরী। প্রেমের বয়স নেই জানি। আর তাইতো আমারও বয়স বেড়েও বাড়ছে না। এজন্য যে কতো বকুনী খেতে হয় বন্ধুর কাছে 🙁

        গানটা আবারও শুনলাম। অদ্ভূতভাবে আজ এই গানটাও শুনেছিলাম নচিকেতার গানটা শোনার পর। ডোনেট করলেই কি আর ভালো গো আপু? স্বার্থ আছে যে, মরে গিয়েও বেঁচে থাকবো। কারো চোখে, কারো হৃদয়ে, কারো ফুসফুসে আর কারো কিডনীতে। কি দারুণ! ভাবতেই মজা পাচ্ছি। 😀

        “অমরত্ত্বের প্রত্যাশা নেই
        নেই কোনো দাবী-দাওয়া
        এই নশ্বর জীবনের মানে
        শুধু তোমাকেই চাওয়া।” (3

        https://www.youtube.com/watch?v=hp8wwGMg5hk

      • অরণ্য

        নীলা আপুকে।

        আপনার এই মন্তব্য পড়ে মনে হলো কেন আপনার লেখা আমার এতো ভাল লাগে। ভাল লাগবেই। ভাল লাগাটাই স্বাভাবিক। ব্যাপারটা কিছুই নয় – আপনার প্রকাশ, আপনার অনুভব। আপনি কিঞ্চিৎ পাগল আছেন সেই আপনার বড় গুণ। মানুষকে সহজে কাছে টানেন – অনেকটা তাদের হয়ে যান। 🙂 গ্রেট। (y)

      • নীলাঞ্জনা নীলা

        অরণ্য ভাইয়া আপনিও তো গহীন সবুজ। নামের মধ্যেই কেমন শ্রান্তি-স্বস্তি।

        যাক কিঞ্চিৎ নই, একেবারে পুরোই পাগল। অসম্ভব চঞ্চল। নিজের এই চঞ্চলতার জন্য আমি নিজেও ভয় পাই। :p
        আর ওই যে বললেন না মানুষকে সহজে কাছে টানি। তবে কাছে টেনে নিয়েই তো ধরা খাই। তাই এখন সেভাবে নেই। ধাক্কা কতো খাওয়া যায় বলুন? 😀

        অফুরান ভালোবাসা -{@

  • ব্লগার সজীব

    আমিও এই কথাটি বলতে চেয়েছিলাম’ ডাঃ জয়ীতার সাথে আপনার ফটো আজই প্রিন্ট করতে হবে।হাসপাতালে গিয়ে এই ফটো দেখিয়ে বলবো,আমি নীলাদির একান্ত আপন লীলা,ফ্রিতে চিকিৎসা দেন 🙂 ‘ তা লীলাদি বলে দিয়েছে।আমি যা ভাবি,তা লীলাদি আগেই বলে দেন।আমি আর বলতে পারিনা 🙁 বিচার চাই এর।

  • নীতেশ বড়ুয়া

    আপনি এখনো ১২টাকা ১৮ টাকা দিয়ে রিক্সা দরদাম করেন!! কি করে পারেন! আমি কোনদিন এই ২ যোগ করে কিছু বলতে শুনিনি কাউকে :p

    আমি কিন্তু রাগ করসি নিজের উপরে… :@

    এতো সুন্দর করে ডায়েরীর মতো করে নিজের দিনের কথাগুলো যেভাবে সবার সামনে নিয়ে আসেন নীলাপু তাতে দেশে আসার পর তাকে দেখতে না পাওয়াটাই নিজের উপর রাগ যে কেন নীলাপুকে আগে থেকে চিনলমা না! এত্তো মিষ্টি একটা নীলাপু (3 -{@

    • নীলাঞ্জনা নীলা

      দাদা গো দেখতে পেলে বলতেন, “ওহ এই বুঝি! ^:^ তারপর দেখা যেতো আমি ডেকে যাচ্ছি ওগো নীতেশ দাদা কোথায় আপনি? খুঁজেও পেতাম না আর। তখন দেখা যেতো আমি-ই ;(

      যাক২টাকার কথা যখন বললে, একটা গল্প শোনাই। আমি যখন রিক্সায় করে ধানমন্ডি-৭ থেকে ইডেন কলেজে যেতাম ৫৳ ছিলো রিক্সাভাড়া। আমাদের ক্লাশেরই মেয়ে বনানী থাকতো গ্রীনরোডের অফিসার্স কোয়ার্টারে। ও এই ৫৳ খরচ করতেও চাইতো না। একদিন আমায় বললো আমার সাথে শেয়ার করে কলেজে যাবে। আমি নিইনি কোনোদিন আড়াই টাকা। আজব মানুষ এই ভবের বাজারে। বুঝলেন গো দাদা? 😀

      -{@

      • নীতেশ বড়ুয়া

        চট্টগ্রামের ছেলে তাই ওদিককার হিসেব জানি। ৫টাকা দিয়ে নিউমার্কেট থেকে মোগল্টুলী শুরু করে ৭টাকা অবদি দিয়েছিলাম। চার আনায় বাস ভাড়া ছিলো হাইস্কুলে নিউমার্কেট থেকে কদমতলী।
        এই চার আনা’তে মনে পড়ে গেলো একবার স্কুল ফিরতি নিউমার্কেট টু কদমতলী বাসে উঠলাম বাস থামিয়ে কিছু না দেখেই। বাসে উঠেই দেখি সব মহিলা!!! মিটিমিটি হাসছেন সব দিদিরা, আমি তো হতবাক-বাসে উঠে হলাম কাক! কাঁচুমাঁচু হয়ে কোনরকম পুরো রাস্তা চড়ে নামতে যেতে কন্ডাক্টরকে চার আনা দিতে গেলে বলেন যে-লাগবে না, এটা স্টাফ বাস। আর আমিও নাছোড়বান্দা (কচি মন তাই চার আনার লোভ গজায়নি ) নিতেই হবে বলে পকেটে ঢুকিয়ে দিলাম চলন্তা বাস থেক লাফ আর চিৎপটাং :p চার হাত পা ছড়িয়ে আমি বসে আছি রাস্তায় :D) দিদিদের বাস তো সাথে সাথে থেমে গেলো আর সেই কন্ডাক্টর দৌঁড়ে এসে বললো-লেগেছে? আমি লজ্জায়-না বলে দিলাম ঝেড়ে দৌঁড় :D) হায় সেই চার আনা আর সেই দিদিদের বাস! এখন আর এমন কিচ্ছুটি নেই অমন সরল মনের, না দিদিদের বাস না শিশুমন…
        যাক, কি বলতে কি বলে ফেললাম। প্রাইমারী স্কুলে মা পকেটে দিতো ৮ আনা কি ১২ আনা। চার আনায় টিফিন ব্রেকে চালতার ইয়াম্মি আচার আর দুধ মালাই আইসক্রীম খেতাম চার আনায়, মোটা ৮ আনায় টিফিন ব্রেক শেষ আর বাকি ৪ আনা সপ্তাহান্তের শেষ দিনে আলতা, আম, জলপাই, দুধ্মালাই, কটকটি খেতাম পেটের চাইতেও মন ভর্তি করে :p
        কলেজে উঠে প্রতিদিন পেতাম ২টাকা হাঁটা পথ, ছেলে উচ্ছন্নে যাবে ভেবে আর কিচ্ছুটি দিতো না বলতো-লাগলে নিবি তবে এমনি দেবো না! বোধহয় এই কারণেই টাকার প্রতি লোভ বা মায়া কোনটাই গড়ে উঠেনি আজো \|/

        ধুত্তুরি… কি লিখতে কি লিখছি ^:^

        রিক্সা ভাড়া শেয়ারের কথা মনে পড়লো এত্তো কথা ত আমার আবার উলটো ঘটনা। হাঁটা পথ তাই হেঁটেই যাই। পাড়াতো এক বন্ধুও একই কলেজে একই ক্লাশে আমার সাথে। সে যেতো আলাদা অনেক বড়লোকি ‘এট্টি’ নিয়ে। একদিন বললাম চল আমার সাথে আর সেও রাজী। আর আমি সুযোগের পূর্ণব্যবহার করলাম তাকে হাঁটিয়ে নিয়ে :D) ফিরে এসে বলেছিলো-তুই আমাকে এতোটা পথ হাঁটালি :c

        কিসের মধ্যে কি পান্তা ভাতে ঘি! শুরু হয়েছিল ২টাকা দিয়ে রিকশাভাড়ায় আর চলে এলাম আনা’য়! একেই বলে বুড়ো হলে ভীমরতিতে পায় ;? নাহ্‌, ঢাকায় আমি এতো স্বস্তা কিছু দেখিনি। তবে দেখেছি ছয়মাসের ব্যবধানে ১৫ মিনিটের রাস্তা পার হতে লাগছে ৪৫ মিনিট!

        ইয়ে মানে আমি ঢাক্য ২০১০ থেকে। তাই দেখিনি আপনার মতো রিক্সা ভাড়ার হিসেব —-
        আপনার ঢং অনুকরণ করে লিখলাম কিছুটা, বকুনি শুনতে চাই না -:-

  • মেহেরী তাজ

    কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা লিখি!? সবাই তো সব লিখেই ফেলছে। আচ্ছা চলুক। পরের বার পোষ্ট দেওয়ার আগে আমায় জানাবেন। আমি সবার আগে সব কিছুর প্রশংসা করবো। 😀

  • সাতকাহন

    মন দিয়ে পড়লাম দিদি, ডা. জয়ীতাকে মনে হয় আমি চিনি; গ্রীণলাইফ হসপিটাল আমার বাসার কাছেই। এরপর যখনই ঢাকায় আসবেন একবার অন্তত ছোট ভাইকে জানাবেন, একটা বড় ট্রিট দেবোনে।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ