অসুস্থ জাতি

সাবিনা ইয়াসমিন ২৮ এপ্রিল ২০২১, বুধবার, ০১:৫২:৫৯পূর্বাহ্ন সমসাময়িক ২৯ মন্তব্য

গ্রাম্য একটা প্রবাদ আছে ভাসুরের নাম মুখে নিতে নেই।

কে মেরেছে বা কার প্ররোচনায় মারা গেছেন?
- একজন শিল্পপতি। (ভাসুর)
কে মারা গেছেন?
- একজন রক্ষিতা!

পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় পুঁজিপতি'দের স্বার্থই মূখ্য বাকি সব মানুষ পোঁকামাকড়।

গনতন্ত্রের অমৃতবানী প্রচার করে রাষ্ট্র, মুখে বলা হয় সকলের সমান অধিকার। কিন্তু ভেতরটায় শুধু পুঁজিপতি'দেরই অধিকার সংরক্ষণ করা হয়।

আসলে গনতন্ত্রের লোভনীয় মোড়কে নিকৃষ্ট পুঁজিবাদ চালিয়ে যায় রাষ্ট্র, আমরা ম্যাংগো পাবলিক পন্যের মোড়কে বরাবরের মত খুশি থাকি। ভেতরটা দেখার চেষ্টা করিনা বা প্রয়োজন মনে করিনা।

প্রেক্ষাপট কি?

পুঁজিপতিরা কোটি টাকার ফ্ল্যাটে একজন নারীকে রাখার সামর্থ্য রাখে বা তার জন্য বৈধ। মেয়েটাকে মেরে ফেলা হয়েছে অথবা মরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে! তাহলে এই হত্যাকান্ড বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ফোকাস না করে কেন মেয়েটার চরিত্র হরন করা হচ্ছে? ভাসুর পুতকে হত্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রথম ধাপেই সুযোগ করে দিচ্ছে আমাদের সুশীল মিডিয়া।

যেহেতু রাজনীতি, আইন ও মিডিয়া একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত, এবং পুঁজিপতিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তাই কিছুদিন সাধারণ জনগণ উৎসাহে কিছু লেখালেখি করবে। বরাবরের মত সামাজিক সাইট গুলোতে উত্তেজনা চলবে। তারপর তথাকথিত মুলধারার মিডিয়া (পুঁজিবাদের দালাল) গুলো অন্য ই্যসুতে পাবলিককে ডাইভার্ট করবে।

এসব বিষয়ে তথাকথিত নারীবাদীরা নিরব ভূমিকায় থাকতে পছন্দ করে! চুপ থাকার কারন তাদের নাইট ক্লাবের স্পন্সর এই সব ভাসুরের কোম্পানি সমূহ ।

ভাসুরের পুত সন্দেহভাজন (সায়েম সোবহান আনভীরের) ফেসবুকের একটি পোস্ট ''রেসপেক্ট উইম্যান।'' অথচ তার ফোনালাপ এর মাধ্যমে জানতে পারি যে, তিনি নারীদের কতটা সম্মান করতেন!

অবাক করার বিষয় কোটিপতি খুনির চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে লাখ টাকার ফ্ল্যাট।

খুনির চরিত্র নিয়ে কোনো গবেষণা নেই,
যে খুন হয়েছে তার চরিত্র নিয়ে টানাটানি!

 

অসুস্থ জাতি ;(

0 Shares

২৯টি মন্তব্য

  • ফয়জুল মহী

    সামাজিক অবক্ষয়ে লোভ , পাপ মৃত্যু । বিচার হবে না, জনতাই এদের থুথু দিক। কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, নিউ নেশন, বাংলা নিউজ ২৪ডট কম বসুন্ধার গ্রুপের। আর উনি একটা দলের অর্থ যোগান দাতা। তাই নঈম নিজাম উনার জন্ম দিনে লিখেছে “দেহ হতে দিল বড়”। কালকে হয়তো কার্গো বিমানে স্ত্রীর সাথে বিদেশে উড়াল দিয়েছে। চিন্তা করুণ কার্গো বিমানেও এরা চলে যেতে পারে । এস আলাম, বসুন্ধরা, সিকদার গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, দরবেশ বাবা কোম্পানির জন্য এখন সাত খুন মাপ। এতএব চুপ থাকুন ভালো থাকুন অন্যদের মত জি হুজুর জি হুজুর করুণ। এরা এবং এদের হতে মধু খাওয়ারা অন্যায় করলেও চুপ থাকুন।

  • প্রদীপ চক্রবর্তী

    অবাক করার বিষয় কোটিপতি খুনির চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে লাখ টাকার ফ্ল্যাট।

    খুনির চরিত্র নিয়ে কোনো গবেষণা নেই,
    যে খুন হয়েছে তার চরিত্র নিয়ে টানাটানি!
    .
    এটা আমাদের দেশে সম্ভব। আজকাল টাকা আর প্রতাপশালীর কাছে অনেকে জিম্মি। সেখানে কিছু করার থাকেনা। এসবের কাছে আইন কখনো অন্ধ।
    .
    যা আমাদের সমাজে অহরহ চলছে।
    ভালো তুলে ধরেছেন,দিদি।

  • রোকসানা খন্দকার রুকু

    কি বলব। যাই বলি সেটাই দেশোদ্রোহো। এইসব যোগানদাতারা কোনকালেই বিচারের আওতায় আসে না। আর গনতন্ত্র কি আমরা তো সেটাই জানিনা।
    চামচারা সারাদিনে মিনিমাম চার পাঁচটা পোষ্ট দিত মোমিনুলের বিরুদ্ধে আজ তারা কোথায়? কারন ভাসুরের ভয়। নাম মুখে নিলে বিপদ। দুনিয়াটা শক্তের ভক্ত নরমের জম।এদের বিচার আমরা জনতাই করতে দেই না। ঠিকই বলেছেন অসুস্থ জাতি।

  • জিসান শা ইকরাম

    একটি সময়ে জাতি হিসেবে আমরা গর্ব করতাম যে আমরা বাঙালি। দিন দিন মানুষের মন রুচি পালটে গিয়ে এমন একটি জাতিতে পরিনত হয়েছি যে এখন লজ্জিত হই আমি কেন এই জাতির একজন হলাম।
    যে কোন বিষয়ে সুস্থ চিন্তা আমরা এখন আর করতে পারি না। যা হওয়া উচিৎ তা আমরা হতে দেই না। পুজিবাদ আমাদের অর্থ দিয়ে সব কিছু বিচার করতে শিখিয়েছে।

    আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দিয়ে সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালত তার দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু সে দেশে আছে কিনা তা কে জানে?
    সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, মৃতের ছয়টি ডায়েরী, মোবাইল ইত্যাদি পুলিশ জব্দ করেছে। তবে কোটি কোটি টাকার শ্রোতে এই সব আলামত মুছে যাবারই সম্ভাবনা আছে।
    মিডিয়া সমূহের অর্থ উপার্জনের একটি মাধ্যম হয়ে গিয়েছে এই ঘটনা। অর্থের বিনিময়ে সায়েম সোবহান আনভীরকে মহান একজন মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করারও সম্ভাবনা আছে।

    ” এই পৃথিবী টাকার গোলাম “

    • সাবিনা ইয়াসমিন

      ইতিহাস বারবার সামনে এসে বর্তমানের স্থান দখল করে এমন সব ঘটনা দিয়ে। এমন অপরাধ গুলো সাক্ষ্য দেয় কিছু অপরাধ ঘটেই অর্থ উপার্জনের জন্যে। সুবিধা ভোগীদের আঙ্গুল ফুলে শুধু কলা গাছ নয় মহিরুহতে পরিনত হয় এমন কিছু বিশেষ সুযোগের সদব্যবহার করে।
      টাকা দিয়ে সব হয়, মরারাও সাক্ষী দিতে আদালতে দৌড়ে আসতে পারে!
      আমরা এতটাই অসুস্থ জাতি এইসবে আর নুন্যতম লজ্জা বোধ করি না।

    • মোঃ মজিবর রহমান

      একটি সময়ে জাতি হিসেবে আমরা গর্ব করতাম যে আমরা বাঙালি। দিন দিন মানুষের মন রুচি পালটে গিয়ে এমন একটি জাতিতে পরিনত হয়েছি যে এখন লজ্জিত হই আমি কেন এই জাতির একজন হলাম।— বিচার যখন অর্থ ও ক্ষপমতার ব্যবহার হয় তখন কোন জাতিরই চরিত্র বজায় থাকে না।

  • পপি তালুকদার

    আসলে আমাদের সমাজে টাকা- সম্পদ গুলোর দ্বারা সব সুযোগ সুবিধা নির্ধারিত হয়।অনেক কিছু বলা যায় কিন্ত বাস্তবে ঘটবে তার বিপরীত টা। সবাই নিশ্চুপ দর্শক। এখানেও স্বাভাবিক যা ঘটে তাই ঘটবে।

  • হালিমা আক্তার

    করছি টাকার দাসত্ব। ভাসুরের নাম মুখে আনব কী করে। কয়েকদিন লেখালেখি প্রতিবাদ। তারপর সব নিশ্চুপ। কে রাখবে কার খবর। একধরনের অসুস্থ পরিবেশ বিরাজ করছে চারদিকে। যার টাকা আছে তার সব আছে।

  • তৌহিদুল ইসলাম

    আমি আশ্চর্য হই, এই অল্পবয়সে সে এত বড় শিল্পপ্পতির দেখা পেয়ে গেল কিভাবে? তার ফ্যামিলি যদি একটি চিন্তা করত, সে এত টাকার ফ্ল্যাটে কিভাবে থাকে? চলে কিভাবে ? তাহলে তার বিপদজনক সম্পর্ক তারা জেনে যেত। তখন সাবধান করতে পারত। যদি তারা জেনেও সাবধান না করে তাহলে পরিবারের প্রশ্রয় পেয়েছে। যদি পরিবারের সম্মতিতে হয় এটাকে সম্পর্ক না বলে ব্যবসা বলা যায়। পরিনতিতে সে আজ লাশ।

    পারিবারিক শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা। শিক্ষা,নৈতিকতা এইসব আসলে পরিবার থেকেই আসে। মেয়েটি হয়তো পরিবার থেকে এই শিক্ষা পায়নি। অথবা এই মেয়ের পরিবার জেনেশুনে থাকে এমন একটি সম্পর্ক করতে সায় দিয়েছে।

    বহুগামী রোগটা বড়লোকদের বেশি। সে বহুগামীতায় স্বীকৃতি কিংবা ব্ল্যাকমেইল চলে আসলে এমন ঘটনার জন্ম হয়। আমাদের সমাজের মানুষকে নিজের সন্তানদের বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। পারিবারিক শিক্ষা দৃঢ় করতে হবে।

    সমস্ত মিডিয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের ছেলেকে হাইড করার যে প্রবণতা দেখেছি এর তীব্র নিন্দা জানাই। সেইসাথে নিন্দা জানাই যারা ভিকটিম মেয়েটিকে নিয়ে অসভ্য অশালীন মন্তব্য করেছে তাদের।

    আমি মেয়েটির আত্মহত্যা প্ররোচনাকারী কিংবা হত্যাকারীর বিচার চাই।

    • সাবিনা ইয়াসমিন

      প্রথম দিকের প্রশ্ন/ ভাবনা গুলো প্রথমেই সবার মাথাতেই ঘুরবে। কিন্তু একটু ভেবে নিলে নিজেরাই এর ব্যাখ্যা পাবেন। একজন ক্ষমতাধর পুরুষ যদি চায় একটি মেয়েকে তার শিকারে পরিণত করবে তাহলে তার জন্য এটা অসম্ভবের কিছু নেই। একটা টিনএজ মেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্চাকাঙ্খী, স্বপ্নময়ী এবং আবেগী হবে। ঘাঁগু শিকারীরা খুব ভালো করেই জানে কীভাবে শিকার ধরতে হয়। উক্ত ঘটনাতেও তাই ঘটেছে। শিকারী জাল ফেলেছে আর শিকার তার হাতের মুঠোয় ছিলো।
      আরেকটু বাড়তি যোগ করি, আনভীরের মতো সর্ব ক্ষমতাময় লোক যদি ইচ্ছা করে তাহলে শুধু টিনএজ বা বয়স্ক নারীরা নয় ছেলেদেরকেও সাইজে রাখার ক্ষমতা রাখে।
      “দেহ থেকে দিল বড়ো, মাথা থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত কলিজা ” এই পোস্ট গুলো কিন্তু পুরুষরাই দিতেন/ দিয়েছেন।

      মতামতের জন্য ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই।
      শুভ কামনা 🌹🌹

  • মনির হোসেন মমি

    অসুস্থ জাতি ;
    সবশেষে আপনার এ কথার সাথে একশ ভাগ একমত।এ দেশের রাজনীতির পূর্ব প্রেক্ষাট আর এখনকার প্রেক্ষাপটের চিত্র সম্পুর্ন ভিন্ন।এখন যারা রাজনীতি করে বা দেশ চালায় তারা অধিকাংশই পুজিবাদী।এ যুগে বৈধ ভাবে পুজিবাদ হওয়া যায়না।পুজিবাদ হতে হলে অসাধু পথ অবলম্বন করতে হয় ।হয় জনগনের জমানো ব্যাংক ডাকাতি বা ঋণ নিয়ে ফেরত দিতে ছয় নয় করে অথবা স্মাগলিং এর পথ অনুসরণ করে।তাহলে তাদের সন্তানেরা ভাল মানুষ হওয়ার প্রশ্নই আসে না।আর মিডিয়া অবৈধ পুজিবাদীরাই নিয়ন্ত্রণ করে তাদের পাপ কর্মগুলো ঢাকতে যেমনি এ ক্ষেত্রে হয়েছে।
    আমরা এ থেকে আর কখনো মুক্তি পাবোনা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে যেতে হবে।

  • সুপর্ণা ফাল্গুনী

    এদেশে নারী আর গরীবরা কোনো বিচার পায় না, উল্টো তারা লাঞ্ছিত; চোর, বাটপার, মাগী , বেশ্যা অপবাদে জর্জরিত হয়। এসব উপরতলার বাসিন্দারা অর্থের বিনিময়ে শরীর কিনে, মানুষের বিশ্বাস কিনে তারপর ছুঁড়ে ফেলে দেয় পঁচা বাসি খাবারের মতো, পুরাতন কাপড়ের মতো। পুরুষরা যেখানে বহুবিবাহে আবদ্ধ হচ্ছে প্রতিনিয়ত গরীব হোক আর ধনী হোক সেখানে এ মেয়ে স্বপ্ন দেখেছিল হয়তো এ লোক ও বিয়ে করে তাকে স্যাটেল করে দিবে বাইরে। মেয়ের বাবা-মা নেই , ভাই থাকতেও নেই, বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে সেক্ষেত্রে আমাদের সমাজ কতটুকু সাপোর্ট দিচ্ছে এমন মেয়ে বা ছেলের জন্য সেটা কিন্তু আমরা সবাই জানি। বেঁচে থাকার জন্য তখন এমন পথে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নাই আমাদের মতো সমাজ, সংস্কারে। যাদের জন্য পতিতালয় তৈরি হয় তারাই দিনের আলোতে নারীদের গালি দেয়, অবমূল্যায়ন করে। অল্পবয়সী মেয়েদের কেই এইসব চরিত্রহীন পুরুষরা টার্গেট করে সহজে প্রলুব্ধ করতে পারে বলে। এসব ভাসুরদের কখনো বিচার হয়না , হবেও না পুরুষশাসিত সমাজে। দিনশেষে মেয়েরাই দোষী সাব্যস্ত, চরিত্রহীন, লোভীর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়।

    • সাবিনা ইয়াসমিন

      প্রথমেই ধন্যবাদ দিচ্ছি এত সুন্দর বিশ্লেষণ করে মন্তব্য দেয়ার জন্য। একজন নারী হয়ে অন্য একটি মেয়ের সরল মানসিকতাকে অত্যন্ত সুন্দর করে অনুধাবন করেছেন আপনি। সমাজে মেয়েদের উপর ঘটা অপরাধ গুলোর জন্য মেয়েদের প্রতি মেয়েদের বিদ্বেষ মুলক আচরণ অনেকটা দায়ী। মুনিয়া ইস্যুতে এটা দেখা গেছে। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও মেয়েটার নৈতিক চরিত্র নিয়ে কম ঘাটাঘাটি করেনি। অথচ নিজেকে তার জায়গায় রেখে যদি ভাবা হতো তাহলে হয়তো ব্যাথিতদের সংখ্যা আরও বাড়তো, অন্যায়টির বিরুদ্ধে আরও সরব প্রতিবাদ প্রতিষ্ঠিত হতো।
      দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি, দিনশেষে সব দোষের দোষী মেয়েদের কেই ভাবা হয়।

      ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ