আজ হতে এক কোটি ছেচল্লিশ লক্ষ আট হাজার সেকেন্ড পূর্বে তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে বসতি স্থাপন করেছিলেন সোনেলা নামক এই রাজ্যে। বসতি স্থাপনের পরের ইতিহাস তো রাজ্যের ইতিহাসের সাথেই মিলে মিশে একাকার। তাঁকে বাদ দিয়ে এই রাজ্যের ইতিহাস রচনা করা যাবে না। এর তিন মাস পূর্বেই অবশ্য তিনি বোঁচকা, পোটলা, পুটলি সহ এখানে এসেছিলেন। তাঁর প্রথম বাড়ি রাজ্যের কি এক জটিলতায় স্থায়ী ভাবে বরাদ্ধ করা যায়নি। তবে তাঁর প্রিয় বোঁচকা, পোটলা, পুটলি, আসবাব পত্র সহ স্থায়ী বাড়ি বরাদ্ধ করিয়ে ছেড়েছেন নিজের যোগ্যতায়।

একজন মানুষ এলাকার প্রতিটি মানুষের সাথে যোগাযোগ করছেন, সবার সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনার সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন, কার বাড়িতে সন্তান জন্ম নিলো, কার মেয়ের/ছেলের বিয়ে, কার গায়ে হলুদ, পরীক্ষা, কে কোন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হল, মোট কথা সবার খবর রাখছেন, উপস্থিত থাকছেন নিজে সেসব সামাজিক কর্মকাণ্ডে, যাকে দেখলে সবাই আশ্বস্ত হণ, উৎসাহ পেয়ে সবাই উত্ফুল্ল  - এমন দু একজন আন্তরিক মানুষ কিন্তু আমরা প্রায় সবাই দেখেছি আমাদের বাস্তব জীবনে। তিনি তেমনই একজন এই সোনেলার। কার জন্মদিন কবে, কে অসুস্থ্য, কার হাফ- সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি ইত্যাদি সমস্ত খবর তিনি রাখেন। তিনি ব্যাতিত এসব কেহ দেখার নেই যেন। যে কারনে ছাইরাছ হেলালের দ্বিশততম পোষ্ট উপলক্ষে কেহ শুভেচ্ছা পোষ্ট দিলেন না। তিনিই এসব দেখে থাকেন, অন্য কেউ এসব নিয়ে কেন ভাববেন? এটিই যেন নিয়ম হয়ে গিয়েছে। কতটা নির্ভরতার প্রতীক তিনি হয়ে গিয়েছেন, এটিই এর সর্বশেষ প্রমাণ। আমার দাদি এমন একজন মানুষ ছিলেন, খুনখুনে বুড়ি হয়েও লাঠিতে ভড় করে তিনি বিকেল হলেই আসে পাশের বাড়িতে টো টো করতেন। তিনি ছিলেন আমাদের এলাকার ' রেডিও '। আমরা সব সংবাদ তাঁর কাছেই পেতাম। অবশ্য এখানে যার কথা বলছি তিনি কিন্তু আমার সেই দাদি নন 🙂 তবে তিনিও একটি  'রেডিও'।
প্রথম পদার্পণে তিনি নিয়ে এলেন তাঁর মায়ার পৃথিবী। বুঝিয়ে দিলেন তাঁর পৃথিবীর স্বরূপ, প্রমাণও করলেন তাঁর জগতের বিচিত্রতা। ইদানিং পাখির প্রেমে পড়েছেন। বিশাল সাইজের একখান ক্যামেরা নিয়ে চলেন সারাক্ষণ। দেশ বিদেশের পাখির ছবি তোলার নেশায় পেয়ে গিয়েছে তাঁর। আমারও পাখি প্রেম ছিল এক সময়, এখনও আছে। তাঁর পাখি প্রেমের কাছে আমি পরাস্ত হয়ে গিয়েছি। অচিরেই একজন পক্ষি বিশারদ হিসেবে তিনি আবিভূর্ত হবেন সোনেলায় এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়া যায়।

তাঁর লেখা/ পোষ্টে বিচিত্রতা আছে। সব ক্ষেত্রেই তিনি সফল। তাঁর পোষ্টের গুনগত মান নিয়ে আলোচনা করা আমার মত বেগুনের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁর ব্যপ্তি দেখেই গুনের বিশ্লেষণ থেকে বিরত হলাম। কে জানে কিসে, কে সে, কিভাবে সে, তবে আসে সেই জন্ম, মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শুন্য শুন্যালয়ে। শুন্য মানেই শুন্যালয়ের আদি-অন্তের সঞ্চয়। এমন লেখা যার বাড়ির সাইন বোর্ডে ঝুলানো থাকে তাঁর লেখা বা পোষ্ট সম্পর্কে আলোচনা কিভাবে করি?

থাকেন প্রবাসে, পেশায় একজন ডাক্তার ( ইতিমধ্যে তাঁর কাছে হতে অনলাইনে ফ্রি চিকিৎসা নিয়ে নিচ্ছি ), নিজে হাসেন, ভাল থাকেন। অন্যকে ভাল রাখতে জানেন। উড়ে এসে সবাইকে আনন্দের জোয়ারে ভাসালেন এবছরের ২৬ অক্টোবর। তাঁর বন্ধুত্ব যারা পেয়েছেন তারাই জানেন কত ভাল বন্ধু হতে পারেন তিনি। সময়ের পরীক্ষায় তিনি এখন আমার সেরা তিন বন্ধুর একজন হয়ে গিয়েছেন। গতমাসে তিনি যখন দেশে গান গেয়ে দাওয়াত দিলাম ' আমার বাড়ি আইও বন্ধু বইতে দিমু পিড়ি '- আমার হেড়ে গলার গান তাঁর মনে হয় ভাল লাগেনি, একারণে আর আমার বাড়ি আসলেন না। কত গানই না শোনালাম তাঁকে, বন্ধু তোমার চোখের মাঝে চিন্তা খেলা করে, ইয়ে দোস্তি হাম নেহি ছারেংগি। কোন কিছুতেই কাজ হল না। তাঁর বেড়ে ওঠা বরিশালে তিনি আসলেনই না এবার।
দোস্ত এই যে এবার শোনো নতুন গান, এই গান শুনে আগামী বার না এসে কি পারবে?

অনেক কিছুই পাওনা আছে তাঁর আমার কাছে। তাঁর জন্মদিন চলে গেলো, সোনেলায় তাঁর প্রথম লেখার দিন চলে গেলো। কিছুই দিতে পারিনি আমি। গত আগস্ট মাসে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও একটি পোষ্ট দিতে পারিনি চোখের সমস্যার কারণে। জন্মদিনে তাঁর জন্য তৈরী করা এই ছোট্ট উপহার ছারা এই মুহূর্তে আর কিছু দিতে পারছি না।

তাঁর সাথে তুলনা করা যায় এমন কি কেউ আছেন? একজনই আছেন। তিনি এনার মত, তিনি সে যার কথা এখানে বলা আছে।

সোনেলায় তিন বছর পূর্তিতে শুন্য শুন্যালয়কে অভিনন্দন ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা  -{@

0 Shares

৩৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ