ভোকাস বার্তা

ছাইরাছ হেলাল ২৩ নভেম্বর ২০১৫, সোমবার, ০৮:৪১:৫৩অপরাহ্ন ভ্রমণ ৪৩ মন্তব্য

স্বল্পকালীন আবাস হিসাবে যে হোটেলটিতে ছিলাম সেটি বিশ তলা, সম্ভবত চার বা পাঁচতলা মাটির নীচে, আধুনিক সব ব্যবস্থাই বিদ্যমান,মেইন ডেস্কে শুধু অত্যন্ত স্মার্ট এক যুবক এক যুবতী, জলজ্যান্ত মডেল। চোখ আঁটকে যাবার মত, একটু পাশে আর একটি ডেস্কে সিকিউরিটির এক কর্তা। কারো কিন্তু বসার চেয়ার নেই। সিফট চেঞ্জে আবার অন্য কেউ আসে, দাঁড়িয়েই কাজ করতে হয়।
এবারে ভুয়া বতুতার বর্ণনায় স্ট্রিট ফুড। এই এলাকায় একেবারে সাধারণ মানুষ কী ধরণের খাবার খায় তা দেখার প্রচেষ্টা। খুব ছোট ছোট খাবার দোকান, ভিতরে বসার জায়গা নেই বাইরে টুলে বা সাধারণ চেয়ারে বসে খেতে হবে, নো দর দাম। প্রায় সব দোকান ই মহিলা পরিচালিত, খুব সাধারণ এরা কাপড় চোপড়ে। মাঝারি ধরনের প্যানে রান্না করা খাবার কাচের ঢাকনায় ঢাকা, পরিচ্ছন্ন। এরা ভেতো, ভাত খায় আরকি।
ফিলিপিনোদের জাতীয় সঙ্গীত ইংরেজিতে গাইতে শুনলাম, এদের নিজেদের ভাষা হারিয়ে গেছে, মৌখিক ভাবে চালু আছে, লিখিত রূপ নেই।
আমাদের টাকলা ইংরেজি ওরা বোঝে না, ওদের টাও আমরা বুঝি না। তাতে কোন কর্ম পরিচালনায় অসুবিধা হয় না, হয়নি। বিশ্বজনীন আকার ইংগিত ই ভরসা। অনেক রকম খাবার রান্না করা, সেটা যে কি তা বুঝছি না। চিকেন আছে তা পর্কের সাথে রান্না করা, কড়কড়ে ভাঁজা আস্ত ছোট ছোট মাছ আছে। সব দোকান গুলোতেই একই ধরনের খাবার, সিদ্ধান্ত নিলাম কিছু একটা খেয়ে দেখতে হবে। সাহস সঞ্চয় করে একটিতে সব গুলো রান্না দেখে টুলে বসলাম। এক কাপ ভাত ও ভাঁজা মাছের অর্ডার দিলাম। হাতে পলিথিন পেঁচিয়ে মাছ ধরে প্লেটে দিল, পলিথিনের প্যাকেটটি ফেলে দিল। দুরুদুরু বুকে একটু মাছ খুটে খেলাম, না কোন গন্ধ নেই, এরা কোন ঝাল বা অন্য মসলা ব্যবহার করে না, আরও এক প্লেটের অর্ডার দিয়ে দুজনে খেতে বসলাম। চাইলাম চিলি ও অনিয়ন, বুড়ি সব দাঁত মেলে হেসে ভিতরে চলে গেল, নিয়ে এল বিরাট এক মরিচ ,পাকা টসটসে লাল, খুব ছোট্ট গোল একটি ফল, মাথার দিকটা একটু কাটা, ঘ্রাণ নিয়ে বুঝলাম লেবু, সস দিল, আরও দুটি বাটিতে সুপের মত কী যেন দিল, ঝুঁকি না নিয়ে লংকা, লেবু ও সস সহযোগে ভাত খাওয়া শেষ হল, বিশেষ হ্যাপা না পোহায়ে ই। সুপার শপে সব কিছু পাওয়া যায়, এই একটাতেই যেতাম, অন্য গুলো তো গেছি যদিও। সব কিছু ফ্রেশ ফল মূল, সব ফল খেতে খুব মজা, কলা, আপেল, পেপে, বাতাবি লেবু আরও কত কী, সব মিষ্টি, সুন্দর ঘ্রাণ। নো ফরমালিন নো পচাস-বাসি।
হোটেলে সকালের নাস্তা বুফে সিস্টেমে। রোজ রোজ নিত্য নূতন আইটেম। মসলা বিহীন রান্না এত সুস্বাধু কী করে হয় আল্লাহ মালুম। এত্ত এত্ত খাবার কেউ খায় না তেমন, সামান্য একটু খুঁটে খুঁটে খেয়ে যে যার মত চলে যায়। ভাবছি আমি বুইড়া মানুষ, আমি না হয় খুব কম খাই, এই মুশকো জোয়ান গুলো খায় না ক্যা!! জানা হলও না।

বিদ্রঃ ভোকাস কথাবার্তা বিশ্বাস করে বসবেন না যেন। সাধু সাবধান।

0 Shares

৪৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ