আমার পরম সৌভাগ্য যে ১৯৭১ এ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষন রেডিওতে শুনেছিলাম প্রথম প্রচারেই।
সরাসরি প্রচার করতে দেয়নি
পরদিন শুনেছি।
সে কি উল্লাস মুক্তিকামী জনতার
আব্বা পাই রেডিও এনে রেখেছিলেন দোকানের সামনে, রাস্তায় বিছিয়ে দিয়েছেন হোগলা( পাটি)
শত শত মানুষ হোগলায় বসা
দাঁড়ানো তার চেয়ে বেশী
অপেক্ষা করছিলেন সবাই
কখন ঘোষণাটি আসে
কখন বাঁশিওয়ালা বাজাবেন জনতার হৃদয়ের কাঙ্খিত সেই সুর
অবশেষে —
‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’
আকাশ বাতাস কাপিয়ে জনতা শ্লোগান দিয়ে উঠলো……… জয় বাংলা ………
একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো কিছু জনতা
আনন্দের সে অশ্রু এখনো দেখি আমি………
** এই পাই রেডিও ১৯৭১ এর শত কষ্টের মাঝেও আমাদের পরিবারের সাথে ছিল।আমাদের আশা ভরসার প্রতীক হয়ে। বেঁচে থাকার প্রান ভোমরা হয়ে।যক্ষের ধন কি জিনিস দেখিনি।আমাদের পরিবারের কাছে এটিই ছিল যক্ষের ধন ১৯৭১ এর দিন গুলোতে।পালিয়ে পালিয়ে বিভিন্ন আত্মীয় অনাত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।বড় ৪ ভাই মুক্তিযুদ্ধে।এর মধ্যে এক ভাইয়ের ১৬ ডিসেম্বরের পুর্বে কোন খোঁজোই ছিলোনা।
ঠিক এই মডেলের পাই রেডিওটি বাসায় আছে কিনা এখনো খুজে দেখতে হবে।
কত কিছু বলার বাকী থেকে গেলো ১৯৭১ এর কথা।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
২৮টি মন্তব্য
আবু জাকারিয়া
আনন্দের সে অশ্রু
এখনো দেখি আমি
রেড়িওটি খুঁজে পেলে জানাবেন।
জিসান শা ইকরাম
খুঁজতে হবে
বাসা বাড়ি ভংচুরে আছে কিনা কে জানে।
মোঃ মজিবর রহমান
আপনার অনুভূতি
আমি আমার মত
গ্রহন করলাম।
আর বরতমানের প্রধান্মন্ত্রীর নিকট
দেশের সোনার হোক এই প্রত্যাশা।
জিসান শা ইকরাম
বর্তমানেও চাইয়া ফেললেন? 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আগলে রাখা যন্ত্রটি খুঁজে সংরক্ষণ করা জরুরী।
জিসান শা ইকরাম
আম্মার হেফাজতে আছে সম্ভবত।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বীরত্ত্ব গাথা আপনাদের পরিবার জানাই হাজারো সালাম।ইতিহাসগুলোকে ভার্তুয়ালের ফিতে বন্দী করে রাখতে পারেন। -{@
জিসান শা ইকরাম
চেষ্টা করবো সর্বাত্মক।
আমি অথবা অন্য কেউ
আমি বড় হইছি মিশ্র মতের পরিবারে। মায়ের দিক গোড়া আওয়ামী, বাবা বিম্পি না হইলেও এন্টি আওয়ামী, অথবা কম্যুনিস্ট। এইজন্য আমি ছোট থাইকাই বিশাল কনফিউজড কে স্বাধীনতা আনছে, কারা আনছে। আমি কোনদিন জয় বাংলা শ্লোগান দেইনা, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বইলাও চিল্লাইনা। বাংলাদেশ বাংলাদেশ বইলা চিল্লান দিছি যদিও, সেইটাও স্টেডিয়ামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
আরেকটা সরল স্বীকারোক্টি হইলো, ৭ মার্চ আর ১৫ আগস্ট আসলেই আসেপাশে মাইকে সারাদিন এতোবার এই ভাষন বাজাইতো যে বিরক্তই লাগতো। যদিও এখন বুঝি এই ভাষন দেশ চেঞ্জ কইরা দিতে পারছিলো নাকি এইটা নিয়া পক্ষে বিপক্ষে হাজার বিতর্ক চলুক। কিন্তু এই ভাষন সময়ের দলিল। সেই সময়ের প্রেক্ষাপট বর্ননা করে।
লাইক, একটা জায়গায় আছে, “উনি আমার কথা শুনলেননা। উনি শুনলেন ভুট্টো সাহেবের কথা।”
ধরেন, ইয়াহিয়া শেখ সাহেবের কথাই শুনলেন, তখন হয়তো পাকিস্তান রক্ষা পাইতো। কিন্তু প্রশ্ন হইলো কতদিনের জন্য? ১০ বছর? ২০ বছর? বড়জোর ৩০ বছর?? কিন্তু এই দেশ স্বাধীন হইতোই। এতো দুরে সেপারেটেড থাইকা কনদেডারেশন হিসেবে থাকা কস্ট কল্পনাই।
আমার কাছে শেখ মুজিব হইলেন ওই সময়ের একটা ভরসা করার মত ফিগার। যার পিছনে সবাই এক হইয়া দাড়াইতে পারতো। উনার রাজনৈতিক দুরদর্শিতা থাকুক আর নাই থাকুক ওইটা মুখ্য না। মানুষ ভরসা করতো এইটা তো ঠিক। নাইলে ১৬৭ টা সিট তো পাইতোনা। জনপ্রিয়তার অকাট্য প্রমান তো ওই নির্বাচনই।
কথা শেষ হয়নাই। পরে আবার চেস্টা করবো। আপাতত বিরতি দেই।
জিসান শা ইকরাম
একটি ঘটনাকে এক একজন ভিন্ন ভিন্ন ভাবে দেখবেন এটাই স্বাভাবিক।
আমাদের পরিবার আওয়ামী লীগ পরিবার
পিতৃকুল এবং মাতৃকুল ( নানা ছিলেন মুসলিম লীগ, নানি আবার আওয়ামী লীগ), আমরা যেভাবে দেখেছি এই ভাষনকে,লীগের বাইরে থাকা একজন সেভাবে দেখবেন কেন?
তবে এই ভাষন সময়ের দলিল।
একজন মানুষের উপর আস্থা এবং নির্ভর করেছিল সমস্ত জাতি।
এটি সত্যি।
আমি অথবা অন্য কেউ
আপনার নানার সম্পর্কে বলেন কিছু। আমার ওই সময়ের ভিন্ন মতাদর্শের মানুষগুলার কথাও জানতে ইচ্ছা করে। কিভাবে উনারা ৭১ কে দেখেছিলেন, এসব আরকি। নির্ভরযোগ্য সুত্র কমই পাই।
জিসান শা ইকরাম
স্বাধীন হবে কিনা সন্দিহান ছিলেন।
বলতেন এটি ভারতের চক্রান্ত…………
আবার অভিশাপ দিতেন রাজাকার,পাকি সৈন্যদের
রাস্তার একদম কাছে বাড়ি হওয়ায়, দেখতেন রোজ পেয়ারা বাগান থেকে হিন্দু নারীদের টেনে হিচরে নিয়ে যাচ্ছে এরা।
স্বাধীন হবার দিন নফল নামাজ পড়েছেন বঙ্গবন্ধুর জন্য
তিনি যেন জীবিত ফিরে আসতে পারেন পাকিস্থান থেকে
নইলে অন্য কোন নেতা এই ধ্বংস প্রাপ্ত দেশ গড়তে পারবেন না
অশ্র উদ্ধার হবে না, ভারতীয় সেনা ফেরত পাঠাতে পারবেন না।
এই হচ্ছেন আমার নানা ।
খেয়ালী মেয়ে
আসলেই আপনি অনেক ভাগ্যবান–আর যা বাকী রেখেছেন তাও তাড়াতাড়ি সামনে নিয়ে আসেন, আমরা অন্তত পড়ে কিছুটা ভাগ্যবান হতে চাই–
জিসান শা ইকরাম
১৯৭১ নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে খুব
কিন্তু সময় করে উঠতে পারছি না।
দেখি এই মাস থেকেই লেখা আরম্ভ করতে পারি কিনা।
খেয়ালী মেয়ে
লিখা শুরু করে দেন–এরপর দেখবেন কখন যে শেষ হয়ে গেলো টেরই পাননি 🙂
জিসান শা ইকরাম
শুরু করে দিলাম।
নুসরাত মৌরিন
জিসান ভাই,আপনারা অনেক সৌভাগ্যবান কারন আপনারা সেই অসাধারন সময়ের সাক্ষী হতে পেরেছেন।
মাঝে মাঝে আমার খুব আফসোস হয়,কেন আমি ঐ সময়ে ছিলাম না!! 🙁
বঙ্গবন্ধু নামের এক আশ্চর্য যাদুকরের ডাকে বিভোর হয়ে সব বিলিয়ে পতাকা আর মানচিত্র বিজয়ের সেই সময়টা তে যদি সত্যি কখনো যাওয়া যেত!!
জিসান শা ইকরাম
আমি বিজয় দেখেছি
একটি দেশের বিজয়
এটিই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি জীবনে……
তাপসকিরণ রায়
১৯৭১রের ইতিহাস গাঁথা–আপনার কলমে বেশ ভাল লাগল–দেশে না থাকলেও কল্পনা করতে পারি সে সব গরম যোশের দিনগুলির কথা। ধন্যবাদ আপনাকে।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ দাদা
আপনাকে আবার সোনেলায় দেখে ভালো লাগছে।
ব্লগার সজীব
১৯৭১ নিয়ে লিখুন আরো জিসান ভাই।নিজের দেখা ঐ সময়কে জানান আমাদের।
জিসান শা ইকরাম
লিখবো।ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
রেডিও কতোটা মূল্যবান ছিলো সেসময়, তা আঁচ করতে পারি বিভিন্ন লেখা, মুভি, ডকুমেন্টারি দেখে। বাড়ির যুবক, যুবতীদের যেভাবে আগলে লুকিয়ে রাখতো, সেভাবে রেডিও। আপনি সত্যিই অনেক ভাগ্যবান এ ভাষন নিজ কানে শুনতে পেরেছেন, এতো এতো বছর পরেও আমরা সেটা শুনলে কেমন গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে যায়। সে সময়কার দু একটি লেখা পড়েছি আপনার, আফসোস হয় যাদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ এই অনুভূতিগুলো আমরা বেশি জানতে পারি, তাদের সময় কম থাকে। একটু সময় আমাদের জন্যেও বরাদ্দ করুন না হয়।
জিসান শা ইকরাম
লুকিয়ে লুকিয়ে খুব কম ভলিউম দিয়ে রেডিও কাছে কান নিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শুনেছি আমরা
বাড়ির একদম মাঝের কক্ষে,যেন রেডিওর শব্দ বাইরে না যায়।
লেখা শুরু করলাম।
মেহেরী তাজ
রক্তে আগুন জালানো ভাষণ….
“রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো
এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো….. ”
জয় বাংলা….
জিসান শা ইকরাম
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
স্বপ্ন
১৯৭১ কে নিয়ে লিখুন জিসান ভাই।৭ মার্চের ভাষন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষনগুলোর মধ্যে একটি।
জিসান শা ইকরাম
মনঃসংযোগের অভাব,
লেখায় ভুল হলে ইতিহাসকে সঠিক ভাবে তুলে আনা যাবে না।
চেষ্টা করছি।