ইসলামের শত্রু জামায়াত বরাবরের মতই বাঙালীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পাঁচ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া শাহাবাগ প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলন সমগ্র বাংলাদেশ এবং প্রবাসে বসবাসকারী বাঙ্গালীদের প্রাণের দাবীতে পরিণত হয়েছে। জামায়াতের প্রচারণা ' শাহাবাগ আন্দোলন নাস্তিকদের আন্দোলন ' - একথায় বিভ্রান্তও হচ্ছেন অনেকে । যারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন তাদের জন্য এই লেখা।

শাহাবাগে কেউ ধর্ম যুদ্ধের ডাক দেয়নি। ওখানের কেউ কোন ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি। মুসলিম , হিন্দু‌ , বৌদ্ধ , খ্রিস্টান , নাস্তিক এক হয়ে ওখানে সমবেত হয়েছে , বাঙালীর দীর্ঘ দিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ প্রকাশের জন্য। আমাদের রাজনৈতিক দল এবং স্বার্থপর জনতাকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য যে, ১৯৭১ সনের স্বাধীনতা যুদ্ধকে নিয়ে কোন আপোষ নেই। এখানে একটি মাত্র দাবী প্রধান হয়ে উঠেছে - আর কোন দাবী নাই , রাজাকারদের ফাঁসি চাই । শাহাবাগ আন্দোলন বাঙালীর হৃদয়ের কথা বলছে এখন । এই হৃদয়ের কথা যারা শুনতে পারেনি - তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে এখন যেভাবে ধর্মকে ব্যবহার করে ' সব মুক্তিযোদ্ধা হিন্দু , কাফের ' বলে যারা বাঙালীদের উপর ঝাঁপিয়ে পরেছিল। আজও ঠিক একই ভাবে এরা এই শাহাবাগ এর নতুন প্রজন্মের আন্দোলনের উপর ধর্মীয় ' নাস্তিকতা ' চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। চরিত্র তাদের একই আছে । ১৯৭১ এ জামায়াত ইসলাম এবং এর সমর্থকরা আলবদর ,আলশামস্‌ ,রাজাকার বাহিনী গঠন করে সমস্ত বাঙালীর উপর ঝাঁপিয়ে পরেছিল । আজও ঠিক সেই জামায়াত ইসলাম এবং তাদের দোসররা বাঙালীর পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেছে। তাদের প্রধান অস্র সেই ধর্ম। ১৯৭১ সনে ছিল ' হিন্দু আর কাফের ' , বর্তমানে ' নাস্তিক ' ।

১৯৭১ এর বাঙালীর রণহুংকার ছিল ' জয় বাংলা ' । অজস্র মুক্তিযোদ্ধা এই জয় বাংলা শ্লোগান দিতে দিতে পাক হানাদার বাহিনীর বুলেটে মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছেন । ১৯৭১ এর বাঙালীর রণহুংকার যখন যুদ্ধে পরাজিত রাজাকার , আলবদর ,আলশামসরা আবার শুনতে পায় , তখন তাদের ১৯৭১ এর পরাজিত হবার স্মৃতি মনে পরবে এটাই স্বাভাবিক। এটাও স্বাভাবিক যে তারা তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সেই ধর্মকেই ব্যবহার করবে।

যে দ্বিজাতিতত্ত্বের ( ধর্মের ) ভিত্তিতে ১৯৪৭ সনে ভারত ভাগ হয়েছিল , তা এই অঞ্চলের বাঙ্গালীরা মেনে নেয় নি। তাইতো এই বাঙ্গালীরা সৃষ্টি করেছে ১৯৫২ , ১৯৬৯ , ১৯৭১ । এই ভুখন্ডের বাঙ্গালীদের হৃদয়ের চাওয়া একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ , একটি অসামপ্রদায়িক দেশ। তাঁরা ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন কারীদের ১৯৭১ সনের যুদ্ধে পরাজিত করেছে । মিমাংশিত হয়ে গিয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে - ধর্মের বিভাজন তাঁরা চায় না। যারা পরাজিত , তাদের দাবী অগ্রাহ্য করে দিয়েছে এদেশের বাঙালী । পরাজিত শক্তির চাওয়াকে গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। বর্তমান প্রজন্মের সাহসী মানুষ ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন কারীদের পরাজিত করবেই ইনশাল্লাহ্‌ ।
জয় বাংলা

0 Shares

১০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ