বাড়ি থেকে বলছি-৩ : ঢেকি

মেহেরী তাজ ৫ জানুয়ারি ২০১৫, সোমবার, ১০:১৫:৫৭অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৩১ মন্তব্য

এই আমাদের ঢেকি

এক তারিখে আম্মুর সাথে একটা চরম ফান করেছি। আম্মুর জন্য *তুসকা* কাশের সিরাপ আনা হয়েছে। এটা আমি আগে খেয়েছি ,আমি জানি এটার টেষ্ট ফালতু। আম্মু আমায় প্রশ্ন করেছে এটা খেতে কেমন রে? আমি মুখে ২০০ ওয়াট বাল্বের হাসি রেখে বলেছি "আম্মু এটা খেতে খুব ভালো "। আম্মু খাওয়ার পর আমায় কিছু বললো না খালি একটু হাসলো।

এর পর তিন তারিখ এর ঘটনা, সকালে উঠে আম্মু আমায় বলছে
আম্মু - হ্যা রে পিঠা খাবি?
আমি - অবশ্যই তার জন্যই তো বাড়ি আসা।
আম্মু -কত খানি চালের আটা বের করবো বল? দশ না পনেরো কেজি?
আমি- বের যখন করবাই দশ কেন পনেরো কেজিই করো।
তার কিছুক্ষন পরের ঘটনা
আম্মু- বাবা পনেরো কেজিই ভিজায়ে দিলাম। তবে একটা সমস্যা.....
আমি - মোবাইল স্ক্রিন থেকে চোখ তুলে আম্মুর দিকে তাকালাম।
আম্মু- কাজের লোক পাওয়া গেলো না। তোকেই পাড়া দিতে হবে। পারবি তো?
আমি : হ্যা হ্যা না পারার কি আছে।!? (পুরাই তব্দা খেয়ে গেছি)

বলেই আম্মু উল্টা ঘুরে দাঁড়ালো। আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম আম্মুর শরীর সামান্য সময়ের জন্য দুলে উঠেছে। তিনি হাসছেন। আমি এ ও বুঝতে পারছি এটা *তুস্কার*ফল।

আসলে পারা বলতে ঢেঁকিতে পারা দেওয়ার কথা বলছিলো আম্মু।
তারপর ঢেঁকিপাড়ে গিয়ে পারা ও দিলাম অনেক ক্ষন। কিন্তু বুঝলাম উনি আমার মা আর আমি উনার মেয়ে। কারন যখন আমি মোটামুটি ঘেমে নেয়ে গেছি তখন দেখি মায়ের ডাকা দুটা লোক আসলো। এবার আবার আম্মু তার মুখে ৫০০ ওয়াট বাল্বের হাসি টেনে রেখেছে। আটা বের করা হলো ঢেঁকি দিয়ে আর আজ রাতেই বানানো হচ্ছে তার পিঠা। ভাপা পিঠা,কুসলি পিঠা,মুঠো পিঠা, চিতয় পিঠা।
সোনেলার সবাইকে এই শীতের পিঠার দাওয়াত 🙂

ঢেঁকির কথা পড়ে নাই এদেশে এমন মানুষের সংখা কমই হওয়ার কথা।
তবে ঢেঁকি ব্যবহার করে এমন মানুষের সংখাও খুব বেশি নয়।
সেই ঢেঁকি ব্যবহার করা অল্পসংখ্যক মানুষের মধ্যে আমরা পরি।
আমাদের মহল্লায় মোট চারটি ঢেঁকি আছে। এই মেশিনের যুগেও আমার এই ঢেঁকি গুলো ব্যাবহার করি।

গ্রাম বাংলার গান শুনুন এবং ঢেকির পার দেখুনঃ ও ধান ভানিরে ঢেকিতে পার দিয়া

0 Shares

৩১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ