ফেসবুক চতুর্থ পর্ব

হৃদয়ের স্পন্দন ২৫ নভেম্বর ২০১৪, মঙ্গলবার, ১২:১৭:২৮পূর্বাহ্ন বিবিধ ১৩ মন্তব্য

খুব ভালোই চলছে আবির আর নুসরাতের,
এরা যেনো এক আদর্শ ঝুটি,
অদৌ সেটা প্রেম কিনা জানেনা আবির
জানেনা নুসারাত, তবু এইভাবেই কাটছে দিন,
অনুভুতিগুলু
যেনো কল্পনা ছেড়ে বাস্তবে রুপ নিচ্ছে,
বেলায় বেলায় কে কি করছে, কি হাল
অবস্থা ইত্যাসির মধ্যেই দিন অতিবাহিত
হচ্ছিলো তাদের, এক কথায় রোমান্টিক, কিন্তু
এ সম্পর্কের শেষ কোথায় তা আবির নুসারাত
কেউ জানেনা, আবির কিন্তু নুসারাত
কে সত্যি ভালোবেসে ফেলেছে, তার
স্বপ্নে বিভোর,
ভার্সিটিতে আবি যেতোনা বলাটাই সার্থক, সেই
আবির এখন ভার্সিটি তে নিয়মিত, যার জন্য যায় শুধু
তাকেই পায়না আবির, নুসারাত কোণ
ইয়ারে সেটাই জানেনা আবির জানেনা কোন
ক্লাসে পড়ে মেয়েটি, শুধু জানে সে তার
নিল পরী,
হটাথ নুসারাতের কোনো খবর নাই, বেশ
কয়েকদিন হলোও নুসারাত অনলাইনে আসেনা,
ফোন টা খোলা কিন্তু
ফোনে পাওয়া যায়না নুসারাত কে, ফোন রিসিব
হয়না তার, খুব চিন্তিত আবির এটা কি হচ্ছে, আবির
ভিত হয়ে পরে নুসারাতের
কি কোনো সমস্যা হল? এই দুশ্চিন্তা আবির
কে গিলে গিলে খাচ্ছে বেশ কিছুদিন, আবির
মেসেজ পাঠায়, নুসারাত সিন
করে ফেসবুকে কিন্তু কোনো রিপ্লায় নাই,
আচ্ছা নুসারাত কি অন্য কাউকে ভালোবাসে? এ
চিন্তা মুহূর্তের জন্য আবিরের
মনে উকি দিয়ে গেলো আবির
যেনো আরেক টু মুষড়ে গেলো, নাহ
তেমন কিছুই না, নিজেকেই
শান্তনা দিলো আবির, তবু
কোনো একটা অশান্তি আবিরের
মনে গাথা হয়ে গেলো, সব কিছুতেই
কেমন যেন বিষন্ন আবির,
কোনো কিছুতেই তার মন নেই, সারাদিন
অনলাইনেই পড়ে থাকা, বারবার করে নুসারাতের
ওয়ালে ঘুরাঘুরি, নাহ নুসারাতের
কোনো খোজ নেই কোথাও, নুসারাত
অনলাইনে কাদের সাথে আড্ডা দেয়
সে ব্যাপারেও জানেনা আবির, তাই আর খোজ
নেওয়া হচ্ছেনা ইচ্ছা থাকা সত্বেও, রাত্রের ২
টা আর ৩ টা নাই, আবির অনলাইনে থাকে,
কিরে বাবা ঘুমাস নি? আবির মায়ের কন্ঠ
শুনে বিচলিত হয়ে পড়ে, মা তুমি এতো রাতে?
নাহ আগে তো ১২ টার সাথে সাথেই তোর
রুমের লাইট অফ হয়ে যেতো কয়েকদিন
ধরে দেখছি সারারাত জেগে থাকিস, তোর এই
কি হলো বাবা প্রেমে পরলি নাকি? আবির
হেসে দেয় না মা এইতো ক্লাসের কিছু
নোট ব্যাস্ততায় জোগার করা হয়নি তাই
কয়েকদিন যাব সে সব কালেক্ট করছি,
ও আচ্ছা তাই বল, এখন
নাকি ছেলে মেয়েরা ফেসবুক নাকি যেন
টেসবুকে প্রেম ট্রেম করে,
আমি তো ভাবলাম
না মা, তুমি না
ঠিক আছে বাবা দেখ আর শোন
কাউকে না জেনে শুনে মন দিসনা,
আগে দেখে নিস আর পছন্দ হলে আমায়
বলিস বাবা
আবির কিছু বলতে চেয়েছিলো তার আগেই
মায়ের প্রস্থান, অনেক্কখন
হয়ে গেলো আবির তাকালো তার ল্যাপটপ এর
দিকে, জুই এর ম্যাসেজ এসেছে
হাই
আবির রিপ্লায় করবে কিনা ভাবছে এর ভিতর এক
গ্লাস দুধ হাতে মা আবার ডুকলো তার রুমে,
বাবা নে খেয়ে নে, আবির
ভুলে গেলো জুই এর কথা,
ঘরিতে একটা বাজে, মা তুমি ঘুমাওনা কেনো?
এমনিতেই বাবা, আজ ঘুম আসছেনা, হ্যারে আজ
জুই এসেছিলো বাসায়
আবির তার মায়ের কথার উত্তর
না দিয়ে জুইকে ম্যাসেজ করে এর একটু
অপেক্ষা করো মিনিট ২০
আমি আসছি কথা আছে তোমার সাথে
কিরে আবির
হ্যা মা বলো
আজ জুই এসেছিলো বাসায়,
তোকে খুজতে
আমাকে কেনো? বলতে বলতে মুখ
থেকে একটু দুধ ফেলে দেয় আবির
কিরে ওর কথা শুনে এমন ভিমড়ি খেলি?
মেয়েটা কিন্তু সুন্দর
মা, এইসব কি? তেমন কিছু
হলে আমি তোমাকে বলতাম, যাক কি জন্য
এসেছিলো
না তোদের নাকি সেমিষ্টার শুরু হবে, তুই
নাকি ভার্সিটিতে যাসনা, তো এ পথ দিয়েই
যাচ্ছিলো, যাবার সময়
নাকি বলে গেলো তোর প্রশংসায় একদম
পঞ্চমুখ, সত্যি করে বলতো বাবা ঘটনা কি
নাহ মা তেমন কিছুই না, এমনিতেই আমি তার
সাথে কথা টথা বলিনা, কিন্তু সে একটু
গায়ে পরেই যেনো কথা বলতে চায়, আমার
ভালো লাগেনা মা
আমি কিন্তু সব জানি
কি জানো তুমি?
না মেয়েটা তোকে পছন্দ
করে তা ছাড়া দখতে কত সুন্দর মেয়েটা,
তোর বন্ধু সেদিন আমাকে বললো,
হ্যারে তুই নাকি অনলাইনে কোন পরীর
প্রেমে পরেছিস? আসলেই
কি পরী নাকি রে বাবা? দেখ আবার
যেনো আমার সোনার টুকরা টা নিয়ে পরীর
দেশে চলে না যায়
মা তোমাকে এইসব কে বললো?
আগে বল সত্যি কিনা
হ্যা না মানে অই অনলাইনে একদিন কথা হয়,
আমাদের ভার্সিটিতেই পড়ে মেয়েটা,
হ্যা একটু কথা হয়, অসব কিছু না মা,
আবিরের মা হাসছে, লজ্জিত আবির
তাকালো ডেক্সটপের দিকে ২১ মিনিট ৪৫
সেকেন্ড, তুমি কি এখোনো ব্যাস্ত?
আচ্ছা আমি অপেক্ষা করছি জুই মেসেজ
করেছে, আবির ভাবছে, আমি যাই রে। তুই
তোর পরীর সাথে কথা বল
মা, পরীর কোনো খোজ নাই, আজ ৫ দিন
বাহ হিসাব ও রাখিস আচ্ছা বল আজ কি বার?
আবির আজ কি বার বলতে পারছেনা, তার এসব
হিসাব রাখা হয়না কোনোদিন, আবির চুপচাপ
অন্যদিকে মা এখোনো হাসছে,
ভালোইরে আবির দিনের হিসাব না রাখলেও
পরীর হিসাব রাখছিস, আমার ধারনা আজ পরিদের
এইখানে বৃহস্পতিবার, পরী ঘুমাচ্ছে কাল তোর
খোজ নিবে, হরতালে মনে হয় ৫ দিনের
ছুটি নিয়েছে, তুই মেয়েটাকে অনেক
জ্বালিয়েছিস, প্রতি ঘন্টায় তার
সাথে কথা বলেছিস, একটু ছুটি নিয়েছে পরী,
কাল চলে আসবে, বলেই মা আবিরের রুম
থেকে চলে গেলো, আবির ভাবছে মা সব
জেনে নিলো কি করে? হাহ কাজ
মটা ছোটো বোন করেছে, আবিরের
সবসময় লগ ইন করাই থাকে,
ফেসবুকে ডুকলে প্রথমেই আবিরের
আইডিতে লগ ইন হয়, আজ
দুপুরে চার্জে দিয়ে চা খেতে গিয়েছিলো আবির,
তখন ছোটো বোন সব দেখেছে, আর
তাছারা নোট প্যাডে সব লিখা ও নিশ্চয়
ওগুলা পড়েছে, বান্দরনি এখন ঘুমাচ্ছে, কাল
সকালে একটা কান মলাই দিতে হবে তাকে
হ্যা কেমন আছো জুই?
সাথে সাথে জুই রিপ্লায় করলো ভালো তুমি?
এইতো
আজ তোমাদের বাসায় গিয়েছিলাম
বাহ নিজ থেকেই বলছে আর কিছু
জিজ্ঞাসা করতে হবেনা, একটু তাল মিলালেই
হবে দেখা যাক কি জন্য এসেছিলো
মা বলেছে, রিপ্লায় করে আবির
হুম
কিন্তু কেনো এসেছিলে তা কিছু বলেনি
না তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হয়েছিলো,
বাসায় গিয়ে মিথ্যা বলেছি বলেছি সেমিষ্টার
আসন্ন
আচ্ছা আমাকে দেখার কি আছে জুই?
না তেমন কিছুই না
হুম
হুম
আচ্ছা যাই ঘুমাবো ভালো থেকো
আবির
কি?
কিছু কথা বলার ছিলো
বলো
আমি কি তোমাকে ফোন দিতে পারি?
নাহ এইখানে বলো
আসলে আবির হইসে কি
কি হইসে?
না মানে
হাসো কেনো? তোমার হাসিটা কিন্তু সুন্দর
তাই ? এইটাতো ইমোর হাসি,
আমি হাসলে কখোনো দেখেছো আমার
দিকে?
হ্যা দেখেছি, একদিন তুমি বান্ধবিদের
সাথে কথা বলার সময়
হাসছিলে আমি দেখেছি সেদিন, যাই হোক শুভ
রাত্রি ভালো থেকো
হুম আবির আই লাভ ইউ
মেসেজ টা দেখেছে আবির কিন্ত সিন
করেনি, কার্সর টা রাখা হয়নি, এনসার বক্সে,
অনলাইনের সবুজ
বাতি টা নিভিয়ে দিয়েছে আবির, পরীর
ওয়ালে এখন আবার যাবে সে,
সে জানে পরী আসেনি, পরী কিছু
করলে সে নোটিশ পেতো, মন
কে শান্তনা দিলো সে,
কোণো কারনে সেটিংস চেঞ্জ হয়েছে,
পরীর ওয়াল টা একটু ঘুরে এলেই হয়, নাহ
পরীর ওয়ালে কিছু নাই কোথাও,
পরী আসেনি অনলাইনে, যাক
পরী একটা মেসেজ
পাঠিয়ে ঘুমিয়ে যেতে হবে, মধ্যরাত,
তুমি এলেই আমার সাথে একটু যোগাযোগ
করবা, আমি চিন্তিত কিছু হয়নি তো তোমার?
আবির লগ আউট করলো আজ অনেক দিন পর,
এমনিতেইই শুধু সবুজ বাত
টা নিভিয়ে দিয়ে উইন্ডো ক্লোস
করে আবির, আজ কি জন্য লগ আউট
করলো জানেনা আবির, খুব ক্লান্ত সে, তার
একটু ঘুমানো দরকার
আবির গা এলিয়ে দিলো, চোখে ঘুম
লেগে এসেছে এর মাঝেই পরীর
গলা শুনতে পাচ্ছে সে, ধুর ছাই
কি যে হলো যাক পরীর গাওয়া গান
টা শুনে নেওয়া যাক একবার পরী খুব
ভালো গান গায়, মোবাইল হাতে নিলো আবির,
নাহ সে ভুল শুনেনি, পরীর গাওয়া গান
টা আবিরের রিং টোন করা ছিলো পরী ফোন
করেছে
আবির ব্যাক করলো ফোন টা
কেমন আছো পরী?
হ্যা ভালো, আসলে একটু ব্যাস্ত ছিলাম তাই
এক্সাম চলছে, চেষ্টা করেও পারিনি তুমি কেমন
আছো?
তা না শুনলেও চলবে, অজানা এক
কেরনে আবিরের রাগ হচ্ছে পরীর উপর
কি আশ্চর্য, চেষ্টা করেও নাকি সে এই ৫
দিনে আমার খোজ নিতে পারেনি
কি ব্যাপার রেগে আছো কেনো?
আমি রাগিনি, রাগ আমার জন্য না
আসলে হইসে কি, ফোন টা বাসায়
রেখে গেছিয়াম ভুলে, ট্যুর ছিলো দুই
দিনের, সেটা ৫ দিন হয়ে গিয়েছিলো
মেনে নিচ্ছি তাহলে ফেসবুকের ম্যাসেজ
সিন করেছো, কিন্তু রিপ্লায় দাওনি কেন?
আমার কিবোর্ড নষ্ট হয়ে গেছে আবির
তাহলে লগ ইন কি করে করেছো? এড্রেস
লিখেছো কি করে
উফ আবির, সেইগুলা দিয়া তো আগেও ব্রাউস
করেছি তাইনা? সেভ ছিলো সব, পাস টা ও সেব
করা ছিলো তাই লগ ইন করতে পেরেছি , কিন্তু
রিপ্লায় করতে পারিনি
ও, বাসায় কখন এসেছো? আবির লক্ষ্য
করেছে মুহূর্তের জমা সে রাগ কেমন
যেনো একটা ভালোবাসায় পরিনত হচ্ছে
এইতো এলাম কাল বিকালে আমাদের
দেখা হচ্ছে, ফোনে চার্জ নাই,
অনলাইনে আসো
তোমার নেটবুক তো নষ্ট কেমনে যাবা?
আরে গাধা আমি বাসায় পিসি তে বসবো আসো
আচ্ছা
নক করে আবির
কোথায় দেখা করবে?
কেনো ক্যাম্পাসে?
না মানে বাইরে কোথাও?
আচ্ছা ঠিক আছে বলো কোথায় যাবে?
বেশিদূর না, চলো কাল কোথাও যাই
আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু যাবে কোথায়?
আবির টেনশানে পরে গেছে, কই যাওয়া যায়
সে জানেনা, আগে কখনো রাস্তায়
ঘুরে প্রেম করেনি আবির, তুমিই বলো রিপ্লায়
করে আবির
আচ্ছা আগে ক্যাম্পাসে দেখা হোক তারপর
দেখি কই যাওয়া যায়
আচ্ছা সোনা
আবার?
কি?
তোমাকে বলেছি না এইটা আমাকে দিবানা
কোনটা?
এইটা
আচ্ছা সরি
মনে থাকে যেনো আর গেলাম ঘুমাবো
ওকে বায় বলেই লগ আউট করে আবির, শেভ
করতে হবে, চোখ
গুলা ভিতরে চলে গেছে, চোখের
নিচে কালচে দাগ,
এইভাবে দেখা করতে যাবে আবির,
ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে সে

0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ