পর্বঃ ৭
দুর্দান্ত এক সাইকোর সন্ধান পেয়েছে ডেবিড। ইনি আর কেউ না, রবার্ট ব্লক এর সাইকো পড়ে অদ্ভুত শখ মাথায় চাপা মিলফোর্ড। তার শখ বেশ অদ্ভুত। নরম্যান বেটস কে একজন মস্তিস্ক রোগী সাইকো বানিয়ে দেখিয়েছে রবার্ট ব্লক।কিন্তু এ শখের সাইকো। মিলফোর্ডের পিতা উইলিয়াম একজন পুরাতন বই এর ব্যবসায়ী। মাতা মারা গিয়েছেন নিছক এক অগ্নি দুর্ঘটনায়, যদিও মিলফোর্ড এর জন্য তার বাবাকে দায়ী করেন। সেদিন গভীর রাতে বাড়ি ফিরছিলেন ১৪ বছর বয়সি মিলফোর্ড আর তার পিতা উইলিয়াম। রাস্তার মোর ঘুরতে দেখলেন তাদের বাড়ি আগুন জ্বলছে। দৌরে আসলেন বাপ ছেলে। জানালা দিয়ে মিলফোর্ডের মা কে দেখা যাচ্ছিলো। পা থেকে কোমড় পর্যন্ত আগুন জ্বলছে, তিনি বাচাও বাচাও বলে চিৎকার করছেন, ছুটে যাচ্ছিলো মিলফোর্ড, কিন্তু তার বাবা উইলিয়াম তাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন যেতে দেন নি। কারণ তিনি জানতেন মিলফোর্ডের মাকে বাচাতে গেলে তার সাথে মরতে হবে আরো একজন কে। যা কোনোভাবেই হতে দেয়া যায়না। পুরাতন বই বিক্রেতা এ মানুষ টা ছিলেন অত্যান্ত ঠান্ডা মাথার লোক। মিলফোর্ড যে তার পিতাকে তার মায়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে এ কথা উইলিয়াম ও জানেন, কিন্তু পিতা পুত্রের সম্পর্কে তা কখনোই প্রকাশ পায়না। বই ব্যবসায়ী এ উইলিয়াম ছিলেন আগে টুরিষ্ট দোভাষী। পেশার প্রয়োজনে তাকে শিখতে হয়েছে বহুদেশী সব ভাষা। জন্মসূত্রে লন্ডনের এ নাগরিক আমেরিকাইয় আবাস গাড়েন বছর ২০ আগে। যখন থেকে তার ছেলের খুন খুন খেলা ধরে পড়ে তখন থেকে। এর সাথে ডেভিডের পরিচয় হয়েছিলো বছর চার আগে, একটি বারে। গল্পের ছলে ডেভিড কে বলেছিলেন মিলফোর্ড, সে একজন সাইকো, সে খুন করে, করার আগে একজন কে জানায়, যে তাকে বাধা দিতে পারতো। অথচ কেউ তাকে বাধা দেয়নি। ডেভিড তাকে মাতাল ভেবেছিলেন, কিন্তু তিনি নিজে মদ্যপ হয়ে বার থেকে বের হবার পথে জটলা আর পুলিশ দেখে দাড়ালেন, এবং দেখলেন বারের এক বেয়াড়া পড়ে আচে মাটিতে। নৃশংস এক খুন। মদের বোতল ভেঙে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে গলায়। ঠিক স্পাইনাল কর্ড বরাবর। এতে খুনীর লাভ হয়েছে, আহত ব্যাক্তির গলা থেকে কোনো আওয়াজ বের হবেনা, আররক্তের গড়গড়া২ি বোতল বেয়ে নিচে নেমে যাবে, এইভাবেই তাকে মৃত্যু দেয়া হয়নি, এর পর তার বুকে আর পিটেহ অন্য একটি মদের বোতল ভেঙে ১.৫ ইঞ্চি ঢাবিয়ে আচড় দেয়া হয়েছে। একটি চোখ গেলে নেয়া হয়েছে। দেখতেই অদ্ভুত লাগছে তার। হাতের ইশারায় যেন মৃত ব্যাক্তি কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করছে। ডেভিডের অবকাশকালীন ছুটি থাকায় তিনি মাথা ঘামালেন না, শুধু কয়েকটা ছবি নিয়ে চলে এলেন। আজ সকালে চা খেতে খেতে তার মনে পড়লো সেই মিলফোর্ডের কথা। গ্যালারী ঘেটে ছবি বের করলেন তিনি, মিলিয়তে দেখলেন রিসেন্ট ঘটে যাও্যা খুন চারটের সাথে। তার কাছে সব কয়টা ছবি মিলিয়ে মনে হলো এখানে কিছু একটয়া আচে, একটা অক্ষর, বা একটা সাংকেতিক কিছু। আমেরিকান টেরোরিষ্ট স্পেশাল তার দীর্ঘদিনের বন্ধু নিওয়া কে ফোন করলেন তিনি। যদি কিছু পাও্য়া যায়। তাতে তিনি যা পেলেন তা সত্যি চমকপ্রদ। আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা মতে মিলফোর্ড এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।

**-**
দেশের উচু উচু সব সাহিত্যিক রা বসেছেন কবি গুপ্তদার বাড়িতে। দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কে লিখবেন। এখন আর পাঠক নাই, বই মেলায় বই বিক্রি হয় কিন্তু পড়া হয়না। বছর বছর বই এলে আবার লেখকের দাম থাকেনা, ক্রেতাদের আবার এক লেখকের বই ও বেশি ভালো লাগেনা। তাই দেশের খ্যাতনামা কবি সাহিত্যিক রা এক কাতারে সাড়িবদ্ধ হয়েছেন। মোট ১২০ জন কবি কথাসাহিত্যিক। বছরে তাদের ৬০ টা বই আসে। বাকি ৬০ জন প্রমোট করে দেন। এদের পরিচয় আবার ফেসবুক থেকে। লিংকাপের ভিত্তিতে লেখক হওয়া। এর মাঝে একজন আছেন যিনি কখনোই বই বের করেন না। টাকার বিনিময় বই লিখে দেন, এবার তিনি লিখবেন বলে মনস্তাপ করেছেন। সকলেই রাজি বিনা বাক্য ব্যায়ে। যদিও সবাই জানে লিখা শেষ হলে যে বেহি টাকা দেবে তার কাছেই বিক্রি করে দিবেন তিনি। এতে যদি সিরিয়াল ছাড়া কেউ কেনেন তাইলে আগামীবছরের জন্য জমা থাকবে পান্ডুলিপি। তিনি মন্সতাপ করেছেন মানুষখেকো টাইপ কিছু লিখবেন। হরতালে মানুষ খাচ্ছে, শ্রমিক আন্দোলন খাচ্ছে, গ্যাস আন্দোলন খাচ্ছে। মানুষ তো খাচ্ছে!

**-**
চা দোকানে বসে খদ্দেরের অপেক্ষা করছে অমলেশ। সে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে সব কিছুর সাথে। ছোটো একটি ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়েছে সে, যাতে আকা রয়েছে চারটি গোলাপ। মধ্যখানে লেখা রয়েছে জাহিদ ভাই, ফোনঃ...............।
একটু চালাকি করতে হয়েছে, হিন্দু দালাল দেখলে যদি খদ্দের না আসে, তাই তাকে ব্যবসার প্রয়োজনে নিতে হয়েছে ছদ্ম নাম। গোলাপ গুলো কেমন অদ্ভুত। ৫ টি করে পাপড়ি গোলাপে। নীলক্ষেতের দোকানদার বৃদ্ধ ছাদ্দাম আলী বলেছিলো পাঁচ পাপড়ির গোলাপ নাকি নারীর যৌনাঙ্গ নির্দেশ করে। কেমন মুচকি করে হেসেছিলো সে। দেখেই ঘেন্না লেগেছিলো অমলেশের, কিন্তু কিছুই করার নাই। প্রেমিকা রমার সেই কথাটি তার কানে বাজে, মাগি ব্যবসায় জাত পাত কাটা আকাটা।
চায়ের দোকানদার এর মাঝেই অমলেশের বন্ধু হয়ে উঠেছে। কথা প্রসঙ্গে জানতে পেরেছে অমলেশ, এই চা দোকানী জামালপুর নানী বাড়ি তে মদ বিক্রি করতো। এক বেশ্যার সাথে সম্পর্ক হয়েছিলো তার। দেখতে শুনতে এতটা সুন্দর না হলেও তার মনে ছিলো সৌন্দর্য। যার জন্য তাকে নিয়ে পালিয়ে আসে চায়ের দোকানদার সুমন। তাদের অনেক কষ্ট হয়েছে, একটা সময় ছিলো যখন বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি রেললাইনে তার বউ দাঁড়িয়ে থাকত, রিক্সাওওয়ালা থেকে শুরু করে দামী পোরশে কার থেকে নামা পুরুষেরা তার বউ এর সাথে যৌন সঙ্গম করতো। চার ৫ টা করা যেত ৫০ করে ২৫০ কি ৩০০ টাকা পাওয়া যেত। পুলিশ নিত ১০০। কখনো যদি বড়লোকের ছেলেরা ২০ কি ৫০ বেশি দিত, তাই জমাতো তারা। খেয়ে দেয়ে দিনে ৫/১০ টাকা সঞ্চয় করতো তা দিয়েই তাদের আজকের এই দোকান। ভালো হয়ে গেছে মেয়েটা, এখন নামাজ কালাম পড়ে। পরপুরুষের সামনে যায়না, তবে অমলেশের সামনে আসবে, অমলেশ তার দেবরের মত। যদিও ইসলামে এই নিয়ম নাই, তবু একটু গুনাহ হইলেও সে আসবে, সুমনের ভালো লেগেছে অমলেশ কে। এর মাঝেই খদ্দের আসে, অমলেশ খদ্দের নিয়ে রউনা দেয় বাড়ির পথে। পান দোকানদার সুমন, ফোন কানে নেয়। ওস্তাদ সব ঠিকঠাক। মুরগী ফাঁদে পা দিছে।

পর্বঃ ৮
সময়ের গতিতে সময় ছুটে চলে, এতে কারো কিছু করার থাকেনা,অনেক আগে পড়া একটা ইংরেজি লাইন মনে আচে মানিকের। টাইম এন্ড টাইড ওয়েট ফর নান। যার অর্থ সময় এবং স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করেনা। জীবনের এ প্রান্তে এসে বুঝতে পারে মানিক, সময় তার জন্য অপেক্ষা করেনাই। টোকাই মানিক এখন গার্মেন্টস চাকুরী করে, টাই ব্যবহার করে। গার্মেন্টস চাকুরী করে যে সে চাকুরী না, পি এম। তার ভাব ই আলাদা, অথচ কে জানে মানিক তার নাম স্বাক্ষর করতে পারেনা! এসব ভাবতে ভাবতে সিগেরেট ধরায় মানিক। অফিসে মিথ্যা কথা বলে সে এসেছে। জানিয়েছে তারাজ ডাক্তারের কাছে রেগুলারচেকাপ, এর আগে সে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলো। আসলে সে এসেছে মিটিং নামক এক রাজনৈতিক কাজে যোগ দিতে। এইখানে আসলে তার লাভ বৈ লস নাই। কিছু বন্ধু বান্ধব আচে, এলাকার কিছু ছেলে আচে গ্রামের, কাজিন আচে। সব থেকে বড় কথা যার নেতৃত্বে এই সভায় মানুষ যাবে, সে তার মামা হয়। টাকা পয়সা ওর হাত দিয়েই যায়। দিন শেষে ৩০০০ পায়, হাজার দু এর মাঝে এক হাজার খাও্যা দাও্যা আর এক হাজার পোলাপানের ব্যালেন্স রিচার্জ দিয়ে তার ১ হাজার থেকে যায়, তাতে তার হাজিরা বোনাস মাসে ৩০০ টাকা কাটলেও কিছু হয়না। বরং একদিকে অফিসে সে এই পার্শ্ববর্তী এলাকার রাজনৈতিক প্রভাবের আলাদা একটা মূল্যায়ন পায়। আজো মানিক এ জন্যই এসেছে, অদূরেই বসে আছে তার সেই মামা আর তার বন্ধুরা।

মানিকের বন্ধু সেলিম,একটু দূরে বসে আচে, ছেলেটা অদ্ভুত। সিগেরেট খায় ঘনঘন, বালের শুদ্ধ বাসায় প্যাচাল পারে,ছেলেটারে সহ্য হয়না মানিকের। কিন্তু এ পুরান পাপি, এলাকা ছেড়ে দিয়েছিলো অনেক আগে, মানিকের ও এই এলাকায় আসার আগে, কয়েকদিন আগে আবার এসেছে। মানিক শুধু এর অতীতের গল্পই শোনে, তাই তাকে বেশি একটা ঘাটায়না সে। তাও মাঝে মাঝে দু একটা খোচা দিয়ে ফেলে। এটা তার জন্মগত অভ্যাস।মানিকের এক ভাই আচে, কাজিন হয় সে। তার সাথে সেলিমের ভালো সম্পর্ক, যদিও মানিক আর তার ভাই কথা বলেনা, বোনের একটি ঘটনা কেন্দ্র করে।
**-**
পাবনা মানসিক হাসপাতাল, ১৫১ নং কারাগার। এটাকে হাসপাতাল কামড়া বা বেড না বলে কারাগার বলাই ভালো। জেলখানায় যেমন আসামীদের জন্য শেকল তালা গরাদ থাকে, এতেও তার কম নেই। সবই আচে, বলা যায় এমন কিছু মেন্টাল টর্চারের ব্যবস্থা আচে, যা জেলখানায় ও নেই। এসব দিয়েই নাকি রোগী ভালো করতে হয়। ১৫১ নং কামড়ায় আছে মিলফোর্ড। এ পাগল নাকি একে যে ধরে এনেছে সে পাগল এ ব্যাপারে কোনো কিছুর সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারছেনা পরিচালক আতাউর রহমান। ডাক্তার ধীরেন্দ্রনাথ সাহা। সবসময় ধীরে চলা ফেরা করেন, কচ্ছপের গল্প পড়েছেন, বাপ দাদার মুখে অনেক শুনেছেন কিন্তু আসল কচ্ছপ তিনি এইবার দেখছেন। তবে এটাও সত্য যে এই কচ্ছপ অন্যদের তুলনায় দিন দিন এগিয়েই যাচ্ছেন। এবার তাই এক ভিনদেশি কে নিয়ে এসে রেখেছেন মানসিক হাসপাতালে। তিনি কি এক অদ্ভুত যন্ত্র বানিয়েছেন, সকল রোগির সিমেন সংগ্রহ করে তিনিই জানেন। সেটা পকেটে রাখেন, কোথাও টুট টুট আও্যাজ হলেই সমস্ত এলাকা নজর রাখেন, আশেপাশের মানুষের গা ঘেষে হাটতে থাকেন, যে মানুষগুলার কাছাকাছি গেলে যন্ত্র টুট টুট এর বদলে পে পে হর্ন দেয়, তাদের তিনি টার্গেট করেন, ছলে বলে কৌশলে নিয়ে আসেন এখানে। এ পর্যন্ত তিনি ১৪ জন এনেছেন, যাদের সবাই সত্যি বলতে একরকম পাগল ছিলো, তবে এই ১৪ তম জন কে দেখে ধীরেন্দ্রনাথ সাহাকেই পাগল ভাবতে শুরু করেছেন আতাউর রহমান।

16938898_1265844663502095_1418740441975113948_n
#শেষ_পর্ব
হাসান সাহেবের সাথে সীতা দেবীর কথা শুনে ফেলেছে অমলেশ। শুনে ফেলেছে বলাটা ভুল হবে, বলা যায় শুনিয়েছে। হাসান সাহেব, ঠান্ডা মাথার খুনী একজন। তিনি নিজেই কথাগুলো রেকর্ড করেছেন। তার সব কাজের জন্য তিনটা প্ল্যান থাকে, যার একটা না করলে অন্যটা হবে। কথার রেকর্ডিং টা তাই খুব গুরুত্বের। আর তা একটা মাধ্যম দিয়ে পৌছেছেন অমলেশের কাছে। রেকর্ডিং মোট মোদ্দা কথা, হয় রুবেল আহমেদ কে খুন,নয়তো অমলেশের বোন জেনে যাবে কি তাদের পরিচয়।
সিদ্ধান্ত টা নেয় অমলেশ, মাকে এখানে কোনোক্রমেই জড়ানো যাবেনা, আর হাসান সম্পর্কে টুকটাক যা জানার তা জানে অমলেশ। ভয়ানক এক লোক। খুন টা তাকেই করতে হবে।
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুতি নেয় অমলেশ। কাজের ছেলে হিসেবে যোগদান করে হাসান সাহেবের বাড়িতে। এত বড় তাগরা একটা জোয়ান ছেলেকে বিশ্বাস করেনি রুবেল আহমেদ, আর সে যদি জানত এ ছেলে সীতা দেবীর তবে তা কখনোই হতোনা। কাজ টা সহজ করে দিয়েছিলো রমা রয়, সে নিজে ঐ বাড়িতে কাজের জন্য আবেদন করে, সাথে বাগান পরিচর্যার জন্য তার স্বামী। ভিমরতি জেগে উঠে রুবেল আহমেদের। উত্তেজনা বেশিক্ষন থাকা বা না থাক এমন অপরুপা নারী কে নগ্ন দেখার মাঝেও আনন্দ আছে! যে আনন্দ কাল হয়ে দাঁড়ায় রুবেল আহমেদের জন্য।
**-**
রাত আনুমানিক ৩ টা, হুট করে একটা ভিডীও ফুটেজ পৌছায় সোমেন্দ্রনাথ এর কাছে। খুব ক্লিয়ার এক ফুটেজ। বোঝা যাচ্ছে ভিডিও টা যে করেছে সে সব কিছুই জানত খুন গুলো সম্পর্কে। হাসান সাহেব, প্রতিটা খুনেই তাকে জড়িত দেখা যাচ্ছে। অথচ হাজার চেষ্টায় ও ইমেইল সেন্ডকারীর এড্রেস লোকেট করতে পারেনি বাংলাদেশ পুলিশ। ইউরোপ আমেরিকা পারত কিনা কে জানে! দেরি করেনা সৌমেন্দ্রনাথ ভিডিও টা পৌছায় ডেবিডের কাছে। ভিডিও তে হাসান সাহেব কে দেখা গেলেও এই লোক কে তা জানেনা সোমেন্দ্রনাথ কিংবা ডেবিড। কাজের দারুন অগ্রগতি হয় ডেবিডের।
অনেক সাধনার শেষে ধড়া পরে হাসান সাহেব, বিশেষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচার পক্রিয়া শুরু হয়, ২৯ দিনে মামলার সকল কাজ শেষে তাকে ফাসির দন্ডে দন্ডিত করা হয়, হাসান সাহেবের আরেক নাম বিষ্ণু। পত্রিকায় বিষ্ণু ভট্টাচার্যের ফাসির কথা শোনা যায়, অমলেশ জানতে পারেনা এই বিষ্ণু ভট্টাচার্য তার বাবা অথবা ইনিই হাসান সাহেব।
**-**
স্বামীর এহেন ফাসিতে বেশ্যাপাড়ায় ফিরে যায় সীতা দেবী, সাথে চলেন রমা রয়। মাস যায়, বছর দৌড়ায়। টুকাই মানিকের সাথে পরিচয় হয় সানজিদা আক্তার সোনমের। রমা রয় বেশ্যাপাড়ায় চলে গেলেও কাজ ছাড়েনি অমলেশ, বোনের বিয়ের আর অল্প কদিন বাকি। এর মাঝেই খুন করা চাই রুবেল আহমেদ কে।
সেদিন রাতে মদ্যপ হয়ে বাড়ি ফেরে রুবেল আহমেদ। চুপিসাড়ে দরজা খোলার পরেই পিছন থেকে ঘাড়ে কোপ চালায় অমলেশ। কিন্তু তা দেখে ফেলে যৌন অভিসারে লিপ্ত হতে আসা টোকাই মানিক আর সানজিদা আক্তার সোনম। কিন্তু সে রাতে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয় অমলেশ।
পালিয়ে বেড়ানো এক ফেরারী জীবনে প্রবেশ ঘটে তার।
**-**
ফিরে এসেছে দৌলতদিয়ায়, সে রাতে বেশ্যা সর্দারনী খুন করার পর যে মেয়েটা তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিলো তার কাছেই। মেয়েটা অমলেশ এর ই বোন। অমলেশ জানত ও খুব ভালো আচে, আসলে সারাজীবন মিথ্যাচার করেছে তার মা তার সাথে। এখানেই আত্মগোপন হয় অমলেশের। পুলিশের সাধ্য হয়না তাকে ছুয়ে দেখার। তা ছাড়া ছবি না থাকায় পুলিশ আইডেন্টিফাই ই করতে পারেনি সানজিদা বা মানিকের মুখে বর্ণনা শুনে।

**-**
১/৭/....
পত্রিকার প্রথম পাতার হেডলাইন
গাঙিনার পাড়ে দুই বেশ্যার একইসাথে ফাসিতে আত্মহত্যা, দৌলতদিয়ায় বিষক্রিয়ায় পতিতার মৃত্যু। পাবনার মানসিক কারাগারে ডাক্তার দের চোখ ফাকি দিয়ে বিদেশী পাগলের পলায়ন। যাবার আগে খুন হাসপাতালের চেয়ারম্যান।
হৈ চৈ পড়ে যায় দেশজুড়ে। সত্য ঘটনার ফাক দিয়ে সাংবাদিকেরা মনগড়া গল্প ফাদতে শুরু করে। বেশ্যাপাড়ার গল্প, ঘরে বসে গাজা খেয়ে যাই লিখে তাই অনুসন্ধানী।
**-**
বইমেলা ....
কবি গুপ্তদার বাড়িতে সিদ্ধান্ত হওয়া, টাকার বিনিময় মানুশের জন্য বই লেখা সাহিত্যিক অমলেশ চন্দ্রের বই এসেছে।
প্রকাশনীর নাম বিশ্বাস। চলমান সেই ইস্যু নিয়ে তিনি ফেদেছেন চমৎকার এক গল্প। যার নাম দিয়েছেন বিশ্বাসে বেশ্যালয়। প্রকাশ হবার ১১ দিনেই যার প্রথম এডিশন শেষ। বইটির এডীশন শেষ হবার পর দিন, যেনো এই বইটি আর পুর্নমুদ্রণে না যায় তার উপর ভিত্তি করে এক নোটিশ দিয়ে ফাসিতে আত্মহত্যা করেন অমলেশ। তিনি শুধু বলে যান নি, ভিডিও ফুটেজ টি কি করে এসেছিলো অথবা পাগল মিলফোর্ডের কি হয়েছিলো। এর বহুদিন পর অমলেশের আবাসস্থল খুঁজে পাও্যা যায়। দৌলতদিয়ার একটি ঘরে চুপচাপ জীবন যাপন করতেন অমলেশ। সবাই তাকে দাদা বলেই ডাকত। বেশ্যাপাড়ার ভিতরে ছোটো একটি স্কুল ছিলো তার, যাতে পড়াশোনা করতো বেশ্যাদের ছেলে আর মেয়েরা। তার ঘরে থাকতে দেয়া হয়নি কোনো বেশ্যা কে অথবা ভাড়া দেয়া হয়নি আর। অমলেশ স্মৃতি হিসেবেই ব্যবহার করা হত তা। তার টেবিলে অরক্ষিত এক নথি পাওয়া যায়, যাতে মেলে তার আসল চরিত্র।
অমলেশ নিজেই ছিলেন কথিত মিলফোর্ড, মিলফোর্ডের ব্যাপারে সব জানার পরেই তিনি প্ল্যান শুরু করেন, আর মিথ্যে বানোয়াট গল্পে ডেবিড কে বিশ্বাস করান মিলফোর্ড বাংলাদেশে। আর সেই পাগল আর ডাক্তারের অভিনয় লুকাতে তিনি পালানোর আগে খুন করেন পাবনা মানসিক হাসপাতালের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান কে।

0 Shares

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ