প্রজন্মের ঋণ শোধ ২১তম

মনির হোসেন মমি ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, বৃহস্পতিবার, ০৪:৪৯:৪১অপরাহ্ন গল্প, মুক্তিযুদ্ধ ১৮ মন্তব্য

সূর্য্য বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়ে বাসার দিকে যাচ্ছেন একটি রিক্সায় চড়ে হাতে ছিল বোমাবাজদের বিরুদ্ধে পোষ্টার লেখার জন্য কিছু রঙ্গীন কাগজ এবং একটি রাফ লেখার কাগজের পৃষ্ঠা যেখানে অনেকগুলো শ্লোগান লিখা ছিল।মা রোজী ছেলের খাবার নিয়ে বসেছিলেন কখন ছেলে আসবেন।অপেক্ষার প্রহর ক্ষীর্ণ হলেও যেনো শেষ হয় না তেমনি অপেক্ষারত মা খাবার রাখা টেবিলের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন তার এমন সমস্যায় আজ কাল প্রায় ঘটে।ঘণ অন্ধকার গলিতে রিক্সায় একা সূর্য্য ঠিক গলির মাঝ বরাবরে রিক্সাটি আসতেই বেশ কিছু লোক যাতাযাতে মাঝ রাস্তায় বেড়িকেট দিয়ে দাড়ায় মুখে কালো কাপড়ের মোখশ পড়া ছিল বলে সে কাউকেই চিনতে পারছেন না।রিক্সাওয়ালা রিক্সা শ্লো করেন।ওদের একজন সূর্য্যের সামনে আসেন।
-তুই আমাদের চিনবি না কিন্তু আমরা তোকে চিনি....।তোকে প্রথম সতর্ক করলাম তোরা যা করছস তা কাল সকাল হবার আগেই যেনো সব প্রোগ্রাম বন্ধ হয় নতুবা দ্বিতীয়বার আমাদের দেখার সুযোগ পাবি না...তার আগেই তোর পরপারের ডাক আসবে...বুঝলি।

সূর্য্য অবস্থা বেগতিক দেখে ওদের সাথে তর্ক করলেন না কিন্তু ওরা কারা ওদের পরিচয় জানার খুব ইচ্ছে ছিল কিন্তু যদি ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয় সেই ভয়ে সে আর কথা বাড়ায়নি সোজা রিক্সাওয়ালাকে দ্রুত চালানোর জন্য ধমক দিলেন।
ঘরে প্রবেশ করে মাকে ডাকেন।ডাইনিং রুমে গিয়ে সূর্য্য মাকে তার ভাত বেড়ে ভাতের প্লেটের সামনে মাথা রেখে ঘুমোচ্ছে।মাকে দেখে সে না জাগিয়ে প্লেটটি নিয়ে ভাত খাওয়া শুরু করলেন।খাবার ভক্ষনের শব্দে মা চোখ মেলে ঘাড় তুলেন তাকালেন।
-এত ক্ষণে এলি?আমি আর পারছি না এবার আমাকে একটু বিশ্রাম দে।
মা বিষাদের বিশাল সাগরে ঢিল ছুড়ে চলে গেলেন রান্না ঘরে।মায়ের এমন কথার অর্থ সে বুঝতে পারেন কিন্তু কি আর করা তামান্নার হঠাৎ পরপারে চলে যাবার পর মনের কোণে আর কাউকে যে ঠাই দিতে পারছেন না সে যখনি কাউকে তার ভালো লাগে পরক্ষণে তামান্নার স্মৃতি মন বিষাদময়ে ছেয়ে যায়।মা রান্না ঘর থেকে ফিরে এসে সূর্য্যের পাতে এক টুকরো ইলিশ ভাজা দিয়ে আবার চলে যান যাবার সময় বলে যান সে ঘুমাতে যাচ্ছেন,সূর্য্য কেবল হুম বলে খেতে শুরু করলেন।

খাওয়া শেষ করে সূর্য্য নিজের রুমে ঢুকে লাইট গুলো সব জ্বালিয়ে দিলো।ঘরে ছিল রং তুলি তা হাতে নিয়ে পোষ্টারে শ্লোগান লেখা শুরু করলেন।
"বোমা বাজরা দেশের শত্রু,তাদের প্রতিহত করুন","এখনই সময় দেশ গড়ার,রাজাকারের বংস বিনাষ করার",ইত্যাদি নোট করা শ্লোগানগুলো লিখছেন তুলির টানে,ঐ দিকে মা ঘুমে বিভোর তখন রাত্র বারটা বাজে হঠাৎ মায়ের মৃদু ঘোঙানী আবার নিশ্চুপ।

দেশের মা বীরাঙ্গনা ঘুমুচ্ছেন,যদিও পরিপূর্ণ ঘুম তার চোখে সেই "৭১ এর পর হতে আজও আসেনি কখনই।যখনি ঘুমে একটু চোখ লাগে তখনি স্বপ্নে খেলা করে "৭১ এ নর পশুদের নিকৃষ্ট কর্ম কান্ড গুলো আৎকে উঠেন, আবার তন্দ্রা যাবার প্রস্তুতি নেন।কখনও ছেলে সূর্য্যকে বুঝতে দেননি যে, রাতে তার ভাল ঘুম হয় না।আজও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি বরং স্বপ্নে অন্য বারের চেয়ে একটু বেশী ভয়ংকর কিছু দেখছেন................।

চারদিকে আতশ বাজির মতো গুলি বোমার শব্দ,গ্রামছে গ্রাম দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন।মাঝে মাঝে হায়নাদের বিভৎস চেহারা গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে এরই মাঝে বীরাঙ্গনা মায়ের বীর গাথা ঘটনা এসে যায়....পাড়ায় গোপন গর্তে লুকায়িত আস্তানায় এক দল ক্ষুদার্থ মুক্তি যুদ্ধাদের জন্য রোজী রাতের অন্ধকারে খাবার নিয়ে যাচ্ছেন কিছু দূর যেতে কানে ভেসে এলো একটি বিকট চিৎকার।থমকে যান সে, লক্ষ্য করলেন কোথা হতে শব্দটি এলো।চারদিক তাকিয়ে বোঝার কোন উপায় পেলেন না অবশেষে কিছুটা দূর আকাশে চেয়ে দেখেন "আগুনের লেলিহান শিখা"কার ঘরে যেনো পাকিরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে অবশেষে বুঝতে পারলেন ওখানে এক হিন্দু পরিবারের বসবাস ছিল।তাদের সাথের সব আত্ত্বীয় অনাত্ত্বীয়রা সময় মতো চলে গেছেন ভারতে শুধু বিমল দা নামক পরিবারে চার জন সদস্য নিয়ে পড়ে আছেন নিজের বাপের ভিটে মাটিতেই।দশ বারো বছরের একজন কন্যা এবং পাচ বছরের এক ছেলে, সে এবং তার সহধর্মীনিকে নিয়ে আছেন সেখানে।

বিমলের বাড়ীতে পাকিদের আক্রমন।ঘুমে বিভর ছিল বিমলের পরিবার শুধু জেগে পাহাড়া দিচ্ছিলেন বিমল ঠিক সেই সময় পাকিদের দল প্রবেশ করেন,তাদের অন্যত্র নিসংসহতার কাজ ছিল,চলতি পথে পাশে ঘরের ভিতর বাহির থেকে আলো দেখতে পেয়ে ওয়ারলেসে তাদের কু-কর্ম এখানে করার অনুমতি পায়।তাদের ধারনা ছিল এখানে কোন হিন্দু নেই কিন্তু আলো দেখে সন্দেহ বশতঃ এখানে আঘাত হানেন হায়নারা।

বাড়ীর উঠোনে ঢুকে পাকি অফিসার বাঙ্গালীদের গালির সূরে চিৎকার করে ডাকতে থাকে "ঐ হারামী কা আওলাদ লকআপ ওপেন করেঙ্গিকি নেহি"কৈ হে সুয়োর কা বাচ্চা?.... ।
ঘরের ভিতর বিমলের পরিবার ভয়ে অসার হয়ে এক কোণে জড়ো হয়ে সৃষ্টি কর্তাকে ডাকছেন।বিমল ঘরের একটু বাহিরে ক্ষেতের আলে বসে ছিল টচ লাইট হাতে বাড়ীর ভিতর চেচামেচি শুনে বাড়ীর উঠোনে আসতেই এক পাকি তাকে ধরে ফেলে।যদিও সে হিন্দু তথাপি সে পাকিদের চোখ ফাকি দিতে মুখে গজানো দাড়ি কাটেননি,পড়নে ধূতির বদলে লুঙ্গি আর মাথায় গোল টুপি।বিমলের চারদিক ঘুড়ে ঘুড়ে দেখছে পাকিরা।পাকিদের বাংলা জানা সিপাহী তার চুল দাড়ি টুপি বিচক্ষণতার সহিত দেখে....।
-আবে হালায়,এতো হামাগো জাত মনে হয়।সুন্নতি দাড়ি টুপি,....স্যার হামকো কোচ রং হ্যা।
-আবে ফুট!....বাতাও তোমাহারা নাম বাতাও,,,,,
পাকিদের এমন তীক্ষ্ন বিশ্লেষনে বিমলের শরীরে কাপন উঠে,পা দুটো থর থর করে কাপছে মুখের কথাগুলোও আটকে যাচ্ছেন বার বার।ঘরের ভিতর বিমলের পরিবারের সদস্যরা ঘরের বেড়ার ছিদ্র দিয়ে সবই দেখছেন।বিমলের স্ত্রী ছোট ছেলের মুখ চেপে রাখছেন যাতে কোন শব্দ বের না হয়।
-কিয়াহে.... তুম মুসলমান হে?
বিমল মাথা নেড়ে হ্যা বলেন।পাকিদের সাথে আসা এক গুপ্তচর বাঙ্গালী রাজাকার অফিসারের কানে কানে সত্য কথাটি বলে দেয়াতে অফিসারটি ক্ষিপ্ত হয়ে হারাম খোর.. বলে লাথি মারে অসহায় বিমলকে।লাথির মাত্রাতিরিক্ত স্পিরিটে বিমল ছিটকে পড়েন অন্যত্র পায়ের বুটের আঘাতে তার বা হাতটি থেতলে রক্ত বের হয় বুকে সিনার হাড্ডিতে ভাঙ্গন ধরে।অফিসার আবার তার কাছে যায়....এবং এক সিপাহীকে অর্ডার করে।
-বানচুদকা লুঙ্গি ওপেন করকে,হামকো বাতাও বানচুদ হিন্দু অর মুসলমান।
অর্ডারের সাথে সাথে কাজ দু'তিন সিপাহি হেচকা টানে বিমলের লুঙ্গিটি খোলে ফেলে সাথে সাথে বিমল তার গোপনাঙ্গে দুহাত চেপে লজ্জা নিবারনের বৃথা চেষ্টা করেন এ যেনো পুরো বাংলাদেশকে লজ্জা নিবারনের চেষ্টা ঠিক সেই মুহুর্তে পাকি অফিসার তার গোপনাঙ্গের হাতের উপর বন্দুকে গোড়া দিয়ে আঘাত করে আঘাতের যন্ত্রনায় মা মা বলে বিমল মাটিতে লুটিয়ে পরেন,পাকি অফিসারের অট্র হাসি.....এই বাঙ্গালা হিন্দু বেজাত, তোজকো মালুম হে হাম কিসি লিয়ে তোমকো মারেঙ্গা,কৈকি তোম সালারা নাজায়েজ আওলাদ পয়দা নেহি কার পায়েঙ্গে হামারা পাবিত্র মিট্টিতে,এ হামারা পাকিস্থান।
বিমলের এমন করুণ অবস্থার দৃশ্য দেখে তার পরিবার ঘরে লুকিয়ে থাকতে পারেননি,চিৎকারে দৌড়ে স্বামীর বুকের উপর আছরে পড়েন।ক্রন্দনে রাতে বৃক্ষে বিশ্রামরত পাখিরা জেগে উঠে তবু কেউ নেই তাদের নরপশুদের অত্যাচার হাত হতে রক্ষা করবে।
অন্য দিকে রোজী নিষ্ঠুরতার দৃশ্য দেখে হতবাক,,,সে একা কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে কি করবেন,কোন দিকে যাবেন?আর কিছু না ভেবে এক দৌড় দেন মুক্তি যোদ্ধাদের গর্তের আস্তানার দিকে।

এদিকে বিমলের দশ বারো বছরের মেয়ের দিকে নজর পড়ে পাকি অফিসারটির বিমলকে ছেড়ে মেয়েটির দিকে অগ্রসর হন।ভাই বোন দুজনেই ভয়ে কাপছে,ছোট ভাইটি চিৎকার দিতেই অফিসারের বন্দুকের গোড়ার আঘাতে মাথার কিছু অংশ ক্রিকেট বলের ছক্কার মতো কোথায় যেন হাড়িয়ে গেলো দেহের বাকী অংশটুকু থপাস করে মাটিতে পড়ে গেল।
বাবা বিমলের প্রান যায় যায় কোরবানীর গরুর মতো গোঙ্গাচ্ছেন দম বুঝি যায় যায়....।
অসহায় মা ছেলের এমন নিসংস করুণ মৃত্যু দেখে চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।বাকী আছে ভয়ে আধা মরা দশ বারো বছরের মেয়েটি...তাকেও স্বীকার হতে হলো পাকি অফিসারের লালসার কাছে তারপর গণহারে বাচচা মেয়েটির উপর চলে পৈশাশিক অত্যাচার....আর উচ্চ স্বরে বলতে থাকে......নেহ হামারা তোমকো জায়েজ আওলাদের বীজ দিয়েঙ্গে।

এরই মধ্যে রোজী তার মুক্তি যোদ্ধাদের একটি বিশাল দল নিয়ে বিমলদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন শুরু হয় গোলাগুলি.... ততক্ষণে বিমলের স্ত্রীর জ্ঞান ফিরে আসে ধীরে ধীরে উঠে হঠাৎ ঝাপিয়ে পড়েন এক পাকির উপরে, পাশে ছিল ইট,.....ইটের আঘাতে ছেলের মতো পাকির মাথাটি দুভাগ করে ফেলেন।পিছন থেকে অন্য আরেক পাকি তাকে বন্দুকের মাথায় ক্রিচ দিয়ে আঘাত করতে থাকে....আর বিমলের স্ত্রী আঘাতের যন্ত্রনায় জয় বাংলা...জয় বাংলা বলতে চিৎকার করতে থাকেন.......।

গোঙ্গানো একটি শব্দে সূর্য্যের ধ্যান ফিরে আসে তুলির আচর বন্ধ করে কাপা কাপা কন্ঠে জয় বাংলা জয়,বাংলা শব্দটি কোথা থেকে আসছে তা ভালো করে লক্ষ্য করেন।সে কনফার্ম হন শব্দটি তার মায়ের রুম থেকেই আসছে.....সব কিছু রেখে দেন দৌর মায়ের রুমের দিকে।সূর্য্য মায়ের স্বপ্নে লেগে থাকা চেহারায় প্রতিশোধের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ লক্ষ্য করলেন....এক বার বহু বার ঘণ পাতলা ভেঙ্গে সূরে জয় বাংলা ধ্বনিতে মুক্তি যোদ্ধাদের নির্দেশ দেন মায়ের কসম...পাকিদের কেউ যেনো বেচে যেতে না পারে...না পারে....না পারে....।
-মা...এই মা......মা।ছেলে মায়ের ঘুম ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছেন ।মা হঠাৎ জেগে উঠে কালেমা শাহদাত পড়তে থাকেন তখনও মায়ের তন্দ্রা কাটেনি।ছেলের আরেকবার মা বলে ঝাকুনি দেয়াতে এবার সে পুরোপুরি স্বজ্ঞানে ফিরে আসেন তবে অশ্রু ভেজা নয়নে ছেলেকে প্রশ্ন করেন।
-জীবনের শেষ দশায় কি আর কোন রাজাকারের রায়ের কার্যকারিতা দেখতে পাবো না?
-অবশ্য দেখতে পাবে....এইতো কিছু দিন আগে রাজাকার কামরুজ্জামানের মৃত্যু পরয়োনা পড়ানো হয়ে গেছে ১৫দিনের যে কোন দিন ফাসিতে ঝুলিয়ে তাকে মৃত্যু দন্ড দিবেন,জামাতের এক পাষন্ড সুবহানের মৃত্যু দন্ড হলো।আরো দুজনের রায়ে একজনের ফাসি এবং গত ২৪শে ফেব্রুয়ারী'১৫ইং তারিখে রাজাকার জব্বারকে আমৃত্যু কারা দন্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।৪৩টি বছরের ঘূণে ধরা বিচার কার্য সমাধানে একটু সময়তো লাগবেই মা।

ফজরের আযানের ধ্বনি মসজিদের মাইক শুনতে পান মা।অবাক হন সূর্য্য এখনও ঘুমায়নি।
-কিরে....তুই এখনও ঘুমাছনি?
-এইতো হাতের কাজটি শেষ করলাম,তাছাড়া বাঙ্গালী জাতি ৪৩টি বছরইতো ঘুমিয়ে ছিল এখন যখন জেগে উঠেছে তখন তাকে আর ঘুমাতে বলো না।তোমাদের বীরত্ত্ব গাথা আত্ত্বত্যাগের মাঝে আমাদের অনেক ঋণ জমে আছে,পুরোটা শোধ করা সম্ভব নয় কখনই কিছুটা ঋণ যাতে শোধ করতে পারি সেই চেষ্টাতো আমাদের মতো নতুন প্রজন্মরা শুরু করে,ছেড়ে দিতে হবে আগত নতুন প্রজন্মের কাছে.......।

চলবে.....

(বি:দ্র:পর্বটি কুমিল্লা কংসনগরের বেড়াতে গিয়ে শুনা এক হিন্দু পরিবারে ,যাদের কেউ এখন বেচে নেই, সাথে যোগ হয়েছে কিছু ভিন্ন ঘটনা)
ছবি:অনলাইন কালেক্টসন।

প্রজন্মের ঋণ শোধ ২০তম

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ