শিকল

মেহেরী তাজ ১২ আগস্ট ২০১৫, বুধবার, ১১:৩১:৪৬অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৬৩ মন্তব্য

Shikol-Bhangar-Chora [320x200]
যখন রাতের বেলা আমার খুব মন খারাপ লাগে তখন আমার একটা কথা খুব মনে হয় " ইশ আমি যদি ছেলে মানুষ হতাম"। মন খারাপের এই সময়টাতে আমি ঠিক ঘর ছাড়া হতাম। রাত বিরাতে রাস্তা ধরে উদ্দেশহীন হেটে বেড়াতাম। গায়ে একটা টি-শার্ট সাথে থ্রি-কোয়াটার বা ফুল প্যান্ট। পায়ে হয়ত অনেক দিনের ব্যবহারে নষ্ট প্রায় চটি। সেও দেখা যাবে মাঝে রাস্তায় গিয়ে ছিড়ে গেলো। হাঁটাহাটি টা যখন উদ্দেশ্যহীন তখন জুতার আর কি বালায়!?
রাস্তা থেকে কখন ও বা কোন গলিতে ঢুকে পরবো।গলির শেষ মাথায় বিচ্ছিরি রকম অন্ধকার দেখে হয়্ত ভয় ভয় লাগবে। এই গলি সেই গলি করে করে আবার হয়ত রাস্তায় চলে আসবো। প্রায় শেষ রাত অব্দি খোলা থাকা অপরিচিত কোন চায়ের টং এর সামনে দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় দেখবো দু একজন উদাস মুখে শুঁকনো বিস্কুট চিবোচ্ছে আর চায়ের জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে। আমিও হয়ত কোন বাঁশের চাটায় পাতা কোন একটা মাচং এর উপর বসে এক কাপ চায়ের কথা বলে বিরস মুখে "অপেক্ষা" করবো। তার পর হঠাৎ মনে হবে আমার সাথে মানিব্যাগ টা নেই। এবার আবার নিরস মুখে চা বাতিল করে উঠে যেতেই খামখেয়ালিপনার প্রমাণ দিয়ে পকেটে ভাজের রাজা হয়ে একটা ২০ কিংবা ৫০ এর নোট পাবো। চায়ের দাম মিটিয়ে আবার উঠে পরবো সেই উদ্দেশ্যহীন পথ চলা। রাস্তার পাশে হাটাঁর সময় দেখবো সবে ১৮/ ২০ এ পা দেওয়া কিছু ছেলেপুলে বাইকের গিয়ার বদল করে আমায় ক্রস করে যাবার সময় " ধুম মাচালে " গান টা মনের আনন্দে গেয়ে উঠলো। ওদের শুনে হয়্ত আমিও " হুস ওয়ালো কো খাবার কিয়া বেখুদি কিয়া চিজ হ্যায়" গানটা গুনগুন করে গেয়ে উঠবো।
হাটতে হাটতে আকাশের চাঁদ টাকে দেখে নেবো। ঠিক তখন ই মনে হবে আমার ও একটা ঘর আছে,সেখানে একটা বিছানা আছে, একটা বালিশ আছে। নরম বালিশে মাথা রেখে আমি আমার ঘর থেকেই চাঁদ দেখতে পারি। কিন্তু ঘরের কথা মনে পরতেই মন খারাপের আগুনটা আবার জ্বলে উঠবে। হয়ত একটু শীত শীত লাগবে।একটা চাদরের জন্য মনটা কেমন করে উঠবে। সেই ভাবনা মাথায় নিয়েই সামনে পা বাড়াবো। হাত দুটো ঘসে একটু উষ্ণতা পাওয়ার চেষ্টা করবো। পকেটে হাত রেখে আবার সামনে পা বাড়াবো। তারপর হয়ত হঠাৎ দূরে কোথাও থেকে আজানের শব্দ কানে আসবে। চারদিক আলোকিত হতে শুরু করবে। আমি হয়ত আবার কোন চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আবার এক কাপ চায়ের কথা বলে দুটো জিনিসের "অপেক্ষা" করবো। এক হলো "চা" আর অন্যটা হলো একটা নতুন "মন ভালো দিনের" ।

এই সমাজে মেয়েদের একা একা রাত বিরাতে হাটা হাটির নিয়ম নেই। মন খারাপের কোন সলিউশান ও নেই ।নেই টং এ বসে চা খাওয়ার নিয়ম । কিংবা চিৎকার করে গান গাওয়ার। এখানে সব নিয়ম মেয়েদের জন্যই। এখানে হুমায়রা থেকে হিমু হয় না এখানে হিমালয় থেকে হিমু হয়।

বি:দ্র: ওই যে একটা কথা আছে না গাছে উঠায়ে মই টান দেওয়া। বেপার টা অনেকটা সেই রকমই। আমি যার জন্য ব্লগ ছাড়া হয়েছিলাম তিনি হলেন " লীলাবতী " আপু। উনার জন্যই আমি লেখা হরতাল দিয়ে ব্লগ ছাড়লাম আর উনি আমায় ছেড়েই ব্লগে ঘরবাড়ি বানায়ে ফেলছিলেন,ঠিক বুঝেছি উনার ষড়যন্ত্র। ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরে এসেছি। এটি লীলাবতী আপুকে পচানো পোষ্ট,আপু যেমন করে অনিকেত নন্দিনী আপুকে পচিয়েছিলেন 🙂

0 Shares

৬৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ