মেয়ের মায়ের খনখনে কিন্তু চাপা বিস্ফোরক উষ্মায় বিস্মিত না হয়ে ইশারায় মেয়েকে কাছে ডেকে জানলাম, বাড়িময় নিচ্ছিদ্রতার অভেদ্যতা স্বত্বেও বিড়াল ঢুকে পড়েছে, চিলেকোঠায় কবুতর আছে, প্রকট ভয়টি সেখানেই।
ঘটনাঃ এক,
ঝড়জলের বিদ্যুতহীন রাত্তির, রাত একটু বেশিই, এ সময়ে বেলকুনির দরজায় শব্দের কারণ নেই, এর উপর কাকরাত্রি জাঁকিয়ে বসেছে, শব্দের উৎসস্থলে গিয়ে আবিস্কার করি মেয়ে বাটিতে করে বিড়ালের জন্য খাবার রেখে দিচ্ছে, এই বিরূপ আবহাওয়ায় বিড়ালটি প্রায় পুলসিরাত পার হয়ে খেতে আসবে কীনা এমন অবাক প্রশ্নের জবাব খুবই পজিটিভ, এরপর যে যার গন্তব্যে, একটু পরে খুচখুচে মন নিয়ে টর্চ হাতে নিঃশব্দে ঘাপটি মেরে মশা সহবত করতেই থাকলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর উপেক্ষা করার মত মৃদু শব্দ হতেই টর্চ জ্বালিয়ে দেখলাম পুরো শরীর ভেজা বিড়ালটি নীরবে খেয়ে চলছে।
ঘটনাঃ দ্বিতীয়,
মেয়ে বিকেলে বেশি নাস্তা করেছে, তাই সন্ধ্যায় আর খেল না, এমন হয়, এটি কিছু না। একটু বেশি রাতে রান্নাঘরে শব্দ পেয়ে মেয়ের মায়ের (বিশেষ এনসাইক্লোপিডিয়া, ত্রিকালদর্শী) শরণাপন্ন হয়ে জানতে সক্ষম হলাম, যে মেয়েকে বিড়ালটি ডেকেছে, বিড়ালের ক্ষুধা লেগেছে, তাই সে বসে বসে মাছ খাওয়ার চেষ্টা করছে, কাটা সংগ্রহের জন্য, প্রকাশ থাকে যে, কাটার ভয়ে মেয়েটি সাধারণত মাছ খেতে অনীহা জানিয়ে থাকে।।
ঘটনাঃ তৃতীয়,
ফাঁকতালে ঘরে ঢুকে পড়া বিড়াল তাড়ানোর জন্য মেয়ের মা হম্বি-তম্বি করছে বেশ জোরেশোরেই, কাছে ডেকে নিঃশব্দী মেয়ের কাছ থেকে জানা গেল, বিড়ালটি বেঘোরে খাটের নিচে নিশ্চিন্তে ঘুমুচ্ছে, এই ঘুমন্ত বিড়ালকে কী করে তাড়িয়ে দেয়া যায়! আমার মেয়ে-অন্ত প্রাণ খচ করে উঠল, আলোচনার মোড় ঘোরানোর জন্য আবার জিজ্ঞেস করলাম, বিড়াল যে ঘুমুচ্ছে সে কী করে বুঝল, তার উত্তর হলো, বিড়াল হাত পা ছড়িয়ে চোখ বন্ধ করে ছিল।
বিড়াল যার কবুতরও তার, এক সাথে থাকবে, তাতে ভয়ের কী আছে? এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারিনি।
** বত্ব, লেখা কিন্তু লেখাই!!!!!!!
# বত্ব = BTW = by the Way (ফেসবুক পড়ুন, জ্ঞানী হোন)
৩৯টি মন্তব্য
আবু খায়ের আনিছ
হা হা হা, ফেইজবুকে পড়লাম জ্ঞানী হইলাম না। OMG ও মা গো, নাকি?
বিড়াল থাকলে কবুতর এর সমস্যা কি? যদিও বিড়াল (মিখুর) আমি পছন্দ করি না। গা ঘেষাঘেষির অভ্যাস বিড়াল এর।
ছাইরাছ হেলাল
বিড়াল হলো কবুতরের প্রধান ঘাতক, কবুতরের বাসার কাছে বিড়াল এলেও সব কবুতর
পালিয়ে চলে যাবে জীবন বাঁচাতে।
মেয়েটি চায় কবুতর ও বিড়াল এক বাসাতেই থাকুক,
ফেসবুক না পড়লে জীবন বৃথা, ওই বিজ্ঞান পাঠ করেই সমুদয় গেয়ান আহরণ করেছি,
আবু খায়ের আনিছ
বিড়াল ছিলো না কোন কালেই, কবুতর ছিলো।
ঠিক ভাইয়া গেয়ান আহরণ হচ্ছে।
ছাইরাছ হেলাল
এত্ত গেয়ান দিয়া যে কী করমু বুঝতে পারছি না।
কবুতর আপনারও ছিল জেনে ভাল লাগল।
খেয়ালী মেয়ে
আমি সবসময় একটু কম বুঝি,, তারপরও বোঝার চেষ্টা থাকে অনেক 🙂
শুধুমাত্র বিড়ালের জন্য কাটা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মাছ খাওয়া -মেয়েটির এই নিষ্পাপ প্রেম প্রশংসনীয় :c
একমাত্র ফেসবুকে গেলেই বুঝা যায় এই দেশে মেধাবী/জ্ঞানী লোকের অভাব নাই, নিজেরেও সেখানে গেলে বিরাট জ্ঞানী মনে হয় :p
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন, আমি আপনার থেকেও কম কম বুঝি, অনেক চেষ্টা করেও কুলের দেখা পাই না।
আপনি পাইলে আমাদের জানান দিয়েন কিন্তু।
সে খুব ই বিড়াল প্রেমি।
খোমাখাতাই একমাত্র প্রকৃত জ্ঞানের উৎস। আমি খুপ শিখি, মেধার অভাবে কাজে লাগাতে পারি না।
খেয়ালী মেয়ে
খোমাখাতাই এটা আবার কি জিনিস ;?
ছাইরাছ হেলাল
তাবৎ জ্ঞানের ভাণ্ড!!
নীলাঞ্জনা নীলা
বেড়ালের প্রতি প্রেম এমন মানুষ আমি এখানে দেখি রোজ।
তবে একসময় আমারও একটা মিনি ছিলো।
পালিত বেড়াল কবুতর খেয়ে ফেলে নাকি? কি জানি!
ফেসবুকীয় শব্দ বাবারে আমি বুঝি কম। আর কি যে ইমো দেয়। 🙂 😀 :p 🙁 ;( :@ (y) এই কয়টি ইমো বুঝি।
লেখার থেকে কোথায় চলে গেলাম। এই-ই হয় আমার। ধ্যত্তেরি এই রোগের ঔষধ যে কোথায় পাই? ;? ;(
ছাইরাছ হেলাল
বিড়াল কবুতর খেয়ে ফেলে, তাই কোন ক্রমেই সহঅবস্থান সম্ভব নয়।
আপনি জ্ঞানী মানুষ, আপনি নিজেই ধরে ফেলেছেন সমস্যা, যা আপনার নিবিষ্ট পাঠক হিসাবে
লক্ষ্য করে আসছি, মন্তব্যে মুলত আমারা লেখাটি নিয়েই কথা বলতে চাই, সেখানে নিজের উদাহরণ আসবে, আসতেই পারে,
কিন্তু তা যেন লেখার বিষয় বস্তু ছাপিয়ে না যায়,
আপনি ভাল কবি, তাই প্রত্যেকেই আপনার মতামত প্রত্যাশা করে তার লেখাটি নিয়ে,
মার্জনা করবেন, তবে বাচাল ভাব্ববেন্না যেন।
আমাকে কিছু ইমো জ্ঞান ধার দিলে পারতেন, অন্য কিছু না।
নীলাঞ্জনা নীলা
কবিভাই এবার একেবারে ভুল বললেন, আমায় ভালো কবি বলে। ভালো কবি হলে আপনার লেখা বুঝতাম এবং শুধুই বিষয়-বস্তু নিয়েই বলতাম।
আপনি বাচাল! অসম্ভব!! যাঁরা বেশী পড়ালেখা নিয়ে থাকেন, তাঁরা কথা বলেন কম। এটা জানি।
আপনাকে কিভাবে ইমো ধার দেবো বলুন তো! আগেই তো এসব ইমো দেয়া হয়ে গেছে। আর তো নেই।
ওহ পুনশ্চ এবার থেকে লেখার বিষয়-বস্তু নিয়েই মন্তব্য দেবো, না বুঝলে সেটাও জানিয়ে দেবো। 🙂
ছাইরাছ হেলাল
হ্যা, আমি আবার ভুল-ভাল ভাবেই ঠিক-ঠাক বলি।
কী বললেন? ভাল কবি বলে কম বলে ফেলেছি! মহাকবি কিন্তু বলিনি।
ধারের কথা শুনেই সব নাই হয়ে গেল!! সব ভাঙ্গা সিন্দুকে তুলে রাখুন, অযত্নে ভাল থাকবে।
না বোঝার কিছু নেই, বলাবলি করে লেখা আমরাই বুঝে নেব।
জিসান শা ইকরাম
বিড়াল কথন, ইতিহাস জানা।
মেয়েটি আপনার বেজায় বিড়াল অন্ত প্রান।
এটাই প্রশ্ন, বিড়াল যার, কবুতরও তার। থাকুক একসাথে।
আমি গিয়ানি হইছি 🙂 আর লাগপে না, এত গিয়ান দিয়া কি করুম?
ছাইরাছ হেলাল
সে তার বিড়াল ও কবুতরঅন্ত প্রাণ নিয়ে সহঅবস্থান ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই পারে না, এখনো।
আপনি গিয়ানি হইছেন দেইখ্যা বুঝতে পারছেন এত্ত গিয়ান লাগে না।
কিন্তু আমি খুবই জ্ঞান অভাবি!!
গাজী বুরহান
নিঃশব্দচারিনীর বিড়ালপ্রেম দেখে অবাক হলাম 😮
ছাইরাছ হেলাল
আসলেই অবাক হওয়ার মতই ঘটনা।
অয়োময় অবান্তর
লেখা পড়িয়া জ্ঞান লব্ধ করিলুম। বিড়াল প্রেমিক নিঃশব্দচারিণীর মতিগতি উৎসাহনীয়। 😀
ছাইরাছ হেলাল
জ্ঞান আরও লউন সমস্যা নেই, তবে সামলে রাখতে হবে সযত্নে।
হ্যা, লেখায় সে খুবই বিড়ালন্ত প্রাণ।
মিষ্টি জিন
বিড়াল একদমই পছন্দ করিনা.. সবসময় কেমনজানি একটা ছোক ছোক ভাব
কবুতর যদি আত্মরক্ষা করতে জানে তাহলে বিড়াল কবুতরের সহবস্হানে কোন সমস্যা নাই।
জ্ঞান,জ্ঞানী মানুষ বড় ডরাই.,তাই সবসময় এদের থিকা দূরে থাকি।
ছাইরাছ হেলাল
সব বিড়াল কিন্তু ছোক ছোক করে না, সুন্দর বিড়ালও কিন্তু আছে,
আসলে কবুতর অবশ্যই আত্মরক্ষা করতে পারে, বাসা থেকে পালিয়ে চলে যায়, এটাই সমস্যা।
জ্ঞানীদের দেখে ডরানো ভাল, দেখবেন বেশি বেশি ডর যেন না আসে।
আপনার লেখার অপেক্ষা করছি।
ইঞ্জা
এই বিড়াল আমার পছন্দ নয় কারণ আমার আদরের কবুতর গুলো খেয়ে এমন মোটা তাজা হয়েছিল যে হাটতেই পারতোনা, যাক সে সব কথা মামনির যখন বিড়ালের প্রতি এতো মায়া তাহলে থাকুক বিড়াল। 😀
ছাইরাছ হেলাল
বিড়াল আর কবুতর তার খুব ই পছন্দ।
খেতে পারেনি, ডাক শুনলেই কবুতর ঝাঁপাঝাঁপি শুরু করে দেয়।
ইঞ্জা
কবুতরও কিন্তু প্রভু ভক্ত হয়।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই হয়, তার একটি সত্য ঘটনা অন্যদিন বলব।
শুন্য শুন্যালয়
বিড়ালময়তা, শিরোনামেই প্রকাশ পাচ্ছে এক নিঃশব্দচারিনীর গল্প শুনবো। গুটি গুটি আবেগ ছড়িয়ে নিষ্পাপ আপনার মেয়ের মুখচ্ছবিটা দেখতে পেলাম যেন।
কাকরাত্রিরে খাবার তুলে দেয়া, কিংবা বিড়ালের জন্য নিজের অপ্রিয় মাছ খাওয়া, বাহ্। তা মেয়ে কি এনসাইক্লোপিডিয়ার ভয়েই বিড়াল কে মাছের পরিবর্তে কাঁটা দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল? আহারে বাচ্চা বিড়াল টা!!
আপনি দেখছি কোন প্রশ্নেরই ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারেন না, এখন কিন্তু বেড়াল আর কুকুরেও একসাথে খেলাধুলা করে বাঁচছে আনন্দে, যদিও খাদক আর খাদ্য পাশাপাশি না থাকাই ভালো। বেড়াল মানুষ হয়ে যেতে কতক্ষন!
লক্ষি পেয়েটির বেড়াল আবেগ স্পর্শ করলো।
-{@
ছাইরাছ হেলাল
মাছ নয়, বিড়াল নাকি কাঁটাই পছন্দ করে, বড় বড় কাঁটা হলে হবে না,
ছোট ও নরম কাঁটা হতে হবে, তাই তার এ আয়োজন।
কঠিন প্রশ্নের উত্তর আমার খুবই অজানা থাকে যে,
বিড়াল ও কবুতর যে একসাথে পেলে-পুষে রাখা যায় না, তা সে বুঝতে পারবে বলে এখনো মনে হয় না।
আপনি হয়ত বিড়াল কবুতর এক ঘাটে পানি খাওয়াতে পারেন! সবাই না কিন্তু আপনি না, ভাই।
শুন্য শুন্যালয়
আমি কি পারি নাকি? ভেবেছিলাম আপনার পক্ষে অসাধ্য সাধন কোন ব্যাপারই না। বিড়াল যে মাছের চেয়েও কাঁটা পছন্দ করে তা কিন্তু জানতাম না। আপনি তো কঠিন প্রশ্নে আঁটকেছেন, আর আমি এই সহজ ব্যাপারেই। কিছু ভালোবাসা লাভ-ক্ষতি মানেনা, আপনার মেয়েটির বিড়ালপ্রেম সেই ইন্নোসেন্সই বলছে।
বিড়ালটা কি শেষ পর্যন্ত রাখতে পেরেছে সে?
ছাইরাছ হেলাল
বিড়াল সে ভাল ভাবেই রাখতে পেরেছে।
আমি তো ভাবি আপনি ই সকল কাজের কাজি হয়ে অঘটনঘটনপটিয়সিনী,
মেপে-টেপে শুধু ভালোবাসা নয়, অনেক কিছুই হয় না মমিন!!
আগুন রঙের শিমুল
মেয়েরা বিড়াল এত ভালো পায় কেনু??
বত্ব – ফেসবুক না থাকিলে মরিয়াই গাইতাম (যাইতাম > gaitam)
ছাইরাছ হেলাল
সবাই কিন্তু বিড়াল ভয় পায় না!
বত্ব, এ জন্যই আপনি খুপ গিয়ানি, বুঝতে পারছি।
বহুকাল পর,
দাওয়াত দেন নাই কিন্তু!!!!!!!
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
দুই মেরুর দুই বাসিন্দা কখনো কখনো এক যখন হৃদয় কথা কয়।নিষ্পাপ মেয়েটিকে মাছ বাধ্য করল বিড়ালের প্রতি ভালবাসায়।ভাল লগল খুব।
ছাইরাছ হেলাল
আমাদের ভাবনায় বিপরীত মেরুও এক হোক তা চাই।
তবে তা কঠিন।
ধন্যবাদ।
মৌনতা রিতু
মুই বিড়াল এট্টুও দেখতি পারিনা। ওর সাথে আমার আজন্ম শত্রুতা।
বর্তমানে আমার এই ভাড়া বাসা খানায় আমি অনেকগুলো কবুতর পুষছি। আরো আছে একজোড়া ঘুঘু ও তাদের ছানা। বিড়াল লোভিটা চুপিচুপি কতবার যে এসে উঁকি মারে তার হিসেব নেই। মালকিন বেচারি লাঠি হাতে সদা সজাগ থাকে।
ছাইরাছ হেলাল
কবুতর ভালোবাসেন জেনে আনন্দিত, এবারে বিড়ালকেও
বস করে ফেলুন, তাহলে আর লাঠি নিয়ে পাহারায় থাকতে হবে না।
বাহ, ঘুঘুও!!
মৌনতা রিতু
কোনোদিন ভাব হবে না। সে এক বিরাট কাহিনি। কমুনে একদিন।
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা অপেক্ষায় রইলাম।
ক্রিস্টাল শামীম
বিড়ালের প্রতি প্রেম আমার নানুর ছিল। আমার প্রেম কবুতরের প্রতি।
ছাইরাছ হেলাল
ভালই হলো, আপনার কাছে থেকে অনেক কিছু জেনে নেব কবুতর সম্পর্কে।
নাসির সারওয়ার
এদেখি সাপ আর বেঁজিকে এক খাঁচায় ঢুকিয়েছে!
তা এই মায়াময় নিঃশব্দচারিনীর কথা কি আমরা এই প্রথম জানলাম এখানে!!
নিজের অপছন্দের খাবার খাচ্ছে বিড়ালের পছন্দের খাবার দেবে বলে। বাহ।
এতো শুধু মায়া আর মায়া।
অনেক ভালো থাকুক এই নিঃশব্দচারিনী এবং তার পোষা প্রানীগুলো।