হাউ মাউ কাউ
মানুষের গন্ধ পাও......

না বন্ধুরা ভয় পাবার কোন কারন নেই,সোনেলা আছেন সর্বো ক্ষণ আপনাদের পাশে।তবে আজ একটি পোষ্ট দিচ্ছি যা আমার নিকের একেবারেই বিপরীত অনেকটা নয় পুরোটাই ভূয়া....
তবে কথা থাকে এই সকল বিষয়াদি শুনতে শুনতেই আমরা শৈশবের আনন্দঘন বয়সের স্তরটি অতিবাহিত করেছি।
-{@ ছোট বেলায় যখন ঘুম না আসত মা তখন গান গাইতো ঘুম পাড়ানির গান।কম বেশ সবার জীবনেই ঘটেছে ...
আয় আয় চাদঁ মামা টিপ দিয়ে যা,চাদেঁর কপালে চাদঁ টিপ দিয়ে....
আড়া জুড়ালো পাড়া ফুরালো মুরগী গেলো দেশে বুল বুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দিবো কিসে...
বাশঁ বাগানের মাথার উপর চাদঁ উঠেছে ঐ মাগো আমার শুল্লুক বলার কাজলা দিদি কই.......
মায়ের এমন উক্তিগুলোর মাঝে লুকিয়ে থাকত সন্তানের জন্য অকৃত্রিম ভালবাসা।প্রথম সকালে তরতাজা সহনীয় রোদে স্নান শেষে মা সন্তানকে মেঠো উঠোনে পিড়ির উপর বসে পা দুটোকে সমান করে মিলে দিয়ে সন্তানকে দুপায়ের মাঝে শুয়িয়ে বিশেষ তৈল মর্দন করতে করতে কিংবা রাতে ঘুমা পাড়াবার সময় উক্তিগুলো কিংবা গান গুলো যেন জীবন্ত হয়ে উঠত।
সেই অনেক দিনের কথা মায়ের বাপের মানে মামা বাড়ী নাচতে নাচতে "আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা ফুল তুলীতে যাই,
                                                                                                  ফুলের মালা গলায় দিয়ে মামা বাড়ী যাই" কবিতার মতই মজাদার হয় মামা বাড়ীর আপ্যায়ন তাইতো বাঙ্গালী বলতেই মামা বাড়ীর প্রতি রয়েছে মোহ।সহ পরিবারেই ছিলাম মামা বাড়ীতে।হাড় কাপাঁ শীতে বাড়ীর মেঠো উঠোনে শীতল পাটি বিছিয়ে পাশে খেড় বা খৈড় এ আগুন জ্বালিয়ে শীতের উষ্ণতা তৈরী করে মামার কাছে গ্রাম্য কোন ভৌতিক গল্প শুনা এ এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।

মামা এবং তার দুজন বন্ধুদের নিয়ে মাঝ রাতে দূর গ্রাম হতে পালা গান শুনে আসতে ছিল নিজ গৃহে।বিশাল বাশঁ ঝাড় বনের মধ্যখান চিড়ে সৃষ্টি হওয়া পথে হাটছেন তিন বন্ধু।বনের দু পাশে ঝি ঝি পোকাড় জ্যোৎস্না ভরা আলো যদি পথ চিহ্নিত না করত তবে তারা পথের কোন দিশা খুজেঁ পেতেন না।হিম শীতল বাতাতে ঝড়ে পড়া বাশঁ পাতার ছন্ ছন্ শব্দ মনে ভয় জাগিয়ে তুলে,চলার পথে হঠাৎ স্হির তীব্র আলোর কয়েকটি ব্রিনং তাদের বুক কাপিয়ে দেয়,থমকে দাড়ান তিন বন্ধু।মামার হাতে ছিল সিগারেট ধরার লাইটার সে লাইটার দিয়ে সিগারেট ধরাতে বিছ্ছুরিত আলোর রিং নড়ে চড়ে উঠে গেউ গেউ শব্দে মুখরিত করে তুলে রাতের নিস্তব্ধ আকাশঁ বাতাস।ধীরে ধীরে জন্তুগুলো কাছে আসাতে বুঝতে পারেন এ কিছু নয় এগুলোর পেতি কুকুর।হুস হুস বলে কুকুরগুলোকে তাড়িয়ে আবারও হাটতে শুরু করলেন।
কিছু দূর হাটার পর চোখে পড়ল জ্বলন্ত কিছু আলোর শিখা ভয়ে পরক্ষণেই বুঝতে পারলেন এটা একটা আওলীয়ার কবর।হযরত নিজাম উদ্দিন আওয়ালীয়া (রাঃ) যিনি একশ একটা খুন করার পর যখন এই পাপের দায় ভার কে নিবে তা পরিবারকে জিজ্ঞাসা করার পর বুঝতে পারেন তার পাপের ভাগিদার কেউ নিবেন না,না পিতা মাতা না স্ত্রী পুত্র সন্তান তা কেবল তাকেই বহন করতে হবে এর জবাব তাকেই দিতে হবে...এমনি এক কল্প কাহিনী শুনা যেত মহান এই পুরষটির আওয়ালীয়া হবার নেপথ্যে।
তারা কিছু ক্ষণ কবরের পাশে জিয়ারত করতে অবস্হান নেন।তারপর আবারও ভয়ার্ত মনে পথ চলা।কিছু দূর যাবার পর দেখতে পেলেন বাশ ঝাড়ের পথে প্রায় আট দশ জন সাদা পায়জামা পাঞ্জাবী পরিহিত মাথায় গোল টুপিওলা নামাজে মগ্ন।চিহ্নিত মন .....
-এতো রাতে....নামাজের মতো সাড়িবদ্ধ লাইনে দাড়িয়ে ওরা কারা?ওরা কি মানুষ নাকি জ্বীন ভূত!......।অন্যজন বলেন,
-মানুষ হলেতো খবর পেতাম,যে এখানে কিছু একটা মজমা হবে।নাহ্ আমার মনে হয় অন্য কিছু....এবার আর রক্ষা নেই নির্ঘাত মৃত্যু।
সাথের অপর সাথীর সমস্ত শরীর ভয়ে কাপছে হাটতে গিয়ে দু পায়ের দুই হাটু এক সাথ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার অবস্হা।ঐ দিকে অজানা লোক গুলো সত্যি সত্যি এবার নামাজের মতো সেজদা দিচ্ছেন মাটিতে, কুদরতী ভাবে বিছানো জায় নামাজের উপর।সাথের সাথীরা বেক পথে দৌড় দিতে প্রস্তুতে মামার বাধা।
-এই...কি করছ......থাম!......চল আমার সাথে,আমি যা করব তোরাও আমার সাথে তাই করবি....দেখি কি হয় আল্লাহ ভরসা।
মামা তার বন্ধুদের নিয়ে ভয়ে ধীর গতিতে এগিয়ে অজানা লোকগুলোর নামাজের কাতারে সামিল হলেন।সেজদায় গিয়ে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে লোকগুলো উধাও।এরই মধ্যে মসজিদে আযানের ধ্বনি শুনতে পেলেন...হাইয়ালাল ছালা হাইয়া লাল ফালা।

চলবে...

আজ থেকে প্রায় চল্লিশ পয়তাল্লিশ দিন পূর্বে ৯৫ বয়সার্থ এই প্রিয় বড় মামা পরলোক গমন করেন এবং....ঠিক তার কয়েক দিন পর আমার প্রান প্রিয় মাও আমাদের ছেড়ে অজানা দেশে চলে যান....আজ বুধবার মায়ের পরলোক গমনের চল্লিশ দিন শেষ হলো।

সবার কাছে তাদের বিদেহী আত্ত্বার শান্তির জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।
আল্লাহ হাফেজ।

0 Shares

২৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ