বাংলায় চিঠি লিখা অনেক কঠিন আজকাল। তা ও যা লিখা হয়, মোবাইল স্ক্রীনে, টাচ্ প্যাড কি বোর্ডে।
আগে কলমের কালি শেষ হতো, পৃষ্ঠা শেষ হতো। বাকি থাকা কথাগুলি, চিঠির বাম পার্শে খালি অংশে ভার্টিক্যালি লিখা হতো। ছোট থেকে ছোট, আরও ছোট, আরও ছোট হস্তাক্ষর।
আজকাল শুধু চার্জ শেষ হয় মোবাইলের। পৃষ্ঠা উল্টালেই পরে, পৃষ্ঠা শেষ হয়না।
সেই কবে একটা পুরো সাদা পৃষ্ঠার উপর কলম ধরেছিলাম মনে নেই,
সেই কবে লিখতে লিখতে চার পৃষ্ঠা লিখা শেষে, হাজারটা অনুভূতি লিখার বাকি থাকত, মনে নেই। সে সময়ের অনুভূতিগুলো কেমন ছিল, তা ও মনে নেই।
শুধু মনে আছে পড়ার টেবিলের ভাঙ্গা পায়াটার কাছে রাখা ময়লার ঝুড়িটা পূর্ণ হতো, প্রতিবার তোর নামে একপাতা ভাঁজ করে খামে ভরার আগে।
একদিন ক্লাশে যাওয়ার আগে নাস্তার টেবিলে যাচ্ছে তাই অবস্থা, ময়লার ঝুড়িতে রাখা অপূর্ণ চিঠিগুলির সবকটি পড়ে ফেলেছিলেন আমার মা- মিষ্টি করে চোখ রাঙ্গানীর শেষে, কানমলা দেয়ার ফাঁকে লতির নিচে একটু খানি কাজল লাগাতে গিয়ে বলেছিলেন- মুখপোড়াটা বড় হয়েছে।
এরপর যতবার চিঠি লিখতাম, ঝুড়িটা সে রাতেই পুকুরের জলে খালি করতাম। কেউ যেন না দেখে।
তবে, না দেখলেও কেউ যেন বুঝে! বোবা প্রাণী পড়তে না পারলেও, কিছু একটা বোঝে, কখনো দিনের আলোয় পুকুর পাড়ে গেলে- হাঁসের ছানাগুলি কোলাহল থামিয়ে, একেবারে চোখের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসত। হাত বাড়িয়ে আয় আয় ডাকলে এতোটা কাছে আসত, যেন ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়া যায়। সামান্য জলে নামলেই ধরতে পারতাম।
বন্ধুদের নিয়ে বড়শি ফেলে মাছ ধরতে গেলে- বড় বড় মাছগুলো আমার বড়শিতে উঠে আসতো। ভাল করে তাকালে মনে হত, ডিম ওয়ালা মাছগুলিও হাসছে। মনে মনে লজ্জা পেতাম, মাছগুলি কি আমার লিখা পড়ে !
পরের অংশ- পরের পোষ্টে চলবে;
২২টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
মুখপোড়াটা বড় হয়েছে।৴৴৴৴ চলুক।
এস.জেড বাবু
চলবে ইনশাআল্লাহ
মোঃ মজিবর রহমান
যাচ্ছে তাই অর্থ কি??? মজা
দারুন সৃতি ভাল লাগল।
এস.জেড বাবু
স্মৃতি নয়- ভাবনা
মজা না তবে সাজা বলা যায়না এমন মজা ( হবে হয়ত )
ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান
মোঃ মজিবর রহমান
ভাল থাকুন।
ছাইরাছ হেলাল
বুঝতা পারছি,
মুখপোড়াটা তেতে উঠেছে!
এ তো চিঠি না, কবিতার মত হয়ে যাচ্ছে!
অবশ্য পাঠক বিনা ঢিলে দুই পাখি পাবে
মন্দ কী! চলুক চলুক।
এস.জেড বাবু
সে কেমন যেন তেতে’ই থাকে হাহাহা
বিচারের ভার বিচারকদের হাতে, আমি লিখার মন চাইলে লিখি- চিঠি না কবিতা তা পুরোপুরি বুঝি না।
শুভেচ্ছা ভাইজান-
সরি টু ইউ এন্ড অল ফর লেট আনসার।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
হাঁসের ছানাগুলো ও বুঝতে পারল, ডিম ওয়ালা মাছ ও বুঝলো যার বুঝার সেকি বুঝলো? অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন
এস.জেড বাবু
আপু
পরের পর্ব লিখছি আর ছিঁড়ছি- হাহাহা
একদিন একটা লিখা হয়ে যাবে জলদি জলদি।
হালিম নজরুল
সেই কবে লিখতে লিখতে চার পৃষ্ঠা লিখা শেষে, হাজারটা অনুভূতি লিখার বাকি থাকত, মনে নেই। সে সময়ের অনুভূতিগুলো কেমন ছিল, তা ও মনে নেই।
———-আবেগাপ্লুত হলাম
এস.জেড বাবু
গ্রুপের কথা মনে পড়ে গেল, আপনার ডাকে একবার চিঠি লিখেছিলাম।
শুভেচ্ছা ভাইজান
সুপায়ন বড়ুয়া
চুরি করে চিঠি লেখার মজাটাই ছিল
অন্য রকম।
ভালই করলেন শুরু।
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
দাদা
পাথরের টুকরো বেঁধে চিঠি পোষ্ট করার (ঢিল) মজাই ছিলো আলাদা।
কখন কার ঠিকানার চিঠি কার বিছানায় যেত, হাহাহা
শুভেচ্ছা নিরন্তর
আলমগীর সরকার লিটন
চিঠি লেখা মজাই আলাদা
অনেক শুভ কামনা রইল————-
এস.জেড বাবু
ব্লগে মাঝে মধ্যে চিঠি লিখার আয়োজন হয়, আপনিও লিখবেন।
শুভেচ্ছা ভাইজান
ইঞ্জা
কত সুর আর কত গান যদি কখনো মনে পড়ে যায়, তা সবই ছিলো ফাউন্টেন পেনের কালিতে, আহা আজ সেইসব কোথায় যেন হারিয়ে গেলো কি প্যাডের কটাকট শব্দের আড়ালে, আহ!
মনটাকে নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত করে দিলেন ভাই।
এস.জেড বাবু
ভাই আমার
আপ্লুত হয়ে গেলাম,
এতো মুগ্ধ হলাম এই মন্তব্যে – প্রকাশ করা কঠিন।
একরাশি শুভেচ্ছা সহ ধন্যবাদ ভাইজান
ইঞ্জা
ভালোবাসা জানবেন। 💕
জিসান শা ইকরাম
চিঠির সুচনা তো দারুন হয়েছে,
আজকাল কাগজ কলমের চিঠি খুব মিস করি।
চিঠি লিখে মার কাছে ধরা পড়া, চিঠি বাইরে ফেলে দিয়ে হাস, মাছ এর হাসি – প্রথম পর্বকে অনন্য রুপ দিয়েছে।
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
আসলেই অনেক মিস করি ভাই-
কেউ লিখে না
আমিও লিখি না
অনুপ্রাণিত হলাম-
কয়েক পর্ব টেনে নিয়ে যাবো সামনের দিকে-
অনেক কথা বলতে বাকি যে___
শুভেচ্ছা ভাইজান
সুরাইয়া পারভীন
চমৎকার চমৎকার চিঠির কথা গুলো। হাঁস মাছ সবাই বুঝতে পারতো মুখপোড়াটার বড় হয়েছে। দারুণ লিখেছেন
এস.জেড বাবু
চমৎকার মন্তব্যে আপ্লুত আপু।
অনেক দিন পর আপনার মন্তব্য পেলাম- খুশি লাগছে।
অনেক ভালো থাকবেন সবাইকে নিয়ে-