বধির গুণী~

ডাল থেকে খসে পড়ার পর আমি শেষ আর্তনাদ করে উঠেছিলাম!
মাটিতে নামার পর জেনেছি এখানে পোকাদের কান শ্রবণহীন......
ঊর্ধ্ব মুখি আওয়াজের প্রতিধ্বনি পৌঁছে গিয়েছিলো আকাশের কিনারায়। মেঘ তাকে আঁকরে নিয়েছে অলিখিত চুক্তিনামায়।
বিধি মোতাবেক শাল সেগুনের সারির ভেতর থেকে খাড়া পাহাড়ের ছবি ছিলো আবছা।
অথচ বেগুনি ফুলের রংয়ে চোখ ঝাপসা....
খসে পড়ার আগেও শেষ চিৎকার পৌঁছায়নি কোনো বিচারের দরবারে।
আমি শুধু সংখ্যা বলে যেতে পারি নির্ভূল।
শুন্যের ভার যখন ঢুকে পড়েছে আবিষ্ট পৃথিবীর মধ্যন্তর!!

অর্থহীন ~

কিছু ঢেউ শুধুই কান্না
কিছু রৌদ্র কেবলই দহন
কিছু হাসি শুধুই ছল
কিছু পাওয়া শুধুই না পাওয়ার পরিচয়।
কিছু জঙ্গল রাত্রির কাছে প্রিয়
কিছু মেঘ আজন্ম সঙ্গ.....

পরিত্যাক্ত~

যখন দেয়ালের বাইরে এলাম কোথাও পৌঁছব বলে!
ধুলোর  ভীড় এসে আগলে রাখে রাস্তা।
ডানের দিকে কমলারোদের গায়ে তখন নুয়ে পড়ার সংকেত। কয়েকটা সারিবদ্ধ সোনালু গাছের পাতা। উঁকি দিতে দিতে ঝরে গ্যাছে দিন ডুবে যাবার আগেই. ….
প্রাণগুলো যেন কেমন!
বাদামের পরিত্যাক্ত খোসা যেমন!
ইচ্ছেমতন খোলো,চাবাও তারপর গিলে ফেলো পানির সাথে।
সাংবিধান ভবনের ঠিক বাইরেই একটা ফুলের বাগান।
পায়ে চলার মত কংক্রিটের রাস্তা!
বুলেটের খালি খোসা পড়ে  আছে ওখানে।
ওগুলো জানান দেয়....
নিস্ক্রিয় অভিযোগের ফর্দ লম্বা হয়ে গিয়েছে যেনে, অসংখ্য কবুতরের বুকে গাঁথা হয়ে গেছে তাজা বুলেট.....

অস্পষ্ট~

যখন এই শহরে প্রথম এলাম! অন্ধকার ছিলো.... অথচ আমার চোখে তখন সকাল পেরোনো আলো ছিলো। এখন যখন এই শহরে জ্বলছে সোডিয়াম বা এনার্জি বাতি! আমার চোখে এখন গোধূলি নেমেছে, ভীষণ ঝাপসা এখন আমার দৃষ্টি.....

মীন তপস্যি~

রণকৌশল না শিখেই রণ ভূমির রক্ষক হয়ে গিয়েছিলাম আদিকাল থেকে। অস্ত্র কিংবা ঢাল ছাড়াই। ফ্যাকাশে কুয়াশা চিনতে কষ্মিন ভুল হয়নি।
ভুল হলো তখন;
সত্যি পৌষের ঘেরটোপ ছিঁড়ে গেলো যখন।

রোদ দেখিনি কখনো। পোহাতে চেয়েছি যখন শীত!
আগুন তখন দাম বাড়িয়ে নিলো ঘাসের দামে।
অথচ সংকীর্ণ জলাশয় ভরা যে জল ছিলো!
তপস্যি তাঁকে পঙ্কিল ভেবে গালি দিলো।

জানা কৌশলে নক্ষত্র কিংবা পৃথিবী বানিয়ে -ছিঁড়ে খুঁড়ে বিভক্ত করে দিয়ে ধ্যানমগ্ন  তপস্যি এখন আগুন পূজারী। রহস্যময় সত্যের বিপরীত যত সব রংকরা নিপাট ঘোলা শব্দের দায়, অথবা নিরুদ্বিগ্ন প্রকট দম্ভের দুঃসাহসী চালচিত্র।

এই তো আমি~

চিনেছে যে, নিজের মতন!
বুঝেছে খাঁটি মাটির মতন।
হাতে নিয়ে খেলেছে যে আপন খেয়ালে!
হয় তুলো সম; নয় সবুজ পাতার স্বরূপ!
ভাটির মাঝে ছুঁড়ে দিয়ে খেয়াল বশে!
অনিচ্ছেতেই ফেরৎ পেয়েছে আগুন পোড়া ইটের ধরন।
এই তো আমি আমার মতন!

 

নোটঃ ২০০ শ'তম পোষ্ট উৎসর্গ করলাম ২০২২ এ সোনেলার দশম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে। সকল সোনেলা সৈনিকদের কাছে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং ভালবাসা। যারা আমাকে এই উঠোনে বিচরন করতে উৎসাহ,অনুপ্রেরণায় ৩ বছর ১১ মাস ৮ দিন আগলে রেখেছেন। # সাবিনা ইয়াসমিন,   # জিসান শা ইকরাম # ছাইরাস হেলাল( মহারাজ)  এবং আমার কিছু আত্মজন হয়ে ওঠা ব্লগার+ ছোট বোন- # খাদিজাতুল কুবরা( রুবি)# সুরাইয়া পারভিন( যিনি এখন আর সোনেলায় আসেন না।  ব্যক্তিগত কারনে) আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

শুভ ব্লগিং 🌹🌹

0 Shares

২২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ