আল কুরআনের আলো- (পর্ব -১)

আতা স্বপন ২৫ এপ্রিল ২০২০, শনিবার, ০৪:৩৮:২৪অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১১ মন্তব্য

পবিত্র রমজান মাস আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে পাপি বান্দাদের একমাস ট্রেনিং দেয়ার মাধ্যমে শুদ্ধ করার তথা পবিত্র করার মিশন নিয়ে। আমরা যারা মুসলমান আমরা কি প্রস্তুত?  আমরা জানি এ মাস কুরআনুল করিম নাযিলের মাস। শবে কদরের পবিত্র রজনীতে এই কিতাব আমাদের প্রিয় নবী রাসুল্লাহ মোহাম্মদ (স.) এর উপর নাযিল হয়। আমরা কি এ কিতাবটি সবাই সহিহ শুদ্ধ রুপে পড়তে পারি? না পাড়লে এই একমাস আপনার জন্য কিতাবটি শিখার একটি সুবর্ণ সুযোগ। যেহেতু এই রমজানে করোনার কারনে কোয়ারেন্টাইন জীবন পালন করতে হচ্ছে, এই সময়টা রমজানের সোয়াব হাসিলের অতিরিক্ত সুযোগ হিসেবে আমরা কাজে লাগাতে পারি। কুরআন শিখে, খতম করে, কুরআনের অনুবাদ ও মর্মার্থ পড়ে তা থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারি। এ জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে আল্রাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।

একজন মুসলিম হিসাবে আমাদের জানা উচিত কোথা হতে আমি এসেছি, কিভাবে এসেছি আবার কোথায় যাব, কি আমার কর্তব্য নানাবিধ অতিত -বর্তমান আর ভবিষ্যতের তথ্য। এটা একমাত্র কোরআন পাঠের মাধ্যমে সম্ভব। তাই বেশী বেশী কোরআন পাঠ করা উচিত। বাসায় নিশ্চয় বাংলা অর্থ আর ব্যাখ্যাসহ কোরআন শরিফ আছে সবার। আজই পড়ে দেখুন। কি জ্ঞান সম্ভার মহান আল্লাহ তার বান্দার জন্য উপহার দিয়েছেন। যতই পড়বেন ততই অবাক হবেন। বিজ্ঞান যা আবিষ্কার করছে অতিসম্প্রতী দেখা যাচ্ছে কোরআন ১৪০০ বছর আগে তা বলে দিয়েছে ব্যাখ্যা সহ। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে কিছুর কথা বলছি- যেমন- বৃষ্টি আর মেঘমালা, মানব শিশুর জম্ম, লোহার উপকারিতা, মানব দেহ পুরেগেলে নতুন চামড়া গজানো, মিরাজের মাধ্যমে সময়ের গতি এমনই বিজ্ঞান সমৃদ্ধ নানা তথ্য। আছে অনেক ইতিহাস ভিত্তিক নিদর্শনের কথা যা আজো আমরা ভ্রমন করে দেখতে পাই । যেমন- ফেরাউনের লাশ, ডেথ সি, পাসাপাসি প্রবাহিত দুই দরিয়া সর্বপরি সৌরজগতে দ্বিখন্ডিত চাদ, এমনই অনেক মোজেজা নিয়ে আলকোরআন নাযিল হয়েছে। ইতিহাস ভিত্তিক কাহিনিগুলো আমাদের বর্তমান সময়ে জীবনাচরন কি হবে তা বলে দেয়। যা একজন মোসলমান শুধু নয় সারা মানবজাতির জন্য শিক্ষনীয়। আদম (আ:) , নুহ (আ:), ইব্রাহীম (আ:), মুসা (আ:) ইসা (আ:) সর্বশেষ মহানবী(সা:) আরো অনেক নবির কাহিনি আছে এতে যা সত্যই শিক্ষনিয়। ১১৪টি সুরার মধ্যে সবগুলোর শানে নযুল পরলে বুঝা যায় কিভাবে মহানবিকে আল্লাহ তালা বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ আচর্য কিতাব দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পবিত্র কালামে বলেন, এই সেই কিতাব যাতে বিন্দু পরিমান সন্দেহ নেই, এটা মোত্তাকিদের জন্য হেদায়েত।” কাজেই আপনি যদিমোত্তাকি হতে চান কোরআন পড়ুন বুঝুন আর আমল করুন। কোরআনই পারে একমাত্র কোরআনই পারে আপনাকে সত্য সুন্দরের পথ দেখাতে। দুনিয়ায় এবং আখেরাতে। কারন এটা শুধু মাত্র ধর্মীয় গ্রণ্হ নয়, এটা পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা একটা জীবন্ত মোজেজা।

আসুন কুরআন পড়ি। কুরআনেরা আলোয় নিজেকে আলোকিত করি।  প্রতিদিন অন্তত পক্ষে এক পাতা হলেও পড়ি।  এ মাসে প্রতিদিন কুরআনের সুরা গুলো নিয়ে কিছু তথ্য আপনাদের দেবার চেষ্ট করব।

* সুরা আল ফাতিহা -

  • পাড়া নম্বর ১
  • আয়াত ৭টি।রুকু ১টি।
  •  মক্কী  সুরা। মক্কায় নাযিল কৃত প্রাথমিক প্রত্যাদেশের অন্যতম  সুরা।
  • নামকরনঃ ফাতেহা শব্দের অর্থ - আরম্ভ, উদঘাটন, উপক্রমণিকা ও অবতারণিকা প্রভৃতি বুঝায়। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই সুরাকে “ফাতিহাতুল- কিতাব” অর্থাৎ গ্রন্থের আরম্ভ বলে অভিহিত করেছেন। কারন- এই পবিত্রতম সুরা যোগেই কোরআন শরিফ আরম্ভ হয়েছে। এছাড়াও এ সুরা আরও কিছু গৌরবান্বিত নামে সম্মানিত। যেমন-
    ১. উম্মুল কোরআন বা কোরআনের জননী; এ নামটিও মহানবি (সাঃ) পদত্ত । এর মর্মার্থ এই যে, সমগ্র কোরআন শরিফের যাবতীয় আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষার মুল এবং গুপ্ত ও ব্যাক্ত মর্মের সারভাগ এ সুরার মধ্যে নিহিত রয়েছে।
    ২. সুরাতুল হামদ বা প্রশংসা সূচক সুরা; কারন এ সুরার ১-৪ নং আয়াত পর্যন্ত মহান আল­াহতালার অনুপম প্রশংসায় পরিপূর্ণ।
    ৩. সুরাতুস- সালাত বা নামাজের সুরা; কারন প্রত্যেক নামাজেই এই সুরা পাঠ করতে হয়।
    ৪. সব্ওল-মাসানী বা পুনরুক্তির সপ্ত- আয়াত; নামাজে এ সপ্ত আয়াত-বিশিষ্ট সুরা একাধিকবার পড়তে হয় বলেই এ সুরাকে উক্ত নামে অভিহিত করা হয়েছে। সূত্রঃ সহি-বোখারী ও তঃকবির ।
  • উলে­খিত নাম গুলো ছাড়াও সুরাটিকে ডাকা হয়- কাফিয়া বা যথেষ্ট, আসাস বা মূল, শিফ বা আরোগ্য, শোকর বা কৃতজ্ঞতা, সালাত বা আরাধনা, সাওয়াল বা প্রশ্ন, দোয়া বা প্রার্থনা প্রভৃতি।

    এসুরার বিষয়বস্তুঃ     স্রষ্ট আর সৃষ্টির মধ্যে ঐশ্বরিক সম্পর্ক । স্রষ্টার ও সৃষ্টির মাঝে গভীর ভাব বিনিময়। যেখানে স্রষ্টার বড়ত্ব জাহির করে সৃষ্টি নিজেকে সপে দিয়েছে ধ্যানে। আর স্রষ্টা  সৃষ্টির প্রতিটি প্রশংসার জবাব দেন। প্রকৃত পক্ষে এ সুরাটি হলো বান্দার জন্য আল্লাহর শেখানো একটি দোয়া।

  • কোন নামাজ সুরা ফাতিহা ছাড়া পড়া যায় না।

    ভাবানুবাদ

    (পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু)

  • যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।
  • যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু।
  • যিনি বিচার দিনের মালিক।
  • আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
  • আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,
  • সে সমস্ত লোকের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ।
  • তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

**ফজিলত **

ইমাম তিরমিযী আবু হুরাইরাহ  রা. থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলে কারীম (সা.) বলেছেন যে -

"সূরায়ে ফাতিহা প্রত্যেক রোগের ঔষধবিশেষ।"

0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ