তখন আমি স্কুলে পরতাম,তুখোড় মেধাবী ছাত্র হয়তো ছিলামনা কিন্তু মোটামুটি ভালো পর্যায়ের ছাত্র ছিলাম।
তবে তুমুল ভাবে ক্লাস বাং(ফাকি দেওয়া)মারতাম।একদিন আমার বন্ধু শুভর ক্লাস করতে ইচ্ছে করছিলোনা, তাই যা সবসময় করি তাই করলাম ভাগো! আমরা দুইজন গেলাম মিজানের ভিডিও গেমসের দোকানে!এলাকার ভিতরেই।দুইজন গেমসে ঢুকেই জামাকাপড় পরিবর্তন করে পুরাই খেলোয়াড় হয়ে গেলাম।গরম কাল আর লোডশেডিং হবেনা তাইকি হয়?হতচ্ছারা কারেন্ট চলে যায় তাই আমরা ব্যাগ রেখেইবের হয়ে চলে আসি।দুইজন দোকানের বাহিরে বসে হাওয়া খাচ্ছি এমন সময় আমাদের স্কুল কমিটির সদস্য রেনু আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। তবে আমরা কিন্তু কনফিডেন্ট ছিলাম কারন ড্রেস ছিলোনাযে! তবে উনি ঠিকই আমাদের সন্দেহ করে। এসেই জেরা আমাকে প্রায় ধরেই ফেলেছিলো কারন নাখালপাড়াতে আমাদের স্কুল জুতোগুলো ছিলো ইউনিক আর তা আমি পরে ছিলাম!শুভর পূর্বপ্রস্তুতি ছিলো তাই স্যান্ডেল পরে ছিলো। স্যারকে তখন বুজালাম আমার মৃত দাদি আবার মৃতপ্রায় হয়ে পরেছে তাকে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছি এরমাঝেই আমার জুতা ছিরে গেছে হাংকি পাংকি।কিন্তু উনি মানতে নারাজ স্কুল আওয়ারে আমরা এখানে কেনো?পারলে ধরে নিয়ে যায় আরকি!এরপর শুভকে জিজ্ঞ্যাস করলো ওতো আরেককাঠি সরেস ও বললো ও মনু মিয়া স্কুলে পরে। তবে আমাদের কোন উত্তরই তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি উনি আমার ক্লাস আর রোল নিয়ে যায় ক্লাস সঠিক বললেও রোল ভুল বলেছিলাম ভাগ্যিস বলেছিলাম!
পরবর্তী সপ্তাহের শেষদিন দুইজন বিদ্যালয়কে ধন্য করতে উপস্থিত হলাম। দ্বিতীয় ক্লাসের শুরুতেই আমাদের চোখ চরকগাছ রেনু আংকেল আমাদের ক্লাসে :'( মুহূর্তেই আমরা দুইজন দুই বেঞ্চে জায়গা পাল্টিয়ে বেঞ্চের ণিচে ঢুকে পরি সে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা কয়টা হার্টবিট মিস করেছি আল্লাহ মালুম। মোটামুটি ভাবে এ ঘটনার এখানেই সমাপ্তি।
তবে এর প্রায় বছর দেড়েক পরে শুভর বাবা বিদেশ থেকে আসে এবং বিদ্যালয়ে যায় রেনু আংকেলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং বলে আমার ছেলে কিনতু এই স্কুলেরই ছাত্র! উনি তখন বললো তোমাকে যেন কোথায় দেখেছি, শুভর তড়িৎ গতির উত্তর জি স্যার স্কুলেই দেখেছেন হয়তো। তবে উনি বহু চেষ্টার পরো মনে করতে পারেননি ভাগ্যিস পারেননি, প্রবাসফেরত বাবার কাছে নিশ্চয়ই ছেলের এই কীর্তি সহ্য হতোনা।উখোদা আমরা এই যাত্রায় রক্ষা পেলাম। আসলেই স্কুল লাইফ বেষ্ট লাইফ।
৩৯টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
স্মৃতির চারণ ভূমিতে ঘুরতে ভালই লাগে, হোক না তা অন্যের।
মাহামুদ
পিছনে তাকালে কেমন যেনো ফাকা ফাকা লাগে…
প্রহেলিকা
স্মৃতিচারণ পড়তে ভালোই লাগে আর স্কুল ফাঁকি দেয়ার ঘটনা নিজেকেও শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যায় মুহূর্তেই। কত পালিয়েছি আর কতোবারই না মার খেয়েছি। সেসব দিনগুলো এখন সোনালী। এখনো মনে পড়ে একবার স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম আর সিনেমা হল থেকে বেড়িয়েই ঠিক স্যারের সামনে, হা হা হা পরের দিন বুঝতেই পারছেন। ভালো লেগেছে লিখা। আরো লিখুন এমন।
ফাকি>>ফাঁকি
ছিরে ছিঁড়ে
ণিচে >>নীচে
ঢুকে পরি > ঢুকে পড়ি
ছাইরাছ হেলাল
ইহাকেই ব্লগিং বলে।
দেখে ভালই লাগে।
প্রহেলিকা
আমরা তাহলে এখন ব্লগার হয়েছি, এখন থেকে কেউ এমনে এমনে দেখতে পারবে না টিকেট লাগবে।
ছাইরাছ হেলাল
অনেক বাকী, এতো শুরুর শুরু মাত্র। উল্টো টিনের বাক্সে ফেলতে শুরু করুন।
প্রহেলিকা
হাছা কথা সব জায়গায় কইতে নাই ভাইয়া,শরম করে।
হৃদয়ের স্পন্দন
শান্তি পাচ্ছি এটাই তো দেখতে চেয়েছিলাম সোনেলায়
মাহামুদ
কি দেখতে চেয়েছিলেন??
মাহামুদ
হা হা একটু আগে হহৃদয় ভাইয়ের বানান ভুল ধরলাম আর এখনআমার নিজেরই বানান ভুল!!!
মাহামুদ
আর ভাই উল্টা টিনের বাক্স মানে??
মাহামুদ
আর ধন্যবাদ আপু সংশোধন করিয়ে দেওয়ার জন্য।
আর চন্দ্রবিন্দু মোবাইল থেকে দেওয়া সম্ভব না 🙁
হৃদয়ের স্পন্দন
হাসান উনি ভাইয়া আপু না 😀
অরণ্য
:D)
প্রহেলিকা
বানানে ভুল সবারই হয় আমার আরো আপনার চেয়ে বেশি হয়। মোবাইল থেকে চন্দ্রবিন্দু জনিত সমস্যা হতেই পারে তবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় অনেক স্থানেই দুটি শব্দ এক সাথে যুক্ত হয়ে গেছে এটি কিন্তু অসতর্কতা বলেই মনে করি।
তবে এগুলো কোনো সমস্যা নয়, আশার বিষয় এই যে পজিটিভলি নিতে পেরেছেন। শুভকামনা।
মাহামুদ
ভুল কেউ বুঝিয়ে না দিলে কিভাবে বুঝবো ভুল করছি???
আন্তরিক ভাবে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ!?।
হৃদয়ের স্পন্দন
আপনারে আমি ভাল জানতাম মানে আপনিও চোর উইথ শুভ? মিজানের গেমস আমার আসলে জীবনের অংশ :p
মাহামুদ
মিজানের দোকান এলাকার প্রায় সবারই স্কুল জীবনের উল্লেখযোগ্য জায়গা। B|
আর চোর উইথ শুভ মানে? অষ্টম শ্রেণীতে আমি পুরো স্কুলেরই জরিমানার রেকর্ড করেছি :p
হৃদয়ের স্পন্দন
করবেন ই তো শত হোক লেব্রা এব্রা
মাহামুদ
ভাই হাছা কথা সবসময় সব জায়গায় কইতে হয়না শরম করে……… -_-
মাহামুদ
মিষ্টেক :p মিষ্টেক :p
ছদ্মবেশী নামের কারনে কট খেয়ে গেলাম :/ :/
খসড়া
স্মৃতি সব সময়ই আনন্দের। ভাল থাকুন, নিজেকে নিয়েও লিখুন।
মাহামুদ
চেষ্টা করে যাবো ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা , দারুন মজা পেলাম।
স্কুল ফাঁকির কথা মনে পরে গেলো 🙂
মাহামুদ
স্কুলজীবন এ দেখি সবাই ফাঁকিবাজ ছিলো?? 😮
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো...
ভালোলাগা রইলো
মাহামুদ
ধন্যবাদ।
নওশিন মিশু
আমি সারা জীবন ছেলেদের হিংসা করি শুধুমাত্র এই জন্য যে ওদের জীবনটা অনেক বেশি মজার। কেন যে মেয়ে হয়ে জন্মালাম ….. ^:^
মাহামুদ
মজা! সবই আপেক্ষিক লাগে আমার কাছে। আমিতো বরং এভাবে দেখি মেয়েরা সবসময় বেশিরভাগের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে!
মোঃ মজিবর রহমান
আবার মন চলে যায়
সেই ছোট্ট বেলায়
কি ই না করলেন মাহমুদ ভাই।
খুব ভাল লাগলো।
মাহামুদ
:p আরো যাযা করতাম তা টাইপ করতে সংকোচ হচ্ছে। :p 😀
অরণ্য
“ও মনু মিয়া স্কুলে পড়ে”। কোন এক ছুটির দিনে বিকেলে কার্জন হলে কোন এক খারাপ কাজে দুই বন্ধু ধরা খেলাম শহীদুল্লাহ হলের প্রোভস্টের কাছে। সেদিনে আমরা বলেছিলাম আমরা ভার্সিটিতেই পড়ি না। আমি বলেছিলাম আমি পড়ি কবি নজরুল ইসলাম কলেজে।
মাহামুদ
ক্যন এক খারাপ কাজ!!
বাহ ভাই চমৎকার ভাবে সব অস্বীকার করে ফেললেন? :p
তবে ওই স্যারের সাথে পরবর্তীতে আর কি দেখা হয়েছিলো??
শুন্য শুন্যালয়
আমি খুব ভালো পালাতে পারতাম, কখনোই ধরা পরি নাই 🙂
স্মৃতিচারণ সবসময়ই পছন্দের আমার। লিখেছেন বেশ গুছিয়ে, মজা করে। ভালো লেগেছে।
মাহামুদ
ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এমন মধুর স্মৃতি ভূলা যায় না। -{@
মাহামুদ
যথার্থই বলেছেন ভাই 😀
খেয়ালী মেয়ে
খুব দুষ্ট ছিলেন বোঝা গেলো 🙂
এমন দুষ্টামির গল্প শুনতে ভালোই লাগে…
মাহামুদ
আছিলাম বলছেন??
আমিতো এখনো তাই! :p