মা দিবসে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী তার মায়ের সাথে একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে মা মাথায় সিঁদুর পরে আছেন। অর্থাৎ চঞ্চল চৌধুরী একজন হিন্দু!

আর এতেই কিছু মানুষ তার পোষ্টের মন্তব্যে ধর্মকে টেনে এনে এমনসব মন্তব্য করেছেন যার পরিপ্রেক্ষিতে চঞ্চল চৌধুরী বলতে বাধ্য হয়েছেন- মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখুন, ধর্ম দিয়ে মানুষের কর্ম বিচার্য নয়।

এখানে কে কি মন্তব্য করেছেন আমি সে প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাইনা। ফেসবুকের কল্যানে বোধকরি সবাই সেসব দেখেছেন। তবে একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে ধর্ম নিরপেক্ষতার স্বার্থে এবং মৌলবাদীতার বিপক্ষে নিজের বিবেকের তাড়নায় কিছু কথা না বললেই নয়।

এতদিন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীকে নিয়ে তাদের কোন সমস্যা ছিলনা। যেই জানলো তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বী অমনি কিছু মানুষের চুলকানি শুরু হয়ে গেলো। তাদের কাছে চঞ্চলের অভিনয় এখন তাদের পাপ-পূণ্যের নিক্তিতে দোদুল্যমান!

এর কারন, মানুষকে মানুষ ভাবার শিক্ষাতো এরা পায় নাই। এরা শিশুকাল থেকেই শিখেছে ধর্ম মানেই ইসলাম, ধার্মিক মানুষ মানেই মুসলিম। নিজেদের জিহাদি যোদ্ধা কল্পনা করে ইমাম মেহেদি কবে আসবেন এরা সেই দিবাস্বপ্নে মশগুল জাতি।

নিজেরা অন্ধ বলেই এরা তাদের রুহানি পীরদের কথা, কাজকে অন্ধের মত অনুসরণ অনুকরণ করে। এদের নিজস্ব স্বকীয়তা বলতে কিছু নেই। এরা ধর্মের নামে বেশাতি করে পবিত্র ধর্মকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার পায়তারা আগেও করেছে, এখনো করছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষ যখন চিন্তা, চেতনায়, পারস্পারিক ভ্রাতৃত্ব বন্ধন এসব নিয়ে নিজেদের মননকে সুগঠিত করতে ব্যস্ত; তখন মূর্খরা ব্যস্ত নিজেদের জীবনে মুতা বিবাহের রঙিন দুনিয়ার মানবিক কর্মকান্ডের প্রতিফলন জায়েজ করা নিয়ে। শিল্পীকে সমাদর, তাকে কদরের মর্ম এদেরতো বোঝার কথা নয়!

প্রিয় চঞ্চল চৌধুরী, একজন শিল্পী হিসেবে আপনি আমাদের মনে যে স্থান তৈরি করে নিয়েছেন সেটি কখনোই মুছে যাবেনা। আপনার মনুষ্যত্বই আপনাকে আমাদের কাছে অনন্য এক আসনে বসিয়েছে।

সেই মনুষ্যত্বের দোহাই, দয়া করে এই কুলাঙ্গারদের ক্ষমা করবেন।

(ছবি- চঞ্চল চৌধুরীর টাইমলাইন থেকে নেয়া)

0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ