অপরাধের একাল- সেকাল

এস.জেড বাবু ৫ নভেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ০৪:০০:৫২অপরাহ্ন সমসাময়িক ২৩ মন্তব্য

১৮ বছরে এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা কমেছে ৯৮.৩৮%

২০০২ সালে এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা- ৪৯৪
২০১৯ সালে এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা মাত্র- ০৮

এটাকে অবশ্যই এসিডবিরোধী যুদ্ধে বড় জয় বলা যায়।

“আর একটি মুখও যেন এসিডে ঝলসে না যায়”
( ০৩ নভেম্বর’১৯- প্রথম আলো )

একটি মেয়ের পরিবারের সুখের নিদ্রার জন্য এর চেয়ে বড় সুখবর আর কি হতে পারে।
ধন্যবাদ জানাই এই মহতি কর্মের আগা গোড়া কাজ করেছেন এমন সব সংঘটন সহ দেশের বিচার ব্যাবস্থা ও বিশেষ করে দ্রুত বিচার আইন বাস্তবায়নের সাথে জড়িত সকল নীতিনির্ধারক মহলের সবাইকে।

“ডিজিটাল বাংলাদেশ”
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। ন্যাশনাল আইডি, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ ব্যাংকিং ব্যাবস্থা ডিজিটালাইজেশানের মাধ্যমে এবং ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগ ব্যাবস্থা স্থাপন হওয়ার ফলে বিগত এক যুগ আগের তুলনায় আজকের বাংলাদেশ এক নতুন বাংলাদেশ। দেশের কোটি মানুষ ভোগ করছে আধুনিক পদ্ধতির সুফল-

পাশাপাশি মোবাইল ফোনের আধুনিকায়ন বদলে দিচ্ছে অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার মতো আর একটা পথ। একটা মেয়ের এবং তার পরিবারের জন্য দুশ্চিন্তার দ্বার উন্মোচন করে দিয়েছে “সাইবার ক্রাইম” এর একটা দিক- তা হলোঃ
> সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “ভাইরাল” হওয়া ছবি/ ভিডিও ।

> নিজের ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায়, পুকুরে, ঘাটে সামান্য অসতর্কতার কারনে সুযোগসন্ধানীদের মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে নগ্ন / অর্ধনগ্ন মেয়ের ছবি / ভিডিও।
> বিভিন্ন সুপার মার্কেটের নোংড়া মানষিকতার কর্মচারীদের মাধ্যমে ওয়াসরুমে আর ট্রায়াল রুমে ঘটে যাচ্ছে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা।
> এমনকি বিভিন্ন রাত্রিকালীন অবকাশ যাপন কেন্দ্রে নগ্ন হেনস্তার স্বীকার হয়ে অপদস্থ মানুষের সংখ্যা অনেক বেশী।

একটা ছেলে / মেয়ের ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত অথবা বিভিন্ন কায়দায় জোড়পূর্বক ধারণ করা নগ্ন / অর্ধনগ্ন ছবি বা ব্যাক্তিগত নৈতিক/ অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিও লাখো কোটি মানুষের চোখে ভাইরাল হলে- সে মেয়ে বা ছেলে এবং তার পরিবার কতটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে তা লিখে প্রকাশ করা হয়ত সম্ভব হবে না।
একটা পরিবার ধ্বংসের কারণ হতে পারে এই ডিজিটাল সন্ত্রাস।
একটা পরিবারের মাথা চিরতরে নুইয়ে দিতে পারে সামান্য অসতর্কতায় কোন অসৎ লোকের মোবাইল কেমেরার সামনে পড়ার কারনে।
এমনকি ছেলে বা মেয়ে অথবা তার পরিবারের সকল সদস্যদের গ্রামছাড়া হওয়া এবং আত্মহত্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে এই ডিজিটাল সন্ত্রাস।

হাল যুগে লাখো নারী পুরুষ তাদের সামান্য অসতর্ক সময়ের ভুলের কারণে, মোবাইল বা কেমেরায় ধারণ করা গোপন ছবি / ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ভয়ে বছরের পর বছর ধরে নগদ অর্থ এমনকি অনিচ্ছাকৃত ধর্ষনের মত ব্লাকমেইলের স্বীকার হচ্ছেন।

কারও অসতর্ক অবস্থার গোপন / অশ্লিল ছবি বা ভিডিও ধারণ করা অমার্জনীয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ-

এবং পরিচিত বা অপরিচিত যে কোন নারী পুরুষকে হেনস্তা করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেইসবুক, ইউটিউব বা কোন ওয়েবসাইটে নোংড়া/ নগ্ন ছবি বা ভিডিও আপলোড করা এসিড সন্ত্রাসের মত ভয়াবহ অপরাধ বা তার চাইতেও বেশি।

অনলাইনে আপলোড বা ভাইরাল হওয়া ছবি / ভিডিও কোনভাবেই মুছে দেয়া যায়না কারণ, অনেকেই তা অসৎ উদ্দেশ্যে ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করে।

বিশেষ ধারায় অবশ্যই গোপনীয়তার সাথে, দ্রুত বিচার আইনে মামলা নিস্পত্তির নিশ্চয়তা পেলে, অনেকই হয়ত এমন জঘন্য অপরাধের কারণে বিচারের প্রার্থী হবেন।

এক যুগ পূর্বে এসিড সন্ত্রাসের কারণে একটা মুখ পুড়ে যেত-

আজকাল তার চাইতে সহজে ভয়াবহ ভাবে পুড়ে যাচ্ছে একটি মুখ, নিলাম হচ্ছে একটি ইজ্জত, লুন্ঠিত হচ্ছে সম্মান, শেষ হচ্ছে বেঁচে থাকার স্বপ্ন।

কারও এক সেকেন্ড অসতর্কতায় ভাইরাল হওয়া নগ্ন / আধো উলঙ্গ ভিডিওর কারণে একটা ছেলে, একটা মেয়ে বা একটা পরিবারের সব সদস্যদের মান-সম্মাণ এমন ভাবে পুড়ে যে সেই পুড়ে যাওয়া মুখের ছবি সারা দুনিয়ার কোটি মানুষ দেখে।

লোভে / বীনা লোভে / খেলার ছলে বা কাউকে ব্লাকমেইল করার জন্য তেমন ভিডিও যারা আপলোড করে তারা এসিড সন্ত্রসীর চাইতেও ভয়াবহ নিকৃষ্ট ছোট মনের জঘন্য অপরাধী।

নীতিনির্ধারক মহলের যুগ উপযোগি সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়ন কামনা করি।

ভেবে দেখুন-
> খেলার ছলে নিজের প্রিয়জনের / প্রেমিকার নোংড়া ছবি বা ভিডিও ধারণ করা চুড়ান্ত বোকামী। যার খেশারত নিজেকেই দিতে হবে।

> অসতর্কতার সুযোগে কারও প্রাইভেট ভিডিও বা ছবি তোলা অপরাধ। -

> অবশ্যই নিজের বা অন্য কারও প্রাইভেট ছবি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল করা এসিড সন্ত্রাসের চাইতে ভয়াবহ।

শ্লোগান হতে হবে-
কোন অসৎ লোকের কারনে- সহজ মোবাইলের কেমেরায়-
“আর একটিও নারীর ইজ্জত যেন নিলাম না হয়”

এবং একদিন বাংলাদেশ তা করে দেখাবে ।

-০-
০৫/১১/২০১৯

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ