যা-ই করো না কেন, সেটাই সঠিক,
কোথাও কোন ভুল নেই-
যা হয়েছে, যা হতেছে, এবং যা হবেই-
এসব কিছুই অবধারিত! নক্ষত্রের চলাচলে নির্ধারিত!
কেননা সবকিছুই যদি সঠিক হয়,
তবে সবকিছুই ভুল কেন নয়?
অতএব সাথে থাকা, ছেড়ে আসা, চলে যাওয়া, থেকে যাওয়া
কোন কিছুতেই বোধহয় কোন কিছু বদলায় না-
যদি না তা সময়ের সাথে যোগ করে আরও কিছুটা প্রান্তিক সময়-
আয়ুরেখা টেনে-টুনে প্রসারিত করে রাবার ব্যান্ডের মতো,
আধা গ্লাস প্রবাদপ্রতিম পানিতে ঢেলে দেয় একখন্ড বরফ-
বরফ হলো সঞ্চয়ী হিসেবের মতো ঠান্ডা, অকপট,
বাঁধ ভাঙ্গা সময়ের জোয়ার যখন তুষারিত হয়ে
বোতল গলার ভেতর দিয়ে গকগক শব্দে ঢেলে আসে
জলে ভেজা আকাশের মতো নীল-ফুল আঁকা
শাদা পাইরেক্স কাঁচের অপার্থিব, মসৃণ ওপাল গেলাসে-
ত্রিশোর্ধ যুবক তখন চল্লিশের দিকে তাকায়
ধু ধু মরুভূমির ক্লান্ত অভিযাত্রিকের মতো
ভেজা রুমাল পকেটে রাখে, দাবদাহে নিতান্ত অস্থির হয়ে
সে রুমাল চিপে চিপে ফোঁটা ফোঁটা পানিতে ভিজিয়ে নেয়
প্রিয়তমার মুখের ভেতর না-ঢোকাতে পারা পিপাসার্ত জিভ।
মৃগতৃষার ভেতরে অন্ধ অসুখের মতো জেগে ওঠে যেই আজন্ম পিপাসা
সেই বিক্ষত জিভে, সেই তুচ্ছাতিতুচ্ছ জিভে ফোঁটা ফোঁটা জলসেচ দিয়ে
হৃদযন্ত্রের ধুকধুকি চালু রাখে।ব্যাঙের মতো কর্কশ স্বরে কথা বলে।
রুমাল নিংড়ে জল ঝরানোর মতো যৌবন খরচ করে
কৃপণের মতো হিসেব কষে পিপাসা নিবারণ করে
তিরিশের ঢাল বেয়ে প্রানপণে নিজেকে ঠেকাতে ঠেকাতে
দুই হাত তুলে সড়সড় করে নেমে যায় সর্বনাশা চল্লিশের দিকে।
১৮টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
এই লেখা বুঝতে হলে ত্রিশের যুবক হতে হবে, নয়তো বিতর্কিত চল্লিশাকে ডাকতে হবে।
এত্তো কঠিন লেখা ক্যামনে লেখেন!!
আসিফ ইকবাল
সাবিনা, তুমি তো মনে হয় জায়গা মতোই আছ! যুবকের জায়গায় যুবতী বসিয়ে নিলেই হয়! আর শোন, জটিল জীবন কি আর সহজ লেখায় প্রকাশ করা যায়? প্রথম মন্তব্যের জন্যে অজস্র ধন্যবাদ
সাবিনা ইয়াসমিন
এবার পরের লেখাটি দিন। আর হ্যা, লেখা যেন সহজ হয়। নইলে কিন্তু উল্টা পাল্টা কমেন্ট দিবো 🙂
আসিফ ইকবাল
ওমা, একী হুমকি দিলে! এইবার তো ভয়ে ভয়ে লেখা দিতে হবে দেখছি!
সঞ্জয় মালাকার
এই লেখা বুঝার মতো বয়স এখনো হয়নি, শুধু পড়লাম। শুভ কামনা 🌹🌹
আসিফ ইকবাল
সঞ্জয় মালাকার, আয়হায়!
সুরাইয়া পারভিন
শব্দ চয়ন ও বাক্যের গাঁথুনি প্রচন্ড কঠিন। থেকে যাওয়া চলে যাওয়ায় কোথাও কিছুতে কিছুই বদলায় না। যা অবধারিত তা হবে ঘটবেই। চমৎকার উপস্থাপন
আসিফ ইকবাল
সুরাইয়া পারভিন, মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
রেহানা বীথি
সহজ ভাষার লেখায় অনেক বেশি প্রাণ থাকে। পাঠকের হৃদয়ে পৌঁছাতে পারে খুব সহজেই।
আসিফ ইকবাল
রেহানা বীথি, এই জটিল জীবনকে খুব সহজ ভাবে উপস্থাপন করা ভীষণ কঠিন, ক্ষেত্রবিশেষে বোধহয় অসম্ভব। ভাল থাকবেন।
এস.জেড বাবু
ভেজা রুমাল পকেটে রাখে, দাবদাহে নিতান্ত অস্থির হয়ে
সে রুমাল চিপে চিপে ফোঁটা ফোঁটা পানিতে ভিজিয়ে নেয়
প্রিয়তমার মুখের ভেতর না-ঢোকাতে পারা পিপাসার্ত জিভ।
উপরের এই অংশটুকুর মানে কি দাড়ায় ?
পরিপূর্ণ বয়সে, মেধা শক্তি আর ঘাম ঝড়িয়ে, যেটুকু আয়- তার সবটুকুই প্রিয়জনের চাহিদার ( তৃষ্ণার ) কাছে বিসর্জন দেয়-
এমন কি ?
প্রথম ছয় লাইন দারুন লেগেছে।
আসিফ ইকবাল
ভাই, একাধিক অর্থ হয়। কোনটাই ভুল নয়। মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
সব কিছু আসলেই নির্ধারিত,
এমনো হয়েছে দু একজনের বেলায়, সব কিছু পরিনতির দিকে যাচ্ছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেমন জানি এলোমেলো হয়ে যায় সব। পূর্ব নির্ধারিত না হলে এমন কেন হবে?
শুভ কামনা ভাই,
অনেক দিন পরে আপনাকে দেখে ভাল লাগল খুব।
আসিফ ইকবাল
ইকরাম ভাই, বাহ দারুণ বলেছেন তো!
কিছু ব্যক্তিগত ঝামেলার কারণে এখানে আসার ব্যাপারে কিছুটা ছেদ পড়েছিল। আপনাদের কাছে ফিরে আসতে পেরে আমার-ও খুব ভাল লাগছে, ভাল থাকবেন।
মনির হোসেন মমি
কেননা সবকিছুই যদি সঠিক হয়,
তবে সবকিছুই ভুল কেন নয়?
হিসাব করলে এ জগৎটা আসলেই কিছুই না। চমৎকার লেখা।
আসিফ ইকবাল
মনির ভাই, সত্যিই এ জগৎটা কিছু নয়। মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
মনির হোসেন মমি
শুভ ব্লগিং ।
আসিফ ইকবাল
ধন্যবাদ ভাই।