অন্ধচক্র

আসিফ ইকবাল ১২ নভেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ১২:১৮:০৩পূর্বাহ্ন কবিতা ১৮ মন্তব্য

যা-ই করো না কেন, সেটাই সঠিক,
কোথাও কোন ভুল নেই-
যা হয়েছে, যা হতেছে, এবং যা হবেই-
এসব কিছুই অবধারিত! নক্ষত্রের চলাচলে নির্ধারিত!
কেননা সবকিছুই যদি সঠিক হয়,
তবে সবকিছুই ভুল কেন নয়?

অতএব সাথে থাকা, ছেড়ে আসা, চলে যাওয়া, থেকে যাওয়া
কোন কিছুতেই বোধহয় কোন কিছু বদলায় না-
যদি না তা সময়ের সাথে যোগ করে আরও কিছুটা প্রান্তিক সময়-
আয়ুরেখা টেনে-টুনে প্রসারিত করে রাবার ব্যান্ডের মতো,
আধা গ্লাস প্রবাদপ্রতিম পানিতে ঢেলে দেয় একখন্ড বরফ-
বরফ হলো সঞ্চয়ী হিসেবের মতো ঠান্ডা, অকপট,
বাঁধ ভাঙ্গা সময়ের জোয়ার যখন তুষারিত হয়ে
বোতল গলার ভেতর দিয়ে গকগক শব্দে ঢেলে আসে
জলে ভেজা আকাশের মতো নীল-ফুল আঁকা
শাদা পাইরেক্স কাঁচের অপার্থিব, মসৃণ ওপাল গেলাসে-
ত্রিশোর্ধ যুবক তখন চল্লিশের দিকে তাকায়
ধু ধু মরুভূমির ক্লান্ত অভিযাত্রিকের মতো
ভেজা রুমাল পকেটে রাখে, দাবদাহে নিতান্ত অস্থির হয়ে
সে রুমাল চিপে চিপে ফোঁটা ফোঁটা পানিতে ভিজিয়ে নেয়
প্রিয়তমার মুখের ভেতর না-ঢোকাতে পারা পিপাসার্ত জিভ।
মৃগতৃষার ভেতরে অন্ধ অসুখের মতো জেগে ওঠে যেই আজন্ম পিপাসা
সেই বিক্ষত জিভে, সেই তুচ্ছাতিতুচ্ছ জিভে ফোঁটা ফোঁটা জলসেচ দিয়ে
হৃদযন্ত্রের ধুকধুকি চালু রাখে।ব্যাঙের মতো কর্কশ স্বরে কথা বলে।
রুমাল নিংড়ে জল ঝরানোর মতো যৌবন খরচ করে
কৃপণের মতো হিসেব কষে পিপাসা নিবারণ করে
তিরিশের ঢাল বেয়ে প্রানপণে নিজেকে ঠেকাতে ঠেকাতে
দুই হাত তুলে সড়সড় করে নেমে যায় সর্বনাশা চল্লিশের দিকে।

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ