আবরারকে পিটানোর ঘটনাগুলো টেলিভিশনে শুনলে খুব যন্ত্রণা হয়। কিভাবে পারলো প্রায় একই বয়সী ছেলেটিকে এতোগুলো ছেলে মিলে এমন নিষ্ঠুরভাবে পিটাতে?

কতো খবরই আসতেছে। কতো খবরই ভাসতেছে। কিন্তু ঘুরেফিরে একটি কথাই বারবার মনে আসছে, এক মারা যাওয়া আবরার এবং তার হত্যাকারী আরও ১৯ টি আবরার আজ ধ্বংসের মুখে। অথচ এরা জাতির সম্পদ হতে পারতো।
যে ছেলেগুলো প্রত্যয়ী হওয়ার কথা ছিলো, প্রতিশ্রুতিশীল হওয়ার কথা ছিলো, সুনাগরিক হওয়ার কথা ছিলো, তারা হয়ে যায় সহপাঠীর হত্যাকারী! কতোটা নিষ্ঠুরতা বুকে বাসা বাধলে এমনটা হতে পারে।
র‍্যাগিং এর মতো একটি নিকৃষ্ট কর্ম এতোকাল যাবৎ ক্যাম্পাসগুলোতে হয়ে আসছে, অথচ এর কোনই প্রতিকার হয়নি এযাবৎ।
আবরারের মৃত্যু ক্যাম্পাসগুলোর কুৎসিত একটা দিককে সামনে নিয়ে এসেছে। এবার যদি শাসকশ্রেণী একটু সজাগ হন। শিক্ষাঙ্গনে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত না করলে আলোকিত প্রজন্ম বের হবে না।

গতকাল দুই কিশোর সন্তানের মা ফোন করেছিলেন। খুব যন্ত্রণাকাতর হয়ে তিনি তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করছিলেন। বারবার অসহায়ভাবে বলছিলেন আর কদিন পর তো আমার সন্তানেরাও পড়তে যাবে, কোন ভরসায় আমরা তাদের পাঠাবো আপা?
দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের এ অবস্থা দেখে বাবা মায়েরা আজ মারাত্মকরকমের আতঙ্কগ্রস্ত তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে।

এই ছেলেমেয়েদের মেধা বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ না দিলে, আমরা কেমন করে তাদেরকে আগামীদিনের সুনাগরিক হিসেবে দেখার আশা করতে পারি?
রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি বর্তমান ছাত্ররাজনীতিকে এমনভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে নিয়েছে যে, পাঠ নিতে এসে অধ্যয়ন নয়, ক্ষমতার ছত্রছায়ায় থেকে পেশিশক্তিতে বলীয়ান হওয়াটাকেই তারা দীক্ষা হিসেবে গ্রহণ করছে। পেশিশক্তি থাকলেই সব হবে। এই দীক্ষাতেই ছাত্ররা শিক্ষার্জন করছে।

দীক্ষা যখন হয় পেশিশক্তিই ক্ষমতা, পেশিশক্তিই ভোগ। তখন মানুষ আর মানুষ থাকে না, হয়ে যায় যন্ত্র, হয়ে যায় কীট।
ভ্রষ্টাচারে বেড়ে ওঠা এদের থেকে তবে কী আশা করতে পারি আমরা?

0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ