অনলাইনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই দেখছি কিছু ছবি শেয়ার দিচ্ছেন যেখানে বলা হচ্ছে- অমুক নেতা, তমুক নেতা নিজের ক্ষেতের সবজি বিলিয়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউতো বাহবার ফুলঝুরি ফুটাচ্ছেন মন্তব্যে। করোনা দূর্যোগে কর্ম বিহীন অসহায়দের দান করা অবশ্যই ভালো কাজ কিন্তু এর পেছনের যৌক্তিক কারনটা আসলে কি তাও আমাদের ভাবতে হবে কিন্তু।

লকডাউনের এই পরিস্থিতিতে এখন প্রান্তিক চাষীদের চরম দুরবস্থা যাচ্ছে। ফসলের ন্যায্য মুল্য না পেয়ে অনেকেই তাদের উৎপাদিত ফসল গ্রামবাসীদের বিলিয়ে দিচ্ছেন। আর এই অবস্থা চলতে থাকলে কিছুদিন পরে সবজির দাম হবে আকাশচুম্বী। এর কারন হচ্ছে পাইকারি বাজারে সবজি বেচে কৃষকের উৎপাদন খরচ উঠছে না। এমন কি সবজি তুলতে কৃষি শ্রমিকের মজুরি পর্যন্ত উঠছে না। তাই অনেক সবজি চাষি ক্ষেতের সবজি না তুলে ক্ষেতে নষ্ট করে দিচ্ছে।

কেউ কেউ করোনায় কর্মহীন নিজগ্রামের হতদরিদ্র শ্রমজীবি পরিবার, দরিদ্র পরিবার, নিম্নবিত্ত পরিবার ও প্রতিবেশীদের যত প্রয়োজন সবজি ক্ষেতে উৎপাদিত সবজি বিনামূল্যে তুলে নিতে উৎসাহিত করছে। এতে করোনায় লক ডাউনে পরে কর্মহীন দরিদ্র পরিবার গুলোকে বাজার হতে সবজি কিনতে হচ্ছে না। সবজির দাম না পেয়ে মহাবিপাকে পড়েছে সবজি চাষিগণ।

সরকারের উচিত চাষিরা যাতে এসব পণ্য ন্যায্যমূল্যে বাজারজাত করতে পারে সে ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে সরকারি উদ্যোগে উৎপাদিত ফসল জীবাণুমুক্ত করে বাজারজাত করতে কৃষকদের সহায়তা করতে হবে।

আমিও উত্তরবঙ্গের মানুষ, গ্রামেই থাকি। এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের কি হাল হচ্ছে তা চোখের সামনেই দেখছি। কাজেই কেউ যদি মনে করেন সবজির মুল্য পাচ্ছিনা তাই মানুষকে বিলি করে দেই সেখানে দলের নাম নেয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা। এতে আপনাদের এসব মহতি উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

তাই মানসিকতার পরিবর্তন করুন। কারো জন্য কিছু করতে চাইলে কোন দলের,সংগঠনের বা প্রতিষ্ঠানের নাম নেয়া জরুরী না। আপনার কাজই আপনাকে মুল্যায়ন করবে।

ন্যায্যমুল্য না পেয়ে নিজ ক্ষেতের সবজি বিলিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই। সেখানে দলীয় পরিচয় দেয়া আদৌ কতটুকু যৌক্তিক সেটাই প্রশ্ন।

0 Shares

১৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ