
,অরুদা,
তোমার চিঠিটা একটু আগে মাত্র পড়ে শেষ করলাম।প্রথম দু’মিনিট অবশ্য বুকভরে শুধু ঘ্রান নিয়েছি,তারপর বুকে ছুঁইয়ে রেখেছি,তারপর পড়েছি। পড়ার সনয় চোখ দুটো বার বার ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল। চোখ মুছে মুছে পড়তে হলো।ওহ, হ্যা,তোমার উপর খুব রেগে আছি আমি। এভাবে যদি খাওয়া- ঘুম বাদ দিয়ে ক্যাম্পে ক্যাম্পে লোকের সেবা করতে থাকো,একদিন দেখবে তোমার সেবা করার আর কেউ থাকবে না। , বুঝলে? সেদিন দেখবে ঠিক এই বোকা অনুপমার কথাই মনে পড়বে।তুমি কাকিমার খেয়াল রাখো তো, অরুদা?
নিজের খেয়াল রাখো তো? আমাদের এদিকে কবে আসবে তুমি? কবে তোমায় দেখতে পাবো? ওদিকে যে শুনেছি অনেক লোকজন মরে যাচ্ছে। তুমি কাকিমাকে নিয়ে এখানে চলে আসছো না কেন? তোমায় দেখার জন্য যে চোখ দুটো বড্ড জ্বালাতন করে।
বিঃদ্রঃ –(১) বাবার চাকরি হয়ে গেছে।
(২) ঠাকুরমার শরীরের অবস্থা ভাল নয়।
ভালোবাসা আর আদর নিও
তোমার অনু।
ওরে, খোকা, আমারে রেডিওডা ধরাইয়া দে দেখি । নিজের দ্যাশের অবস্থা ডাও একটু জানতি পারতেসি না। তোগো হাতে আমি বন্দী হইয়া গেলাম । হতচ্ছাড়া বেইমান কতগুলান।তোরা এত নিষ্ঠুর ক্যান রে? সকলে মরলি নাকি? এদিকে আয়রে কেউ একবার।
অনুর বাবা মনোযোগ দিয়ে জুতোর ফুটো সেলাই করছিলেন। গত কয়েকদিন এত বৃষ্টি পড়লো,কোলকাতা শহরের আনাচে কানাচে সব পানিতে ডুবে গেছে।তাই বলে কাজে যাওয়া তো আর মাফ নেই। রোজই কাজে যেতে হচ্ছে।আর এর মধ্যে জুতো জোড়ার বারোটার বেজে গেছে।এরকম একটা সুক্ষ্মকাজ করার সময় বার বার ডেকে বিরক্ত করলে কারোরই ভাল লাগার কথা নয়। তবুও প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে বৃদ্ধা মায়ের ঘরে এসে রেডিওটা অন করে দিয়ে আবার নিজের কাজে চলে যান।রেডিওটা থেকে কেমন যেন ঝিঝিঝি— ইইশশ শব্দ বের হচ্ছিল।সাধারণত আবহাওয়া খারাপ থাকলে এদিকটায় রেডিওর সিগনাল খুব ভাল পাওয়া যায়না। অনু নিজের ঘরে বসে চিঠি লিখছিল তখন।কলমের কালি শেষ হওয়াতে দোয়াত থেকে কলমে কালি ভরছিল, হঠাৎ পাশের ঘর থেকে ঠাকুরমার চেঁচামেচি শুনে ভড়কে গিয়ে ” তোমার অনু ” অংশুটুকু লেখার সময় হাতের কলমটা কেঁপে উঠলো। এত যত্নে লেখা চিঠিটার উপর দোয়াতের কালি অনেকখানি ছড়িয়ে গেল।কলমে কালি ভরার পরে ভুলে দোয়াতের মুখ বন্ধ না করার জন্যই এসব হলো।অনু একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে ঠাকুরমার ঘরে বিছানার কাছে এসে খাটের চৌকাঠ ধরে দাঁড়াল।
কি করতাছিলিরে হারামজাদি? তোর বাপেরে কইলাম রেডিও ডা ধরাইয়া দিতে।পোলাডা কি ধরাই দিছে খালি ঘ্যানঘ্যান করে শব্দ বাইর হইতাছে,তুই কই মরছিলি ?
কাজ করছিলাম ঠাম্মা। আজ তো আকাশের অবস্থা ভাল নয়। রেডিওর সিগনাল পাওয়া খুব মুশকিল হবে। কি আর করা বলো?
ভালা কইছোস,তোগোর কারোরই কিস্যুই করার নাই।দ্যাশ ছাড়ছোস একডা বছর হয় নাই,কারোর কোনো চিন্তা নাই।ওরে,দ্যাশের অবস্থাডা খুব খারাপ রে? — এইডা কিন্তু আমাগো পরদ্যাশ। নিজেরা ভালা আছিস বইলা নিজেগো জায়গার কথা ভাববি একডু? অনু অবাক হয়ে দেখলো ঠাকুরমার চোখে পানি এসে গেল।
ঠাকুরমার বয়স প্রায় সত্তুরের কাছাকাছি। দু’ বছর ধরে পুরোপুরি বিছানায় শয্যাশায়ী । ছয় মাস আগে এক সকালে যখন ওরা পুরো পরিবার ওপার থেকে ওদিকে চলে আসছিলা,তখনও এই একটি মানুষই প্রচুর জেদ দেখিয়ে বলে যাচ্ছিল সে কোথাও যাবেনা। তার দেশ, তার স্বামীর ভিটেমাটি, নিজের জায়গা – অধিকার ছেড়ে কোথাও যাবেনা।
তার কথা না শুনে অনুর বাবা ও দাদা একরকম পাজাকোলে করে সেই সুদূর বিক্রমপুর থেকে বুড়ি ঠাকুরমা সহ কোলকাতায় পাড়ি জমাল। আর বিক্রমপুরের প্রকান্ড সেই বাড়িতে বিশাল তালা ঝুলছে।অনুর বাবা তখন অস্বাভাবিক গাম্ভীর্যের সঙ্গে হাঁটছিলেন। অনুর দাদা স্বভাব মতই সবাইকে সামলাতে ব্যস্ত।অবশ্য সেই ব্যস্ততা কিছুটা লোক দেখানো।তবে অনুর ঠাকুরমার মত অত হাহাকার করে কান্না অন্যান্য কেউ করেনি। তবে অনুর তেমন কিছুই মনে হচ্ছিল না। শুধু একবার ভাবনায় পড়েছিল,যদি আজ মা বেঁচে থাকতো, তাহলে মায়ের হাবভাব কেমন হতো ? বাড়ি ছাড়ার আগের দিন অনু অরন্যদের বাড়িতে গিয়েছিল। অরুদা বাড়িতে ছিলনা। অরুদার মা অনুকে বুকে জড়িয়ে খুব কান্না করলো। কেঁদে কেঁদে বললো, “তুইও যদি চইলা যাস, মা, আমার পোলাডা যে আর কারোরই কথা হুনবো না! ও তো আমার কথা হুনা ছাইড়া দিছে রে।এত কষ্ট কইরা শহরে ডাক্তারী পড়াইছি,পোলা আমারে কয় চাকরি করবেনা। ওরে একটু বুঝাবি মা৷? ও যে, যাই কয় তাই কইরা বসে রে! “
অনু একটু মুচকি হেসে বলেছিল,কাকিমা তুমি ভেবোনা অরুদা ঠিকই সময়মত কাজ খুঁজে নেবে। অরুদা জানতো অনু পরের দিনই চলে যাবে।তবু দেখা করতে বাড়ি এলোনা।
অনু ইচ্ছে করেই রাত নয়টা পর্যন্ত অরুদের বাড়িতেই বসেছিল। তবুও অরুদা এলোনা। ছোট- ছোট পা ফেলে বাড়ি ফেরার সময় অনু বার বার পিছনে ফিরে তাকাচ্ছিল।পরেরদিন ভোরবেলায় যখন ওদের ভাড়ার গাড়ীতে উঠতে যাচ্ছিল ছেড়েছুড়ে চলে যাবে বলে,হঠাৎ কোথা থেকে যেন অরুদা উদয় হলো। অন্য সময় হলে অনু বাবা ও দাদার সামনে লজ্জা পেতো,কিন্তু সেদিন আর লজ্জা পেলনা। সেদিন পুরোগ্রামের লোকজন, বাবা,দাদা,ঠাকুরমা– কারোর সামনেই অনুর আর লজ্জা করলো না৷ অরন্যের হাত দুটো ধরতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল বটে তবে অনু -অরুর সে হাত ধরলো না। শুধু একটি ছোট্ট কাগজ চট করে হাতে গুজে দিয়ে অরন্যের কানে ফিসফিস করে বললো ” চিঠি দিও “
অনু রেডিওটা হাতে নিয়ে ইচ্ছে করে ঝাঁকাঝাঁকি করলো কিছুক্ষণ। সন্ধ্যার সময়টাতে স্বাধীন বাংলা বেতারের খবরটা ঠাকুরমার শুনতেই হয়।কোনো দিন যদি কোনো কারনে খবর শুনতে না পারেন,তাহলে তিনি অস্থির থাকেন সারাক্ষণ। শত
ঝাঁকাঝাঁকি করলেও যে রেডিওর সিগনাল পাওয়া যাবেনা সেটা অনু জানে। কিন্তু ভাগ্য ভাল হলে যা হয়, অনুর মনে হলো ভাগ্যদেবী ওদের বাড়ির পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন,অতঃপর হঠাৎ ই রেডিওর ভিতর থেকে বিশাল শব্দে বেজে উঠলো —
বাংলার ভাইয়েরা আমার! যদি মানুষের মত বাঁচতে চান,—
এই হাজার হাজার সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।—+ বংগবন্ধু যে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছেন,যদি সেই স্বাধীনতা রক্ষা করতে চান,– যদি-++
অনুর এসব শুনতে ভাল লাগেনা। ইশ! যদি রেডিওতে অরুদার কোনো খবর এনে দিত সব লোকগুলো। তাহলে হয়তো রেডিও শোনার একটি কারণ খুঁজে পেতো অনু।
এই দেশ- ফেস, ঝামেলা, যুদ্ধ কি হবে এসব করে? অনুর কাছে তো যেখানে ওর কাছের মানুষেরা,সেখানেই ওর দেশ।
দাদা সেদিন মন খারাপ করে বলেছিল ওর বন্ধু ফাহিম চিঠি পাঠিয়েছে। ওদের বাড়িটাকে নাকি সেনাবাহিনী নিজেদের ক্যাম্প বানিয়েছে। অনুর তাও মন খারাপ হলো না। বিক্রমপুরের কথা,ওখানকার বাড়ির কথা আজকাল খুব একটা মনেই পড়েনা অনুর।শুধু অরুদার কথা মনে পড়ে।
আর কখনও কখনও অরুদার মাকে মনে পড়ে। আচ্ছা,ওরা যেমন সব গুটিয়ে এদিকটায় চলে এলো,অরুদা আর তার মা- ও তো আসতে পারতো? ওদের সাথেই না হয় থাকতো? বাবা সব সময় বলেন,”ও দেশ টা আমাদের নয় ওটা মুসলমানদের দেশ ” অরুদা তারাও তো হিন্দু তাহলে? ওরা কেন এদিকে এলোনা? অরুদার উপরে ভীষণ অভিমান হয় অনুর।
অনু, আমি বাজারে যাব রে, খেতে দে আমায়, অনুর দাদা নিখিল ডাকছিল। নিখিল অনুর পাঁচ বছরের বড়। অনু দাদাকে তেমন ভয় পায়না। বাবার সামনে গেলে যেমন ভয়ে তটস্ত হয়ে থাকতে হয়, দাদার সামনে অন্তত কথা বলতে পারে। নিখিল খুব তাড়াতাড়ি খাচ্ছিল।
অনু গলা নামিয়ে আদুরে গলায় বললো, দাদা, আজ আমার একটা চিঠি—-
দে, পোষ্ট করে দেব।
অনু সেই কালি ছড়িয়ে যাওয়া চিঠি টাই দাদার হাতে দিল। নিখিল মুখেভ ভাত নিয়ে চিবুতে চিবুতেই বললো,অনু! তুই ছোট নোস আমি জানি। তবে তোর মনটা বাচ্চাই। বাবা এসব প্রেম– ফেম টের পেয়ে গেলে লংকাকান্ড বাঁধাবে।ধর,তোর বিয়ে,ফিয়ে যদি—
অনু অপ্রকৃতিস্থ হয়ে গেল।নিখিল এবারে অনুর চোখে চোখ রেখে বললো,অরন্য ছেলেটা ভাল,মানছি সেটা। কিন্তু ওর বাপ– দাদারা আমাদের পুকুরে মাছ ধরতো।ওদের তো জেলের বংশ।সেকথা জানিস তো? ওরা দাস বংশ।দাস আর চাটার্জী র বিয়ে হতে দেখেছিস কখনো ? আর তুই ছোট মানুষ,তোর অত সাহসও নেই।
অনু লজ্জা পেল, ভয়ও পেল।মাথা নীচু করে একভাবে দাঁড়িয়ে রইলো। নিখিল বেরিয়ে যাচ্ছিল,অনু দরজার কাছে দাঁড়িয়ে হঠাৎ বোকার মত বলে উঠলো, দাদা তুইও আমাদের সাথে পালিয়ে এলি কেন রে? আমরাই বা কেন এলাম? শুনেছি যে সবাই ওখানে যুদ্ধ করছে৷?
নিখিল এক গাল হেসে বললো,এসব বুঝি তোর মাথায় অরু পাগলটা ঢোকাচ্ছে? ওরে, ওই দেশ স্বাধীন হলেও আমাদের দেশ হবেনা। কার জন্য যুদ্ধ করবো বল তো? অন্যদের স্বাধীন করার জন্য? দরজাটা লাগিয়ে দে, বেরুচ্ছি।
অনু,
লক্ষীটি আমার,
তোর চিঠির কোথাও তুই একবার দেশের কথা বললি না, সোনা ? আমার অনু এতটাই স্বার্থপর হয়ে গেল? আমি গতকাল সারারাত একটা ক্যাম্পে আটকা পড়েছিলাম।কয়েকজন গেরিলা খুব আহত হয়েছিল।আমরা সময় মত না এলে এরা মরেই যেতো। এরা যদি মরে যায় অনু, তাহলে দেশটা আর কোনোদিন স্বাধীন হবে? আমরা যদি এদের বাঁচাতে না পারি, তাহলে এরা আমাদের বাঁচাবে কি করে বল?
ডাক্তারী টা যে পড়েছি,সেতো চাকরি করে টাকা উপার্জন করবো বলে নয়। আর আমার ভাল থাকার কথা বলেছিলি,এদের যখন বাঁচিয়ে তুলি,তার চেয়ে বেশী ভাল লাগেনা রে আমার। দেশ খুব কঠিন সময় যাচ্ছে অনু। প্রতিদিন কতজনের চিকিৎসা করতে করতে দেখি ওরা আমাদের চোখের সামনেই মারা যাচ্ছে।গতকালই আমার কোলের উপর মাথা রেখে ষোলো বছরের একটি ছেলে মারা গেল। আচ্ছা ছাড় এসব কথা। তুই ওপারে আছিস বলে এপারের যুদ্ধের একটুও আঁচও বুঝি পাচ্ছিস না? এখানও শুধু ঘোমটা পরে কবে বউ সাজবি তাই কল্পনা করিস? এবার একটু বড় হ সোনা। স্বপগুলো বড় কর। এখন এই চিঠি একটি রিফিউজি ক্যাম্প থেকে লিখছি। আজ এখানেই সারারাত কাজ করবো। বেচারাদের দু ‘মুঠো খাওয়ার সামর্থ্য টুকুও নাই জানিস? কিভাবে যে সাহায্য করবো বুঝে উঠতে! পারছিনা৷ এই সেবা করা, চিকিৎসা করা ছাড়া আর কিছুই করার সামর্থ্য তো নেই আমাদের।আজকাল মাঝে মাঝে ভাবি,পয়সা ওয়ালা হলে বোধ হয় মন্দ হতো না৷ এমন সময়ে অন্তত এদের খেতে দিতে পারতাম।
এখানে শরনার্থী শিবিরে একটা নতুন বন্ধু পেয়েছি। মেয়েটির নিজের নাম ও মনে নেই আমি ওর নাম দিয়েছি জয়ী। ভারী মিষ্টি মেয়ে রে। আমি বোধহয় এই মেয়েটিকে ভালই বেসে ফেলবো।এত সহজ সরল মানুষ ও যে আমাদের ভিতরে আছে,এর সাথে দেখা না হলে কোনোদিন জানতেই পারতাম না। যতবার দেখি মনের ভিতর এক অদ্ভুত শান্তি পাই। ও না থাকলে প্রতিদিন এত মৃত্যুর মধ্যে সত্যি আমি শ্বাস- প্রশ্বাস নিতে পারতাম না। ওর কথা আর একদিন বেশীকরে বলো।আজ আর নয়। এ চিঠি কবে নাগাত তোর কাছে পাঠাতে পারবো জানিনা। তবে শোন খুব তাড়াতাড়ি তোকে স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে চিঠি পাঠাবো। খুব বেশী দেরি হবেনা। দেখে নিস।
বিঃদ্রঃ —(১) তুই এরপর থেকে কলম ( বলপেন) দিয়েই লিখিস,দোয়াতের কালি দিয়ে লেখা তোর কম্ম নয়।
(২) নিজের শরীরের যত্ন নিস,ও ঠাকুরমার যত্ন নিস।ভাল থাকিস ———– তোর অরুদা।
দু’ দুমাস পরে অরুদার চিঠি এসেছে। সন্ধ্যা থেকেই কারেন্ট নেই। বারান্দায় বসে হারিকেনের আলোয় চিঠি পড়লো অনু। একবার, দু’বার, তিনবার। অনুর বাবা কখন জানি বারান্দায় এসে দাড়িয়েছিলেন,অনু টের পায়নি।
কার চিঠি রে অনু?
অনু শুকনো গলায় বললো, ওদিক থেকে এসেছে, অরুদার চিঠি।
অনুর বাবা বিশ্বনাথ চাটার্জী ওপারে ওকালতি করতেন।এদিকে এসে প্রথম কয়েক মাস কোনো কাজ – টাজ জোটেনি,এখন একজন বড় উকিলের এসিস্ট্যান্টের চাকরি পেয়ে গেছেন।উকিল বাবা মেয়ের গলার অন্য রকম সুর ধরে ফেললেন।হালকা স্বরে বললেন, অত চিঠি চালাচালির দরকার নেই। ওর বাপ- দাদা সবাই মরে গেছে মানছি,তাই বলে ওদের বংশের গায়ে থেকে মাছের গন্ধ মিটে গেছে এমন তো নয়। তার উপর এমন উড়নচণ্ডী ছেলে,। তোর কাছে পয়সা- টয়সা চায় নাকি৷? শোন, এদেরকে তুই এখনো ঠিক চিনতে পারিস নি এরা—-
অনু দাঁতে দাঁত চেপে সব টাই শুনে যাবে এরকম টাই ঠিক করেছিল।হঠাৎ কি জানি কি হলো অনুর ভিতরে । যে বাবাকে দেখলেই ভয়ে তটস্থ হয়ে যায় অনু,তার চোখে চোখ রেখে বললো ” উড়নচণ্ডী গুলোর সাহস তোমাদের চেয়ে বেশী হয় তাইনা বাবা? আর কি জানি বললে,মাছের গন্ধটন্ধ? তোমাকেও তো কাল পাশের বাড়ির কাকু এরকম ই কি জানি বলেছিল তাইনা? ওপার থেকে আসা ফকিরগলোর গায়ে কেমন —-+++
বিশ্বনাথ চাটার্জী মেয়ের দিকে কিছুক্ষণ শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।কিছু না বলে ভিতরে চলে গেলেন।অনুর খুব কান্না পেয়ে গেল,।অনু হাউমাউ করে নিঃশব্দে কাঁদলো ঠাকুরমার ঘরে এসে।অনু ভেবেছিল অন্ধকার ঘর, ঠাম্মা ভাল কিরে কানেও শোনে না। তাই এঘরে নিশ্চিন্তে কাঁদা যাবে। কিন্তু ঠাম্মা শুনে ফেললো।। কানতাসোস নাকিরে? তোর ভীতু ডিম বাবা কিছু কইছে তোরে? কান্দিস না। ওইদিকে পোলাপান কত কষ্ট করতাসে হারামজাদা গুলারে তাড়ানোর লাইগা। অগো কষ্টের কথা ভাব।দেখবি তোর নিজের কষ্ট কম লাগবো
আয়, এদিকে আয় দেহি।
অনু ঠাম্মার গায়ের কাছে ঘেষে বসলো।
অনু,
আজ আর বেশী লিখবো না। প্রথমেই আমার ভালোবাসা নে। আমার বন্ধু রবিন,কমল অয়ন এরা সহ আমাদের এখানে যতজন আছে সবাই তোকে স্যালুট জানিয়েছে। তুই কাকিমার সব গয়না দিয়ে দিলি।আমি তো চাইওনি,তুই দিয়ে দিলি! অন্যসময় হলে খুব বকা দিতাম। কিন্তু আজ আর ফিরিয়ে দেয়ার অবস্থা নেই। মানুষগুলোকে যে বাঁচাতে হবে। তার জন্য অনেক টাকা-পয়সা লাগবে । এদিকের অবস্থা দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। তোকে একটা সিদ্ধান্ত জানানোর ছিল।তুই অনেক দূরে আছিস ঠিকই।তবু তোকে যেহেতু জীবনের সব সিদ্ধান্ত জানিয়ে এসেছি সারাজীবন,এটাও জানাই। আমাকে জয়ীর দায়িত্ব নিতে হবে রে । ওর আমি ছাড়া ত্রিভূবনে কেউ নেই।তাই আমার পক্ষে ওর হাত ছাড়া কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। ক’ দিন বাঁচবো,তার তো কোনো ঠিক নেই,তবে যতদিনই বেঁচে থাকবো ওকে কাছ ছাড়া করবো না। তবে শুধু দায়িত্ব নেয়ার জন্য দায়িত্ব নয়,ওকে আমি ভালোবাসি।খুব ভালোবাসি।যদি ওপারে কোনো দিন
যাই, তোর সাথে দেখা করাবো। তুই ও ওকে ভালোবেসে ফেলবি। ও ভালোবাসার মতই একজন মানুষ।আমাকে আর চিঠি পাঠাস না।যে সরকারী হাসপাতালের ঠিকানায় চিঠি পাঠাতিস সেটা আর নেই, উড়িয়ে দিয়েছে ওরা।আমি এখন পুরোপুরি ছন্নছাড়া,ফেরারী। এখন রাখতে হচ্ছে রে।এখানে ক্যাম্পে ক্যাম্পে শত শত আহত মুক্তিবাহিনীর লোক৷ এদের বাঁচাতে হবে।
আমার এখন অনেক কাজ।ভাল থাকিস।
অরন্য।
অনু চিঠি টা নিয়ে নদীর ধারে স্থির হয়ে বসে ছিল।প্রচুর মানুষ নদীতে গংগাস্নান করতে এসেছে।চারিদিকে ভীষণ শোরগোল। অনু একবার ভাবলো সেও অন্যদের মত নদীতে গোসল করবে কিনা। যদিও সে সাঁতার জানেনা। অবশ্য অনু যে গোসল করতে চায়, তাতে সাঁতার না জানাই মংগল।কোনো দিন যাতে আর তীরে ফিরতে না হয়। সে যদি নদীতে ভাসতে ভাসতে অন্য পারে পৌঁছে যায়? অনু সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলো। নিখিল অনুকে দেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার মত করে বললো ” এতক্ষণ কোথায় ছিলি “? তাও ভাল বাবা বাড়ি ফেরার আগেই চলে এসেছিস।আচ্ছা তোর দোয়াতের কালি ফুরিয়ে গেছে দেখলাম।আজ নিয়ে আসবো? তোর তো আবার দোয়াতের কালির কলম দিয়ে লেখার অভ্যাস।
‘আর প্রয়োজন নেই দাদা,’ অনু শান্ত গলায় বললো।
তুই ঠিক আছিস তো অনু?
হুম!
ডিসেম্বরের ১৭ তারিখে অনুর ঠাকুরমা সকালে মারা গেল।খোশ-মেজাজেই রেডিও শুনেছিল তিনি।সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় লাখ খানেক সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পণ করেছে।যতবার সংবাদপাঠিকা এই লাইন টি পাঠ করেছিল , ততবার নিজের ফোকলা দাঁতগুলো বের করে হাসছিল।আর বার বার বলতেছিল” এইবার হারামজাদা গুলারে লাথি দিয়া বাইর কর ” আর উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিল। এর মাঝে অনুর বাবাকে ডেকে জানতে চাইলো ওরা বিক্রমপুর ফিরবে কবে। সেদিন সকালেও চেয়ারে বসে রেডিও শুনেছিল।হঠাৎ চেয়ার থেকে হেলে পড়লো।অনু রান্নাঘর থেকে পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে দৌড়ে এসে দেখে ঠাম্মা আর নেই। মুখে একটা মুচকি হাসি — যেন বলছে, কি রে হারামজাদারা, তোদের কেমন দিলাম? সাথে- সাথেই ডাক্তার ডাকা হয়েছিল বটে, তবে অনু বুঝে গিয়েছিল, ঠাম্মার যা জানার ছিল তাতো জানা হয়ে গেছে,বেঁচে থাকার আর খুব বেশী কারণ বা ইচ্ছে কোনো টাই তার ছিলনা৷
ঠাকুরমা চলে যাওয়ার পর বেশ কয়েকদিন কেটে গেছে। সেদিন ভর দুপুর বেলা রেডিও টা নিয়ে বারান্দায় বসেছিল অনু। বাবা, দাদা দুজনেই কাজে বেড়িয়েছে।চিঠি লেখার মানুষ ও আর নেই।ভাগ্যিস,কোলকাতার ভাড়া বাড়িটা খুব একটা বড় নয়। নইলে এই বিচ্ছিরি একাকীত্ব অনুকে গিলে খেয়ে ফেলতো।রেডিওতে এতক্ষণ গান চলছিল।খবর শুরু হওয়া মাত্র বন্ধ করার জন্য উঠে দাঁড়াল, ঠিক তখন দরজায় কড়া নাড়ছে কে যেন। বাবা, দাদা একটু আগেই বের হয়েছে,এত তাড়াতাড়ি তো ফেরার কথা নয়। এই ভর দুপুরে, কে আসতে পারে, এই শহরে তো কোনো আত্মীয় – স্বজন নেই? অনু দরজার ফাঁক দিয়ে দেখলো ওর দাদার বয়সী একজন ছেলে । মুখভর্তি দাড়ি – গোফ — দাঁড়িয়ে আছে।
অনু ভিতর থেকেই বললো কে?
এখানে অনুপমা নামে কেউ আছে ন? একটু কথা ছিল। আমি কমল,আমাকে অরন্য পাঠিয়েছে।
অনু অভিমানে কয়েক সেকেন্ড কথা বলতে পারলো না৷ কি বলতে পাঠিয়েছে অরুদা? জয়ী নামের মেয়েটির সাথে ওর বিয়ের খবর? এখন তো দেশ ও স্বাধীন হয়ে গেছে।কি হবে অনুকে জানিয়ে?
অনু দরজা খুললো।” আপনাকে পাঠাতে হলো কেন? সে নিজে আসতে পারলো না? ভেবেছে আমি কথা শুনাবো তাইতো? অনু মৃদু হেসেই বললো।
আসলে– কিভাবে –ই -যে -, বলি কমল নামের ছেলে টি তোতলাতে থাকে।তার পিছনে ছয় বছরের মত একটি বাচ্চা মেয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রথমে অনুর চোখে পড়েনি।সে কমলের পিছন থেকে সরে এসে অনুর হাত ধরে ফেললো।এখন থেকে আমি তোমার সাথে থাকবো?
অনু চঞ্চল হয়ে জিজ্ঞাসা করলো অরুদা কোথায়?
“অরুদা আর নেই দিদিভাই।” কমলের চোখ গড়িয়ে পানি পড়লো।
অনু হেসে বললো, এসব বলতে শিখিয়ে দিয়েছে বুঝি? অরুদা জয়ী নামের মেয়েটিকে বিয়ে করে ফেলেছে নাকি করবে?
বাচ্চা মেয়েটি খিলখিল করে হেসে বলে “আমি ই তো অরন্যের জয়ী। অরন্য মরিয়া গেছে।ওর বুকে গুলি লাগি অনেক রক্ত বেরিয়েছে।অরন্য মরিয়া গেছে।অরন্য মরিয়া গেছে।”
অনু চুপ করে স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। কমল অনুর হাতে চিঠি ধরিয়ে দিল অনু সেটা খুললো না। শক্ত করে হাতের মোঠোয় ধরে অমনি করেই দাঁড়িয়ে রইলো। কমল ভাঙা গলায় বললো,অরুদা গুলি লাগার পর দুই ঘন্টা বেঁচে
ছিল।তখন বললো জয়ীকে তোমার কাছে রেখে যেতে।চিঠি টা পড়বে না? তোমার জন্য অনেক আগেই লিখে রেখেছিল।যুদ্ধ শেষ হলে পোষ্ট করবে। ভেবেছিল স্বাধীন দেশ থেকে —-
অনু কাঁপা গলায় বললো,” অন্তত চিঠি টুকুতে ও থাকুক না, পড়লেই তো শেষ হয়ে যাবে “
কমল কি বলবে আর ভেবে পায়না।জয়ীকে রেখে চলে গেল।
জয়ী আবার অনুর হাত ধরে বললো, ” আমাকে ভিতরে নিবে না? অরন্য যে বলেছিল তুমি খুব ভাল “
এই প্রথম ডুকরে কেঁদে উঠলো অনু।জয়ীকে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বললো,আমি যদি তোর মা হই, তবে কি তোর অরন্য আমায় ক্ষমা করবে মা?
জয়ী কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না। বড়দের বেশীর ভাগ কথা ই সে বুঝে না। তার কাছে মনে হয়,বড় হওয়া খুব বিচ্ছিরি ব্যাপার।
১১টি মন্তব্য
ত্রিস্তান
কি বলবো বুঝতে পারছি না। আপনার লেখা এর আগে পড়েছিলাম কি না মনে নেই। তবে এই লেখাটা পড়তে পড়তে চোখ ঝাঁপসা হয়ে যাচ্ছিলো বারবার। অসম্ভব ভালো লেগেছে। আচ্ছা অরণ্য কি বাস্তব কোন চরিত্র? যদি কাল্পনিক হয় তাহলে অন্তত তাকে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় রেখে অনুপমার সাথে পুনর্মিলন করানো যেতো।
উর্বশী
ত্রিস্তান ভাইয়া/ আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
অরন্যের চরিত্র বাস্তব। পুরো গল্পের সব চরিত্রই সত্য। ভূমিকা দিতে পারিনি প্রথমে,কারণ হিন্দু সমাজের পটভূমিতে যে গোড়ামী আছে তার উপর ভিত্তি করেই লেখা। কম বাশী সব ধর্মের অনুসারীরা
উর্বশী
ত্রিস্তান ভাইয়া/ আপু
সব ধর্মের কিছু অনুসারীগন ছোট খাটো ইস্যু নিয়ে ঝামেলা করেন।যস্র ফলাফল খুব একটা শোভনীয় নয়। এখানেও বংশ পরিচয় নিয়েই দুই পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্ব। একটি ” দাস ” অন্যটি ” চ্যাটার্জি ” এই বংশের মর্যাদা এক নয়। যত শিক্ষিত হোক না কেন। বাপ– দাদারা কি করতেন তাই নিয়েই ব্যস্ত থাকতে অভ্যস্ত।
আমি ডিজিটাল আইনের মধ্যে যাতে না পড়ি, সেজন্য গল্পকে কাট- ছাট করে উপস্থাপন করতে হয়েছে।তার কারণ আমাদের বর্তমান দেশের দিকে খেয়াল রেখে লিখতে হচ্ছে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
মিলন ঘটানো যেতো।হয়তো জয়ীর আর কমলের সাথে যে কোনো অংগহানি করে।কিন্তু তাতে প্রকৃত মিলনে বাঁধা আসতো।অরন্য আর অনুপমার মিলনে দেশ স্বাধীন হলেও নিজেদের মধ্যে কুরুক্ষেত্র লেগে যেতো। যদি মুসলিম আর হিন্দু হতো মিলন হলে হয়তো দুই পরিবার কে বাদ দিয়ে করতে হতো। সে সময়ের ঘটনাবলী তাই সাক্ষ্য দেয়।
অজস্র ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকুন,শুভ কামনা সব সময়।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অনেক খারাপ লাগলো। গুছিয়ে বলতে আবার আসবো। আবারও পড়তে হবে।।
উর্বশী
রোকসানা খন্দকার রুকু আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
সময় করে পড়ে নিবেন আশা করছি। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন শুভ কামনা সব সময়।
সৌবর্ণ বাঁধন
অসাধারণ লিখেছেন। কাহিনী তাল লয়ে কোথাও কাটেনি। একটানে শেষ করে একটা বিষাদগ্রস্ত মুগ্ধতা নিয়ে যেন বসে থাকা। শুভকামনা।
উর্বশী
সৌবর্ণ বাঁধন ভাইয়া,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এরকম মন্তব্যে লেখার আগ্রহ বেড়ে যায়।আবারও ধন্যবাদ। লেখার মাঝে নতুনত্ব খুঁজে পাবার চেষ্টা করছি।
আমার অসমাপ্ত ডাইরির কিছু লেখা সোনেলায় আছে,সুযোগ হলে পড়বেন।সঠিক ধারায় এগিয়ে যাচ্ছি কিনা সেটা জানা ই দরকার।
এখানে সবাই অনেক ভাল লিখেন,অনেক এক্টিভ থাকেন। সেটাই মনে হয় ভাল লেখার চাবিকাঠি।
আমি সকলের মত নিয়মিত হতেই পারছিনা। সকলের লেখা কম বেশী পড়লেও কমেন্ট করার সুযোগ কম।
আশা করছি এভাবেই পাশে থাকবেন।ভাল ও সুস্থ থাকুন অফুরান শুভ কামনা সব সময়।
আলমগীর সরকার লিটন
খুব সুন্দর লেখেছেন দিদি
উর্বশী
আলমগীর সরকার লিটন ভাই,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
সময় করে পড়েছেন,অজস্র শুভ কামনা সব সময়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
লেখাটি পড়েই বুঝেছি , সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা। অসাধারণ লিখেছেন আপু। হিন্দুদের গোড়ামিটাই শেষ করে দিলো। শেষটুকু চমকপ্রদ। জয়ীর বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে আগে থেকে একটুও বোঝা যায়নি সে যে বাচ্চা। অসংখ্য ধন্যবাদ সেসময়ের ঘটনাগুলো এমনভাবে উপস্থাপন করার জন্য। অফুরন্ত শুভকামনা রইলো
উর্বশী
সুপর্না ফাল্গুনী আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
সঠিক বলেছেন আপু।অনেক কাট– ছাট করে উপস্থাপন করতে হয়েছে।আমায় ডিজিটাল আইনের মনে করিয়ে সাবধান করা হয়েছে।সত্যি ঘটনাও পুরো লেখার উপায় নেই। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কাজ করি আমরা।কিন্তু আইন কি করে?
সময় করে পড়ার জন্য অজস্র ভালোবাসা রইলো। ভাল ও সুস্থ থাকুন শুভ কামনা সব সময়।