কি নির্মম! কি বিভৎস! কোথায় বাস করছি আমরা। দিন দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত ব্যস্ততম এলাকায় গাড়ির বাম্পারে আটকে থাকা এক ব্যক্তিকে প্রায় এক কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। পুরো রাস্তায় পড়ে থাকে রক্ত আর ক্ষত বিক্ষত অংশ। কতো নিষ্ঠুর আচরণ।
গাড়ির চাকার নিচে ছোট ইটের টুকরা পরলেও চালকের টনক নড়ে যায়। আর আস্ত একটা মানুষ আটকে আছে, অথচ চালক দিব্যি গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। শীতল মাথার কর্মকাণ্ড। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ উক্ত নারীকে বহনকারী মোটরসাইকেলকে পিছন থেকে একটি প্রাইভেট কার ধাক্কা দেয় ফলে নারী পরে গিয়ে গাড়ির বাম্পারে আটকে যান। এসময় গাড়ির চালক গাড়ি চালিয়ে যেতে থাকেন। গাড়ির চালক তথাকথিত সুশিক্ষিত।সভ্য সমাজের সভ্য ব্যক্তি। শুধু তাই নয় একসময় দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এর শিক্ষক ছিলেন। মানসিক বিকারগ্রস্ত এ শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখতে পেরেছে, সে জিজ্ঞাসা হয়তো শুধু প্রশ্নবোধক হয়ে থাকবে।
আজ কয়েকদিন দিন যাবৎ আর্জেন্টিনার জার্সি পর ছোট্ট একটি মিষ্টি মেয়ের ছবি ফেসবুকের ওয়াল জুড়ে ঘুরছে। এই মিষ্টি মেয়েটির নাম আয়াত। আয়াত বাসা থেকে মাদ্রাসায় যাচ্ছিল। সে আর বাসায় ফিরে আসে নাই। মানুষরূপী এক পশু আয়াত কে হত্যা করে। শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। আয়াতকে টুকরা টুকরা করে ফেলে । এবং টুকরো অংশ গুলো সাগরে ভাসিয়ে দেয়। জানা গেছে আয়াত কে পরিকল্পিত ভাবে অপহরণ করা হয় মুক্তিপণ আদায়ের জন্য। আয়াত চিৎকার দিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। সেই খুনিই আবার আয়াত কে খুঁজে বের করার নাটক করে। কি বিচিত্র সেলুকাস। এদের কর্মকান্ড দেখে বনের হিংস্র পশুরা লজ্জা পাবে।
আয়াতকে ফিরে পাবো না। ফিরে আসবে না গাড়ির বাম্পারে আটকে যাওয়া রুবিনা। তাদের হত্যার বিচার হবে কি না তাও জানি না। শুধু বলবো জাতি হিসেবে আমি আজ লজ্জিত। আমাদের অবয়ব টা হয়তো মানুষের। আমাদের ভিতরে লুকিয়ে আছে এক এক টা মানুষরূপী জানোয়ার। কোন মানুষ, মানুষ কে এভাবে হত্যা করতে পারে না । মানুষ হিসাবে আমরা কি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য। তবুও তোমাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী।
ক্ষমা করো , আজি ক্ষমা করো মোদের। হিংসা লোভ-লালসায় জর্জরিত মানুষের ভিতরের পশুত্বকে নিবারণ করে। জাগিয়ে তোলো মানবিক আত্মাকে।
৮টি মন্তব্য
নার্গিস রশিদ
বড়ই বীভৎস,নিষ্ঠুর মানসিকতা সম্পন্ন কাজ যা একজন শিক্ষকের কাছ থেকে আশা করা যায়না । দুঃখজনক !
সত্যি আমারা কোন দিকে যাচ্ছি। অনেক ধন্যবাদ এই বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।
হালিমা আক্তার
আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে মানবিকতার কোনো সম্পর্কই নেই। এখন শিক্ষার দৌড় হচ্ছে কে কার আগে যেতে পারে। হাজার হাজার জিপিএ ফাইভ আছে কিন্তু একজন সত্যিকারের মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
মানুষের অমানবিক নিষ্ঠুর পশুসুলভ আচরণ আমাদের হৃদয়কে প্রতিনিয়ত ক্ষত-বিক্ষত করছে।
হালিমা আক্তার
সত্যি বলেছেন। এখানে মানুষ হিসাবে আমরা খুব অসহায়। প্রতিনিয়ত মানুষ তার মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলছে। সবচেয়ে বড় কথা সেই দলে তো আমি ও আছি। চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
খাদিজাতুল কুবরা
আপা বাচ্চাটার ছবি যতবার চোখে পড়েছে স্ক্রল করে গিয়েছি। এত নির্মমতায় ছেয়ে গেছে আমাদের মন! সত্যি বড় কঠিন সময় চলছে
হালিমা আক্তার
কি মায়াবী মুখ, কতটা মনুষ্যত্ব হারালে একজন মানুষ হত্যা করে আবার টুকরো করতে পারে। অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
বন্যা লিপি
আমরা প্রস্তত আরো আরো বেশি লজ্জিত হতে। শুধু অপেক্ষা। এরপর আর ভালো দিন আসে কিনা তার অপেক্ষা……
হালিমা আক্তার
সব কিছুরই শেষ আছে, হয়তোবা সব হারিয়ে আবার নতুন করে শুরু হবে। সেই সোনালী ভোর হয়তো বা আমাদের দেখা হবে না। তবুও ভোর আসুক, আঁধার কেটে যাক। চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।