২০২০ বছরটা শুরুই হয়েছিলো একরাশ ঘণ অন্ধকার কালো মেঘ নিয়ে।নশ্বর পৃথিবীর অসভ্য মানুষগুলোকে সভ্যতায় ফিরিয়ে আনতে করোনা ভাইরাস নামক এক মরন ঘাতক রোগ নিয়ে পৃথবীর মানুষ ২০১৯ সালের শেষে  ২০২০ সালটি বরণ করে নিলেন।বিষে ভরা ২০২০ সালটি ফিরে গিয়ে ২০২১ নতুন সাল এলেও বিশ্ববাসীর মনে করোনা হিংস্রতার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে শংকা থেকে যায়।অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে বার বার রঙ পাল্টানো করোনা আবারো আসছে তার নতুন রূপে নতুন ভাবে মানব ধ্বংসের মানস কামনা নিয়ে তবে আশার আলো হল ইতিমধ্যে এই মরন রোধ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আবিস্কারে বিশ্ব অনেকটা সাফল্যের দ্বারপ‍্রান্তে এসে পৌছে গেছে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু গত ২০২০ বছরটিতে করোনায় মানুষের জীবন জীবিকাকে করেছে বিপন্ন,কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য প্রিয় মানুষদের!যাদের আমরা আর ফিরে পাবো না।পৃথবীতে তাদের এই অনাকাঙ্খিত শুন্যতায় আমরা অভাব ফিল করব যুগ যুগান্তর।

বিষে ভরা বিশ সালে করোনা এতোটাই ভয়য়াবহ ছিলো যে কিংবা মনুষকে এতোটাই ভাবিয়ে তুলে ছিলে যে বিশ্বে মানব সভ্যতার ইতিহাসে অমানবিক এমন ঘটনা  আর কখনো  ঘটেনি।অস্থিরতায় ভরা ছিলো মানুষের জীবন জীবিকা।

এমনো দেখা গেছে করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনে ছেলে তার মাকে, মা  তার ছেলেকে অসহায় করে হাসপাতাল কিংবা রাস্তায় ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলেন।মানব জাতি একটি মুহুর্তের জন্যও ভাবেনি ফেলে যাওয়া মানুষটি কিছক্ষণ আগেও তার আত্মার আত্মীয়  ছিলো। কারো মা কারো ছেলে কারো বাপ ভাই।

করোনা আক্রান্ত অসহায় শিশুটিও ফ্যাল ফ্যাল করে শুধু চেয়ে রয়েছে তার মা বাবার দিকে আদর সোহাগের অপেক্ষায়।বিশ্বের সকল ধর্মীও উপসনালয়,মসজিদ,মন্দির,গীর্জা সবগুলো প্রার্থণার দরজা বন্ধ করতে বাধ্য করেছিলো।এমন কী করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যাক্তির মুখ দেখাতো দুরে থাক তার সমাধি করা হত লোক চক্ষুর আড়ালে,অনেককে ভাসিয়ে দিয়েছে সাগর নদীতে! অনেককে মাটি পুতে রাখা হয়েছে কিংবা জ্বলন্ত আগুনের শিখায় জ্বালিয়ে দিয়ে ছাই ভষ্মে বাতাসে উড়িয়ে দিয়েছেন।পৃথবীর অসভ্য মানুষগুলোকে ব্যাবহারিক সভ্যতায় ফিরিয়ে আনতে প্রতিরোধে জীবানুনাষক দিয়ে হাত মুখ পরিস্কার রাখা, মাস্ক পরিধানে বাধ্য করেছে।

একদিকে জীবন বচাতে অন্য দিকে জীবন চালাতে জীবিকা সন্ধান কর্মস্থল হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ।অনেকে জীবন চালাতে হিমসিম খেয়ে আত্ম হ্ত্যার পথও বেছে নিয়েছেন।

এমনি এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে কেটে গেল বিষে ভরা ২০২০ সাল- এলো ২০২১ নতুন সাল করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আবিস্কারে নতুন বার্তা নিয়ে।দেখা যাক ২০২১ সালটি  সবার অস্থিরতার জীবনটি  কেমন যায়।

স্বাভাবিক ও করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে যে সকল প্রিয় অভিজ্ঞ জ্ঞনীগুণী স্ব-জনদের হারিয়েছি তাদের মধ্যে হতে সংক্ষিপ্ত ভাবে কিছু প্রিয় মানুষের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।তাদের পরিচয় করিয়ে দেবার মত কিছুই নেই তারা নিজেরাই নিজেদের কর্ম দক্ষতা দিয়ে বাংলাদেশ তথা পুরো বিশ্বের কাছে সমাধীত,চির অম্লাণ হয়ে আছেন এবং থাকবেন এবং পৃথিবী যত দিন রবে ততদিন তারা পৃথিবীর মানুষের হৃদয়ে শ্রদ্ধায় স্বরণে অমর হয়ে থাকবেন।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশ হতেও করোনায় আমরা হারিয়েছিলাম অসংখ্য পুলিশ, ডাক্তার. কবি সাহিত্যিক. জ্ঞানীগুণীজন।তাদের মধ্য হতে কেবল খুব পরিচিত কিছু প্রিয় মুখ বিয়োগান্তের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

বরেণ্য অভিনেতা বড় চাচা আলী যাকেরঃ

প্রথমে তার প্রতি  গভীর শ্রদ্ধা জানাই।মুলত তাদের শক্তিমান অভিনয় নির্দশনার নাটক সিনেমা দেখতে দেখতে আমরা বড় হয়েছি।মরণ ব্যাধি ক্যান্সারে সাথে দীর্ঘ প্রায় চারটি বছর লড়াই করেছেন।২৭ নভেম্ভর বিষে ভরা ২০২০ সালে ৭৬ বছর বয়সী এ মানুষটি এ পৃথিবী হতে চির বিদায় নিলেন।হয়তো আরো কিছু কাল বেচে থাকতেন সস্কৃতি অঙ্গণ হয়তো আরো কিছু সম্মৃদ্ধ হতো সর্বোনাসী ঘতক করো না তা আর হতে দিল না।সত্তর হতে নব্বই বিং শতকের মঞ্চ টিভির দাপুটে অভিনয়ে দর্শক নন্দিত আরেক অভিনেত্রী সারা যাকেরের স্বামী  এবং ইরিশ যাকেরের পিতা।একুশে পদক প্রাপ্ত  এই গুণী মানুষটি ভক্তকুলে বেচে থাকবেন আজীবন।

এন্ড্রু কিশোরঃ
আমার সারা দেহ খেয়োগো মাটি,আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান,আমার বুকের মধ্য খানে মন যেখানে হৃদয় সেখানে,জীবনের গল্প,পদ্ম পাতার পানি নয়,সবায়তো ভালবাসা চায়, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা,‘ওগো বিদেশিনী,‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে ইত্যাদি সিনেমা এবং দেশাত্ববোধক জনপ্রিয় গানের গায়ক দয়াল বাবার ডাকে সারা দিয়ে ৬ জুলাই ২০২০ সন্ধ্যা সাতটা তের মিনিটে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।আট বার চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত এই শিল্পী দীর্ঘকাল ব্লাড  ক্যান্সারে ভুগছিলেন করোনা কালে তিনি চির তরে চলে গেলেন।

কে এস ফিরোজঃ
নাট্যদল থিয়েটার দিয়ে ফিরোজের পথ চলা।অসংখ্য মঞ্চ ও টিভি নাটক তার মধ্যে ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’, ‘কিং লিয়ার’ ও ‘রাক্ষসী’ নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের  মন কেড়ে নেয়।প্রথম জীবনে সে সেনাবাহিননীতে ছিলেন।করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে মারা যান।

সাদেক বাচ্চুঃ

চলচ্চিলের খল অভিনেতা  সাদেক বাচ্চু।কে না চিনেন!দূর্দান্ত তার অভিনয় কৌশল দিয়ে মঞ্চ টিভি এবং সিনেমাতেও সমান তালে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ৬৬ বছর বয়সী সদেক বাচ্চু শরীরে হৃদরোগসহ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন।৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়া হলে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। অবশেষে ১৪ তারিখে মৃত্যু বরণ করেন।

মিনু মমতাজঃ

বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২২ সেপ্টেম্বর সাথে করোনা কালের ভয়বহতায় অমানবিক ইতিহাস সৃষ্টি করে গেলেন।দীর্ঘকাল যাবৎ তিনি কিডনি ও চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন।হঠাৎ ঠান্ডা জ্বরে অসুস্থ হলে করোনা সন্দেহে তার আত্মীয় স্বজনরা তাকে হাসপাতালে নিলে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।অতপর তাকে করোনা বিশেষ বিভাগে ভর্তি করানো হয় এবং চিকিৎসা চলছিল।সেই চিকিৎসা বিল বাবদ ৩লক্ষ ৪০ হাজার টাকা বাকী ছিলো।তার মৃত্যুর হবার কথা শুনে বিল পরিশোধ করতে হবে ভেবে তার লাশ নিতে আসতে চাইছিলেন না তার আত্মীয় স্বজনরা অথচ কয়দিন আগেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার চিকিসা বাবদ তাকে ৫লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।অবশেষে অভিনয় শিল্পী সংঘ এবং তার এক ভাগ্নীর সহায়তায় তার দাফন কাফন সম্পর্ন হয়।

অভিনয় ও কণ্ঠ শিল্পীদের মধ্যে করোনা কালে বিভিন্ন রোগ ও শ্বাস কষ্ট ফুসফুস আক্রান্তে আরো যারা মৃত্যু বরণ করেছেন তাদের মধ্যে বেদের মেয়ে জোৎস্না খ্যাত প্রযোজক পরিচালক মতিউর রহমান পানু,পাখির বাসার মতো দুটি চোখ তোমার, ঠিক যেন নাটোরের বনলতা সেন’ ঠোট মেলানো নায়িকা জবা,অভিনেতা রনা হামিদ, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রা্প্ত ‘ভালোবাসার মূল্য কত’, ‘ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই’, ‘মনেরও রঙে রাঙাব’, ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায় গানের সূরকার,সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠ শিল্পী আজাদ রহমান এছাড়াও শত শত সূরের যাদুকর আলাউদ্দিন আলী।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যান আট বারের জাতীয় চলচচিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত আমিনুল ইসলাম মিন্টু, যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুক্তি সেনা সহ একাধীক গানের স্রস্টা সেলিম আশ্রাফ মারা যান ২মার্চ,২০ জানুয়ারী ২০২০ মারা যান অভিনেত্রী নির্দেশক ও আবৃত্তিকার ইশরাক নিশাত,৬জুন মারা যান হাজারো সিনেমার পরিচালক এস আলম,১৫ মে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান টিভি নৃত্যশিল্পীর সাবেক সভাপতি নৃ্ত্য শিল্পী অভিনেতা হাসান ইমাম,২৮ জুলাই চিত্র পরিচালক আফতাব খান টুলু করোনায় মারা যান।

করোনায় বাংলাদেশের আরো যাদেরকে আমরা হারিয়েছি তারা প্রত্যেকে ছিলেন স্ব স্ব অবস্থান থেকে দেশের এক একটি নক্ষত্র।যা ভবিষৎ উন্নয়ণশীল বাংলাদেশ গড়তে অনেকটা অভাব অনুভুত হবে।কারো ছিলো অঢেল অর্থবিত্ত কারো ছিলো অপরিসীম ক্ষমতা জনপ্রিয়তা তবুও শেষ রক্ষা হয়নি সর্বনাসী করোনার ছোবল হতে।আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সংক্ষিপ্ত ভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করছি।

নুরুল ইসলাম বাবুল

যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা।দেশের বিশিষ্ট সেরা ব্যাবসায়ীদের একজন হলেন তিনি।বিভিন্ন রপ্তানী কারক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও তার রয়েছে সংবাদ মাধ্যম সহ যমুনা ফিউচার পার্কের মত দেশ সেরা শপিংমল।১৪ জুন তার করোনা ভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়লে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।লোক মুখে জানা যায় তিনি ডাক্তারদের বলেছিলেন আমার যত সম্পদ আছে সব আপনারা নিয়ে নিন তবুও আমাকে বাচান।এই ডাক্তার সেই ডাক্তার মুহুর্তে মুহুর্তে স্পেশিয়ালিষ্ট ডাক্তারদের জুড়ি বোর্ড গঠন করেও তার শেষ রক্ষা হয়নি।১৩ জুলাই ২০২০ না ফেরার দেশে চলে যান।

ডা.আনিসুজ্জামান

অধ্যাপক ড.আনিসুজ্জামান দেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ,লেখক, ও জাতীয় অধ্যাপক ছিলেন।তার কর্মে তিনি একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক পান এছাড়ও ভারত সরকারের পদ্মভূষণ সন্মানও অর্জন করেছিলেন।।তিনি ১৪ মে ২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান

হেমাটোলজিষ্ট অধ্যাপক মনিরুজ্জামান

অধ্যাপক কর্নেল অবঃ মোঃ মনিরুজ্জামান দেশের হেমাটোলজিষ্ট ও ল্যাবরেটরি মেডিসিন এর অন্যতম সেরা স্পেশালিষ্ট ছিলেন।আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেলের কাজ শেষ করে বাড়ী ফিরে ইফতারের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে সম্মিলিত সামরিক  হাসপাতালে নিলে তার করোনা পজিটিভ ধরা পরে।অবশেষে ৩মে ২০২০ সালে করোনা নিয়েই তখনিই মারা যান।

আজমত মঈন

শিল্পপতি আজমত মঈন দেশে চা শিল্পের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ছিলেন।৬ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

ডা.মঈন উদ্দিন

তিনি ছিলেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৫ এপ্রিল ২০২০ সালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।করোনা আক্রান্তে মৃত্যুর প্রথম ফ্রন্টলাইনার ডাক্তার তিনি।তার মৃত্যুর পর সরকারকে ব্যাপক সমালোচনায় পড়তে হয় কারন ডাক্তার হয়েও তিনি করোনাকালে আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে সুযোগ পাননি।সুস্থাবস্থায় চিকিৎসক হিসাবে করোনা রোগীর সেবা দিতে তিনি পাননি পিপিই রোগ প্রতিরোধের পোষাক।এছাড়া তার করোনা ভাইরাস পজিটিভ আসায় অসুস্থ হয়ে যাবার পর তাকে ঢাকায় নিতে একটি বিশেষায়িত এ্যাম্বুলেন্স চেয়েও পাননি এই করোনায় ফ্রন্টলাইন যুদ্ধা।

ডা.মীর্জা নাজিম উদ্দিন

স্কয়ার হাসপাতাল রাজধানীর অভিজাত হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি।সেই হাসপাতালের তিনি ছিলেন সিনিয়র কনসলট্যান্ট ও মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক।৬৭ বছর বয়সী তিনিও ৭ জুন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

মোহাম্মদ নাসিম

সাবেক স্বাস্থমন্ত্রী আওয়ামীলীগ সরকারের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম জ্বর কাশি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সময় তিনি ব্রেনস্টক করে কোমায় চলে গেলে ১৩ জুন পাড়ি জমান না ফেরার দেশে।

সৈয়দ মোস্তফা কামালঃ

তিনি ছিলেন  বিটিভির উপ মহাপরিচালক অবঃ এবং এনটিভির উপদেষ্টা ও অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান।৭৮ বছর বয়সী এই গুণী মানুষটি ১জুন করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জালাল সাইফুর রহমান

তিনি ছিলেন দুদক এর পরিচালক।বিসিএস ২২তম প্রশাসন  ক্যাডারের এই মানুষটি গত ৬ এপ্রিল ২০২০ করোনায় আক্রান্ত  হয়ে কুয়েতমৈত্রী হাসপাতালেে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পৃথিবীর মায়া  ত্যাগ করেন।

নিলুফা মঞ্জুর

সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও এ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান মঞ্জুর এলাহীর ওয়াইফ এবং ইংরেজী মাধ্যম সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা।তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ মে ২০২০  মারা যান।

মোঃ ইমামুল কবীর শান্ত

তিনি ছিলেন সুন্দরবন কোরিয়া সার্ভিস এর প্রতিষ্ঠাতা এবং শান্তা মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অফ ক্রীয়েটিভ টেকনোলজির চেয়ারম্যান এবং মহান ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের একজন গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা।তিনি ৩০ মে ২০২০ করোনায় আক্রন্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন।

ড.নাজমুল করিম

তিনি ছিলেন ঢাবির ট্যুরিজম এণ্ড হসপিটাল ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও  ফারইস্ট ইন্টাঃ ইউনিভার্সিটর উপচার্য।৭১ বছর বয়সী তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৭মে ২০২০ মারা যান।

এ ছাড়াও করোনায় আক্রান্ত  হয়ে মৃত্যু  বরণ করেন  সাবেক প্র্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির,সাংবদিক হুমায়ুন কবীর,সচিব এম ফজলুল করীম,সাংবাদি আব্দুল মোনায়েম খান,আন্তজার্তিক খ্যাতি সম্পর্ন রেফারী হুমায়ুন কবীর জুয়েল  সহ আরো অসংখ্য নাম মনে না আসা বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।

বিষে ভরা ২০২০ এ এই মুহুর্তে নাম মনে আসা না আসা দেশের যত খ্যাতিমান ব্যাক্তিগণ করোনায়  আক্রান্ত  হয়ে পরলোক গমন করেছেন তাদের মধ্যে  প্রায় ১২৭ জন ছিলেন চিকিৎসক।যাদের অনেকেই ছিলেন করোনা ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধা।স্বাস্থ্য খাতের দুর্ণীতির কারনে  যখন স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা  ভেঙ্গে পড়েছিলো তখনো তারা পিছু হটেননি।সরকারের দায়হীনতার ভঙুর রূপ কিছু ডাক্তারদের নীরব প্রতিবাদ করলেও সেবা দিতে কার্পণ্যবোধ করেননি।তাদের প্রতি রইল  বিনম্ভ্র শ্রদ্ধা।আরো শ্রদ্ধা রইল এ দেশের  পুলিশ প্রশাসনদের  প্রতি  যারা করোনা প্রতিরোধে দায়ীত্বপালন  করতে গিয়ে করোনায়  আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন।

মানুষের জীবন জীবিকাকে  তছনছ করে দেয়া আবিষ্কৃত করোনা ভাইরাসটির প্র্রতিরোধের ভ্যাকসিন এখনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রয়োগ শুরু করে দিয়েছেন।আশা করছি আমরাও খুব শীগ্রই ভ্যাকসিন পেয়ে যাব।যতদুর জানা যায় সরকার যে ভ্যাকসিন ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে  তা পাবলিক ক্রয় করতে পারবেন দুই ডলারের দাম দিয়ে।আশা করছি ভ্যাকসিন ক্রয় এবং প্রয়োগে কোন দুর্ণীতি ও পার্সেলিয়ারটি থাকবে না। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন।ভাল থাকুন।নিরাপদে থাকুন।

 

কৃতজ্ঞতায়ঃ

ছবি ও তথ্য অনলাইন কালেকসন
কালের কণ্ঠ জাগো নিউজ ও প্রথম আলো সহ অন্যান্য অনলাইন মাধ্যম।

 

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ